লাইফস্টাইল : গ্রামীন টাওয়ারের উপরে উঠার অভিজ্ঞতা।

in hive-129948 •  10 days ago 

আসসালামুয়ালাইকুম, এবং হিন্দু ভাইদেরকে আদাব।আমার বাংলা ব্লগ এর সবাই কেমন আছেন, আশা করি প্রত্যেকে অনেক বেশি ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। আজকের ব্লগ এ আমি গ্রামীন টাওয়ারে উঠার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে আপনাদের সাথে আলোচনা করবো । আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। চলুন তাহলে এবার শুরু করা যাক।

গ্রামীনফোনের টাওয়ার

IMG_20241018_112523_048.jpg

কয়েকদিন আগে গ্রামের ছোট ভাইদের সঙ্গে ক্রিকেট খেলছিলাম। ক্রিকেট মাঠটি ছিল টাওয়ারের পাশেই। ক্রিকেট খেলা শেষে কয়েকজন বলছিল যে টাওয়ারের উপরে চিল পাখি বাসা বেধেছে। প্রতিবছর নাকি টাওয়ারের লোক গুলো এসে বাচ্চা পেড়ে নিয়ে যায়। ছোট ভাই গুলো বলল যে আজকে আমরা উঠে দেখব সেখানে কি রয়েছে। এই বলে তারা টাওয়ারে ওঠার জন্য প্রস্তুত হল। আমি মনে করেছিলাম টাওয়ারের উপরে কারেন্ট দেয়া থাকে হয়তোবা এজন্য তাদেরকে নিষেধ করলাম অতো উপরে উঠার জন্য।

কিন্তু তারা আমার কথা শুনল না ,আমাকে বলল যে উপরে কোন কারেন্ট দেয়া থাকে না। কারেন্ট থাকলে টাওয়ারের লোক গুলো কেমনে ওঠে। এই বলে তারা ওঠা শুরু করল। পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যেই তারা টাওয়ারের উচ্চ সীমায় উঠলো। ওদের উঠার সাহস দেখে আমারও ইচ্ছা হলো উঠে দেখার। এরপর আমিও উঠার জন্য টাওয়ার এর কাছে গেলাম। টাওয়ারে উঠা সহজ কিন্তু বিপরীতে নামার ক্ষেত্রে অনেক কষ্টকর। আমি যত উপরে উঠেছিলাম প্রায় ১৮ তলার মত উচ্চতা হবে।

গ্রামের পাশে ফসলের মাঠ

IMG_20241018_111854_392.jpg

আমাদের গ্রামের টাওয়ার একটু বেশি উচ্চতা সম্পন্ন। আমার জীবনের প্রথম এটাই টাওয়ারে ওঠা। টাওয়ারে ওঠার পর আমরা দেখতে পেলাম সেখানে একটি চিল পাখির বাসা রয়েছে। বাচ্চা অথবা ডিম সেখানে কিছুই নেই সবেমাত্র বাসা বেধেছে। আমার গ্রামের ছোট ভাইদের কে বললাম যে এখান থেকে বাচ্চা নেওয়ার কোন প্রয়োজন নেই কারণ বাচ্চা আমরা লালন পালন করতে পারবো না, এদের খাদ্য ভিন্ন যা আমাদের পক্ষে খাওয়ানো সম্ভব না। তাদেরকে বললাম যে পরবর্তীতে এখানে যেন আর উঠা না হয়। কারণ এখানে উঠা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এখান থেকে একবার কারণবশত পড়ে গেলে মৃত্যু অনিবার্য।

IMG_20241018_111842_793.jpg

টাওয়ারে উঠে সেই দিন অনেক মজা হয়েছিল অবশ্য অথচ এখানে উঠা অনেক ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। আমরা বিকেল বেলা সেখানে উঠেছিলাম। চারিদিকে মনে হয়েছিল এ যেন এক সুন্দরবন। আমাদের অঞ্চল হাড়িভাঙ্গা আমের জন্য বিখ্যাত হওয়ায় গাছপালা এখানে অনেক বেশি। চারিদিকে শুধু সবুজের সমারোহ। টাওয়ারের উপর বসার মতো লোহার জালি রয়েছে। সেই সময় মনে হয়েছিল এখানে বসে মুড়ি পার্টি দিলে অনেক মজা হত। পরিবেশটা অনেক ভালো ছিল।

IMG_20241018_111806_486.jpg

টাওয়ারের উপর আমরা কয়েকটি সেলফি এবং আমাদের গ্রামের চারপাশের পরিবেশের ফটোগ্রাফি করেছিলাম। মনে হয়েছিল আমরা যেন ড্রোন দিয়ে ফটো নিতেছি। আমার গ্রামের ছোট ছোট বাড়ি ঘরের ছবিগুলো দেখতে বেশ ভালই লেগেছিল। সেই সময় আমার মনে হয়েছিল আমি যেন সুন্দরবনের উপরে রয়েছি। আসলে গ্রামের ভিতরে থাকার কারণে গ্রামের আসল সৌন্দর্য উপভোগ করা যায় না। টাওয়ারের উপরে না উঠলে জানতেই পারতাম না যে আমার গ্রামের সৌন্দর্য কতটুকু। আমার গ্রাম অপরূপ সৌন্দর্যে ভরপুর।

এ যেন এক সুন্দর বন

IMG_20241018_111842_793.jpg

আমার কাছে একটা ড্রোন থাকলে আমার এলাকার আরো সুন্দর সুন্দর জায়গায় ফটোগ্রাফি করতে পারতাম। তবে ইচ্ছা আছে একটি ড্রোন কেনার। আমার মত এমন ফটো উঠানোর জন্য আপনারা আবার টাওয়ারে উঠিয়েন না। টাওয়ারে উঠা আসলে সহজ কিন্তু নামা অনেক কঠিন। অনেক ভয় কাজ করে। যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের পক্ষে তো কখনোই এখানে উঠা সম্ভব না। তাই এখানে উঠা উচিত হবে না। আমাদের উটা দেখে অনেকেই এখানে উঠার চেষ্টা করেছিল। ওদের উটা দেখে আমরা শেষে এখান থেকে নেমেছিলাম।

আমার গ্রাম

IMG_20241018_111742_533.jpg

নামার পর সেখানে আমরা বড়ই গাছের কাটা দিয়া উঠার জায়গায় বেঁধে দিয়েছিলাম যাতে করে আর কেউ এখানে উঠতে না পারে।

সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।

ক্যামেরা পরিচিতি
DeviceTecno spark 20c
Camera50 MP
CountyBangladesh
LocationRangpur, Bangladesh

Vote@bangla.witness as witness

54TLbcUcnRm3sWQK3HKkuAMedF1JSX7yKgEqYjnyTKPwrcNLMcZnLnFrW5PDaQKxbWWqwrRezSAe39S7RTiEk7NCzgzD1reVavwZGUMbjasjujy1CQqSedvtuVGKXod3vcdSqiXp2.png

Or

Set@rme as your proxy

2r8F9rTBenJQfQgENfxADE6EVYabczqmSF5KeWefV5WL9WEX4nZPQpSChVhr5YUqUeT6qhYr1L6PMHKqtRnepY2a8e1tqsDtWfr4V8KDGvJtydqvz4V68PMUyu9EWpez2.png


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচিতি

InShot_20240819_114902993.jpg

আমার নাম মোঃ গোলাম রব্বানী।আমি একজন বাংলাদেশী। আমি আমার মাতৃভাষা বাংলাতেই কথা বলতে ভালোবাসি।আমি একজন ছাত্র।আমি লালমনিরহাট সরকারি কলেজে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ালেখা করি। আমি পড়ালেখা করার পাশাপাশি স্টিমিট প্লাটফর্মে কাজ করি। আমি কয়েক মাস আগে এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হই। এই প্লাটফর্মের মধ্যে যুক্ত হতে পেরে নিজেকে অনেক ভাগ্যবান মনে করি। আমার বাড়ি বাংলাদেশের রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ ইউনিয়নের মিয়াপাড়া নামক গ্রামে।আমি ফটোগ্রাফী এবং ভ্রমণ করতে বেশি ভালোবাসি।
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আমি আমার জীবনে কখনো এমন টাওয়ারের উপরে উঠি নাই। তাই এ বিষয়ে তেমন কোনো অভিজ্ঞতা আমার নেই। তবে নতুন একটা অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ধারণা পেলাম। মোটামুটি অনেক কিছুই জানতে পারলাম টাওয়ারে ওঠা সম্পর্কে।

হ্যাঁ ভাইয়া ওঠা যায় তবে সাহসিকতা থাকতে হবে। আমার মতে এখানে না ওঠায় ভালো হবে। ধন্যবাদ ভাইয়া 😍

টাওয়ার এর উপর উঠা অনেক বেশি রিস্কি। এককথায় জীবনের উপর অনেক বেশি ঝুঁকি থাকে। আপনি দেখছি আপনার গ্ৰামের একটি সিমের টাওয়ার এর উপর উঠেছিলেন। টাওয়ার এর উপর উঠে আপনার গ্ৰামের সুন্দর সুন্দর দৃশ্য গুলো ফটোগ্রাফি করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন, দেখে বেশ ভালো লাগলো।

আপনি তো দেখছি টাওয়ারের উপরে উঠে অনেক সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। আমাদের এলাকায়ও এমন টাওয়ার ছিল এলাকার কিছু ছেলেরা এই টাওয়ারের উপর উঠতো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ সুন্দর ফটোগ্রাফি করার জন্য।

আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 😍

ভাইয়া আপনি তো দেখছি একেবারে অনেক উপরে উঠে গেছেন। এত উঁচুতে ওঠার সাহস সবার হয় না। তবে আমার কাছে কেন জানি মনে হয় উপর থেকে নিচের দৃশ্য গুলো দেখতে অন্যরকম লাগে।

ধন্যবাদ আপু 😍

আপনাদের সাহস আছে বলতে হয় ভাই। উপরে উঠতে গেলে তো আমার বেশ ভয় করে। আর সেখানে আপনারা পুরোপুরি একটা টাওয়ারে উঠে গেলেন কোন সেফটি ছাড়া। একটা দূর্ঘটনা তো ঘটে যেতে পারত। যাইহোক আশাকরি ভবিষ্যতে এমন ঝুঁকি আর নেবেন না। উপর থেকে ফটোগ্রাফি গুলো সুন্দর করেছেন।।

হ্যাঁ ভাইয়া উঠবো না আর এটাই জীবনের প্রথম ছিল। ধন্যবাদ ভাইয়া উপদেশ দেওয়ার জন্য।