গল্পঃ বেষ্টফ্রেন্ড বউ Season 2
পর্বঃ ০৪
৩য় পর্বের পর থেকে,,,,,,,,,
তারপর সে কলটা কেটে দিলো, বুঝলাম না তন্নি কেন আমার সাথে এই রকম ব্যবহার করে। আমি তো ওর ভালো চাই তবুও সে কেন বোঝে না?
না থাক আজ থেকে আর ওর কেয়ার করবো না, ওর মতো ও থাকবে আর আমার মতো আমি থাকবো। এগুলো চিন্তা করতে করতে আবার কাজে মন দিলাম।
রাতে বাসায় গিয়ে দেখলাম বাবা বসে বসে খবর দেখছে আর মা রান্না ঘরে, আমি বাবার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম। আমার দাঁড়িয়ে থাকা দেখে বাবা বললো....
বাবাঃ কিরে! কিছু বলবি নাকি?
আমিঃ জি বাবা একটা কথা বলার ছিলো। যদি কিছু মনে না করো তাহলে বলতাম।
বাবাঃ আরে পাগল আমার সাথে কথা বলার জন্য তোর অনুমতি লাগবে নাকি! বল কি বলবি।
আমিঃ আসলে বাবা বলছিলাম কি! সারা দিন অফিস, কাজ এগুলো করতে করতে তোমাদের সময় দিতে পারিনা। চলো না আমরা সবাই মিলে কোথাও থেকে কয়েকদিনের জন্য ঘুরে আসি। সবার ভালো লাগবে।
বাবাঃ কথাটা আসলে ঠিক বলছিস বাট যাওয়া হবে না।
আমিঃ কিন্তু কেন বাবা?
বাবাঃ গতকাল রাতে তোর দাদুকে স্বপ্নে দেখেছি। কবরটাও নাকি ভেঙ্গে পুকুরে পড়ে যাচ্ছে। তাই আমি আর তোর মা ১০-১৫ দিনের জন্য গ্রামের বাড়ি যাবো, কয়েকজন হুজুর আর এতিমদের খাওয়ার ব্যবস্থা করবো, যদি সুযোগ পাই কবর এর চারপাশে দেওয়াল করে আসবো।
আমিঃ ও আচ্ছা, তাহলে তোমরা গ্রামেই যাও ভালো লাগবে।
এ কথা বলে আমি রুমের দিকে চলে যাচ্ছি, এমন সময় আবার বাবা ডাক দেয়....
বাবাঃ শুন, তোর সাথে এমনিতেও আমার কথা ছিলো।
আমিঃ কি কথা বাবা বলো।
বাবাঃ বলছিলাম কি, তোর বিয়ের পর থেকে কোথাও ঘুরতে যাসনি, তন্নিও একা একা বাসায় বসে থাকে। তাই আমি বলছিলাম তন্নিকে নিয়ে তুই ঘুরে আয়।
আমিঃ না বাবা তোমরা না গেলে আমরাও যাবো না।
বাবাঃ আরে পাগল! আমরা যে কয়েকদিন গ্রামের বাড়িতে আছি, সে কদিন তোরাও ঘুরে আয়। ভালো লাগবে।
আমিঃ কিন্তু বাবা অফিস.?
বাবঃ আমি ম্যানেজার কে বলে দিয়েছি। সে দেখবে, আর শুন তোর বড় খালার ওখানে চলে যা। তুই গেলে উনিও খুশি হবে। উনার সাথে কথা বলে আমি সব কিছু ঠিক করে রেখেছি। তোর মায়ের কাছে তোদের দুজনের টিকেট রেখে দিয়েছি।
আমিঃ বাবা এগুলো আবার কখন করলে? (অবাক হয়ে)
বাবাঃ এতো কিছু তোর জানার দরকার নেই। পরশুদিন ফ্লাইট।
আমি আর কিছু না বলে হালকা একটা হাসি দিয়ে বাবার সামনে থেকে রুমে চলে গেলাম।
মনে মনে ভাবতে লাগলাম তন্নি কি রাজি হবে, যে মেয়ে বিয়ের দিন রাতে আমাকে বলে স্বামী হিসেবে মানে না, সেকি রাজি হবে আমার সাথে হানিমুনে বাইরে ঘুরতে যেতে?
ধুর যা হওয়ার তা পরে হবে, আগে কিছু খেয়ে নিই, অনেক খুধা লাগছে। তারপর হালকা নাস্তা করে নিলাম। কিন্তু তন্নিকে দেখছিনা কোথাও, রান্না ঘরে গেলাম সেখানেও নেই। আম্মুকে জিজ্ঞেস করলাম....
আমিঃ আম্মু তন্নিকে দেখছিনা যে, ও কোথায় গেছে?
আম্মুঃ তন্নি একটু ওর বাপের বাড়ি গেছে, আমিও আর না করিনি। সারাদিন বাসায় বসে থাকে, বাইরে থেকে ঘুরে আসলে মনটা একটু হালকা হবে। আর আমি তন্নিকে বলে দিয়েছি, তুইও আজকে ওদের বাসায় যাবি আর রাতটা ওখানে কাটাবি। সকাল হলে তন্নিকে নিয়ে বাসায় চলে আসবি।
আমিঃ ধুর আমি গিয়ে কি করবো?
আম্মুঃ এই তুই কি পাগল! মেয়েটা একা একা ওখানে গেছে আর যদি একা একা আসে তাহলে ওদের বাসার সবাই কি ভাববে?
আমিঃ আচ্ছা আমি সকালে গিয়ে নিয়ে আসবো।
আম্মুঃ সকালে মানে! এখন যাবি তুই। যা রেডি হয়ে নে।
কি আর করা, রেভি হয়ে ওদের বাসার দিকে রওনা দিলাম। তন্নিকে অনেকবার কল দিলাম কিন্তু সে কল ধরছে না।
তারপর আমি আরমান আর সানির সাথে চ্যাটিং করতে করতে ওদের বাসার সামনে চলে গেলাম। গাড়ি থেকে নেমে, ওদের বাসার সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম, তখন প্রায় ৯.০০ টা বেজে গেছে। তারপর ভিতরে গেলাম, আমাকে দেখে শ্বশুর - শাশুড়ি অনেক খুশি হলেন, তাদের সাথে অনেকক্ষণ কথা বলে নিলাম, এরপর শাশুড়ি আম্মা বললেন....
শাশুড়িঃ যাও বাবা রুমে যাও, তন্নি রুমে আছে। ওখানে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিচে আসো। আমি খাবার রেডি করছি।
আমিঃ আচ্ছা ঠিক আছে।
একথা বলে আমি তন্নির রুমের দিকে হাটা দিলাম। ওর দরজার সামনে গিয়ে শুনতে পাই ওর রুম থেকে অনেক জোরে হাসির শব্দ আসছে। সবার থেকে ওর হাসিটা আলাদা। অনেক দিন পর সে হাসছে। আমি বাইরে থেকে উকি দিয়ে দেখলাম ওর কয়েকজন কাজিন সেখানে বসে ওর সাথে গল্প করছে। তাদের মধ্যে একজন আমাকে দেখে ফেলে তারপর বলে....
""আরে দুলাভাই আপনি আসছেন? আমরা আপনার কথাই বলতেছিলাম। আসুন ভিতরে আসুন।""
তারপর আমি ভিতরে গিয়ে অনেকক্ষণ ওদের সাথে গল্প করলাম। তারপর ওরা সবাই চলে গেলো। তখন তন্নি আমাকে বললো....
তন্নিঃ তুই এখানে কেন আসছিস?
আমিঃ মানে কি! তোর বাসায় আসার জন্য মনেহয় আমার ঠেকা পরছে, আম্মুই আমাকে আসতে বলেছে।
তন্নি মুখে একটা বিরক্ত নিয়ে কিছু একটা বলতে যাবে এমন সময় শাশুড়ি এসে আমাদের ডেকে নিয়ে গেলেন খাওয়ার জন্য।
আমি আর কিছু না বলে সোজা খেতে চলে গেলাম।
খাবারের টেবিলে বসে তো অবাক, এতো খাবার। আসলেই শ্বশুর বাড়ি রসের হাড়ি। সব গুলো খাবারই আমার পছন্দের। এরপর খাওয়া দাওয়া সেরে আমি রুমে এসে বিছানায় শুয়ে পড়লাম, কিছুক্ষণ পর তন্নি রুমে আসলো। আর এসে চেঁচামেচি শুরু করে দিলো....
তন্নিঃ কিরে তুই বিছানায় শুয়েছিস কেন?
আমিঃ তো কোথায় শুবো? তোর রুমে তো সোফাও নেই।
তন্নিঃ সোফা নেই তো কি হইছে, ফ্লোর আছেনা। ফ্লোরে শুয়ে পর।
আমিঃ মানে! ফ্লোরে শুয়ে পড়বো মানে?
তন্নিঃ এতো মানে টানে বুঝি না। আমি তোর সাথে এক বিছানায় ঘুমাতে পারবো না।
আমিঃ কেন ঘুমাতে পারবি না। শুন বিয়েটা যেভাবেই হোক, এখন আমি তোর স্বামী। আর তোর ভয়ের কিছু নেই, আমি তোকে কিছু করবো না। সেটাও যদি না হয় তাহলে তুই নিজেই ফ্লোরে শুয়ে পর। ফ্লোরে আমার ঘুম আসেনা ।
আমার সম্ভব বিরক্ত লাগছে মেয়েটার কর্মকাণ্ড দেখে, ইচ্ছা করছে কানের নিচে দুইটা দিয়ে দিই। এরপর সে আবার বলতে শুরু করলো...
তন্নিঃ এই শুন, এটা আমার রুম সো বিছানাটাও আমার। আমার বিছানায় আমি ঘুমাবো।
আমিঃ তো কি হইছে? ভুলে গেছিস এতো দিন আমার বিছানায় ছিলি আর আমি সোফায় ছিলাম।
তন্নিঃ আমি নিজের ইচ্ছা ঘুমাই নি, তুই তো বললি আমাকে বিছানায় ঘুমাতে।
ধুর এই ফালতুর সাথে কথা বলে পারা যাবে না, তাই আমি নিজেই ফ্লোরে শুয়ে পড়লাম। শুয়ে শুয়ে ভাবতেছি তন্নি যদি কালকে আমাদের বাসায় যাওয়ার পর শুনে যে আমি হানিমুনের ব্যবস্থা করে আসছি তখন কি করবে?
এগুলো ভাবতে ভাবতে দেখলাম ফকিন্নি খুব আরাম করে ঘুমিয়ে আছে, মনে মনে বললাম, তন্নি তুই হয়তো জানিস না আমি কি জিনিষ, তোরে আমি এমন সোজা করবো যে তুই আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝবি না।
এসব ভাবতে ভাবতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানি না। খুব সকালবেলা ঘুমটা ভেঙ্গে গেলো। ঘুম থেকে উঠতে যাবো এমন সময় দেখি পুরো পিঠটা ব্যথা করতেছে। করারও কথা সারা রাত ফ্লোরে ছিলাম, তাই একটু বেশিই ব্যথা করছে।
খাটের দিকে তাকিয়ে তন্নি খুব আরামে ঘুমিয়ে আছে, ঘুমন্ত অবস্থায় ও কে একদম বাচ্ছাদের মতো লাগছে। মুখটা অনেক মায়াবী লাগছে, আমি অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলাম।
একটু পর দেখলাম ওর কতোগুলো চুল উড়ে এসে মুখটা ঘিরে রাখছে, ইচ্ছে করছে চুল গুলোকে আলতো করে আবার পেছনে সরিয়ে দিই। বিয়ের পর থেকে এখন পর্যন্ত তন্নিকে টাচও করিনি।
এখন খুব ইচ্ছা করছে ওর মায়াবী মুখটায় একটু হাত বুলিয়ে দিতে, কিন্তু যদি জেগে যায় তাহলে আমার ১২ টা বাজাবে। কিন্তু নিজের ইচ্ছেটাকে আর কন্ট্রোল করতে পারলাম না।
ওর মুখের চুল গুলো আস্তে আস্তে সরাতে লাগলাম, কিন্তু হঠাৎ করে...........
চলবে.....
To be Continue.........
পরবর্তী পর্বের জন্য অপেক্ষা করুন ।
গল্পটি ভালো লাগলে ভোট দিবেন।
ধন্যবাদ ।
টাইপ: চৌর্যবৃত্তি।
এ ধরনের পোস্ট আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি Allow করে না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।
কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22
যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।
Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493
Source:
https://www.facebook.com/Aabi.TheHunter/posts/107653997431330
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit