ছেলেকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত।

in hive-129948 •  9 hours ago 

হ্যালো সবাইকে

কেমন আছেন সবাই ?আশা করি ভাল আছেন। আমিও ভাল আছি আল্লাহর রহমতে। আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। ছেলেকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত আজকে আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব। আশা করি আপনাদের কাছে আমার এই পোস্টটি ভালো লাগবে।

1000044349.jpg

আজকে আরও একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। আপনারা সবাই যারা আমার পোস্টগুলো প্রতিনিয়ত পড়ে থাকেন তারা হয়তো জানেন যে বেশ কয়েক মাস আগে আমার একটা বেবি হয়েছে। বাবু হওয়ার পর প্রায় প্রতি মাসেই দুই একবার করে হসপিটালে যেতে হয়। বাবু হওয়ার পর থেকে বাবুর অসুস্থতা লেগেই রয়েছে। প্রত্যেকটা মাসেই বাবুকে নিয়ে হসপিটালে যেতে হয় একটা না একটা অসুস্থতা তার লেগেই থাকে। বাবু হওয়ার পর এখনো পর্যন্ত এমন কোন মাস নেই যে আমাকে হসপিটালে যেতে হয়নি। এক দেড় বছরে আমি প্রতি মাসে হসপিটালে গিয়েছি হসপিটালে যেতে যেতে এতটাই বিরক্ত হয়ে গিয়েছে যে এখন অসুস্থ থাকে এজন্যই ভয় পাই যে হসপিটালে যেতে হবে। বাবু হওয়ার পর তাকে বেশি রোদে দিতে পারেনি সেজন্য তার পুরো শরীরে হলুদ হয়ে গিয়েছিল সেজন্য প্রথমবার হসপিটালে যাওয়া। এরপর হয়েছিল বাবুর নাভিতে ইনফেকশন। এরপর বাবুর নিউমোনিয়ার ভাবছিল অনেক কাশি। এরপর বাবু হয়েছে স্ক্যাবিস নামের এক ধরনের অসুখ।

1000044275.jpg

স্ক্যাবিস হওয়ার পর থেকে বাবুকে প্রতি মাসে হসপিটালে নিতে হয়। কারণ ডাক্তারকে একবার দেখিয়ে যদি ওষুধ দেয় কিছুদিন পর আবার ভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। এভাবে প্রতি মাসেই স্ক্যাবিস এর উপদ্রব দিয়ে চলেছে বাবুর শরীরে। ডাক্তারও একের পর এক ওষুধ দিয়ে যাচ্ছে সবকিছু পরিষ্কার করার জন্য বলেছে কিন্তু কিছুতেই কোন কাজ হচ্ছে না। এখনও পর্যন্ত প্রত্যেকটা মাসই এভাববে হসপিটালে নিয়ে যেতে হয়। বাবুকে হসপিটাল থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে স্ক্যাবিস রোগ বাবু শরীরে দেখা যায়। বর্তমানে ও বাবু স্ক্যাবিস জন্য ওষুধ চলছে আর তারই অসুস্থতার জন্য আমাদের সবাইকেই ডাক্তার ওষুধ দিয়েছেন এবং প্রতি সপ্তাহে পুরো ঘরে সবকিছুই পরিষ্কার করতে বলেছেন। যাই হোক সবকিছুই চলছে দোয়া করবেন যাতে বাবু সুস্থ হয়ে যায় এই স্ক্যাবিস থেকে বাবু মুক্তি পায়।

1000044273.jpg

যাইহোক তবে আজকে আমি আপনাদের কাছে বাবুকে হসপিটাল নিয়ে যাওয়ার কিছু মুহূর্ত শেয়ার করব। আমাদের এলাকায় গত একমাস আগে অনেক বেশি বন্যা হয়েছিল। এতটাই মারাত্মক বন্যা হয়েছিল বিগত অনেক বছরে এ ধরনের বন্যা দেখা যায়নি। বন্যার কারণে সবকিছুই একেবারে ঢুকে গিয়েছিল মানুষ আতঙ্কে ছিল বাঁচতে পারবে তো। যেদিন থেকে বন্যার মারাত্মক আকার ধারণ করে সেদিন সকাল থেকে বাবু অসুস্থ হয়ে পড়ে। কোন ধরনের ইলেকট্রিসিটি ছিল না দীর্ঘ অনেকদিন। পুরো ঘর অন্ধকার তার মধ্যে ঘরের মধ্যে ছিল অনেক মানুষ। বিভিন্ন জায়গায় মানুষের বাড়ি-ঘর ডুবে গিয়েছে সে জন্য অনেক মানুষই আমাদের বাড়িতে এসে থেকেছে অনেক দিন। তার মধ্যে ছিল এত বৃষ্টি কাঁথা সবকিছু ভেজা ছিল।

1000044274.jpg

যাদের ছোট বাচ্চা রয়েছে তারাই জানে বাচ্চারা অসুস্থ হলে কতটা খারাপ লাগে। বন্যার আতঙ্কের মধ্যে বাবু অনেক দিন অসুস্থ ছিল। বাবুর অসুস্থতার কারণে বাবুকে ডাক্তার দেখাতে পারেনি কারণ বন্যার পানিতে বেরোনো যাচ্ছিল না। বাবুর বাবা কোমর সমান পানিতে হেঁটে হেঁটে বাজারে গিয়ে ফার্মেসি থেকে ডাক্তারকে অসুখের কথা বলে কোনরকম ওষুধ নিয়ে আসে। সেই ওষুধ খেয়ে বাবুকে কোনরকম টিকিয়ে রাখা হয় বন্যার মধ্যে। বন্যা যখন শেষ হয়ে যায় যখন চারিদিকে পানি সব নামতে শুরু করে তখন একদিন বিকেল বেলা বাবুকে হসপিটালে নিয়ে যাব ঠিক করি। বাজারের পানি সব নেমেই গেছে কিন্তু গ্রামের ভেতরের রাস্তাগুলোতে এক তখনও হাটু সমান পানি ছিল।

1000044276.jpg

বন্যার মধ্যে বাবুর কাঁথা না শুকানো বাবুকে প্রায় প্রতিদিনই ডায়পার পরানো হত। আর টানা ডায়পার অনেকদিন পরানোর বাবুর বিভিন্ন জায়গায় ক্ষত হয়ে যায়। কারণে সেদিন বাবু অনেক বেশি কান্নাকাটি করেছিল। সেদিন বাবুকে হসপিটালে নিয়ে যায়। হাটু পর্যন্ত পানির মধ্যে আমরা বাবুকে হসপিটালে নিয়ে গিয়েছিলাম। তবে সেই মুহূর্তে আমি কোনরকম ফটোগ্রাফি করার পরিস্থিতি ছিলাম না অনেক ভয়ে ছিলাম। রিক্সায় করে গিয়েছিলাম পুরো রাস্তা হাটু পর্যন্ত পানি রাস্তার পাশে অনেকগুলো পর্যন্ত ছিল। কোনটা পর্যন্ত কোনটা রাস্তা সেটাই বোঝা যাচ্ছিল না। এই পানের মধ্যে রিক্সায় করে যেতে বাবুকে নিয়ে অনেক ভয়ে ছিলাম।

কোনভাবে হসপিটাল নিয়ে গিয়েছিলাম এই পানির মধ্যে। বাজারে এসে দেখি বাজারের পানি নেমে গিয়েছে। যাই হোক সেদিন বাবুকে ডাক্তার দেখালাম ডাক্তার স্ক্যাবিস জন্য একটা লোশন দিয়েছিল এবং ডায়পার পড়ানোর কারণে যে ক্ষত হয়েছে সেজন্য একটা মলম দিল। অবশেষে বাবুকে ডাক্তার দেখানোর পর আবারও কোনরকম ভাবে বাড়িতে এলাম। বাড়িতে আসার সময় রিক্সাওয়ালা পানির মধ্যে আসতে চাইছিল না। বলছিল হেঁটে যাওয়ার জন্য ছোট একটা বাচ্চা নিয়ে এই হাটু পর্যন্ত পানির মধ্যে কিভাবে হেঁটে যাব তার মধ্যে আমি নিজে অনেক অসুস্থ ছিলাম।রিক্সাওয়ালা কে অনেক রিকোয়েস্ট করে এই পানির মধ্যে বাড়ি পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। যাইহোক বন্যার মধ্যে অনেক রকমের অভিজ্ঞতাই হয়েছে এরকম বন্যায় এর আগে কখনো দেখা হয়নি।

পোস্ট বিবরণ

শ্রেণীট্রাভেল
ফটোগ্রাফার@fasoniya
ডিভাইসVivo Y15s
লোকেশনবাংলাদেশ


আমার পরিচয়

1664774022741.jpg

আমার নাম ফারজানা আক্তার সোনিয়া। আমি বাংলাদেশী।আমি বর্তমানে লেখাপড়া করি আমি একজন স্টুডেন্ট। আমি আর্ট করতে ভালোবাসি আর যখনই সময় পাই তখনই আর্ট করি।আমি ফটোগ্রাফি করতে খুবই ভালোবাসি । যখনই কোথাও খুব সুন্দর কিছু আমার চোখে পড়ে আমি ফটোগ্রাফি করে ফেলি। এছাড়াও আমি ক্রাফট তৈরি করে থাকি । বিভিন্ন ধরনের রান্না করে থাকি রান্না করতে অনেক পছন্দ করি। আমি আমার পরিবারের সবচেয়ে বড় মেয়ে । আমার ছোট ছোট দুইটা ভাই আছে। আমার অনেক স্বপ্ন রয়েছে যেগুলো স্টিমিট এ কাজ করে পূরণ করতে চাই।


1 (1).png

IMG-20221013-WA0015.jpg

1000041574.jpg

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার ছেলের কথা শুনে বেশ খারাপ লাগলো। হওয়ার পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের অসুখ হচ্ছে তার। নিয়মিত ডাক্তারের চেকআপে রাখতে হয় তাকে। বাবুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার মুহূর্ত গুলো আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। যাইহোক, আপনার বাবুর জন্য দোয়া রইল যেন খুব শীঘ্রই সুস্থ হয়ে ওঠে।

একটা বাচ্চা ছোট থেকে বড় করা খুবই কষ্টের। বাচ্চাদের অসুখগুলো হঠাৎ করে হয়ে যায়। আর বাচ্চাদের অসুখ হলে মা-বাবাদের কোন শান্তি থাকে না। আপনি বাবুকে নিয়ে হাসপাতালে গেলেন। বাবুর অসুস্থতা দেখে খুবই খারাপ লাগলো। আপনার বাবুর সুস্থতা কামনা করছি সৃষ্টিকর্তা যেন দ্রুত সুস্থ করে দেয়।

বাবুকে হসপিটালে নিয়ে যাওয়ার মুহূর্ত আমাদের মাঝে খুব সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন। দোয়া করি বাবুর জন্য। বাবু জানো সব সময় সুস্থ থাকে আপনাদের মুখে হাসি রাখতে পারে সেই দোয়া রইল।