গ্রামীণ মেলা ভ্রমণ। ১০% লাজুক শিয়ালের জন্য।

in hive-129948 •  2 years ago 
আসসালামু-আলাইকুম।
আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজও আপনাদের সামনে হাজির হলাম দৈনন্দিন ভ্রমণ কাহিনী নিয়ে। আমার মনে হয় আমাদের এই পুরুষ শাসিত সমাজে ছেলে হয়ে জন্মানোর অনেক সুবিধা। যা খুশি তাই করা যায়, যেখানে খুশি সেখানে যাওয়া যায়। কোন বাধা বিঘ্ন নেই, নেই কোন পারিবারিক শাসন বা নিয়ম নীতি। যে ক্ষেত্রে আমাদের পরিবারের মেয়েরা অনেকটাই বঞ্চিত। আমার দীর্ঘদিনের অভ্যাস বাড়িতে থাকলে বিকেলের দিকে বন্ধুদের সঙ্গে বাইরে কোথাও ঘুরতে যাওয়া। সপ্তাহে দুই বা তিন দিন কখনো কখনো চার পাঁচ দিনও বাইরে যাওয়া হয়। বন্ধু রূপক থাকলে সবচেয়ে বেশি বাইরে যাওয়া হয়। বিকেলে মোটরবাইক নিয়ে বেরিয়ে পড়ি দুই বন্ধু যখন যেদিকে মন চায় চলে যাই ইচ্ছে মতো। তবে ভ্রমণের ক্ষেত্রে গ্রামের দিকে যাওয়াটাই আমরা দুই বন্ধু বেশি পছন্দ করি।

20221117_160507.jpg

20221117_160501.jpg

20221117_160457.jpg

মাত্র কয়েকদিন আগে এমনই এক বিকেলে বেরিয়েছিলাম বাইক নিয়ে দুই বন্ধু। ঘুরতে ঘুরতে শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিলাম অনেক দূরের একটি গ্রামে। দেখতে পেলাম সেখানে বেশ জমকালো একটি গ্রামীণ মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রথম দিন দূর থেকে দেখেই ফিরে চলে এসেছিলাম রাত হয়ে যাবার কারণে। তাই পরের দিন আবার বেরিয়ে পড়লাম দুই বন্ধু শুধুমাত্র মেলা দেখার উদ্দেশ্যে। সত্যি বলতে কি শীতের এই সময়টা গ্রামবাংলায় প্রায় সব অঞ্চলেই প্রচুর মেলার আয়োজন করা হয়। এইসব মেলার ক্রেতা মূলত গ্রামের ছোট ছেলে মেয়ে সহ বিভিন্ন বয়সী মানুষজন। তবে মূল আয়োজন থাকে শিশু এবং নারীদেরকে কেন্দ্র করে। আমরা যখন মেলা মাঠে পৌঁছলাম তখনো বিকেল হয়নি। ভির প্রায় নেই বললেই চলে। মোটরসাইকেল একটা জায়গায় রেখে হাঁটতে হাঁটতে মেলা দেখতে শুরু করলাম আমরা দুজন। তিন সারিতে অসংখ্য স্টল সাজিয়ে বসেছেন বিক্রেতারা। বেশিরভাগই শিশু এবং মেয়েদের জন্য রকমারি খেলনা ও সাজ সরঞ্জাম।

20221117_162948.jpg

20221117_162741.jpg

20221117_160841.jpg

দেখতে পেলাম বেশ কিছু রাইড ও এসেছে সেখানে। যার মধ্যে ছিল নাগরদোলা, দোলনা, সুইং বোট। স্থানীয় বেশ কিছু মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানতে পারলাম প্রতি বছরই এই দিনে এই মেলার আয়োজন করা হয়ে থাকে। চার দিনব্যাপী এই মেলায় শেষের দিকে প্রচুর লোকসমাগম ঘটে। অনেক দূরের গ্রাম থেকেও মেলা দেখতে আসে মানুষ জন। এ ধরনের মেলাতে কেনাকাটা বা খাবারের আয়োজন থাকলেও আমার কাছে শুধু দেখতেই ভালো লাগে। হেমন্তর এই শেষ সময়ে কৃষকের গোলা ভরা থাকে ধান আর পকেটে থাকে কাঁচা-পয়সা। তাই গ্রাম বাংলার মানুষ এ সময়টা উপভোগ করে এ ধরনের মেলায় সময় কাটিয়ে তাদের নিজেদের মতো করে।

20221117_160736.jpg

20221117_160538.jpg

20221117_160527.jpg

আজকের মত এ পর্যন্তই। গ্রাম বাংলার এইসব আদি মেলাগুলো দেখতে আপনাদের কেমন

লাগে তা জানাতে ভুলবেন না আশা করি। আবার কথা হবে অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন এই কামনায় আজকের মতো এখানেই শেষ করছি।

Photographer@ferdous3486
DeviceSamsung M21
LocationGoldangir char, Faridpur Sadar, Faridpur
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

ঠিক প্রাচীন কাল থেকে এই শীত কালে মেলা হবার কারন হল কৃষিভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার কারনে।এই সময়ে ফসল বিক্রির টাকা সবার পকেটে থাকে তাই মেলা গুলো এসময়ে বসে।মেলার ছবি গুলো ও বর্ণনা অনেক সুন্দর হয়েছে।আচারের ছবিগুলো দেখে জীভে জল এসে গেলো। ধন্যবাদ ভাইয়া মেলার ছবিগুলো শেয়ার করার জন্য।

ঠিক বলেছেন মানুষের আর্থিক অবস্থার সাথে এই মেলাগুলো সম্পর্কিত। আর শীতকালে ঝড় বৃষ্টি হয়না তাই আরো সুবিধা। এ মেলাগুলোতে শহরের মেলার মত অত চাকচিক্য না থাকলেও আমার কাছে বেশ ভালো লাগে। ধন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।

গ্রাম বাংলার এইসব আদি মেলাগুলো সামনে থেকে কখনো দেখা হয়নি। দুই বন্ধু মিলে খুব ভালই ঘুরেছেন। মেলায় খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন এবং সুন্দর ভাবে সেগুলো সম্পর্কে বর্ণনা দিয়েছেন। খাবারের স্টলের খাবারগুলো দেখে তো জিভে জল চলে এলো। ধন্যবাদ ভাইয়া গ্রামীণ মেলার মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

শহরের বড় বড় মেলার তুলনায় যদিও এগুলো কিছুই না তবে এ মেলাগুলোর এক অন্য ধরনের সৌন্দর্য
আছে। কখনো সুযোগ পেলে ঘুরে আসবেন এ ধরনের মেলা থেকে আশা করি ভালো লাগবে।

গ্রামের মেলাগুলো আসলে খুব সুন্দর হয়। আপনারা দুই বন্ধু বাইকে করে ঘুরতে ঘুরতে গ্রামের মেলায় চলে গেলেন সেটা দেখে খুব ভালো লাগলো। বাইকে ঘুরাঘুরি করতে আসলে খুব ভালো লাগে। যদি তার পাশাপাশি এরকম সুন্দর একটি গ্রামীন মেলার উপভোগ করা যায় তাহলে তো আরো অনেক ভালো লাগে। মেলাতে ঘুরতে আর খাওয়া-দাওয়া করতে আসলেই খুব ভালো লাগে। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভ কামনা।

জি আপু আমাদের দেশে ছেলে হয়ে জন্মানোর এটাই সুবিধা। যখন যেখানে খুশি যাওয়া যায়, যা খুশি করা যায়। আর আমরা এক সাথে হলেই কোথাও না কোথাও বেড়িয়ে পরি।

আপনারা দু বন্ধু একসাথে ঘুরতে বের হন শুনে খুব ভালো লাগল।আমরাও মাঝে মাঝে বন্ধুরা মিলে ঘুড়তে বের হই।আসলে গ্রামের মেলাগুলোতে যেতে আমার খুবই ভালো লাগে।আমাদের গ্রামেও শীতকালে এমন মেলা হয়।এই মেলার ছবিগুলো দেখে আমাদের গ্রামের মেলার কথা মনে পরে গেল।ছোটবেলাতে অনেক মেলায় গিয়েছি এবং গিয়ে কিছু কেনাকাটা করতে খুবই ভালো লাগে।এত সুন্দর করে মেলার বিষয়টি আমাদের মাঝে তুলে ধরার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

আশাকরি আপনাাদের এলাকার মেলার ছবিও দেখতে পাব কোন একদিন আপনার পোষ্টের মাধ্যমে। আমার মনে হয় যারা ছোট বেলায় এ ধরেনের মেলা দেখেনি তাদের শৈশব অনেকটাই আনন্দ বঞ্চিত। ধন্যবাদ ভাইয়া।

গ্রাম বাংলার আদি মেলা খুব কাছ থেকে কখনো দেখার সুযোগ হয়নি আমার।তবে আপনার পোস্ট পড়ে মেলার সেই ফিলটা আমি নিলাম।আপনি আর আপনার বন্ধু ভালোই তো ঘুরলেন।াআর বেশ সুন্দর বর্ননা করে তুলে ধরেছেন আমাদের মাঝে, সেজন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। খাবারের স্টলগুলো দেখে খুব ভাল লাগলো।শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।

যদি কখনো দেখার সুযোগ হয় মিস করবেন না কিন্তু। এই ধরনের মেলা গুলোতে যদিও খুব বেশি চাকচিক্য থাকেনা কিন্তু অন্য ধরনের একটা সৌন্দর্য থাকে। ধন্যবাদ আপু আপনার মন্তব্যের জন্য।