আমাদের পোষা কবুতর

in hive-129948 •  8 months ago 

আসসালামু আলাইকুম

IMG_20240210_165245.jpg

কবুতর

ছোটবেলা থেকেই আমার অনেক শখ ছিলো নিজের অনেকগুলো কবুতর হবে। ছোটবেলায় সে শখ পূরণ না হলেও ২০১৮ সালে এসে আমার মতোই আরেকজন কবুতর প্রেমি মানুষের উদ্যোগে অবশেষে আমার শখ পূরণ হলো।সে মানুষটি হলেন আমার প্রিয়মানুষটি।ছোটবেলায় কবুতর পালতে গিয়ে কবুতরের নখের আচড়ে তার মুখের বামপাশে চুলের কাছাকাছি বেশ লম্বাভাবে কেটে গিয়েছিলো যেটা এখনো চিহ্ন রয়ে গেছে। এই দুঘটনার পর আমার শশুরআব্বা বাড়িতে আর কবুতর পালতে দেন নি।

এখন তো আমরা দুটোই একই তার আবারও শুরু হলো আমাদের প্রচেষ্টা। মার্চ মাসের ২৫ তারিখে হঠাৎ করেই তিন বড়ো জোড়া কবুতর কিনে নিয়ে আসেন পরিচিত একজন ছোট ভাইয়ের কাছ থেকে। কবুতর তো হলো এবার রাখবো কোথায় সে চিন্তায় অস্থির সে ছোটভাইটি এসে কার্ডবোড বড়ো সাইজের কার্টনের বক্স দিয়ে সবাই মিলে তিনটা বাসা তৈরি করলাম। ছাদে বাসাগুলো বসানো হলো উচু করে যাতে বিড়াল বা বন্যপ্রাণী আক্রামণ না করে। কবুতরগুলো বশে আসা পযন্ত কারেন্টের ট্যাপ দিয়ে পাখাগুলো বাধা ছিলো প্রায় ১৫-২০ দিন মতো লেগেছিল বোধহয়।

IMG_20240212_123325.jpg

IMG_20240212_123254.jpg

এবার শুরু হলো আমাদের প্রতিদিন তাদের সাথে সময় কাটানো খাবার দেওয়া পানি দেওয়া। এর একমাস পর কিনে আনে একজোড়া ময়ূরপঙ্খি কবুতর এই জাতের কবুতর আমি সেদিনই প্রথম দেখেছিলাম যা ছিলো অর্বণনীয় সুন্দর। বেশ বড়োসাইজের হওয়ায় বেশিক্ষণ উড়তে পারতো না ওরা।ততোদিনে চারপাশে লোহার নেট দিয়ে একটি রুম বানানো হয়ে গেছে যেখানে তারা চড়ে বেড়াতো। তারা যখন প্রথমবার ডিম দিলো দেখলাম তিনটা ডিম আসলে তারা দুজনেই ছিলো মেয়ে। এরপর আনার হলো দুটো একই জাতের পুরুষ। বাসাগুলো উচুতে হওয়ায় প্রতিদিনই হাতে ধরে তুলে দিতে হতো।

ওদের জন্য একটু নিচে করে দুতলা বাসা তৈরি করা হলো এর মধ্যে বাজরিগার,দেশি ময়ূরপঙ্খি,গিরিবাজ,ফেন্সিসহ ( এই কবুতরটা বেশ সুন্দর পালকে ঢাকা পা মুখ) বেশ কয়েকটি জাত। বাচ্চা হয়ে নতুন জাত কিনে কবুতরের সংখ্যাও হয়েছে অনেক। লকডাউনের সময় হঠাৎ করে রাতের বেলায় কোনো একটা বন্য প্রাণী আক্রমণ করে সবগুলো বাচ্চার মাথা ছিড়ে ফেলে বড়গুলোর ডানা লেজ ছিড়ে ফেলে ময়ূরপঙ্খী পালাতে পারেনি বলে একজোড়া একেবারে মেরে ফেলেছে বাকি জোড়া ক্ষতবিক্ষত অবস্থা । সেদিন সকালের দৃশ্য আমি কোনোদিন ভূলবো না বাচ্চাসহ ১৭ টা কবুতরের মৃত্যু আমার জন্য সবচেয়ে যন্ত্রণার ছিলো।

ময়ূরপঙ্খীর আহত থেকেও একটা মারা যায় কয়েকদিন পরে আরেকটা কিনে আনলেও ওটার সাথে আর জোড় বাধেনি ওটার বিড়ালের শিকারে পরিণত হয়ে মারা গেছে। এভাবে শেষ হলো আমাদের অতি শখের ময়ূরপঙ্খী। সেবার বেচে গিয়েছিলো ৮ জোড়া কবুতর যেগুলো অনেকদিন আর বাসাতেই ঢুকতো না ভয়ে এতো প্রতিরোধ ব্যবস্থা সত্বেও আরো কয়েকবার আক্রমণের শিখার হয়। তারপর নিচতলায় একটা ফ্লাটের অংশ খোলা পড়ে আছে ওখানে একটা মজবুত রুম তৈরি করে ওখানে নিয়ে আসা হয়েছে।

এখন ৫ জোড়া কবুতর আছে যেখান থেকে পরিবারের চাহিদা মিটে বাচ্চা বেশি হলে বিক্রি করে দেয় আশেপাশের মানুষেরা নিজেরা এসে নিয়ে যায় বাচ্চা কবুতর। গাছের বক্স কেটে ইদুর ঢুকে বাচ্চাকে মেরে ফেলে বাচ্চা দিলে বার বার সতর্ক হয়ে চেক করা লাগে।
ছবিতে এবারের দেওয়া কবুতরের বাচ্চা ও খাবার খাচ্ছে কিছু কবুতর। কবুতরের বাচ্চা হওয়ার পর ১০-১৫ দিন পর বাসা পরিষ্কার করা যায় নয়তো মা আর খাবার দেয়না বাচ্চাদের। এখনো বাচ্চারা ছোট তাই পরিষ্কার করা হয়নি।কবুতরের বাচ্চা জন্মের সাতদিন পযন্ত প্রিজন মিল্ক খায় যেটা বাবা মার গলায় উৎপাদন হয়।
আজকে এই পযন্ত আল্লাহ হাফেজ।

পোস্টবিবরণ
শ্রেণিফটোগ্রাফি
ক্যামেরাস্মার্টফোন
পোস্টতৈরি@farhanaaysha
লোকেশনবাংলাদেশ
ডিভাইসiQOO Z3 5G

IMG_20240212_123339.jpg

IMG_20240212_123315.jpg

IMG_20240212_123308.jpg

IMG_20240210_165130.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ আপু আপনি আজকে আমাদের মাঝে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখে শেয়ার করেছেন। আপনাদের পোষা কবুতর নিয়ে বেশ দারুন একটি পোস্ট লিখেছেন। আসলে আপু একদিনে যদি ১৭ কি কবুতর মারা যায় সত্যি নিজের কাছে বেশ খারাপ লাগে এবং এই কথা কোনদিনও ভোলা যায় না। তবে আমিও কবিতার পালন করি আমার কাছে সব থেকে বেশি ভালো লাগে বাজরিকা কবিতরগুলো । ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আপনিও কবুতর পালন করেন জেনে আনন্দিত হলাম। সত্যি তাই এটি ছিলো আমার জন্য একটি ভয়াবহ সময় শখের জিনিস নষ্ট হলে কষ্ট একটু বেশি হয়

পায়রা আমার খুবই পছন্দের একটি পাখি।
আমি অনেক ছোটবেলা থেকে এই পায়রা পালন করে আসছি বর্তমানে আমার প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টা পায়রা রয়েছে।
আপনার পায়রার ফটোগ্রাফি এবং কথাগুলো পড়ে খুবই ভালো লাগলো।

আসলেই পায়রা পালন করা অনেক আনন্দের। ছোট থেকে পালন করছেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। দোয়া রইলো আপনার কবুতরের সংখ্যা অনেক অনেক বৃদ্ধি পায়।

আপনার কবুতরের ফটোগ্রাফি ও পালনের বিস্তারিত খুটিনাটি বেশ ভালো লাগলো তবে কষ্ট পেলাম বেশ যখন পোস্টে পড়লাম এতো গুলো কবুতরের করুন মৃত্যু। আসলে পোষা কবুতরের কিংবা কোন প্রানীর এমন নির্মম মৃত্যু কখনোই মেনে নেয়া সম্ভব নয় ভীষণ কষ্ট পেতে হয়।বেশ ভালো লাগলো এবং অনেক কবুতরের নাম অনেক কবুতর পালনের খুটিনাটি বিষয়ে জানতে পারলাম বেশ ভালোই লাগলো।ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

এখন দেশী ছাড়া অন্যজাতের কবুতর নেই। বেজি, গুইসাপ আরোসব বন্যপ্রাণীর জন্য দামি জাত কেনার সাহস পাইনা