❤️হ্যালো বন্ধুরা,❤️
" 🤪প্রথম প্রেমের অনুভূতি 🤪"
" এমনকি প্রথম প্রেম বিজয়ের মাঝামাঝি সময়ের অনুভূতি "
প্রেম থেকেই মূলত ভালোবাসার সৃষ্টি । ভালোবাসার সাথে মানুষের জীবনের অনেক কিছুই জড়িয়ে রয়েছে। ভালোবাসার আবেগ, উপলব্ধি, অনুভূতি অনেক কিছুই মিশে রয়েছে । আর এই সব কিছুর বিনিময় মূল্য একটাই তা হচ্ছে ভালোবাসা। আমি মনে করি মানুষের জীবনে ভালোবাসা সুখ-দুঃখ, হাসি - কান্না এইসব কিছু বয়ে আনে। আর এসব কিছু ছাড়া একটা মানুষের পরিপূর্ণতা পাওয়া যায় না। এমনকি একজন নারী পুরুষের প্রতি একটা আকর্ষণ এবং একজন পুরুষ একজন নারীর প্রতি একটা আকর্ষণ সৃষ্টি হয়। আর এই আকর্ষণ টাই মূলত একটা ভালোবাসায় পরিণত হয়। এক্ষেত্রেই শুরু থেকে আস্তে আস্তে প্রথম প্রেমে পরিণত। আমি মনে করি সকলের জীবনে প্রথম প্রেমটাই হচ্ছে শ্রেষ্ঠ।
এ পর্যন্ত সবার অনেক সুন্দর সুন্দর প্রথম প্রেমের কাহিনী গুলো পড়লাম। একেকজন একেক রকম ভাবে তাদের কাহিনীগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করেছে। কারো সাথে কারো প্রেম কাহিনীর মিল নেই। তাই জন্য আমিও নিজের মতো করে আজকে কিছু লেখার চেষ্টা করব। এমনকি নিজের বিশেষ কিছু অনুভূতি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।
আমার জীবনে আসা যেটা প্রথম প্রেম সেটাই যেনো শেষ প্রেম হয়। সবার কাছে সে প্রার্থনা🤲 করে লেখা শুরু করছি। আমার জীবনের প্রথম প্রেমের অনুভূতি গুলো।
আসলে প্রেম হল এক প্রকার ভালোবাসা, যেখানে অনুভূতি থাকে, আবেগ থাকে, উত্তেজনা থাকে, সংগ্রাম থাকে এবং থাকে ভালো লাগার আনন্দময় কিছু মুহুর্ত। যার কারনে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে প্রেমে একটা আকাংখা থাকে। কেউ যেমন ইচ্ছে করে কারো প্রেমে পরে ঠিক তেমনি কেউ কেউ ইচ্ছা না থাকা সত্বেও অনিচ্ছায় কারো প্রেমে পরে যায়।এই প্রেম মানুষ কে বিভিন্ন ভাবে আকৃষ্ট করে।
আমি আসলে গ্রাম থেকে বড়ো হয়েছি।আমি যখন বড়ো হয়েছি বুঝতে শিখেছি সেই সময়ে সবার হাতে হাতে ফোন ছিল না। গুটি কয়েকজন মানুষের হাতে মোবাইল ফোন ছিলো। যাই হক আস্তে আস্তে বড়ো হতে থাকি আমার পড়াশোনা ও চলতে থাকে।এস এস সির আগ মহত্ত্ব পর্যন্ত প্রেম ভালোবাসা বলে কোনো জিনিস আছে এটা বুঝতাম না।এবার ইন্টারমেডিয়েট ভর্তি হয়ে গেলাম শুরু হয়ে গেলো আমার কলেজ লাইফ। প্রথম প্রথম কলেজ বেশ ভালো লাগে।অনেক বন্ধু বান্ধবী পেয়ে মজাই মজাই প্রতিদিন ক্লাস করা শুরু করলাম।মাস খানিক যেতে না যেতেই ২-৩টা প্রপোজাল পেলাম।সেই সময়ে ও বুঝে উঠতে পারিনি প্রেম ভালোবাসা টা আসলে কি?। অন্য বন্ধুরা তাদেরকে নিয়ে আমাকে টিচ করতো।আমি অনেক শান্ত সবাবের মেয়ে ছিলাম সব নিরবে শুনতাম তাদের কিছু বলতাম না কোনো উত্তর দিতাম না।এভাবেই চলে যায় আমার কলেজ লাইফ।
এবার ভর্তি হলাম বগুড়া ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে।২০১২ সালে আমার প্রথম বর্ষ চলে।সময় টা বেশ ভালোই কাটছিলো প্রথম মেছ লাইফ।আমি বগুড়ায় আসার পর ও আমার হাতে কোনো মোবাইল ফোন ছিলো না বান্ধবীদের ফোন থেকে বাসায় কথা বলতাম।এভাবে ৬ মাস চলে গেলো। ঠিক ৬ মাস পর বাসা থেকে একটা বাটন ওয়ালা ফোন দিয়ে দিলো।দেখতে দেখতে আমার প্রথম বর্ষের পরীক্ষা সময় ও চলে আসলো। এতো বছর পার হয়ে আাসার পর ও প্রেম নিয়ে কোনো চিন্তা ভাবনা নেই। এর মধ্যে আমার বান্ধবীর পরিচিত একটা ছেলে না দেখে মুঠো ফোনে কথা বলে আমাকে প্রেমের প্রপোজাল দেই তাতেও আমি মোটেও রাজি ছিলাম না।
প্রথম বর্ষের পরীক্ষার ঠিক ২ মাস আগে দিনটি ছিলো মঙ্গলবার ২০১৩ সাল আমার ফোনে মেসেজ আসে। মেসেজ পড়ে বেশ ভালোই লাগছিলো। এভাবে এক ঘন্টা পর পর একটা করে মেসেজ পড়ে ডিলেট না করে রেখে দিলাম আর মনে মনে হাসলাম আর বললাম কে এই বেচারা একটানা তিন দিন মঙ্গলবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত মেসেজ করে আমার
ফোনের ইনবক্স ফুল করে দিয়েছে। শুক্রবার ঠিক ৩ টাই মেসেজ আসা নাম্বারে কল করলাম।কল দিয়ে বললাম কে আপনি এতো মেসেজ করেন কেনো বলতে সে বলে উঠলো আমাকে চিনবেন না আমার বাসা নওগাঁ। তখন আমি বললাম আপনি আমার ফোনের ইনবক্স ভরে দিয়েছেন এতো মেসেজ করার কি দরকার আছে বলেন।তখন সে বলে উঠলো আপনি আমার বন্ধু হবেন আমি বললাম না আমি তো আপনাকে চিনি না কিভাবে বন্ধু হবো।তখন সে আবারও বললো আমি যদি আপনার আশে পাশে থাকি তাহলে কি আমার সাথে কথা বলবেন। আসলে আমি ছেলেদের সাথে কথা বলতাম না বললেই চলে খুব কম প্রয়োজন ছাড়া বলতাম না।আমি আপনার সাথে কথা বলবো না বলে ফোনটা কেটে দিলাম।
এরপর ও আমাকে কল ব্যাক দিয়ে বললো প্লিজ ফোন কাটবেন না তখন আমি রাগ নিয়ে বললাম কি বলবেন বলেন।তখন সে বললো আমরা দুজন ভালো বন্ধু তো হতে পারি। আমি বললাম আপনার বন্ধু হলাম তার পর। সে আমার পরিচয় নেওয়া শুরু করে দিলো বাসা কোথায় কয় ভাই বোন এই সুযোগে আমি ও তার সব কিছু শুনে নিলাম।এবং জিজ্ঞেস করলাম আমার ফোন নাম্বার টা কোথায় পেয়েছেন।সে বলে এখন ফোন নাম্বার পাওয়া কোনো ব্যাপার। কিভাবে পাইছেন বললে ভালো হয় সে বলে একটা কাগজে অনেক গুলো নাম্বার ছিলো সেখান থেকে নাম্বারটা পেয়েছি আসলে ছেলেরা মেয়েদের অনেক টা বোকা ভাবে। তবে আমি একটু বোকা টাইপের ছিলাম তবে নাম্বার পাওয়ার বিষয়টি বিশ্বাস করতে পারি নি। এই বলে আমি বললাম সত্যি কথা বললে আপনার সাথে কথা বলবো নইলে ফোন টা কেটে দিবো।ফোন কেটে দেওয়ার কথা শুনে সে সত্যি কথা গুলো বলা শুরু করলো। ওর মেছের একটা ছেলে ওকে নাম্বারটা দিয়েছে। ওকে আমি একের পর এক প্রশ্ন করেই চললাম ওই ছেলে কিভাবে পাইছে। সে এবার সত্য কথা গুলো বলা শুরু করলো।আমার মেছ মালিকের বউ তার সাথে আমার খুব ভালো সম্পর্ক ছিলো ভাবির বাসায় ওই ছেলে ডিসের বিল তুলতে আসতো।ছেলেটা নরম স্বভাবের ছেলেটা ভাবির অনেক পছন্দের ছিল এক দিন ভাবি আমাকে বলে ফেললো ডিসের বিল তুলতে আসা ছেলেটা তোমাকে পছন্দ করে প্রেম করবা তখনো আমি না বলেছিলাম। ভাবি এক সময় ছেলেটাকে আমার ফোন নাম্বার দিয়েছে। ছেলেটা অনেক ভিতু টাইপের ছিলো সে আমাকে কল দেওয়ার সাহস পাইনি।এই ছেলের কাছে থেকে সে আমার ফোন নাম্বার টি পেয়েছেন। তখন আমার বিশ্বাস হয়েছে।এতো কিছু শোনার পর আমি তাঁকে বলেছি ঠিক আছে বন্ধু হতে পারেন তবে কল দেওয়া যাবে না।আমি আপনার বন্ধু হিসাবে সপ্তাহে অথবা মাসে একদিন কল করে আপনার খোঁজ খবর নিবো।তাতে সে রাজি হলো না সে বলে আমি কল দিবই।তাকে আর আমার পক্ষে কোনোভাবেই বুঝানো সম্ভব হলো না।রাতে কথা হলো সকালে সে আমার সাথে দেখা করবে।
দিন টি ছিলো শনিবার ৩০-৪-২০১৩ বিকাল ৩ টাই আজিজুল হক কলেজ ক্যামপাসে তার সাথে আমার প্রথম দেখা হয়। সবুজ ঘাসের উপর বসে বাদাম খেতে খেতে ১ ঘন্টা তার সাথে আমার অনেক কথাই হলো।এক ঘন্টা পর উঠে একটা রেস্টুরেন্টে গেলাম একটা কপি ও মোগলাই অডার কনফার্ম করলো।খেয়ে দুজনেই রাস্তা দিয়ে হাঁটা শুরু করলাম এক সময় সে বললো তোমার মেছে এগিয়ে দিয়ে আসবো আমি বললাম না লাগবে না। এ পর্যন্ত আমাদের মাঝে প্রেম বিষয়ে কোনো কথা ওঠে নি।জাস্ট দুজন দুজনকে দেখলাম।
এবার সন্ধা পেরিয়ে রাত আমার ফোনে তার কল বেজে উঠল।
কল রিসিভ করলাম সে বললো রাত ৯ টার পর কথা হবে।এ দিকে আমার মনের মাঝে প্রেমের ঘন্টা বাজতে শুরু করলো।মনের মধ্যে কেমন একটা অস্থিরতা কাজ করছে বুঝে শেষ করতে পারবো না।ঠিক রাত ৯ টাই আমার ফোনে তার কল বেজে উঠল।কল রিসিভ করলাম সে বললো রাতে খেয়েছো আমি বললাম হে আপনি খেয়েছেন তখন সে বললো না আমি এখনো খাই নি পড়ে খাবো।সে তখন বললো একটা কথা শোনার পর খাবো আমি বললাম কি কথা বলেন শুনি।সে তখন বলা শুরু করলো তোমাকে আমার খুব ভালো লেগেছে তোমাকে দেখার পর ভালোবেসে ফেলেছি। আমাকে তোমার কেমন লেগেছে আমি বললাম আপনি ও অনেক ভালো সুন্দর কিন্তু ভালোবাসার জন্য না।মেয়েদের বুক ফোটে তাও মুখ ফোটে না কথাই আছে না।আমার কাছেও তাকে অনেক ভালো লেগেছে।রাত ৯ থেকে ভোর ৪ টা পর্যন্ত কথা তবু যেনো কথা বলা শেষ হয় না।সে কোনো ভাবেই আমাকে কল কাটতে দেয় না।দুজনের কোনো রকম ঘুম নেই সকাল পেরিয়ে দুপুর কল কাটবো সে আমাকে গোসলের জন্য ও নামাজের জন্য ২০ মিনিট সময় দিয়ে দিলো।ঠিক ২০ মিনিট পর আবারও তার কল সে আমাকে কোনো ভাবেই প্রেম করার জন্য রাজি করাতে পারছে না।সে বলে যতোক্ষণ আমি রাজি হবো না ততোক্ষণ সে ফোন কাটবে না। কথা চলতেই থাকে ফোনের চার্জ শেষ ফোন গরম তার পরও কথা বলার কোনো কমতি নেই। এভাবে ৩ রাত ২ দিন পর রাজি হয়ে গেলাম। তিন দিন তিন রাত জাগা পাখি তার আমি ওর জন্য সবাই দোয়া করবেন। পরের দিন সকালে ওর চাঁচি মারা যায় ও বাড়িতে চলে যাবে। ওকে বললাম আমি ও তাহলে আমার বাড়িতে যাবো ও তখন বলে ঠিক আছে রেডি হও তোমাকে বাসে তুলে দিয়ে আমি চলে যাবো।এখন পর্যন্ত আমাদের প্রেম টুকটুক করে চলছে।
প্রথম প্রেমের অনুভূতি আসলে বলে শেষ করা যাবে না। যে প্রেমে পড়ছে সে বোঝে প্রেমের অনুভূতি গুলো কতটা মধুর হয়। প্রথম প্রেম মানেই তো মন কেমন করা, বুকের মধ্যে কী যেন এক তোলপাড় করা অনুভূতি। প্রেম যদি হয় সোনালি স্মৃতি, প্রথম প্রেম, তবে সোনারঙে আঁকা স্মৃতির ঝরোকা। প্রেম আসে প্রেম যায়, কিন্তু প্রথম প্রেম একান্ত ব্যক্তিগত অনুভূতি হয়ে রয়ে যায় মনের গহিনে। 'প্রথম প্রেমের মতো আর প্রেম হয় না প্রথম প্রেমে সুখ আছে শান্তি আছে তাই তো দীর্ঘ নয় বছরের প্রেম আজো ঠিকে আছে।দুই পরিবারই থেকেই আমাদের প্রেম ভালোবাসা মেনে নিয়েছে ইনশাআল্লাহ কিছু দিন আগে আমাদের এনগেজমেন্ট হয়েছে দুই পরিবার থেকে। নভেরা প্রথম সপ্তাহে বিয়ের দিন ঠিক করা হয়েছে ইনশাআল্লাহ দোয়া করবেন আমাদের জন্য যেনো ভালোবাসার জয় ছিনিয়ে আনতে পারি।আমরা দুজনেই চাকরির প্রত্যাশী যার কারনে বিয়ে করার ডিসিশন নিতে একটু লেট করে ফেলেছি। তবুও জয় আমাদের হাতেই।
প্রথম প্রেমটাই আমার জীবনে শেষ প্রেম । এমনকি প্রথম প্রেম এখনো পর্যন্ত একই রকম রয়েছে। এইভাবে নিজের জীবনে সুখে এমনকি আনন্দে কাটাতে পারবো বলে মনে করি।আমার বিয়েতে আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সবাইকে দাওয়াত করবো ইনশাআল্লাহ। সবাই আমার হবু বরের জন্য দোয়া করবেন এর মধ্যে ওর যেনো একটা জব এর ব্যাবসথা আল্লাহ করেন।দোয়া করবেন আমাদের জন্য খুব তাড়াতাড়ি যেনো দুজন দুজনকে জীবন সঙ্গী করে পাই।
আপনার ভালোবাসার মানুষের সাথেই আপনার বিয়ে হচ্ছে একথা জেনে খুবই ভালো লাগলো। আপনার এবং আপনার হবু বরের জন্য রইল অনেক অনেক শুভকামনা।ভালো থাকবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্য করার জন্য। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি একটা টিকেট ক্রিয়েট করে আমাকে মেনশন দেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক করে দিয়েছি ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাক বেচারা তাহলে অনেক কষ্ট করে আপনাকে রাজি করিয়েছে। আপনাদের ভালবাসা সফল হোক । আর বিয়ের আগে একটা জব হয়ে যাক। আপনাদের জন্য শুভ কামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর কমেন্ট করছেন আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit