বারুনী মেলায় কাটানো সুন্দর একটি মুহূর্ত......!!!

in hive-129948 •  2 years ago 

আজ - ১৩ই, চৈত্র ১৪২৯ , বঙ্গাব্দ | বসন্তকাল |



নমস্কার - আদাব। মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ, আশা করি সবাই ভালো আছেন।

IMG20230321164249_01.jpg

হ্যালো, প্রিয় বন্ধুগণ প্রতিদিনের মতো আজও আপনাদের মাঝে হাজির হলাম নতুন একটি ইউনিক ব্লগ নিয়ে। যেহেতু ব্লগ লেখাটা এখন নেশা পেশা দুটোই হয়ে দাঁড়িয়েছে ।এমনকি এর চেয়ে বড় কিছু হল যে আমার বাংলা ব্লগের প্রতি একটা ভালোবাসা যেখানে আমরা দূর-দূরান্ত থেকেও একটা স্বপরিবারের মতো একে অপরের দুঃখ সুখের ভেলায় ভেসে চলেছি । তাই এখান থেকে যে সুখ বা ভালোবাসাটি পেয়েছি তা আসলে বলাই বাহুল্য । বলতে গেলে আমার এই ব্লগ জীবনে আমি সার্থক।

মানুষ বেঁচে থাকার জন্য যেমন নিজস্ব পরিবার আছে যেখানে তারা সুখ শান্তি সমৃদ্ধিতে বসবাস করে জীবন যাপন করে । কিন্তু এই আধুনিক প্রযুক্তির যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে যে ভার্চুয়ালি এত সুন্দর একটি পরিবার পাওয়া এটা আসলেই অনেকটাই ভাগ্যের ব্যাপারটা বলাই যায় ।

তো যাই হোক আজকে একটি নতুন ভিন্নধর্মী ইউনিক ব্লগ আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি । আশা করি আপনাদের সবারই অনেক ভালো লাগবে। এমনটাই আশা প্রত্যাশা রেখে শুরু করছি আমার আজকের লেখা ব্লগ। আজকের ব্লগে থাকছে বারুণী মেলায় কাটানো মুহূর্তগুলো । যদিও খুব একটা ফটোগ্রাফি করতে পারি নি কারণ সবার সামনে ফটোগ্রাফি করতে খুব একটা ভালো লাগে না। তারপরও মেলার বেশ কিছু আলোকচিত্র এই পোস্টে বা ব্লগে শেয়ার করছি। আশা করি আপনার সবার ভালো লাগবে ।

বিগত কিছুদিন আগে হয়ে যাওয়া বারুনি মেলা আমাদের পঞ্চগড় জেলার মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হল এ মেলা । যেখানে বলা যায় গঙ্গা দেবী অবস্থান এবং কি এখান দিয়ে করতোয়া নদীর উত্তর দিক থেকে প্রভাবিত হওয়ার জন্য এখানে স্নান করে দেহ মন পবিত্র হওয়া যায় এমনটাই বিশ্বাসী হিন্দু সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষের । আর তাইতো এই মেলায় সবাই এসে স্নান করে এবং কি গঙ্গা মন্দির দর্শন এছাড়াও অনেকে পূজা অর্চনার করে নিজের পাপ মুক্তি করে ।

সর্বোপরি এখানে হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষরা বিশ্বাস করে যে এই উত্তরমুখী করতোয়া নদীর স্রোতে এবং এই মেলায় এসে যদি মৃত বাবা-মা বা অন্য কোন আত্মীয়-স্বজনের শ্রাদ্ধ করা হয় । তাহলে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয় , এবং কি তাদের পরলক গামী হয় এমনটাও বিশ্বাসী প্রতিটি হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষের অন্তরে। সবাই এসে তাদের মাথা মুণ্ড করে ব্রাহ্মণ দিয়ে পূজা অর্চনা করে মৃত বাবা-মার বা আত্মীয়-স্বজনের মুক্তি কামনা করে।

মেলা প্রায় তিন দিন ধরে চলেছিল যদিও আমি শেষ মুহূর্তে গিয়েছিলাম ।তাই খুব একটা মানুষের সমাগম দেখিনি। বলতে গেলে আমি ভাঙ্গা মেলায় গিয়েছিলাম তারপরও মেলাতে গিয়ে অনেকটাই আনন্দ অনুভূতি পেয়েছি । যেগুলো এখন আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করার চেষ্টা করবো।

IMG20230321163104_01.jpg

IMG20230321162857_01.jpg

IMG20230321163303_01.jpg

IMG20230321163217.jpg

মেলাটি ছিল বা মন্দিরগুলো ছিল নদীর ওই পারে। যার কারণে আমরা মেলাতে যাওয়ার সময় বাশের ব্রিজ হয়ে গিয়েছিলাম। আপনারা নিশ্চয়ই ছবিটি দেখতে পারছেন যে দুটি বাঁশের ব্রিজ স্থাপন করা হয়েছিল। একদিক দিয়ে মানুষ মেলাতে ঢুকছিল ,আর আরেকদিকে দিয়ে মানুষ বের হয়। এমন দুটি পাশের ব্রিজ তৈরি করেছিল মেলাতে যাওয়া আসার জন্যই । যদিও আমি ভাঙ্গা মেলাতে গিয়েছিলাম বলে খুব একটা ভিড় দেখতে পারিনি । তবে যদি হয়তো মেলার বা পূজা চলাকালীন যেতাম তাহলে হয়তোবা প্রচুর মানুষের সমাগম দেখতে পেতাম । যেহেতু আমাদের পঞ্চগড় ডিস্ট্রিক্ট বা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বৃহৎ বড় মেলায় এটি ।

বাশের ব্রিজ বেয়ে আমরা মেলাতে প্রবেশ করলাম এবং কি মেলাতে গিয়ে সর্বপ্রথম আমরা মন্দির দর্শনে গেলাম। তবে ভাঙ্গা মেলাও যে এত ভিড় আসলে বোঝাই মুশকিল যেটা আসলে মন্দিরে না গেলে হয়তো বোঝা যেত না। এ পঞ্চগড়ের বারণী মেলাতে ভারত বা ইন্ডিয়া থেকেও অনেক ভক্তবৃন্দ বা দর্শনার্থী ব্যক্তিবর্গ এই মেলাতে এসেছেন । যা আমি সেদিন দেখতে পেয়েছিলাম । যা হোক এরপর মন্দিরে প্রবেশ করার আগে বাতাসা কিনে নিলাম যেগুলো ঠাকুরের কাছে দিয়ে প্রণাম করবো।

IMG20230321163946_01.jpg

IMG20230321163950_01.jpg

IMG20230321163447.jpg

বাতাসে কিনে নেওয়ার পর আমরা সোজা মন্দিরের উদ্দেশ্যে রওনা এরপর বাতাসা ছিটিয়ে দূর থেকে প্রণাম করলাম । যেহেতু মানুষের ভিড় ছিল কাছে যাওয়া খুব একটা সম্ভব করছিল না।

ঠাকুরকে প্রণাম করার পর এবার শুরু করলাম মেলা ঘুরার বেশ বড় মেলায় বসেছিল। নানা রঙের বেরঙের দোকান খাবার-দাবারের দোকান কসমেটি দোকান। এছাড়াও বিভিন্ন রকম দোকানপাট বসেছে যদিও সবকিছুর ফটোগ্রাফি আমি করিনি। আসলে এতগুলো মানুষের ভিড়ে ফটোগ্রাফি করাটা কেমন যেন একটা বেমানান । তবে মাঝেমধ্যেই চেষ্টা করেছি ফটোগ্রাফি কিছু করার। যেগুলো আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি।

IMG20230321164239_01.jpg

IMG20230321164217.jpg

IMG20230321164935.jpg

IMG20230321172112.jpg

IMG20230321165313_01.jpg

IMG20230321170412_01.jpg

IMG20230321165237.jpg

আমি মেলাতে খুব বেশি কিছু নেই নি খাইও নি ।শুধুমাত্র খেয়েছিলাম আচার আর ঝাল মুড়ি আর তারপর মেলার কিছু আকর্ষণীয় জিনিস দেখছিলাম বিশেষ করে ঘোড়া দেখতেছি সবাই টাকার বিনিময়ে ঘোরায় ৫ থেকে ১০ মিনিট চড়ছে দেখতে বেশ ভালই লাগছিল । যদিও আমি পড়ে গেলাম আবার কি কোন সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় এই ভয়েই ঘোরার পিঠে ওঠা হয়নি।

এরপর দেখতেছিলাম গ্রামবাংলা সেই চরকা যেটাতে মানুষ চোরে চারদিকে শুধু ঘোরে । এটা তে কে কে চভছে কিনা আমি জানিনা । তবে আমি একবার চড়েছিলাম মনে হয় সম্পূর্ণ পৃথিবীটা যেন উল্টে যাচ্ছে ঠিক এমনটাই মনে হয় । তাই এসব কিছুতে আমি কখনোই খুব বেশি চড়ি না। তবে মাঝে মধ্যেই সখের বসে উঠি কিন্তু পরক্ষণে আমার নেমে যাই।

সর্বোপরি সেদিন মেলায় বেশ সুন্দর একটি সময় অতিবাহিত করেছিলাম। তাই তো ভাবলাম যে এই সুন্দর সময়টুকু আপনাদের মাঝে শেয়ার করি বা ভাগ করে নেই।
প্রিয় বন্ধুরা আজকে আপনাদের কাছে এখানে বিদায় নিচ্ছি ৷ আবার নতুন কোন ইউনিক ব্লগ নিয়ে হাজির হবো৷ এমন প্রত্যাশা আশা আকাঙ্ক্ষা রেখে এখানেই শেষ করছি৷

ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন৷

কমিউনিটিআমার বাংলা ব্লগ
ফটোগ্রাফার@gopiray
ডিভাইসrealme 12

লোকেশন

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr673527MWFPCsxERaZquGbUkHMV9WZ5MJwmXkTuv41F5Tq4AiFtFdLYgppcpWVNLwb...45PzVWAMcnH3yQBxf5fXNb4aF4ANTTkpXKaNkmtZGTkGBuPWrd7E3SfVFzVaxiHJgeTsGASc2ZrWcbGiPkcj8D1MPwYnifrMpkxFpyc2eASgEzhaJ8suX7YJTg.png

সবাইকে ধন্যবাদ

5ZJ4Z52ZRyQfNkCWFfXsATSsPtfkBwT3a5k8RVinr673527MWFPCsxERaZquGbUkHMV9WZ5MJwmXkTuv41F5Tq4AiFtFdLYgppcpWVNLwb...45PzVWAMcnH3yQBxf5fXNb4aF4ANTTkpXKaNkmtZGTkGBuPWrd7E3SfVFzVaxiHJgeTsGASc2ZrWcbGiPkcj8D1MPwYnifrMpkxFpyc2eASgEzhaJ8suX7YJTg.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPgAaeHkUbVYHQygf4BziFrEyhjgH4bQJyLmky9bKBwALZ2h9iBsdB7ytyweg4...uHceQ2wqRonJz55fzgGqag7VnkZsWa3vJKm5kSf8xjNspoGW6oaborsjArEvvCB78WSgua6TK7Rs6TT1hChtGN8yFUUzAaZhdKYxi64CNUvAFCSmNEKoyvCw6d.gif

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9ms6NJyqDC7SoahBpoJnjzoXmRuaVTHyxffJTSjt3HCAJgZmTWQYSXVqA6yXF9TSJcoosKhzkudZxYGzUmXmso6pY5QuuDF.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ভারত বা ইন্ডিয়া থেকেও অনেক ভক্তবৃন্দ বা দর্শনার্থী ব্যক্তিবর্গ এই মেলাতে এসেছেন

চিনলেন কি করে।🤭

আসলে আমি নিজেও মেলা বা ভিড় জায়গায় গিয়ে ফটো তুলতে পারি না, মনে হয় ফটো তুলতে গেলেই সবাই আমার দিকে তাকিয়ে রয়েছে। এই ধরনের মেলায় ঘুরতে আমারও অনেক বেশি ভালো লাগে। খুব ভালো লাগলো আপনার পোস্টটা পড়ে এবং ফটোগ্রাফি গুলো দেখে।

দাদা ভাই যারা এসেছেন তাদের সাথে কথা হয়েছিল ৷ এবং কি মাইকে বলছিল যে ভারত থেকে ভক্ত বৃন্দ এসেছেন আমরা ধন্য ৷ আর এই মেলাটি কিন্তু বর্ডার এলাকার কাছাকাছিই ৷

আপনার মেলায় ঘোরাঘুরির অভিজ্ঞরা পড়ে অনেক ভাল লাগল মনে হল যেন আমি নিজের চোখে মেলা দেখছি।এই ভিড় জায়গায় ছবি তুলতে আমারো অস্বস্তি লাগে। চড়কি তে আমি চড়েছি। আমার বেশ লাগে চড়তে। ধন্যবাদ দাদা আপনার মেলায় ঘোরার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।

দাদা অনেক সুন্দর মতামত দিয়েছেন ৷ সর্বোপরি এটা ঠিক সবার সামনে ছবি তুলতে ভালো লাগে না ৷

আপনাদের পঞ্চগড় জেলায় অনুষ্ঠিত বারুণী মেলায় যে আপনি খুব সুন্দর একটি মুহূর্ত কাটিয়েছেন সেটা আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখেই বোঝা যাচ্ছে।হিন্দু ধর্মালম্বী মানুষরা বিশ্বাস করে যে এই উত্তরমুখী করতোয়া নদীর স্রোতে এবং এই মেলায় এসে যদি মৃত বাবা-মা বা অন্য কোন আত্মীয়-স্বজনের শ্রাদ্ধ করা হয় তাহলে তাদের আত্মার শান্তি কামনা করা হয় জেনে ভালো লাগলো। মেলাতে আপনি আচার আর ঝালমুড়ি নিশ্চয়ই খুব মজা করে খেয়েছেন। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি দৃশ্য তুলে ধরার জন্য।

অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি ভাই সুন্দর মন্তব্য করার জন্য ৷