"আমার বাংলা ব্লগ" প্রতিযোগিতা - ২৫ || তেল বিহীন সবজি আচার রেসিপি

হ্যালো বন্ধুরা, প্রিয় আমার বাংলা ব্লগের সাথে আশা করছি বেশ ভালো সময় কাটছে আপনাদের, কারণ আমার বাংলা ব্লগ সব সময় ভালোর পক্ষে। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের ভালোবাসা এবং দোয়াতে বেশ ভালো আছি, আজকে আবার আপনাদের সামনে চলে এলাম আমার নতুন লেখা নিয়ে। আমার বাংলা ব্লগে চলমান আচারের রেসিপি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের লক্ষ্যে আমার রেসিপি তেল বিহীন সবজি আচার নিয়ে অংশগ্রহণ করতে যাচ্ছি। আচার আমার খুব পছন্দের একটি খাবার বিশেষ করে টক-মিষ্টি-ঝাল আচার খুব বেশি পছন্দ করি। কিন্তু এবার আমি একটি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের আচারের রেসিপি আপনাদের সামনে শেয়ার করতে যাচ্ছি, যেটা আমি পূর্বে কয়েকবার খেয়েছি। তেল ছাড়া সবজি আচারের স্বাদ আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। আশা করি আপনাদের কাছে ভালো লাগবে বিশেষ করে স্বাস্থ্য নিয়ে যারা বেশি সচেতন তাদের কাছে আরও বেশী ভালো লাগবে, কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

তেল বিহীন সবজি আচার

প্রয়োজনীয় উপকরণ সমূহ

উপকরণ	পরিমাণ
শসা	২টি
গাজর	২টি
কাঁচা মরিচ	৫টি
বড় রসুন	২টি
পেঁয়াজ	২টি
চিনি	১ টেবিল চামচ
লবণ	১/২টেবিল চামচ
হলুদ সরিষা	১ টেবিল চামচ
ভিনেগার	পরিমাণমতো
ওরেগানো	স্বাদমতো
পানি	পরিমাণমতো

প্রস্তুত প্রণালীঃ

প্রথম ধাপ

প্রথমে তেলবিহীন সবজি আচার তৈরি করার জন্য একটি পাত্রে আমি ৬০০ গ্রাম পানি নিয়েছি এবং চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে পানি গরম করতে দিয়েছি। পানি অবশ্যই মেপে নিতে হবে কারণ যতটুক পরিমাণ পানি হবে তার অর্ধেক পরিমাণ ভিনেগার ব্যবহার করতে হবে।

দ্বিতীয় ধাপ

পানি কিছুটা গরম হয়ে আসলে আমি সেখানে হোয়াইট ভিনেগার ব্যবহার করেছি। হোয়াইট ভিনেগার হবে পানির অর্ধেক পরিমাণ, যেহেতু আমি পানি ৬০০ গ্রাম নিয়েছি সে ক্ষেত্রে হোয়াইট ভিনেগার এর পরিমাণ ৩০০ গ্রাম নিয়েছি।

তৃতীয় ধাপ

ভিনেগার ব্যবহার করার পর এই পর্যায়ে আমি এক টেবিল চামচ পরিমাণ হলুদ সরিষা ব্যবহার করেছি।সরিষা ব্যবহার করার পর পানিতে বুদবুদ আসার আগ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

চতুর্থ ধাপ

সরিষার দেয়ার পর পানিতে কিছুটা বুদবুদ আসলে আমি ব্যবহার করেছি আগে থেকে ফাটিয়ে রেখা ৫ থেকে ৬ কোয়া রসুন। রসুন ব্যবহারে আচারের স্বাদ এবং ঘ্রাণ দুটোই বৃদ্ধি করে।

পঞ্চম ধাপ

আমার সবজি আচারে ভিনেগার ব্যবহার করার কারণে স্বাদ কিছুটা টক লাগতে পারে, সেজন্য স্বাদ এর তারতম্য বজায় রাখার জন্য আমি এখানে চিনি ব্যবহার করেছি। চিনি আমি ভিনেগারের তিনভাগের একভাগ নিয়েছি অর্থাৎ ভিনেগার যেহেতু ৩০০ গ্রাম নিয়েছি চিনি এখানে ১০০ গ্রাম ব্যবহার করেছি।

ষষ্ঠ ধাপ

আচারে স্বাদের তারতম্য বজায় রাখার জন্য আমি এ পর্যায়ে ১/২ টেবিল চামচ লবণ ব্যবহার করেছি। লবণের সাথে আমি কিছুটা ওরেগানো ব্যবহার করেছি ঘ্রাণ আসার জন্য।

সপ্তম ধাপ

উল্লেখিত উপকরণসমূহ ব্যবহার করার পর প্রায় ১০ মিনিটের মত চুলার আঁচ মিডিয়ামে রেখে পানি ফুটিয়েছি।

অষ্টম ধাপ

এ পর্যায়ে আচারের পরিমাণ অনুযায়ী কাঁচের পাত্র নিয়েছি, যার মধ্যে আগে থেকে ফালি করে রাখা গাজর, শসা, কাঁচামরিচ এবং পেঁয়াজ নিয়েছি। উল্লেখ্য যে সবজিগুলো এবং কাঁচের পাত্রে কোন ধরনের পানি রাখা যাবে না। সেক্ষেত্রে আমি কিচেন টাওয়েল দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিয়েছি এবং যে কাজে আমাকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সহযোগিতা করেছে আমার সহধর্মিণী।

নবম ধাপ

এখন আমি পানিসহ রান্না করা আচারের উপাদানসমূহ কাঁচের পাত্রের মধ্যে ঢেলে দিয়েছি এবং পাত্রে ঢালার পর খুব ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মিশিয়ে দিয়েছি।

দশম ধাপ

বন্ধুরা চূড়ান্তভাবে তৈরি হয়ে গেল আমার তেল বিহীন সবজি আচার, এখানে বলে রাখা ভালো আচারটি তৈরি হওয়ার পরপরই খাওয়ার উপযুক্ত হয় না। এটি কমপক্ষে তিন থেকে পাঁচ দিন পর এভাবে রেখে দেয়ার পর তৈরি হয়। তিন থেকে পাঁচ দিন পর খেলে এর সঠিক স্বাদ পাওয়া যাবে। আমার তৈরিকৃত আচারের স্বাদ টক-মিষ্টি-ঝাল, যা ভাত, খিচুড়ি অথবা যেকোনো ফাস্টফুডের এর সাথে স্বাদ অতুলনীয়। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।

বন্ধুরা জানিনা কতটা সুন্দর ভাবে আমার তেল বিহীন সবজি আচারের রেসিপি আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পেরেছি। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ ধৈর্য নিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য, সেইসাথে ভুলত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার অনুরোধ করছি। সবার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি, অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে।