ভূমিকাঃ
মাঝে মাঝে আমাদের চারপাশের জীবন, প্রকৃতি, পরিবেশ, সৌন্দর্য ও নানাবিধ বিষয় নিয়ে লিখতে ইচ্ছে হয় যেসব লিখার বিষয়বস্তুকে কোন নির্দিষ্ট গন্ডীর মধ্যে ফেলা যায় না। এরকম বিষয়বস্তুগুলোকে নিয়ে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি
-তে আমি একটি সিরিজ লিখছি যার নাম দিয়েছি প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ
যেখানে কোন বিষয় বা প্রসঙ্গ নিয়ে ব্যাক্তিগত মতামত ও পর্যালোচনা করে থাকি। এই লিখার বিষয়গুলো হচ্ছে ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা ও উপলব্ধির সমন্বয়। পড়ে দেখুন, আশা করি ভাল লাগবে।
অবস্থানঃ https://w3w.co/butchers.impulse.pedagogies
পর্ব ০৩: পড়ন্ত বিকেলে ছুটি খা দিঘীর পাড়ে
প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গটিঃ
বাংলাদেশ একটি নদীমাতৃক দেশ । বাংলাদেশের প্রকৃতি এবং এর পরিবেশ বিভিন্ন উপাদানের সংমিশ্রণে গঠিত । এদেশে যেমন রয়েছে পাহাড়-পর্বত তেমনি রয়েছে নিচু জমি যেমন হাওর অঞ্চল । পাশাপাশি এখানে রয়েছে সমুদ্রের তীরবর্তী ম্যানগ্রোভ বন। আরো আছে শালবন ও বরেন্দভূমি। অনেক এলাকায় বর্ষাকালে নিচু জমিতে পানি আর পানি দেখতে পাওয়া যায় । এদেশের ঋতু দুই মাস পরপর পরিবর্তিত হওয়ার কারনে এদেশের মানুষ বিশেষভাবে গ্রামাঞ্চলের মানুষ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা পরিবেশ উপভোগ করার মাঝেই বেড়ে উঠে।
আজকের পোস্টে আমি বিকেলবেলা একটি দীঘি ভ্রমণের কিছু আলোকচিত্র এবং সামান্য বর্ণনা শেয়ার করব । বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলে মূলত দিঘী খুব বেশি দেখতে পাওয়া যায় । বেশিরভাগ বড় বড় দিঘি মূলত আগেকার দিনের রাজাগণ তাদের বাড়ির পাশে একটি করে তৈরি করে গেছেন । আজকে যে দীঘিটি আপনারা ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন সেটি আমার কর্মস্থলের একেবারে পাশেই অবস্থিত চট্টগ্রাম জেলার মীরসরাই উপজেলার নামকরা ছূটি খা দিঘী।
অবস্থানঃ https://w3w.co/godparent.gatherings.rearguard
এই দীঘির বেশকিছু ঐতিহ্য রয়েছে কারণ এটির নাম হচ্ছে ছুটি খাঁ । চট্টগ্রাম অঞ্চলে ছুটি খাঁ এবং পরাগল খাঁ অনেক বিখ্যাত কারণ ইতিহাসে তাদের নাম রয়েছে । এই দীঘির পাড়ে রয়েছে ছুটি খাঁ জামে মসজিদ যা অত্যন্ত প্রাচীন এবং অনেক পুরাতন আমলের ঐতিহ্য ধারণ করে আছে । কোন একদিন আমি এই মসজিদ সম্বন্ধে এবং এর ঐতিহাসিক দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব ।
ছাত্র অবস্থায় প্রায় বিকেল বেলা আমি এই দিঘীর পাড়ে ঘুরতে যেতাম এবং অনেক মানুষ এই দিঘির পারে বিকেলবেলা ঘুরতে যেত। সপ্তাহ খানেক আগে আমি হঠাৎ করে চিন্তা করলাম এই দীঘির পাড়ে আরেকটি বিকাল উপভোগ করা যাক । দিঘির পাশে গিয়ে আমি তার মনমুগ্ধকর দৃশ্য দেখে আবারও অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলাম। যেমনটি ছবিতে দেখতে পাচ্ছেন এই দিঘীর আকৃতি অনেক বড়।
অবস্থানঃ https://w3w.co/placer.implacably.vents
পূর্বে এখানে মাছ চাষ করা হতো না কিন্তু বর্তমান সময়ে সমসাময়িক প্রভাবশালীরা মিলে ইজারা নিয়ে মাছ চাষ করছেন। মাছ চাষের কারণে অর্থনীতিতে কিছু অবদান হচ্ছে কিন্তু দিঘীরপাড় গুলো আস্তে আস্তে ভেঙে এই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জায়গাটি হয়তোবা আস্তে আস্তে নষ্ট হয়ে যাবে। তবে পাড় গুলো কিছুটা ভেঙে যাওয়ার কারণে দিঘীর আকৃতি আরো বর্ধিত হয়েছে। এত বড় দীঘির পাড়ে দাঁড়িয়ে বাতাসের যে মনমুগ্ধকর ঠান্ডা আমেজ সেটা উপভোগ করার মজা পড়ন্ত বিকেলে অনেকটাই অসাধারণ।
বর্তমান সময়ে স্কুল-কলেজ বন্ধ রয়েছে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য বাজারে যাওয়াটা নিরাপদ নয় কারণ করোনা পরিস্থিতি। আর এ কারণেই স্কুল-কলেজের বাচ্চারা এবং বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিকালবেলা কোন প্রাকৃতিক পরিবেশে হাঁটতে বের হন এবং আমি বিকেলে দিঘির পাড়ে গিয়ে এরকম অনেককেই দেখতে পেলাম।
অবস্থানঃ https://w3w.co/unretired.starlit.rainstorm
চট্টগ্রাম অঞ্চলে আমি যতগুলো দিঘী দেখেছি এটি তার মধ্যে আমার দেখা দ্বিতীয় বা তৃতীয় সর্বোচ্চ দিঘী হবে। এত বড় দিঘী সচরাচর দেখা যায়না। বাংলাদেশের অনেক স্থানে পুকুর রয়েছে সেগুলো অনেক ছোট এবং সাধারন মানে দশ/পনের টা পুকুর মিলে হয়তবা এই দীঘির মত একটা দিঘী হতে পারে।
প্রকৃতিতে যেসব উপাদান আমরা দেখতে পাই তার মধ্যে পানি কেন্দ্রিক উপাদানগুলো সবারই খুব প্রিয় যেমন মানুষ সমুদ্রের পাড়ে, নদীর পাড়ে কিংবা এরকম দিঘির পারে সময় কাটাতে পছন্দ করে। কারণ পানির উপর দিয়ে যে লেলুয়া বাতাস ছুটে আসে সেটি আমাদের মন এবং শরীর শীতল করে দেয়। আর বিকেলবেলা ঘোরাঘুরির শখ অনেকেরই আছে।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের এই স্থানটি মহামায়া সেচ প্রকল্প এবং মুহুরী সেচ প্রকল্প থেকে খুব বেশি দূরে নয়। মহামায়া এবং মুহুরী হচ্ছে বাংলাদেশের নামকরা দুটি পর্যটন কেন্দ্র যেখান থেকে মাত্র 5 কিলোমিটার দূরে মীরসরাই উপজেলাতেই এই দিঘীর অবস্থান। তাই যে কেউ চাইলে মহামায়া সেচ প্রকল্প বা মুহুরী প্রজেক্ট ঘুরতে আসলে এই দিকের অপরূপ সৌন্দর্য উপভোগ করে যেতে পারেন। দীঘিপাড়ে রয়েছে পুরনো সময়ের বেশকিছু গাছপালা এবং আশেপাশে আরও কয়েকটি ছোট-বড় দিঘী রয়েছে যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে পরাগল খাঁ দিঘী এবং সদরমার দিঘী।
অবস্থানঃ https://w3w.co/slivers.detonated.conceivable
আশা করি আপনারা এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করেছেন এবং পড়ন্ত বিকেলে এরকম মনমুগ্ধকর স্থানে যাওয়ার কোন পরিস্থিতি থাকলে এবং স্মৃতি থাকলে সেটি শেয়ার করতে পারেন যেটা দেখে আমরা হয়তোবা এই করনার সময়ে ঘরে থেকেই ভ্রমণের একটা আনন্দ উপভোগ করার চেষ্টা করতে পারব। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শেষকথাঃ
লিখাটি পড়ে যদি কেউ উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে কমেন্টে জানাবেন। কারো ভাললাগা বা উপকৃত হওয়ার মাঝেই এই লিখার সার্থকতা। প্রাসঙ্গিক প্রসঙ্গ সিরিজে আমার লিখা অন্য বিষয়গুলোর লিঙ্ক নিচে দিয়ে দিলাম। ভাল লাগলে সেগুলোও চোখ বুলিয়ে আসতে পারেন। ধন্যবাদ।
এই সিরিজে আমার লিখা পূর্বের পোস্টগুলোর তালিকাঃ
পর্ব | প্রসঙ্গ |
---|---|
০১ | সবার সম্মিলিত খুদ্র প্রয়াসে এগিয়ে যাক বাংলাদেশ |
০২ | একজন ফুটবল কিংবদন্তী ও ইতিহাস |
এই পোস্টের লিখা কোথাও থেকে কপি করা হয়নি। কোন তথ্য বা ছবি অন্য কোন উৎস হতে নিয়ে থাকলে সোর্স দেয়া হয়েছে
আমি কেঃ
ভোট দিন, মতামত থাকতে মন্তব্য করুন, পোস্টটি ভাল লাগলে শেয়ার করুন এবং আমাকে ফলো করুন @engrsayful
অন্যান্য মিডিয়াতে আমার সাথে যুক্ত হতে পারেনঃ
Youtube | ThreeSpeak | DTube |
দারুন একটা ট্রাভেল ব্লগ । পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারলাম । বাংলাদেশে গেলে অবশ্যই চট্টগ্রামে যাবো, কক্সবাজারও দেখবো :)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চট্টগ্রামে আপনি অনেক দর্শনীয় স্থান খুজে পাবেন। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
beautiful lake
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit