মস্তিষ্কে মরিচা

in hive-129948 •  2 years ago 
ন্ত আর আমার বেড়ে ওঠা একসাথেই।যদি বলি পিঠাপিঠি হয়ে মানুষ হয়ে উঠেছি তাহলেও ভুল হবেনা।আর এর কারণ হলো ও আমার আপন মামাতো বোন।বয়সে যদিও ৭/৮ মাসের ছোট হবে তবে ক্লাসের ডিফারেন্স নেই আমাদের মাঝে।
ছোট থেকে এখন অব্দি মানে সেই হাতেখড়ি থেকে কলেজ পর্যন্ত সবই এক জায়গাতেই আমাদের।আর দুজনের মাঝে পড়াশোনা নিয়ে কম্পিটিশনটাও বেশ জমে।কোনোবার ও ফার্স্ট হয়,কোনোবার আমি।পড়াশুনার ক্ষেত্রে একটু আকটু হিংসা থাকলেও অন্য সবদিক থেকে আমরা অতুলনীয়।আমার জন্য পেইন নিতে ও কিছু মনে করেনা,ওর জন্য পেইন নিতে আমিও কিছু মনে করিনা।
এতো কথার পর হয়তো বুঝতে পেরে গেছেন আমার আর ওর সম্পর্ক কতটা গভীর!এই পর্যন্ত সব ঠিকঠাক আছে।

স্টোরির মূল পাতায় যাই-

brain-2146817_640.png
Source

ইদের তৃতীয় দিন বিকেলে মায়ের সাথে নানিবাড়ি যাবো জন্য রেডি হয়ে বসে আছি।ছোট মামি হঠাৎ আম্মুকে ফোনে জানালো,অন্ত ছাদ থেকে পরে গেছে।আম্মুর মুখ থেকে বিষয়টা শোনা মাত্র আমার বুকের ভেতরে কোথায় যেন কেঁপে উঠেছিল।এক মুহুর্ত দেরি না করে আমি বগুড়ার উদ্দেশ্য নিয়ে বাসে উঠেছিলাম।প্রতিটা মুহুর্ত যেন নিজেকে পাগল পাগল মনে হচ্ছিলো,ওর সাথে কাটানো সব স্মৃতি মনে পরছিলো বাসে বসে থাকতে থাকতে।

প্রায় ঘন্টাখানেক পর মেডিকেলে পৌঁছে দেখি মামি জরুরি বিভাগের বাহিরে অঝোরে কান্না করতেছেন আর রুমের ভেতরে মামাসহ আরো অনেকেই ছিলেন ডাক্তারের সাথে।নিজে চোখে ওকে দেখার পর আমি একদম ভেঙে পরেছিলাম ভেতর থেকে।দুই হাত দুই পা, মানে চারটা জিনিসই ভেঙে গেছে।ডাক্তার বললেন,এ যে বেঁচে আছে তার জন্য আল্লাহকে কোটি শুকরিয়া।

তারপর আর কি!চিকিৎসা চলতেছিল।সরকারি থেকে প্রাইভেট ক্লিনিকে নেয়া হলো।সেদিন থেকে আজ দুপুর অব্দি আমি ওখানেই ছিলাম।এক কাপড়ে থাকতে থাকতে অস্বস্তি হচ্ছিলো জন্য বাসায় এসেছি।আবার হয়তো আগামীকাল যাবো।যেহেতু প্রথম থেকেই ওখানে ছিলাম,তাই সব আত্মীয় স্বজনরা এবং পাড়া প্রতিবেশীরা ওর খোঁজ আমার থেকেই নিচ্ছিলো।আর আজকের মেইন পয়েন্ট এখানেই।

png-1342127_640.png
Source
আমি কেমন তা আমি জানিনা।তবে বিপদের মুহুর্তে বিপদগ্রস্তের পাশে থাকাটা আমার কাছে অধিক গুরুত্বপূর্ণ,ওই লোকের বিপদে পড়ার কারণ নিয়ে গবেষণা করার চেয়ে।ঘটনার দিন থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় ১৮/১৯ জন লোকের ৭০+ কল রিসিভ করেছি আমি।এছাড়া সরাসরি আরো অনেকের সাথেই তো কথা হয়েছে।

মানুষের কথাগুলো শুনে আমি জাস্ট ভেক্সড হয়ে গেছি ভাই!কেউ বলতেছে,প্রেম বিষয়ে ঝামেলা নিয়ে হয়তো এই ঘটনা ঘটাইছে।আবার কেউ বলতেছে,পারিবারিক ঝামেলা সহ্য করতে পারছিলোনা হয়তো।একদলের মত,পড়াশোনার চাপ সহ্য করতে পারছিলোনা।আরেক দল বিশেষজ্ঞ বললো,জীন এসে ফেলে দিয়েছে।

একটা লোকের লাইফ চলে যাওয়ার অবস্থা ছিল,সেখান থেকে আল্লাহ তাকে রক্ষা করেছেন।কোথায় মানুষটাকে সাপোর্ট দেবে,তার জন্য প্রে করবে বা আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করবে তা না সবাই গবেষণা করতে বসে গেছে ঘটনা ঘটলো কেন আর কিভাবে?মানুষের পরিচয় এমন হতে পারেনা।



সমাজে কারো কোনো ঘটনা ঘটলে এ কথা থেকে সে কথা হওয়া একদম স্বাভাবিক একটা বিষয়।আর এটা কত বাজে এবং ক্ষতিকর একটা কাজ যা বুঝানোর মতো না।একবার ভেবে দেখেন তো,ওই মহৎ গবেষনার তত্ত্বগুলো অন্তর বাবা মায়ের মনে বা অন্তর মনে কতটা বাজে প্রভাব ফেলতেছে!এমন আরো অনেক ঘটনা হয়তো আপনারা ফেস করেছেন তাই বেশি বলবোনা।

অনুরোধ করছি,বিপদে মানুষের পাশে থাকার চেষ্টা করবেন যদি না পারেন তো ওই বিষয়ে মাথা ঘামাবেন না।যেহেতু,আপনি বিপদগ্রস্তের পাশে দাঁড়াননি তাই তার বিপদ বা তাকে নিয়ে নাড়াচাড়া করার অধিকার আপনার নেই।আর আপনি যদি তা করেন আমার মতে আপনি মানুষ না।শিক্ষা আপনার মাঝে থাকা জানোয়ারটাকে মারতে পারেনি।

🌸আল্লাহ হাফেজ🌸


Cc.@farhantanvir
Date.28/04/23


JOIN WITH US ON DISCORD SERVER

banner-abb4.png

Follow @amarbanglablog for last updates


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ভাই আপনার পোস্টটি পড়ে যতটা কষ্ট লাগছিল, ঠিক ততটাই যেন হাসি পাচ্ছিল। একটা মানুষ বিপদে প্রায় মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছে ,আর অন্যরা বিভিন্ন ধরনের সমালোচনা নিয়ে ব্যস্ত। এসব মানুষের প্রতি নিন্দা জানাই। আর ওর প্রতি রইল অনেক অনেক দোয়া। দোয়া করি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাক এবং আপনার মামা মামির কোলে ফিরে আসুক।

আপনি এবং আপনার মামাতো বোন অন্ত দুজনে ছোট থেকে একসাথে বড় হয়েছিলেন। বলতে গেলে আপনারা দুজন ভালো বেস্ট ফ্রেন্ড এর মতই ছিলেন। খুবই খারাপ লাগলো আপনার মামাতো বোন অন্তর এই বিষয়টি পড়ে। এভাবে আসলে একটা মানুষকে নিয়ে সমালোচনা করা একেবারেই উচিত নয়। একটা মানুষ ছাদ থেকে পড়ে গিয়েছে তার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া না করে এবং সে যে বেঁচে আছে তা নিয়ে শুকরিয়া না করে উল্টাপাল্টা কি সব কথা বলছে। আসলে আমাদের কারো উচিত না এরকম কথাগুলো বলার। মানুষের বিপদে পাশে থাকাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং আমরা সবাই সব সময় চেষ্টা করব অন্যের বিপদে এগিয়ে আসার।

খুব খারাপ লাগলো পোস্টটি পড়ে। আপনার বোনের এখন কি অবস্থা?? জানার খুব ইচ্ছে আমার জানাবেন তো।খুব খারাপ লাগছে।

আসলে কেউ অসুস্থ বা বিপদে পড়লে সাথে যে লোক থাকে তার অবস্থা খারাপ হয়ে যায় সবার ফোন রিসিভ করতে করতে। মানুষ বুঝতে চায় না যে তার মানসিক অবস্থা। ঠিকই বলেছেন পাড়া প্রতিবেশীদের গবেষণা তো আছেই তাছাড়া এমন পরিস্থিতি হলে তো মানুষের কথা আরো বেড়ে যায়। এসব মানুষের বোধ বুদ্ধি কবে হবে সেটারই অপেক্ষা। তাছাড়া আপনার বোনের জন্য দোয়া রইল যেন খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে পারে।

অন্ত আর আপনি একই সাথে বেড়ে উঠেছিলেন মানে আপনাদের চলাফেরা সব সময় একই হত। উনি আপনার থেকে কয়েক মাসের ছোট হলেও ক্লাসের কোন ব্যবধান ছিল না। আর আপনারা সময় একসাথে থাকতেন এবং শুধুমাত্র পড়ালেখা নিয়ে আপনাদের মাঝে প্রতিযোগিতা হতো বেশিরভাগ সময়। হয়তো উনি প্রথম হতেন পড়ালেখায় না হলে আপনি। দুজনের মধ্যে প্রতিযোগিতা লেগেই থাকতো এটা জেনে ভালো লেগেছে। কিন্তু ওনার এরকম একটা দুর্ঘটনার কথা শুনে আমার কাছে খুবই খারাপ লেগেছে। সৃষ্টিকর্তার কাছে এটাই দোয়া করি যেন উনি সবার মাঝে আবারও ফিরে আসেন। আগের মত যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন খুব তাড়াতাড়ি।

অন্তর জন্য দোয়া রইলো, ভাই