ভ্যাট বাটিক রং দিয়ে টাই--ডাই করলাম। ১০% shy-fox

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)
আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন আপনারা? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। কলেজ এর পরিক্ষা শেষ হলো। প্রচুর অবসর সময় কাটছে আমার। বই পড়তে আর ইচ্ছা হচ্ছে না। আমার ছোটো ফুপি বাটিক এর ব্যবসা করে। বাসায় নিজেই বাটিক করে। অনেক দিন ধরে ভাবছিলাম আমি ফুপির থেকে বাটিক করা শিখবো। কিন্তু পরিক্ষার ঝামেলার কারনে আর হইয়ে ওঠেনি। এখন এই অবসর সময়এ ভাবলাম শিখেই ফেলি।বাটিক রং সাধারণত বিভিন্ন রকম হইয়ে থাকে। কিন্তু ভ্যাট বাটিক রং সবথেকে বেশি টেকসই। এ বাটিক রং এর দাম তুলনামূলক ভাবে বেশি হইয়ে থাকে। ৩ গজ কাপড় রং করতে ১ তোলা বাটিক রং লাগে। ৩০ টাকা থেকে ১২০ টাকাও লাগতে পারে। গাঁড়ো রং গুলোর দাম একটুবেশি হয়ে থাকে। ভ্যাট বাটিক রং এবং বাটিক এর মেডিসিন এক সাথেই দিয়ে দেওয়া হয়। আমি ছোটফুপির কাছ থেকে শিখে বাসায় বানিয়ে ফেললাম। আমি কিভাবে করেছি তা আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তাহলে চলুন দেখে নি উপকরণ লিস্ট।

USER_SCOPED_TEMP_DATA_orca-image-1622360795350_6804674373383398416.jpeg

১. ভ্যাট বাটিক রং এবং বাটিক এর মেডিসিন। ( যে কোন দোকান যেখানে বাটিক রং পাওয়া যায় সেসব দোকানে যেয়ে ভ্যাট বাটিক রং বললেই হবে। মেডিসিন সহ তারা বিক্রি করে)।
২.কস্টিক ও হাইড্রোজ ( বাটিক এর মেডিসিন)।
৩.একটা বালতি।
৪.গরম পানি।
৫. একটা খুন্তি
৬. যে কাপড় এ বাটিক করা হবে সেই কাপড়।
৭.কাপড় বাধার জন্যে শক্ত দড়ি।

প্রথম ধাপ :

১. আমরা ছোট বেলায় যেভাবে কাগজ দিয়ে হাত পাখা বানাতাম। ঠিক সেই ভাবে ৩ গজ কাপড়কে মেঝেতে রেখে সুন্দর ভাবে সব পাশ সমান করে পাখার মতো ভাজ করতে হবে।

ধাপ ২:

যে সুতা দিয়ে আমরা খাতা বাধি সেই সুতা দিয়ে ২/৩ ইঞ্চি ফাঁকা ফাঁকা করে বেধে দিতে হবে। ফাঁকা যতটা কম হবে ডিজাইন ততই ভাল হবে।

received_737414326930022.jpeg

received_220601206292989.jpeg

ধাপ ৩:

একটা বালতিতে ফুটন্তগরম পানি নিতে হবে। তার ভেতর কস্টিক ও হাইড্রোজ ( বাটিক এর মেডিসিন) গুলো গুলিয়ে নিতে হবে।

received_237520141471966.jpeg

received_1123827134763756.jpeg

ধাপ ৪:

এরপর একটা খুন্তি দিয়ে নাড়িয়ে নিয়ে বাটিক রং মেশাতে হবে।

ধাপ ৫:

ওই পানির ভেতর সাথে সাথে আগে থেকে বেধে রাখা কাপড়টা দিয়ে দিতে হবে।
received_498844221356605.jpeg

received_1277854462612428.jpeg
একটা খুন্তি বা লাঠি দিয়ে ভাল করে পানিতে চুবাতে হবে।

ধাপ ৬:

কাপড়টি ভালো ভাবে পানিতে ডুবিয়ে ১৫ মিনিট / ২০ মিনিট রেখে দিতে হবে।

ধাপ ৭:

এরপর কাপড়টি গরম পানি থেকে তুলে ঠান্ডা পানিতে চুবিয়ে রাখতে হবে। ঠান্ডা পানিতে ভালো করে ধুয়ে নিয়ে এর পর রোদএ শুকাতে দিতে হবে।
USER_SCOPED_TEMP_DATA_orca-image-1622360795350_6804674373383398416.jpeg

20210530_130849.jpg

20210530_130848.jpg

ধাপ ৮:

received_311607727292278.jpeg

তাহলে এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট। বাটিক করা কাপড় কার না ভালো লাগে। আর যদি নিজের হাতে বানানো হয় তাহলে তো কোন কথায় নেয়। আপনারা এভাবে বাসায় বসেই বাটিক তৈরি করতে পারবেন।

আশা করি আজকের পোস্ট আপনাদের ভালো লাগবে।

ধন্যবাদ সবাইকে

ফারহানা তন্নি

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

অনবদ্য ক্রিয়েটিভ আইডিয়া। অনেক সুন্দরভাবে আপনি কাজটি করেছেন। একদম প্রফেশনাল। আচ্ছা আপনার কাছে একটা প্রশ্ন যে রং
টি করেছেন, সেটি কি ধুয়ে দেয়ার পর উঠে যাবে নাকি?? আপনার জন্য শুভকামনা রইল অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে

জি না। একদমই উঠে যাবে না। ভ্যাট বাটিকখুবই টেকসই। যখন আপনি ঠান্ডা পানিতে ধুয়ে দিবেন তখন বাড়তি রং উঠে আসবে। কিন্তু তাতে ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। কারণ শুকানোর পারে রং ঠিকই থাকবে। মজার বিষয় হচ্ছে আপনি যখন একবার শুকিয়ে ফেলবেন তারপর থেকে যখনই আবার ধুয়ে ফেলবেন দেখবেন আর কখনোই কোন রং উঠবে না।

আমার বাটিকের জামা কাপড় অনেক বেশি পছন্দ। কেন জানি বাটিক প্রিন্টের সবকিছুই ভালো লাগে। আপনার এই কাজের প্রতি দক্ষতা দেখে সত্যিই মুগ্ধ হয়ে গেলাম। আমারও এই কাজটি শিখার অনেক ইচ্ছা আছে। আপনার পোস্টটি আমার কাছে অসম্ভব ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপু এত সুন্দর আইডিয়া এবং এত সুন্দর দক্ষতার কাজ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য অনেক শুভকামনা রইল।

ধন্যবাদ আপু। এভাবে সাপোর্ট করার জন্য। আমি নতুন ইউজার। আপনাদের এই সাপোর্ট আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

আপনি খুব সুন্দর করে বাটিক করেছেন। আপনি এতো সুন্দর করে পদ্ধতি গুলো দেখিয়ে দিয়েছেন যে আপনার পদ্ধতি দেখে এসব সামগ্রী বাজার থেকে কিনে এনে যেকেউ বাটিক করতে পারবে। বাটিকের চাদর আমার খুব পছন্দ। ধন্যবাদ আপনাকে একটি শিক্ষনীয় পোষ্ট আমাদের সঙ্গে শেয়ার করার জন্য।

জি আপু। কিছুদিন পর কিভাবে বাটিকএর চাদর করতে হয় সেটাও পোস্ট দিব। আপনাদের সাথে শেয়ার করবো ইনশাআল্লাহ। আমার পাশে থাকবেন আপু। ধন্যবাদ।

মাশাল্লাহ অনেক সুন্দর করেছেন আপনার বাটিকের কাজ।

আপনারা জন্য শুভকামনা রইলো।

ধন্যবাদ।