শাল, পিয়াল, মহুয়ায় ঘেরা অযোধ্যা পাহাড়। অপূর্ব তার সৌন্দর্য্য। পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলায় এর অবস্থান। চারিদিকে পাহাড় ঘেরা একটি ছোট্ট মালভূমি। ছোটনাগপুর মালভূমির পূর্বদিকটাই অযোধ্যা পাহাড়। ভারি সুন্দর এই পাহাড়। সর্বোচ্চ উচ্চতা ৭১২ মিটার। প্রকৃতি যেন ঢেলে সাজিয়েছে এই অযোধ্যাকে। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়া জেলা যে কত সুন্দর তা এই অযোধ্যা পাহাড় না দেখলে বোঝা যাবে না। বাঙালী হয়ে বাঙলার এই সৌন্দর্য্য এক বার নয় বার বার আমাদের উপভোগ করার মত। শীতের মরসুমে সপ্তাহের শেষে দুটি দিন আমরা ঘুরে আসতেই পারি। চলুন যাত্রা শুরু করি অযোধ্যার উদ্দেশ্যে।
অযোধ্যা পাহাড়ে ওঠার সময় কয়েকটা বাঁক ঘোরার পরেই নিচে লোহারিয়া ড্যাম। কয়েক মিটার ওঠার পরেই বাঁ দিকে লোয়ার ড্যাম। সবুজ জঙ্গলে ঘেরা পাহাড়ের মাঝে নীল জল। ভারি সুন্দর। পাহাড়ের ওপরে পিপিএসপি (পুরুলিয়া পাম্প স্টোরেজ প্রোজেক্ট – PPSP) এর দুটি ড্যাম। লোয়ার ও আপার ড্যাম।
বামনী ফলস্
দেখতে হলে সমতল থেকে প্রায় ২০০–২৫০ ফুট (৫০০-৫৫০ টা সিড়ি) নীচে নামতে হবে। কিছুটা বাঁধানো সিড়ি দিয়ে নামার পর পাথরের ধাপ। নীচে নামার পথটা দুদিকে ঘন সবুজ জঙ্গলে ঘেরা। পাথরের ধাপ পার হয়ে বেশ খানিকটা নীচে নামলেই ঝর্ণার অপূর্ব দৃশ্য দেখতে পাওয়া যায়। পাথরের ধাপ দিয়ে নামতে এবং উঠতে দুটোই একটু কষ্ট হয় ঠিকই কিন্তু বামনী ফলসের এই সৌন্দর্য্য সব কষ্ট লাঘব করে দেবে। এই ঝর্ণাটি থেকে একটা ছোট্ট লেক তৈরী হয়েছে।
চলুন ঘুরে আসি
মুরগুমা ড্যাম।
জানি না আমার লেখার মাধ্যমে এর নৈসর্গিক সৌন্দর্য্য বোঝাতে পারব কিনা। পাহাড় ঘেরা এই মুরগুমা ড্যাম কংসাবতী নদীর শাখা নদীর উপর নির্মিত। এই মুরগুমা ড্যাম ও লেক ‘সাহারাজোর ইরিগেশন স্কিম’ এর অধীন। পড়ন্ত বিকেলের মৃদু সূর্যালোকে পাহাড় ঘেরা এই লেকটি মায়াবী হয়ে উঠল। কি অপূর্ব! সূর্যাস্তের সময়, আকাশ রক্তিম আর মুরগুমার জলে পড়ল পাহাড়ের রক্তিম প্রতিবিম্ব। কি অপূর্ব শোভা। সকালের মুরগুমা বড় মোহময়ী। শান্ত, স্নিগ্ধ সূর্যকিরণ, চারিদিকের সবুজ পাহাড় আর লেকের জলে পাখিদের কলতান। মনে হয় কত শান্তি, পৃথিবীর বুকে স্বর্গ নেমে এসেছে।
খয়রাবেড়া
ড্যাম অযোধ্যা পাহাড়ের কোলে শান্ত, নিরিবিলি, টলটলে জলের একটি অতিসুন্দর ড্যাম। ড্যামের দুদিকে দুটি সবুজ পাহাড় আর তার কোলে খয়রাবেড়া ইকো অ্যাডভেঞ্চার ক্যাম্প। লেকের জলে কায়াকিংয়ের ব্যবস্থা আছে। এখান থেকে জঙ্গলের পথ ধরে পায়ে হাঁটা দূরত্বে রয়েছে মাছকান্দা ঝর্ণা।
অযোধ্যার হিলটপ থেকে এককিলোমিটার মত গেলে ময়ূর পাহাড়। অল্প চড়াই উতরাই ভেঙে ওঠা যায় ময়ূর পাহাড়ে।এই পাহাড়ের চারিদিকের দৃশ্য ভারি সুন্দর।
ময়ূর পাহাড়
দেখে বাঘমুণ্ডি যাবার রাস্তার বাঁদিকে আপার ড্যাম ফেলে শাল, পিয়ালের পথ ধরে পৌঁছে যাওয়া যাবে মার্বেল লেক। এটি একটি পাথরের খাদান। চারিপাশে উঁচু উঁচু পাথরের টিলা, মাঝে লেকের স্বছ টলটলে জল, ভারি সুন্দর এই দৃশ্য। পাথুরে টিলার কোলে সূর্যাস্ত ও সূর্যোদয় আর লেকের জলে তার রক্তিম প্রতিবিম্ব। ভারি মনোরম দৃশ্য।
চলুন বেড়িয়ে আসি
পাখি পাহাড়
যার আসল নাম ছিল ‘মুরাবুরু’।এমন নয় যে এখানে নানা ধরণের পাখিদের আশ্রয়স্থল। পাখি পাহাড় নামের পিছনে রয়েছে এক ইতিহাস। বলা যায় প্রকৃতির বুকে পাথুরে ক্যানভাস। এর ইতিহাস জানলে পাখি পাহাড় বাঙালিকে অবশ্যই আকর্ষণ করবে। বিগত কয়েক বছর ধরে শিল্পী চিত্ত দে পাহাড়ের বুকে পাথরে খোদাই করছেন বিভিন্ন আকৃতির পাখি। ১৯৯৭ সাল থেকে সরকারী অনুদানে কাজ শুরু করেন শিল্পী চিত্ত দে। স্থানীয় আদিবাসী লোকেদের প্রশিক্ষণ দিয়ে তাদের নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করেন। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পাহাড়ের উপর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় এনামেল রং, ছেনি হাতুড়ি ব্যবহার করে ডানা মেলা পাখির অবয়ব খোদাই করে চলেছেন। পাহাড়ের চারিদিকে ঘন জঙ্গল আর শাল, সেগুনে ভরা পাহাড়ি লাল রাস্তা।
তুর্গা ফলস্
জঙ্গলের বুক চিরে এবড়ো খেবড়ো পাথুরে সিড়ি দিয়ে বেশ কিছুটা নীচে নামতে হবে। নীচে নামার রাস্তাটা বেশ দুর্গম। নীচে নামতে নামতে ক্রমশ ঝর্ণার জলের প্রচণ্ড আওয়াজ কানে আসে।। তূর্গা জলপ্রপাতটি বেশ সুন্দর, অত্যন্ত স্বচ্ছ জল। এই ঝর্ণাটির খুব কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়া যায়।
কংসাবতী নদীর তীরে পোড়া মাটির মন্দির – নাম দেউলঘাটার মন্দির। মন্দিরে রয়েছে কালো পাথরে খোদিত মা দূর্গার মূর্তি।এই মন্দিরের দূর্গা পূজা পুরুলিয়ার অন্যতম আকর্ষণীয় পূজা।
আপনার পোস্টের লেখাগুলো শতভাগই চৌর্যবৃত্তি করা।
এ ধরনের পোস্ট আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে রাখা হয় না। নতুন ইউজার হওয়ার কারণে শুধুমাত্র আপনার পোস্ট Mute করা হচ্ছে। পরবর্তীতে আবার একই ধরনের কাজ করলে আপনার একাউন্ট কমিউনিটি থেকে ব্যান করা হবে।
কমিউনিটির নিয়মাবলী ভালোভাবে পড়ে নিন
https://steemit.com/hive-129948/@rme/last-updated-rules-of-amar-bangla-blog-community-16-aug-22
যে কোন বিষয়ে জানার প্রয়োজন হলে আমাদের সাথে Discord এ যোগাযোগ করুন।
Discord server link: https://discord.gg/ettSreN493
Source: https://banglablog.in/travel/ajodhya-hills/
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার বাংলা ব্লগ শুধুমাত্র বাংলা ভাষাভাষীদের কমিউনিটি। ভারত ও বাংলাদেশ ব্যাতীত অন্য কোনো দেশের সদস্যদের আমার বাংলা ব্লগে গ্রহণ করা হয় না। আপনাকে আমাদের আরেকটি কমিউনিটি Beauty of Creativity তে পোস্ট করার অনুরোধ করছি যেখানে আপনি ইংরেজিতে পোস্ট করার সুযোগ পাবেন। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit