হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছো আশাকরি প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের সাথে সবাই ভালো আছো, আমার বাংলা ব্লগ সব সময় ভালোর পক্ষে। সবাইকে হেমন্তের শুভেচ্ছা, আজ আমি আপনাদের সামনে আমার নতুন লেখা ফুটবল বিশ্বকাপের উন্মাদনার চতুর্থ পর্ব নিয়ে হাজির হয়েছি। আমার জীবনে দেখা প্রতিটি বিশ্বকাপের মুহূর্তগুলো কেমন কেটেছে সে সম্পর্কে এবং ফুটবল বিশ্বকাপ নিয়ে আমার ভালোলাগা মন্দলাগা গুলো আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে যাচ্ছি। আশা করছি আমার লেখা পড়ে আপনাদের কাছে ভালো লাগবে।
Source
প্রথমবারের মতো আফ্রিকা মহাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ ছিল ফিফার ১৯তম আসর। এই আসরটি দক্ষিণ আফ্রিকায় ৩২ দলের অংশগ্রহণে ১১ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এই বিশ্বকাপ ছিল আমার নিজের এলাকার বাইরে অর্থাৎ পড়াশোনার সুবাদে ঢাকায় এসে দেখা প্রথম বিশ্বকাপ। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে পদার্পণের পর বন্ধুদের সাথে দেখা প্রথম বিশ্বকাপ যা আমি দারুণভাবে উপভোগ করেছি সে সময়। ফুটবল বিশ্বকাপ কে কেন্দ্র করে বন্ধুদের মধ্যে অন্যরকম উৎসব বিরাজ করতো, বিভিন্ন খাবারের আয়োজন করা হতো বিশেষ করে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের খেলা যেদিন হতো ওই দিনগুলো।
২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের চ্যাম্পিয়ন দল ছিল স্পেন, সেবার তারা ইউরো চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। হট ফেভারিট নেদারল্যান্ডসকে এক শূন্য গোলে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলতে আসা স্পেন বিশ্বকাপ জয় করে। আমার দেখা ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের বিস্তারিত অর্থাৎ গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনাল খেলা পর্যন্ত আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করব। গ্রুপ পর্বের খেলায় ৮টি গ্রুপে সর্বমোট ৩২ দলের অংশগ্রহণে খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছিল, আমার প্রিয় ফুটবল দল আর্জেন্টিনা ছিল গ্রুপ বি তে। আটটি গ্রুপ থেকে থেকে পয়েন্টে সামনের দিকে থাকা দুই দল করে মোট ১৬টি দল নকআউট পর্বের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল। গ্রুপ পর্বের বিশেষ ঘটনা হল গতবারের চ্যাম্পিয়ন এবং রানার্স-আপ ইতালি এবং ফ্রান্স দুই দলই বাদ পড়ে যায় এখান থেকে।
Source
সে সময় আমি বন্ধুদের সাথে নকআউট পর্বের প্রতিটা খেলা উপভোগ করেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে স্ক্রিনে খেলা দেখানো হতো যে সময় গুলো আমরা সবাই মিলে খুব উপভোগ করেছি। কর্মব্যস্ত জীবনে প্রবেশের ফলে সেই সময় গুলো আর একসাথে হয়ে ওঠে না, সে আনন্দগুলো আর একসাথে ভাগাভাগি করা হয় না, সে বন্ধুগুলো আর একসাথে পাওয়া যায় না। যাইহোক, এবার আপনাদের সাথে কথা বলব নকআউট পর্বের খেলাগুলো নিয়ে। নকআউট পর্ব মূলত বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্ব যেখানে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনাল এবং ফাইনালের খেলাগুলো অনুষ্ঠিত হয়। এ পর্বে একটি করে ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয় প্রতিটি দলের জন্য এবং হারলেই বাদ আসর থেকে।
নকআউট পর্বের খেলায় ষোল দলের মধ্যে আট দল জয় লাভ করে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য নির্বাচিত হয়। যে ৮ দল নির্বাচিত হয় সেগুলো হল উরুগুয়ে, ঘানা, নেদারল্যান্ড, ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, প্যারাগুয়ে ও স্পেন। নকআউট পর্বের খেলায় ষোল দলের মধ্যে আট দল জয় লাভ করে কোয়ার্টার ফাইনালের জন্য নির্বাচিত হয়। এরপর বিজয়ী ৮ দল নিয়ে শুরু হয় কোয়াটার ফাইনাল। কোয়াটার ফাইনাল খেলায় উরুগুয়ে, নেদারল্যান্ড, জার্মানি ও স্পেন জয় লাভ করে এবং তারা সেমিফাইনালের জন্য নির্বাচিত হয়। ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের কোয়াটার ফাইনাল ছিল আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল সমর্থকদের জন্য বিভীষিকাময় পর্ব, যে পর্ব থেকে এই শক্তিশালী দুই দলই বাদ পড়ে যায়। আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিল বাদ পড়ে যাওয়ার পর সমর্থকদের মধ্যে বিশ্বকাপের উন্মাদনায় কিছুটা ভাটা পড়ে।
Source
গত তিন বিশ্বকাপের মতো আমার এবারও মন ভেঙে যায় নকআউট পর্ব থেকে কারণ আমার প্রিয় দল আর্জেন্টিনা সেবার চিরশত্রু জার্মানির কাছে হেরে যায় কোয়াটার ফাইনালে। ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ব্যালন ডি'অর এবং ওই বার ফিফার বর্ষসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসির হাত ধরে সেবার আর্জেন্টিনা বেশ শক্তিশালী দল গঠন করেছিল। কোচিং পেশা হিসেবে স্বল্প অভিজ্ঞতা নিয়ে ফুটবলের মহানায়ক ম্যারাডোনার কিছু হঠকারী সিদ্ধান্তের কারণে আর্জেন্টিনাকে থামতে হয় ১০ সালের বিশ্বকাপের কোয়াটার ফাইনাল পর্ব থেকে। লিওনেল মেসির সাথে গ্যাব্রিয়েল হেইঞ্জ, মার্টিন দেমিচেলিস, হুয়ান সেবাস্তিয়ান ভেরনের মতো পরীক্ষিত পারফর্মাররা থাকা সত্বেও আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ আবারও অধরা রয়ে যায়। শক্তিশালী জার্মানির বিপক্ষে আগের ম্যাচে মেক্সিকোকে হারানো দলটি নিয়ে কোন পরিবর্তন ছাড়াই মুখোমুখি হয়েছিল। কিন্তু আর্জেন্টিনার মুখোমুখি হওয়ার আগে জার্মানি তাদের দলে বেশ কয়েকটি পরিবর্তন এনেছিল ফলাফল ৪-০ গোলে জার্মানির জয় লাভ। এতে করে প্রমাণিত হল যে একজন ভালো ফুটবলার একজন ভালো কোচ নয়।
Source
সেমিফাইনালে নেদারল্যান্ড বনাম উরুগুয়ে এবং জার্মানি বনাম স্পেন এর মুখোমুখি হয় যেখানে স্পেন এবং নেদারল্যান্ড জয়লাভ করে ফাইনালের জন্য নির্বাচিত হয়। বিশ্বকাপের ফাইনালে স্পেনের খেলোয়াড় আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার পায়ে অবিস্মরনীয় এক গোলে নেদারল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয়ের স্বাদ পায় স্পেন। সেবার স্পেন তাদের প্রথম খেলায় হেরে যাওয়ার পরও বিশ্বকাপ জয় করে। আফ্রিকা বিশ্বকাপ জয়ের স্মৃতি স্প্যানিশদের ইতিহাসের পাতায় স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
বন্ধুরা আজ এখানেই থামতে হচ্ছে, দেখা হবে আমার পরবর্তী কোন লেখা নিয়ে যেকোনো সময় সে পর্যন্ত সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। ধৈর্য নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে।
আমিতো অবাক হয়ে গেলাম ২০১০ সালের পুরো আসলেই আপনি মুখস্ত করে ফেলেছেন। এবং খুব সুন্দর করে গুছিয়ে লিখে ছেন। আসলে এত কিছু মনে রাখা অনেক টাফ। বলতে হবে আপনার খেলা সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান রয়েছে। সুন্দর করে গুছিয়ে লিখেছেন, আমিও ফুটবল খেলা অনেক ভালোবাসি। এখনো আমি খেলি যদিও বয়সের ভারটা একটু বেড়ে গিয়েছে কিন্তু খেলাধুলা দেখলে মনে হয় এখনো ১৬-১৭ বয়সের যুবক, হাহাহা। সুন্দর করে গুছিয়ে আপনার মনের ভাবগুলো আমাদেরকে প্রকাশ করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া ফুটবলের আমিও অনেক বড় ফ্যান, চেষ্টা করি ফুটবলের টুকটাক খবর রাখার। যাই হোক, আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ ভাই, আপনিতো ধারাভাষ্যকার মতোন ২০১০ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের প্রতিটি ঘটনা আমাদের মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার পুরো পোস্টটি পড়ে সত্যি অনেক ভালো লাগলো। আমিও অনেক তথ্য আগে থেকে জানতাম। বর্তমানে ব্যস্ততার কারণে খেলা সম্পর্কে তেমন একটা মনোযোগী হতে পারি না। পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। ধন্যবাদ আপনাকে ফুটবল খেলা সম্পর্কে চমৎকার তথ্য শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার পোস্ট নিয়মিত পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই, পরবর্তী পর্বে ২০১৪ বিশ্বকাপ নিয়ে আলোচনা করব।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ফাইনাল ম্যাচে অতিরিক্ত সময়ের একেবারে শেষ মূহুর্তে স্পেনের আন্দ্রে ইনিয়েস্তার সেই বিশ্বকাপ জয়ী গোল। আপনার মুখে ২০১০ বিশ্বকাপ এর জন্মাদনা এর গল্প শুনে ভালোই লাগছে। এবার হলে আমি তিনটা বিশ্বকাপ উপভোগ করব। আগের বিশ্বকাপ গুলোর উন্মাদনার গল্প পড়তে ভালোই লাগে। বেশ ভালো লিখেছেন। ধন্যবাদ আপনাকে।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
২০২২ সালের ফুটবল বিশ্বকাপের আনন্দ ভাগাভাগি হবে আমার দেখা পঞ্চম আসর,ভাইয়া অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে আমার পোস্টটি ধৈর্য নিয়ে পড়ার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit