জসীম পল্লী মেলা ভ্রমণ (দ্বিতীয় পর্ব)। 10% লাজুক শিয়ালের জন্য।

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ- ১৪ জ্যৈষ্ঠ/২৮ মে| ১৪২৮, বঙ্গাব্দ/২০২২ খ্রিস্টাব্দ| | গ্রীষ্মকাল |


আসসালামু-আলাইকুম।

কেমন আছেন বন্ধুরা। আশা করি সবাই ভাল আছেন। জসীম পল্লীমেলা দ্বিতীয় পর্ব নিয়ে আবারো হাজির হয়ে গেলাম আপনাদের সামনে। দেখতে দেখতে বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেছে। মেলা শুরুর আগের দিন গিয়েছিলাম মেলা মাঠে। এরপরে আর যাওয়া হয়নি। প্রায় আট দশ দিনের ব্যবধানে পাঁচজনের এক বাহিনী নিয়ে উপস্থিত হলাম মেলার মাঠে। শুরুতেই বিপত্তি। রিকসা থেকে যেখানে নামিয়ে দিল সেখান থেকে মেলারমাঠ প্রায় এক কিলোমিটার। এতটা দূরত্ব বাচ্চা আর মেয়েদের নিয়ে অতিক্রম করা আসলেই কষ্টের ছিল।

20220527_202204.jpg

20220527_182024.jpg

মেলার এক প্রান্তে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চ। যেখানে প্রায় সারাদিনই অনুষ্ঠিত হয় নাচ গান সহ বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। আমরা যখন সেখানে পৌছালাম তখন ব্যান্ডসঙ্গীত চলছিল। আর ভিড়টাও এদিকেই বেশি লক্ষ করলাম। মেলার অন্য প্রান্তে বিশাল তাঁবু টানিয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে সার্কাস। শিশু-কিশোরসহ সকলেরই অন্যতম আকর্ষণ এর কেন্দ্র বিন্দু এই সার্কাস। প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হাতির ফুটবল খেলা সার্কাসের অন্যতম আকর্ষণ।

20220527_184056.jpg

20220527_184050.jpg

20220527_184021.jpg

ঘুরতে ঘুরতে দেখলাম বেশ কয়েকটি আচারের স্টল। কি নেই সেখানে। কত রকমের যে আচার তার হিসেব নেই। আরেকটু সামনে দেখতে পেলাম বাহারি পানের স্টল। আগুন পান নামে সম্পূর্ণ নতুন একটি আইটেম দেখতে পেলাম সেখানে। পানের মধ্যে বিভিন্ন রকম মসলাসহ একটা কেমিক্যাল দিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। আর জ্বলন্ত অবস্থাতেই সে পান পুরে দেয়া হয় কাস্টমারের মুখে। বেশ ভির দেখলাম এই দোকানটিতে।

20220527_184711.jpg

20220527_184538.jpg

20220527_184430.jpg

20220527_184424.jpg

মেলার একদিকে কিছুটা ফাঁকা জায়গায় আয়োজন করা হয়েছে বাচ্চাদের জন্য বিভিন্ন রাইডের। নাগরদোলা, জুজু ট্রেন, ডান্সিং কার সহ আরো বেশ কয়েক ধরনের রাইড স্থান পেয়েছে সেখানে। টিকিটের মূল্য 50 থেকে 100 টাকা। শুক্রবার হওয়ায় মেলার সর্বত্রই ছিল প্রচণ্ড রকমের ভিড়। দোকান পসরা আর বেচাকেনার কমতি না থাকলেও সবচাইতে বেশি ভিড় লক্ষ্য করলাম খাবার দোকানগুলোতে। এত বড় একটা মেলায় এসে কিছু না খেয়ে গেলে কেমন হয়। ঢুকে পরলাম একটি ফুচকা চটপটির দোকানে কিন্তু সেখানকার খাবার আর সার্ভিস এর মান এতটাই জঘন্য যা বলার অপেক্ষা রাখে না। যাই হোক বেশ কয়েক বছর পর পুনরায় মেলা চালু হওয়াতে মানুষের উৎসাহের কমতি ছিল না। ফরিদপুরবাসীর বিনোদনের অন্যতম আকর্ষণ এই মেলা চলবে আরও বেশ কিছু দিন।

20220527_190257.jpg

20220527_190247.jpg

20220527_184336.jpg

20220527_184251.jpg

20220527_184204.jpg

আজকের মতো এতোটুকুই। কেমন লাগলো এই মেলা আশাকরি জানাতে ভুলবেন না। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মত এখানেই শেষ করছি।

Photographer@ferdous3486
DeviceSamsung M21
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আহারে এই জসিম মেলার ছবিগুলো দেখে ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল। প্রতিবছর জসীম মেলায় না গেলে তো ভালই লাগত না। বিশেষ করে হাতিগুলোকে দেখে খুব ভালো লাগলো। মেলার সময় এই হাতিগুলো প্রতি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকা উঠাতো। আপনি মেলায় খুব ইনজয় করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে।

আর কয় দিন থেকে গেলেই পারতেন। তাহলে মেলাটা দেখে যাওয়া হতো। হাতিগুলো এখনো প্রতি বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে টাকা উঠায় কারণ এটাই তাদের আয়ের একটা উৎস। বছরে এই একটি মেলা মানুষের জন্য ভালই বিনোদনের যোগান দেয়

জসীম পল্লী কবির দ্বিতীয় মেলার ফটোগ্রাফি দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে প্রতিটি ফটোগ্রাফি তুলেছেন। মেলাতে দেখছি বাচ্চাদের অনেক সুন্দর সুন্দর খেলার জিনিস রয়েছে। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া পল্লী কবির মেলার এত সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

মেলায় বেশিরভাগ পণ্যই শিশু আর নারীদের জন্য। শুক্রবার হওয়াতে প্রচন্ড ভিড় ছিল আর সাথে ছোট বাচ্চা থাকাতে ভালো ছবি তুলতে পারিনি। মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ আপু।

মেলা থেকে এক কিলোমিটার দূরে রিকশা থেকে নামিয়ে দেয়ার কারণটা বুঝতে পারলাম না। আসলে এত ভিড়ের মধ্যে বাচ্চা ও মহিলাদের নিয়ে নিরাপদে মেলা অব্দি পৌঁছান খুব কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে এবং তার বর্ণনা শুনে বুঝতে পারলাম মেলাটি অনেক জাঁকজমকপূর্ণ হচ্ছে। আর নতুন আইটেমের পানের কথা শুনে বেশ মজাই লাগলো। কিন্তু পানের মধ্যে আগুন ধরিয়ে দিয়ে সে আগুন অবস্থায় পান মুখে পুরে দেওয়া একটা আশ্চর্য্য ঘটনা। তাহলে মুখের অবস্থা কি হতে পারে কৌতুহল থেকে গেল।
ধন্যবাদ আপনাকে।

ভাই পান খাওয়ার ব্যাপারটা আমার কাছেও বেশ আশ্চর্য লেগেছে। এমন জিনিস প্রথম দেখতে পারলাম। এছাড়া মেলায় আমরা উল্টো পথ দিয়ে প্রবেশ করেছিলাম সে জন্যই এত রাস্তা হাঁটতে হয়েছিল। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য

প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হাতিটি বেশ সুন্দর।মেলা মানেই আনন্দের ও খাবারের দোকানে ভিড় জমবেই।তাছাড়া মিষ্টি পান খেতে আমার ও বেশ ভালোই লাগে।সার্কাস খুবই মজার বিষয়, যেখানে অনেক সাধারণ পরিবারের মানুষের অদ্ভুত ট্যালেন্ট দেখতে পাওয়া যায়।বেশ কাটিয়েছেন ভাইয়া জসীম পল্লী মেলা ।ধন্যবাদ আপনাকে।

বেশ কয়েকবছর পর মেলা অনুষ্ঠিত হওয়ায় এবারের মেলাটি অনেক জাঁকজমক হয়েছিল। আর আমি নিজেই সার্কাস দেখি না অনেকদিন। এগুলো দেখতে আমার ভালোই লাগে। ধন্যবাদ দিদি

মেলায় যে প্রচুর পরিমাণে ভিড় হয় তা জানতাম তবে আপনাদের জসীম পল্লী মেলায় দেখছি একটু বেশি ভিড় পরেছে। আবার দেখছি মেলার এক প্রান্তে উন্মুক্ত সাংস্কৃতিক মঞ্চ। যার কারণে ভিড়ের পরিমাণটা অনেক বেশি মনে হচ্ছে। যাইহোক ভাই, মেলা বিষয়ে খুবই সুন্দর বর্ণনা করে সেইসাথে ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

ক্যামেরায় সবটুকু একসাথে দেখাতে পারিনি। মেলার পরিসর মোটামুটি বেশ বড়ই বলা যায়। আর তিনি যেহেতু পল্লী কবি ছিলেন তাই তার বিভিন্ন নাটক কবিতা গান এগুলো অনুষ্ঠিত হয় এই সাংস্কৃতিক মঞ্চে। ধন্যবাদ ভাই

আপনার কাছ থেকে জসীম পল্লীমেলা অনেক কিছুই জেনেছি প্রথমে। এবার আরও বেশি আকর্ষণীয় ছিল। কিন্তু আমি ভাবি নি জসীম পল্লীমেলা এত মানুষ হয়, লোকে লোকারণ্য হয়ে আছে। এবং কি অনেক সুন্দর সুন্দর রাইডার দেখা মিলছে। তবে আপনার কষ্টে একটু বেশি হচ্ছে বউ-বাচ্চা নিয়ে এক কিলোমিটার হাঁটার খুব কষ্টের ব্যাপার। যাই হোক আমাদের সাথে এত সুন্দর করে মেলা ভ্রমণ শেয়ার করার জন্য শুভেচ্ছা রইল।

আপনি ঠিক বলেছেন ভাই হাটার অংশটুকু আসলেই কষ্টের ছিল। এছাড়া মেলার আয়োজন অনেক বড় পরিসরে হয়। বেশ কয়েক বছর বন্ধ থাকাতে মানুষ একটু বেশিই হয়েছিল। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

আপনারা কত সুন্দর মেলায় ঘুরছেন আমারতো দেখে আর ভালো লাগছে না ।আমরা যখন ফরিদপুর থাকতাম তখন কত গিয়েছি মেলায় দুই এক দিন পর পরই যেতাম ।এবার আর যাওয়া হলো না। জসিম মেলা যাই হোক না কেন ঘুরতে ভালো লাগে ।মেলার ছবিগুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো ভাইয়া।

চলে আসেন, দেখে যান এবারের মেলা। সম্ভবত আরো দশ পনেরো দিন থাকবে। হয়তো এই মেলায় আকর্ষণীয় তেমন কিছু নেই কিন্তু একটা ঐতিহ্য আর ভাললাগা মিশে থাকে সবসময়।

জসিম পল্লি মেলার ২য় পর্বে অনেক কিছু দেখতে পেলাম। পল্লীকবি জসীম উদ্দীনের স্মরনে এই মেলায় অনেক দোকান পাট হয়েছে দেখলাম। সেই সাথে অনুষ্ঠান ও হচ্ছে বিশাল করে। আমাদের দেখানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে ভাই

ছোট ছোট স্টল আছে অসংখ্য। তবে বেশির ভাগই শিশু এবং নারীদের জন্য। এমন মেলায় এক বেলা ঘুরতে ভালোই লাগে। আপনাকেও ধন্যবাদ

প্রথম পর্বটি ছিল মেলার আয়োজন হচ্ছে এরকম সময়ের‌ । এই পর্বতে তো মেলা একেবারে জমে গিয়েছে। একজন পান খাচ্ছে আর সবাই মিলে তার ছবি তুলছে দৃশ্যটা অনেক হাস্যকর ছিল। মেলায় উন্মুক্ত সাহিত্য মঞ্চের আয়োজন করেছে এই জিনিশটা অনেক ভালো লাগলো। অন্যান্য মেলায় সাধারণত এই জিনিসটা দেখা যায় না। আপনার পোষ্টের মাধ্যমে জসীম পল্লী মেলা ভ্রমণ করতে পারলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া মেলার ফটোগ্রাফি গুলো শেয়ার করার জন্য ও মেলার সুন্দরভাবে বর্ণনা দেয়ার জন্য। ভালো থাকবেন।

আগুন জ্বলা এই পানের ব্যাপারটি সম্ভবত নতুন। তাই আমার মত সবাই যার যার মতো ভিডিও করার চেষ্টা করছিল। মেলা মানেই আনন্দ। ধন্যবাদ আপু

মেলার ছবিগুলো দেখে আমার এখনি সেখানে যেতে মন চাচ্ছে। আসলে মেলায় ঘুরার মজাই আলাদা অনেক কিছু দেখা যায়। আপনার সাজানো গুছানো পোস্ট পড়ে আরো আকর্ষন কাজ করছে। আপনি জসীম পল্লী মেলা ভ্রমণের খুব সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন।

চলে আসেন ভাই। মেলা ভ্রমণের আমন্ত্রণ রইল আপনার জন্য। প্রায় এক মাস চলবে এই মেলা।

আপনি খুবই চমৎকার ভাবে আমাদের মাঝে জসিমউদ্দিন পল্লী মেলা ভ্রমণের অনেক চমৎকার একটি অভিজ্ঞতার গল্প শেয়ার করেছেন ।আপনার গল্প শুনে খুবই ভালো লাগলো ,যদিও এখন পর্যন্ত আমি কখনো জসীমউদ্দীনের পল্লী মেলায় যাইনি। তবে যাওয়ার খুব ইচ্ছে আছে। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি অভিজ্ঞতা গল্প শেয়ার করার জন্য।

ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়। চলে আসুন সময় করে। কথা দিলাম মেলা ঘুরে দেখাবো। খারাপ লাগবে না আশা করি।