আসসালামু আলাইকুম,
সাল ২০১৫,তখন পড়ি ক্লাস ৫ এ।দুইটা স্কুল পাল্টানোর পর ধানসিঁড়ি ছিল আমার তিন নম্বর স্কুল।প্রাথমিক লেভেলে অবশ্য ওইটাই আমার শেষ স্কুল ছিল।হাতে গোনা দুই চারজন ছাড়া ওই ব্যাচের প্রায় সবার সাথেই আমার সম্পর্ক তখন বছর খানেকের ছিল।আজ আপনাদের সাথে আমাদের পিএসসি পরিক্ষার বিদায় নিয়েই টুকটাক গল্প করবো।
সেদিন কলেজ শেষে গিয়েছিলাম ছোট মামার বাসায়।মামাতো বোন অন্ত একটু পর বললো,ও আজ অনেকদিন পর ওর ক্যামেরা বের করেছে।আর সেখানে আমাদের ১৫ সালের বিদায়ের ছবিগুলো আছে।যেহেতু আমরা দুজন ছোট থেকে একসাথেই বেড়ে উঠেছি তাই স্কুলগুলো একই ছিল আর এখন কলেজও একই আছে।তো ওর কথা শোনা মাত্রই বললাম,ক্যামেরাটা নিয়ে আয়।ছবিগুলো দেখি।
মূলত এইটাই ছিল আমাদের পিএসসি ব্যাচ।এখান থেকে আমাকে খুঁজে বের করার মতো গুরু দায়িত্ব আমি কাউকে দেবোনা কারণ প্রথমবার আমার নিজেরই কষ্ট হয়েছিল।ছবিগুলো দেখে আবেগ ধরে রাখতে পারছিলাম না।দেখতেছিলাম আর অন্তর সাথে ছোটবেলার গল্পগুলো রোমন্থন করছিলাম।
আমাদের আন্টি ছিলেন ইনি।স্কুল খোলা থেকে শুরু করে ছুটি হওয়া অব্দি সবসময় স্কুলের ভেতরেই পাইচারি করতেন।যখন যে স্যারের দরকার হতো,নাম ধরে ডাকা মাত্রই হাজির।কামাল স্যার বেশিরভাগ সময়ই ওনাকে ডাকতেন তার পছন্দের বেত আনার জন্য।আর তারপর আমাদের উপর রোলার চালাইতেন।আন্টির সাথে আমাদের সবারই বেশ ভালো সম্পর্ক ছিল।টিফিনের সমউ বাহিরে থেকে এটা ওটা এনেও দিতেন।আমাদের অনেক আদর করতেন অবশ্যই।আরো একজন আন্টি ছিল তবে ক্যামেরা তে তার ছবি পাইনি।
এখানে আমাদের স্কুলের দুজন পরিচালক রয়েছেন।পেস্ট কালার শার্ট যিনি পড়ে আছেন তিনিই কামাল স্যার।সামনে স্যারের ছেলে।এই স্যারের মাইরের ভয়েই একেকজন দুইটা করে প্যান্ট পরে আসতো আর কেউ কেউ তো সাথে মলম'ও আনতো😂।
ওনার পাশে রয়েছেন মুক্তার স্যার।ইনি মাঝে মাঝে রেগে যেতেন তবে ওমন মারতেন না কখনো।প্রথম প্রথম যদিও বুঝতে পারিনি তবে মাস খানেক যাওয়ার পর বুঝতে পেরেছিলাম ওনার মাথায় চুল লাগানো।
সঞ্জয় স্যার,মূলত ছোটদের ক্লাস নিতেন।মাঝে মাঝে প্রক্সি দিতে আমাদের ক্লাসেও আসতেন।অত্যন্ত নরম এবং ফ্রেন্ডলি একজন মানুষ। স্যারের সাথে আমাদের দুষ্টামি সবসময়ই চলতো।স্যারও বেশ ভালোভাবেই আমাদের মানাইতেন।
এই লোকটা একটু অন্যরকম টাইপের।কখনো হাসি আবার কখনো বেজার রাগী।তবে তার মুখ দেখে বোঝার উপায় নেই কোন অবস্থায় তিনি আছেন।যেই স্টুডেন্টগুলা একটু ভালো ছিল, তাদের জন্য তিনি একদম ফেরেস্তা।আমাদের ব্যাচের একটা বুলেট স্টুডেন্ট ছিল নাফিস।যদি বলতে যাই তাহলে হয়তো স্যারই ওর ফ্যান ছিল।সবচেয়ে বেশি ভয় আমি এই স্যারকেই পেয়েছি।
আর ছবিতে দেখানো মাসুম বাচ্চাটা আমি।কিউট ছিলাম,তাইনা?জানি বলবেন না,তবে আমি জানি আমি ছিলাম😏।প্রথম ছবিতে আমি,নোমান আর তোয়া।তোয়া অন্তর ছোট বোন,সেসময় ও বেশ গোলগাল ছিল তবে এখন আর ওতোটা নেই।
ব্যাচটা বেশ ভালোই ছিল।একজন ছাড়া বাকি ৩৯ জনেরই বোধয় জিপিএ-৫ এসেছিল।এখনো অবশ্য সবাই বেশ ভালো জায়গাতেই আছে।কয়েকজন ছাড়া বাকিদের সাথে তেমন যোগাযোগ নেই।বুলেট নাফিসের খবর তো ৫ এর পর থেকে আর পাইনি।
মাঝে মাঝে পুরাতন স্মৃতিগুলো মনে করা দরকার।আগামীর জন্য হয়তোবা কিছু উদ্যম পাওয়া যায়।দিনগুলোর মত সরল দিন জীবনে যদিও আর আসবেনা তবে আশা রাখি আগামী সুন্দর হবে।
আজ তাহলে এ পর্যন্তই থাক,সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন -
আল্লাহ হাফেজ।
Cc.@farhantanvir
Shot on. Oppo f19 pro
Location
Date.25/06/23
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পুরাতন মেমোরি ঘাটলে অনেক স্মৃতি মনে হয়ে যায় অনেক গল্প অনেক কথা অনেক ভালোবাসা র মানুষের কথা মনে হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে করে ফেরত যাই আবার ফেলে আসা দুরন্ত শৈশবে।
স্মৃতির পাতা থেকে আপনার ফেলে আসা দিনগুলোর কথা এবং বিদায় অনুষ্ঠানের ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করে নিলেন দেখে খুবই ভালো লাগলো।
আপনি কত পিচ্ছি ছিলেন ছবিতে দেখছি হাহাহা 😁😁
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
স্কুল জীবনের স্মৃতি গুলো মনে পড়লে আসলে আবেগপ্রবণ হয়ে যেতে হয়। আর আপনি তো স্কুলের চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি দেখে ফেলেছেন। প্রত্যেক স্কুলে এরকম কিছু স্যার থাকে যাদের দেখলে বাচ্চারা ভয়ে অস্থির থাকে। কারণ তাদের তারা মারের জন্য বিখ্যাত। সেই তালিকায় হয়তো আপনাদের কামাল স্যার ও ছিল। যাই হোক ভাইয়া আপনার পুরনো স্মৃতিগুলো দেখে বেশ ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার আজকের পোস্টের মাধ্যমে আপনার ছেলেবেলার স্মৃতি,ফটোগ্রাফি দেখলাম।খুব ভালো লাগলো দেখে। সত্যি স্কুলের স্মৃতিগুলো আমাদের মনের কোঠায় আটকা পরে আছে।যা ভুলে যাবার নয়।আপনার অনুভুতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit