আমার ইদ(১০% বেনিফিশিয়ারি লাজুক খ্যাকের জন্য)

in hive-129948 •  2 years ago 

ইদ মোবারক এবিবি বাসী। আশা করি,সবাই খুব ভালোভাবে ইদের দিনটা কাটিয়েছেন।মনের রং,বাইরের রঙ সব একাকার করে দিনটিকে হয়তো করে রেখেছেন স্মরণীয়।সে যাইহোক,দিনশেষে মনের মতো করে ইদটা কাটানোই বড় কথা।


IMG_20220711_122349.jpg

আপনাদের কাছে হয়তোবা ইদের দিনটা খুবই স্পেশাল।আসলে তাই তো হওয়া স্বাভাবিক।কিন্তু সত্যি বলতে আমি কেনজানি স্পেশালভাবে এই দিনটাকে এখন আর নিতে পারিনা।অন্য দশটা দিনের মতো করেই এই দিনটাও কেটে যায়,হয়তো ঘুমিয়ে নয়তো কাজ করে।কুরবানি ইদটা অবশ্য কাজ করতে করতেই কাটে।ছোটভাই ইশাম বেশ ভালোভাবে ইদ কাটায়।ইদ মানেই ওর কাছ অর্থাৎ ওর সব বন্ধুদের কাছে আতশবাজি ফাটানো আর রিকশায় করে এদিক সেদিক ঘুরতে যাওয়া।ইদের মানে আমার কাছেও এমনই ছিল,কিন্ত বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানেটাও পালটে যাচ্ছে।

পরিকল্পনা ছিল,সকাল ৭ঃ৩০ এর ভেতর গ্রামের বাড়ি পৌছে ইদের নামাজ ওখানে পড়া।তাই গত রাতে ৭ টার এলার্ম দিয়ে ফোনটা বালিশের পাশে রেখে ঘুমিয়ে পড়েছিলাম।ঘুমিয়েই আছি,শব্দ পাচ্ছি কে যেন গোসল করছে আর আম্মু থেকে থেকে আমায় ডাকছে।চোখ না খুলেই ভাবছিলাম,৭ টা এতো তাড়াতাড়িই বেজে গেলো!আবার মনে হচ্ছিলো হয়তোবা ৭ টা পার হয়ে গেছে।দ্বিধা-মিধা ঝেড়ে ফেলে উঠেই পড়লাম।দেখি ৬ঃ১৩ বাজে🙂।

একটু পর বাবা গোসল করে বেরিয়েই বললো,বাবা গোসল যান,সময় কম।তারপর ব্রাশ করে গোসল সেরে ফেলেছিলাম।কুরবানি ইদের দিন সকালে পোলাও আর সাথে ডিম-আলুভাজি খাওয়া হয় আমাদের বাড়িতে,এটা সেই ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি।গতকালও তাই হয়েছে।খাবার খেয়ে আমি আর বাবা বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলাম।বাড়িতে পৌঁছে দেখি,সময় তখন ৭ঃ২১।যাবতীয় সরঞ্জাম, গরু সব রেডি করে রেখে আমরা মাঠে গিয়েছিলাম।
রোদের চোট ছিল প্রচন্ড।খোলা মাঠে নামাজ পড়ার মজাটা কাল ভালোই উপলব্ধি করতে পেরেছিলাম।রোদ এসে যখন পিঠে পরছিল,মনে হচ্ছিলো যেন-আমাকে রোস্ট বানানো হচ্ছে।রোদের কথা ভেবেই হয়তো ইমাম সাহেবও নামাজটা তাড়াতাড়ি শেষ করেছিলেন।

IMG_20220711_082456.jpg

এবার তাড়াতাড়ি করে বাড়ির ভেতর গিয়ে ড্রেস চেইঞ্জ করে আশেপাশের দুই তিনজন আংকেলকে ডাক দিয়ে গরুকে সাথে নিয়ে হুজুরের জন্য অপেক্ষা করছিলাম।কিছুক্ষন পর হুজুর এসে,আমাদের পশু কুরবানি দিয়েছিলেন।

প্রতিবার ভাবি,কাজে সাহায্য করবো কিন্তু,একবারো হয়ে ওঠেনা।এবারো তাই হয়েছে।তবে একদমই যে কাজ করিনি তা ঠিক না।বসে বসে তদারকি করেছি আর মাঝে মাঝে পানি-সরবত খায়িয়েছি সবাইকে।কাজ বলতে আমার এটুকুই ছিল। সব কাজ শেষ হওয়ার পর তখন বাজে দুপুর ২টা।সকালে একটু খেয়েছি,তারপর থেকে আর কিচ্ছু খাওয়া হয়নি।ক্ষুধায় নেতিয়ে পড়েছিলাম।

বাবা আর ফুফুকে বললাম,যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বাসায় চলেন।সব গোশত প্যাক করে ভ্যানে তুলে নিয়ে আমি আর ফুফু বাসার দিকে রওনা দিয়েছিলাম।আর বাবা পিছে পিছে মোটরসাইকেল নিয়ে আসছিলো।
বাসায় এসে আবার আম্মু সব ঠিকঠাক করে নিলো,তারপর মাংস রান্না শুরু করেছিল।ওইটুকু সময় যেন আর যাচ্ছিলোনা আমার।তারপর রান্না হলে খাওয়া দাওয়া সেরে একটু টিভি দেখেছিলাম।
ব্যাস,আমার ইদের দিন এভাবেই গেলো।টিভি দেখে ঘুমিয়েছিলাম ৮ টার ওদিক।তারপর এখন উঠে লিখছি।মোটামুটি এই ছিল আমার ইদের গল্প।

এসবের অন্তরালে যে বিষয়টা আমাকে,বাবাকে,আম্মুকে, ফুফুদের কষ্ট দিয়েছে তা হচ্ছে দাদির শূন্যতা।প্রতিটা কাজ দাদিকে মনে করে দিচ্ছিলো।গত বছরও আমাদের সাথে ভ্যানে করে বাসায় এলো,সবার সাথে আনন্দ করে খাবার খেলো আর এ বছরই নেই।নিয়তি কত অদ্ভুত তাইনা!

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

কোরবান ঈদ মানেই তো কাজ। আমরা তো কাজ করতে করতে পুরা দিন কেটে যায়। কোরবান ঈদে বেশি কাজ থাকে। তাই আমাদের সকলেরই অর্ধেক সময় কেটে যায় কাজ করতে বিকেল বেলায় একটু শান্তিতে থাকতে পারি খাওয়া-দাওয়া করে তারপর একটু সবাই মিলে ঘুরতে বের হই আমরা। আপনার পোস্ট ভীষণ ভালো লাগলো। শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ।

হুম,ইদুল ফিতরে একটু রিল্যাক্স থাকা গেলেও ইদুল আজহাটা ব্যস্ততার ভেতর দিয়েই যায় ভাই।
ভালোবাসা নিয়েন 🤎🥰