অনেকদিন পর বিয়ের দাওয়াত। 10 শতাংশ লাজুক শেয়ালেরর জন্য।

in hive-129948 •  3 years ago  (edited)

আজ-২০ জ্যৈষ্ঠ /০৩ জুন | ১৪২৮, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| শুক্রবার | গ্রীষ্মকাল |


আসসালামু-আলাইকুম।

20220602_172146.jpg

Location

কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজ আমি আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করব একটি বিয়ের অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতা। বেশ কয়েক মাস যাবত কোন নিমন্তন্ন খাওয়া হচ্ছিল না। কাছের আত্মীয় স্বজনের বিয়ে-শাদীর অনুষ্ঠান প্রায় নেই বললেই চলে। তাই হঠাৎ করে যখন একটি বিয়ের নেমন্তন্ন পেয়ে গেলাম তখন তা ছেড়ে দেয়ার প্রশ্নই আসে না। ঘটনাটা তাহলে খুলেই বলি। আমার বৈবাহিক সূত্রে আত্মীয় অর্থাৎ আমার দূর সম্পর্কের এক শালার বিয়ে। চার পাঁচ দিন আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দাওয়াত পৌঁছে গেল বাড়িতে। একটা সময় ছিল যখন এ ধরনের দাওয়াত গ্রহণে অনেকেরই আপত্তি ছিল কিন্তু এখন মোবাইল ফোনে দাওয়াত দেয়া নেয়া তেমন কোনো অসম্মানের বিষয় নয়। তাই আমরাও প্রস্তুতি শুরু করে দিলাম আসন্ন বিয়ে উপলক্ষে সব রকম আয়োজনের।

wedding-2595862_1920.jpg

Source

গত বুধবার ছিল গায়ে হলুদ। ছেলে বিদেশ ফেরত তাই পয়সার অভাব নেই। বেশ ধুমধাম আর জাঁকজমকের সঙ্গেই আয়োজন করেছিল সবকিছু। যদিও আমার এই ধরনের উৎসবে খুব বেশি আগ্রহ নেই। তারপরেও নিতান্তই বাধ্য হয়ে যেতে হয়েছিল গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে। অনুষ্ঠান শেষ হতে হতে রাত প্রায় 11 টা। বিয়ে বাড়ি আর আমাদের বাড়ির ব্যবধান বড়জোর 12/13 কিলোমিটার। তাই বাইক নিয়ে ফিরে আসলাম সেখান থেকে। পরের দিন বরযাত্রীর দাওয়াত। কনের বাড়ি শহর থেকে বাইরে গ্রামের দিকে। তবে বরযাত্রীর সংখ্যা ছিল নিতান্তই কম। সর্বসাকুল্যে 40 জনের মতো। আপনারা হয়তো জানেন বিয়ে বাড়িতে গেট ধরা নামে একটি অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। যেখানে কনে পক্ষের লোকেরা বরপক্ষের কাছ থেকে গেট সাজানো ও অন্যান্য খরচ বাবদ কিছু টাকা আদায় করে থাকে। এই সমস্ত অনুষ্ঠান শেষ করতে করতে বিকেল পাঁচটা। ততক্ষণে পেটের মধ্যে ছুঁচোর কেত্তন শুরু হয়ে গেছে। যাই হোক খাবারগুলো যখন সামনে আসলো তখন পেটের মধ্যে উথাল পাতাল অবস্থা। প্রথমেই ঠান্ডা শরবত পরিবেশন করা হল সকলের জন্য। এরপর পোলাও এর সাথে মুরগির রোস্ট, ইলিশ মাছ, পটল ভাজা, বেগুন ভাজা, গরুর মাংস, ডিমের কোপ্তা, বড় সাইজের গলদা চিংড়ি ফ্রাই, আর ছিল সালাদ। সবশেষে দই মিষ্টি আর কোমল পানীয়। এরকম হরেক রকম সুস্বাদু খাবার দিয়ে পেটপুজো সেরে ফেললাম আর ভদ্র লোকদের মতো খাওয়া শেষ হতেই বাড়ির পথে ফিরে আসলাম। অবশ্য এর মধ্যে গোলযোগ বেঁধেছিলো গেট ধরা নিয়ে। তবে আমি বরাবরই সবরকম ভেজালের বাইরে থাকা লোক হাহাহা।

drink-4075806_1920.jpg

Source

তৃতীয় দিন ছিল বৌভাতের অনুষ্ঠান। ইতিপূর্বে 2 টি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছি তাই আজ ইচ্ছে না থাকলেও বাধ্য হয়েই যেতে হয়েছিল। আজ অবশ্য দুপুরের খাওয়া সময়মতোই খেয়েছিলাম। আয়োজনে ছিল না কোনো কমতি, ছিল না কোনো বিশৃঙ্খলা তাই নির্বিঘ্নেই খাবার অনুষ্ঠান সম্পন্ন হল। সত্যি বলতে কি মাঝে মাঝে এ ধরনের বিয়ের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে ভালই লাগে। বিশেষ করে রোস্ট, বিভিন্ন ধরনের মাংস, দই, মিষ্টি, হরেক রকমের পিঠা, মাছ আরো নানা রকমের বাহারি আর সুস্বাদু খাবারের প্রতি আমার বিশেষ দুর্বলতা আছে। তাই এ ধরনের অনুষ্ঠানের নেমন্তন্নের লোভ সামলানো সত্যিই মুশকিল। তবে এতকিছুর পরেও একটা বিষয়ে আফসোস থেকে গেল আর তা হচ্ছে কোন ছবি তুলতে না পারার ব্যর্থতা। এমনিতেই আমি নিজের তেমন কোন ছবি তুলি না। তবে যখনই পোষ্ট করার কথা মনে হল মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়েছিল। কারন আমি তো কোন ছবি তুলিনি। যাই হোক আজকের মতো এতোটুকুই। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

একটি বিষয় দেখলাম ভাই বিয়ে বাড়িতে গেলেন দুই দিন দাওয়াত খেলেন কিন্তু সেখানকার কোন ছবি পোস্ট করেননি। তবে আমি অনেকদিন ধরে কোন বিয়ে খাইনি। যদি আশেপাশে কেউ বিয়ে করে তাহলে আমার জন্য ভালই হয়, ধন্যবাদ আপনাকে।।

সত্যি বলতে কি ভাই আমি আমার নিজের ছবি খুব একটা তুলি না। তবে বিয়ে বাড়ির ছবি তোলার কথা বিভিন্ন ঝামেলায় একেবারেই মনে ছিল না। পরবর্তীতে যখন পোস্ট করতে গেলাম তখন তো আমার মাথায় হাত। শুধুমাত্র কয়েকটি ছবির অভাবে এই সম্পূর্ণ পোস্টটাই সৌন্দর্য হারালো। যাই হোক বিয়ে বাড়িতে সময়টা কিন্তু ভালই কেটেছিল। ধন্যবাদ

এখন মোবাইল ফোনে দাওয়াত দেয়া নেয়া তেমন কোনো অসম্মানের বিষয় নয়।

কথাটা সত্য, তবে কিছু৷ পুরোনো মুরুব্বি আছে তারা মোবাইলে দাওয়াত এর বিষয়টা ভালো চোখে দেখে না। তারা এটা ভাবে না এটা প্রযুক্তির যুগ মানুষ আধুনিক হয়েছে। আপনার শালার বিয়েতে ভালোই আয়োজন করা হইছিলো। তবে আপনি শুধু নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছেন। 😁

জি ভাই ঠিক হই বলেছেন তবে মানুষের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন হচ্ছে আস্তে আস্তে। সত্যি বলতে কি দুলাভাই হিসেবে কিছু দায়িত্ব থাকলেও আমি বরাবরই এগুলো থেকে পালিয়ে বাঁচি।

জ্বি ভাই একদম ঠিক বলেছেন এখন আসলে দাওয়াত মোবাইলে দেওয়া হয় এটা কোন অসম্মানের ব্যাপার হয়না। কিন্তু আগে যদি দাওয়াত মোবাইলে দেওয়া হতো তাহলে কিন্তু মানুষ দাওয়াত গ্রহণ করত না। মাঝে মাঝে মাঝেই বিয়ের দাওয়াত হয় তবে ভালো লাগে। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে বিয়ের দাওয়াতের অনুভূতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

এমন অনেক ঘটনাই আছে মোবাইলে দাওয়াত দেবার কারণে অনেকেই বিয়ের অনুষ্ঠানে আসেনি। কারণ তারা এটাকে অপমানজনক মনে করত কিন্তু এখন মানসিকতার অনেকটাই পরিবর্তন হয়েছে। ধন্যবাদ ভাই

কি ব্যাপার বিয়েতে গেলে ছবি দিলেন না 🤭। আমাদের দেখার সুযোগ হলোনা। আপনার শালার বিয়ে তাহলে ভালোই জাঁকজমক হয়েছিল। গেটে ধরাতে কত টাকা দিয়েছিল? 😄

ভাই ছবি আমি একেবারেই কম তুলি কিন্তু ঐদিন ছবি তোলার কথা একটুও মনে ছিল না।

প্রথমত পোস্ট অনেক ছোট।

দ্বিতীয়তঃ আপনার নিজের কোন ফটোগ্রাফি নেই। এ ধরনের পোস্টে নিজের ফটোগ্রাফি এড করতে হয়।

তৃতীয়তঃ আপনি ফটোগ্রাফারের নাম এবং ডিভাইস উল্লেখ করেছেন। বাট ফটোগুলো তো আপনার না।

Notification-এ আপনার কমেন্ট দেখেই বুঝতে পেরেছিলাম কিছু একটা সমস্যা হয়েছে। ভাই ছবি তোলার কথা একেবারেই মনে ছিল না। তাছাড়া নিজের ছবি তুলতে আমার একেবারেই ভাল লাগেনা। দয়া করে দেখেন এবারের মত যদি কিছু করা যায়। বাকি বিষয়গুলো মোটামুটি ঠিক করে দিয়েছি।

তবে এতকিছুর পরেও একটা বিষয়ে আফসোস থেকে গেল আর তা হচ্ছে কোন ছবি তুলতে না পারার ব্যর্থতা।

ভাইয়া,ছবিগুলো যদি তোলতেন তাহলে ভালই হতো দেখে নিতাম বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন এবং খাবার গুলো 😔ভাইয়া,যে খাবারের মেনু কথা বলেছেন আমি খাবারের নাম গুলো পড়ে পড়ে জিভে জল এসে যাচ্ছে। আসলে সত্যি কথা কি ভাইয়া,বিয়ে দাওয়াত এখন বেশিরভাগ মোবাইলে দেওয়া হয়।আগে বিয়ের দাওয়াত দেওয়ার জন্য কার্ড নিয়ে বাড়িতে চলে আসত ঐ দিনগুলো এখন চলে যাচ্ছে প্রযুক্তির কারণে। ভাইয়া, বিয়ের মধ্যে গেটে বর পক্ষ থেকে টাকা আদায় করার জন্য অনেক ঝামেলা হয় এটা সত্যি কথা🤭 ভাল লেগেছে ভাইয়া, আপনার পোস্ট পড়ে অনেক সুন্দর পোস্ট আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন।।

শুধুমাত্র ছবি না তোলার কারণে আমার পোস্টের ভ্যালু অনেক কমে গেছে সেটা আমি এখন বেশ বুঝতে পারছি। তিন দিনের এই প্রোগ্রামে কোন ছবি তুলতে পারিনি আসলেই বড় একটা আফসোসের বিষয়। তবে খাওয়া-দাওয়া এবং আয়োজন কিন্তু কোন অংশে কম ছিলনা। ধন্যবাদ আপু

বেশ কয়েক মাস যাবত কোন নিমন্তন্ন খাওয়া হচ্ছিল না।

আসলে অনেকদিন বিয়ে না খেলে মনের মধ্যে কেমন যেন একটা খাই খাই চলে আসে। অনেকদিন পরে আপনি আপনার শালার বিয়ে খেতে পারলেন এটা জেনে ভালো লাগলো। কয়েকদিন আগে আমিও একটা বিয়ে খেয়ে এসেছি খুবই মজা লাগে বিয়ে খেতে আমার কাছে।

মাঝে মাঝে এমন বিয়ের দাওয়াত পেলে ভালই লাগে। হরেক রকম খাওয়াও যায় সেই সঙ্গে আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ ও হয়। ধন্যবাদ ভাই