প্রকৃতি তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবেই।|| Please save the nature 🍃🌱🍀🌳

in hive-129948 •  8 months ago 
প্রকৃতি তার বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখাবেই

ছবিটি পিক্সাবে থেকে নিয়ে কেনভা দিয়ে তৈরি

প্রকৃতি আমাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে।
একটা কথা আছে মানুষ মানুষকে ক্ষমা করলেও প্রকৃতি কখনো কাউকে ছেড়ে দেয় না। অর্থাৎ প্রকৃতি তার হিসাব করায় গন্ডায় বুঝে নেয়। এমনকি মানুষ মৃত্যু বরণের পূর্বে প্রকৃতি তার হিসেব চুকিয়ে দিয়ে তারপর তাকে মাটিতে গ্রহণ করে।

আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসতে পারে প্রকৃতি আবার কিভাবে প্রতিশোধ নেয়?
উত্তরটা খুব সহজ এই যে তীব্র গরমে জনজীবন বিপর্যস্ত, কোথাও কোথাও দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে বনের পর বন, আবার কোথাও কোথাও বন্যা কিংবা জলোচ্ছ্বাসে তলিয়ে যাচ্ছে বিস্তীর্ণ এলাকা। এগুলোর একমাত্র কারণ হচ্ছে পরিবেশ তার বিরূপ আচরণ দেখাচ্ছে।

এখন আবারো প্রশ্ন আসতে পারে প্রকৃতি কেন আমাদের উপর এই বিরূপ আচরণ করছে?

আসলে প্রকৃতি এ ধরনের বিরূপ আচরণ করছে কারন আমরা আমাদের হাতে সৃষ্টিকর্তার এই অকৃত্রিম পরিবেশকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছি। হ্যা আমরাই প্রতিনিয়ত এই প্রকৃতি ধ্বংস করে চলেছি বিভিন্নভাবে।

  • গাছ কেটে ফেলা। আমরা প্রতিনিয়তই বিভিন্ন প্রয়োজন কিংবা অপ্রয়োজনে গাছ কেটে ফেলছি। বনের পর বন উজাড় করা হচ্ছে একমাত্র ফসলি জমি বৃদ্ধি কিংবা আবাসস্থল তৈরির জন্য। কিন্তু তার বিপরীতে একটি গাছ লাগাতে আমাদের বিবেকে নাড়া দেয় না।

  • অপরিকল্পিত নগরায়ন। আপনি হয়তো মাঝে মাঝেই বিভিন্ন বিজ্ঞাপন দেখে থাকবেন, অমুক মডেল টাউন, তমুক মডেল টাউন। মানে কোথায় কখন কোন বনাঞ্চল হঠাৎ টাউনে পরিনত হচ্ছে এটাই বলা যায় না। মাঝে মাঝে তো অবাক হতে হয় যেখানে পাঁচ বছর আগেও জঙ্গল ছিল এখন সেখানে মোটরযানের জ্যাম লেগে যায়। তাহলে নগরায়ন কত দ্রুত বেড়ে চলেছে আর বনাঞ্চল ক্রমশ বিলীন হয়ে যাচ্ছে।

  • যত্র তত্র আবর্জনা ফেলা এবং পলিথিনের মাত্রারিক্ত ব্যাবহার। আজকাল শহরের অলিতে গলিতে এবং বিভিন্ন মিলকারখানার পাশে দিয়ে আপনি যদি হেঁটে যান তাহলে নাক চেপে ধরে হাঁটতে হয়। এর কারণটা হচ্ছে ময়লা আবর্জনা এমনভাবে ফেলা হয় যাতে পরিবেশ ক্রমশ দূষিত হতে থাকে। এখনকার সময়ে মিল কারখানাগুলোর অপরিশোধিত বর্জ্য নদী এবং খাল বিলে এমন ভাবে ফেলা হয় যাতে করে পরিবেশ দূষিত হতে থাকে। এর ফলশ্রুতিতে গাছপালা এবং বিভিন্ন প্রাণী বিলুপ্তির পথে চলে যায়। তাছাড়াও পলিথিনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে তা মাটিকে দূষিত করে তোলে এবং সেই মাটিতে কোন গাছপালা জন্মাতে কিংবা বড় হতে পারে না।

  • মাত্রাতিরিক্ত বায়ু দূষণ। বর্তমান সময়ে বায়ু দূষণ চরম মাত্রায় রূপ নিয়েছে। আমরা আমাদের দালানকোঠা নির্মাণের জন্য প্রতিনিয়ত ইটের ব্যবহার করে আসছি আর এই ইট খোলা গুলো ব্যাঙের ছাতার মতো চতুর্দিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে। এরা প্রতিনিয়ত আমাদের বায়ু দূষণ করে বলেছে এবং এখানে মাটির ব্যবহারের ফলে ক্রমশ ফসলি জমি কমে যাচ্ছে তাছাড়াও ইটখোলাতে বিভিন্ন গাছপালা পুড়িয়ে ইট শুকানো হয়। সব মিলিয়ে এটা পরিবেশের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনছে।

যাইহোক আমি যদি পরিবেশ কেন আমাদের সাথে বিরূপ আচরণ করছে সেই কারণগুলো লিখতে যাই তাহলে হয়তো আমার পোস্টের লিখার শব্দ ফুরিয়ে যাবে কিন্তু লেখা শেষ হবে না। যাইহোক এই পৃথিবীতে আমাদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে হলে প্রকৃতিকে তার রূপ এবং সঞ্জীবনী শক্তি ফিরিয়ে দিতেই হবে।

প্রকৃতির সেই সঞ্জীবনী শক্তি ফিরিয়ে দিতে হলে প্রথমেই আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। একটি কথা মনে রাখতে হবে একটি গাছ লাগানোর সাথে সাথেই সে আমাদের জন্য সুফল বয়ে আনবে না। তাকে বেশ কিছু বছর সময় দিতে হবে। তাই আজ থেকেই আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে রক্ষা করার জন্য আমাদের বৃক্ষরোপণ করতেই হবে। আমাদের লাগানো এই গাছগুলো একটা সময়ে প্রকৃতির সেই সঞ্জীবনই শক্তি ফিরিয়ে আনবে, যা আমাদের অক্সিজেন দেবে পরিবেশের তাপমাত্রা শুষে নিবে। পরিবেশকে ঠান্ডা রাখবে এবং মাটিতে পানির সঞ্চার ঠিক রাখবে। এই গাছগুলো আমাদের ছায়া দেবে, ফল দেবে এবং আমাদের আগলে রাখবে ঝড় জলোচ্ছ্বাস, বন্যা এবং প্রকৃতির বিরূপ প্রভাব থেকে।

তাই আসুন আজ থেকে শপথ নেই প্রত্যেকেই অন্তত একটি হলেও গাছ লাগাবো‌ তাছাড়াও আমরা চাইলে বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে গাছ উপহার দিতে পারি, স্কুলগুলোতে বৃক্ষরোপণ সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবগত করতে পারি, লিফলেট বিতরণ করতে পারি, সমাজের মানুষ নিয়ে বৃক্ষরোপণ নিয়ে আলোচনা সভা করতে পারি।

যাইহোক আমার ক্ষুদ্র মাথায় পরিবেশ নিয়ে যে সামান্য টুকু জ্ঞান ছিল তাই চেষ্টা করলাম আজকে আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার জন্য। কারণ যে হারে তাপমাত্রা বাড়ছে তাতে একটা সময়ে আমাদের জীবন ধারণ করা সত্যিই ভীষণ কষ্টকর হয়ে যাবে।



Black and White Modern Company Presentation (1).gif

banner-abbVD.png

ছোট্ট পরিসরে পরিচিতি

আমি ইন্জিনিয়ার ইমরান হাসান। মেশিন নিয়ে পেশা আর ব্লগিং হলো নেশা। কাজ করি টেকনিক্যাল সাপোর্ট ইন্জিনিয়ার হিসেবে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। অবসর সময়ে ব্লগিং করি নিজের মনের খোরাক আর একটু পরিবারকে ভালো রাখার জন্য। আমি আবেগী, বড্ড জেদি, নিজেই নিজের রাজ্যের রাজা। কেউ কোথাও থেমে গেলে সেখান থেকে শুরু করতে ভালোবাসি। আমার শখ ছবি তোলা, বাগান করা আর নতুন জায়গায় ঘুরতে যাওয়া। মানুষকে আমি ভালোবাসি তাই মানুষ আমায় ভালোবাসে।

Posted using SteemPro Mobile

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

বেশ কয়েকটি টপিক তুলে ধরেছেন। আসলে প্রকৃতির সাথে যদি এরকম নির্যাতন না করি তাহলে প্রকৃতি এতটা কঠোর হতো না। মূলত এরকম পরিবর্তনের জন্য আমরা নিজেরাই দায়ী।

চমৎকার একটি বিষয় তুলে ধরেছেন। হ্যা আপনি ঠিক বলেছেন প্রকৃতিকে তার রূপ এবং সঞ্জীবনী শক্তি ফিরিয়ে দিতেই হবে। না হলে আমরা প্রকৃতির হাত থেকে রক্ষা পাবো না। প্রকৃতি তার হিসাব ঠিকই বুঝিয়ে নিবে। পরিবেশ রক্ষা করতে হলে আমাদের সবাইকে উদ্যোগ নিতে হবে। এবং বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে। তাহলে আমরা সব দিক দিয়ে শান্তিতে থাকতে পারবো ইনশাআল্লাহ। আপনার লেখা গুলো পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো। আমাদের সাথে ভাগাভাগি করে নেওয়ার জন্য ধন্যবাদ আপনাকে।

দারুণ একটি বিষয় সম্পর্কে আপনি পোস্ট উপহার দিলেন। আমি আপনার সঙ্গে একমত পোষণ করছি, প্রকৃতি আমাদের উপর প্রতিশোধ নিচ্ছে। তার কারণ হলো আমরা আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় অধিক পরিমাণে গাছপালা কেটে ফেলছি। তার ফলে দেশ এখন মরুভূমিতে পরিনত হচ্ছে। তাই মানুষ মানুষকে ক্ষমা করলেও প্রকৃতি কখনো কাউকে ছেড়ে দিবে না। তাই আমিও নিয়ত করলাম একটি করে গাছ লাগাবো। বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে সুন্দর একটি পোস্ট উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া।

সত্যিই অসাধারণ কিছু কথা লিখেছেন ভাইয়া। প্রকৃতি এখন আসলেই প্রতিশোধ নিচ্ছে। গাছ কেটে ফেলা বড় বড় জায়গাগুলো দখল করে বড় বড় ভবন তৈরি করা অর্থাৎ প্রকৃতিকে নষ্ট করার প্রতিশোধই এখন নিচ্ছে প্রকৃতি। ঠিক বলেছেন গাছ লাগানোর সাথে সাথেই সুফল আসবে না। বেশ কিছু সময় অপেক্ষা করতে হবে। তবে মানুষ এখনো বুঝতে পারছে না এই বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব। গতকালও দেখলাম আমাদের বাসার সামনে বেশ অনেকগুলো বড় গাছ কেটে ফেলা হয়েছে। জিনিসটা দেখে অনেক খারাপ লাগলো। তখন মনে হল প্রকৃতির এরকম বিরূপ আচরণ করা একদমই স্বাভাবিক।

জি আপু। প্রকৃতি তার উপর করা অত্যাচারের প্রতিশোধ নেবেই। আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে, তাছাড়া উপায় নেই।

আপনার আজকের পোস্ট পড়ে আমার কাছেও মনে হচ্ছে প্রকৃতি আমাদের উপর নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করতেছে। আপনি ঠিক বলেছেন প্রকৃতিকে তার রূপ এবং সঞ্জীবনী শক্তি ফিরিয়ে দিতে হলে। আমাদের বেশি বেশি গাছ লাগানো প্রয়োজন। তাই আমাদের সবার উচিত নিজ নিজ অবস্থান থেকে বেশি বেশি গাছ রোপণ করা। যাই হোক চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের মাঝে উপহার দেওয়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভালো থাকবেন।

ধন্যবাদ তোমাকে। আমাদের নিজের অবস্থান থেকে বেশি বেশি গাছ লাগাতে হবে।

একটা জিনিস দেখলাম ঢাকা শহরের উপর থেকে ড্রোন এর মাধ্যমে নেওয়া একটা ছবি। শুধু বড় বড় বিল্ডিং শহর জুড়ে একটা কোন গাছ নেই কোন সবুজ নেই। অবস্থা টা চিন্তা করেন। ভুল যা করার আমরা করেছি। কিন্তু এটা একদিনে হয়নি এটা হয়েছে দিনে দিনে। এটা থেকে রক্ষা পেতে গেলে গাছ লাগাতে হবে এবং দীর্ঘ একটা সময় অপেক্ষা করতে হবে।

আর হয়তো সবুজের দেখা পাওয়া যাবেনা। কারন মানুষ এখন গাছ নয়, এসির দিকে ঝুঁকে পরেছে বেশি।

প্রকৃতি আজ আমাদের উপর এই বিরূপ আচরণ করার জন্য আমরাই দায়ী। আমরাই আমাদের জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলেছি।এর থেকে মুক্তি পেতে হলে প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে সবাইকে।বেশকিছু পয়েন্ট তুলে ধরেছেন আপনি।সত্যি কথা এটাই পয়েন্ট লিখতে গেলে আসলে শেষ হবে না।তার চেয়ে আসুন আমরা সবাই প্রকৃতিকে ভালোবাসি। প্রকৃতি ও আমাদের কে ভালোবাসবে।ধন্যবাদ ভাইয়া।

ধন্যবাদ আপু।
প্রকৃতিকে আমাদের ভালোবাসতে হবে এবং গাছ লাগাতে হবে বেশি বেশি।

অনেক ভালো একটি বিষয় নিয়ে আজকে আপনি আমাদের মাঝে আলোচনা করেছেন। অনেক সুন্দর সুন্দর এবং গুরুত্বপূর্ণ কথা আমাদের মাঝে তুলে ধরেছেন। কথা গুলো আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে। আমরা প্রকৃতির সাথে যেমন ব্যবহার করবো প্রকৃতিও আমাদেরকে তেমনই আচরণ করবে। সব কথার এক কথা হলো আমরা আমাদের নিজেদের কাজ ঠিক মতো করছি না যার জন্য আমাদের আজ এই অবস্থা।