বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প: "অর্চনা ম্যামের হাতে মার খাওয়া"

in hive-129948 •  5 months ago 

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।তবে আমি মোটামুটি আছি।কারণ কয়েকদিন ধরে আমার সময় খুবই ব্যস্ততার মধ্যে দিয়ে কাটছে এম.এ ভর্তি হওয়ার জন্য।যদিও আমি ইতিমধ্যে ভর্তি হয়ে গিয়েছি।যাইহোক আজ চলে আসলাম আমি @green015 যথা নিয়মে আপনাদের মাঝে নতুন একটি শৈশবের বাস্তব গল্প শেয়ার করতে।

বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প: "অর্চনা ম্যামের হাতে মার খাওয়া"

pexels-photo-10643457.jpeg
সোর্স

আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে আজকের বলা শৈশবের অনুভূতিগুলি খুবই স্মৃতিমধুর।যদিও সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজো আমার ইচ্ছে করে ছুটে যেতে শৈশবে।তাই সেই শৈশবের সুন্দর স্মৃতিটি শেয়ার করবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট অনুভূতিখানি।তো চলুন শুরু করা যাক--

শৈশবের কথা।যখন আমি পাঠশালাতে পড়তাম,আমার মা আমাকে একবারে টু ক্লাসে ভর্তি করে দিয়েছিলো পড়াশুনায় ভালো দেখে।আর টু ক্লাসের বাংলা বইয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমাদের ছোট নদী কবিতাটি ছিল।ম্যাম ক্লাসে এই কবিতার 20 লাইন মুখস্থ ধরছিলেন।

সেদিন আমি কোনো কারণে ক্লাসে দেরি করে ফেলি।আর গিয়েই দেখি সবাই কবিতা আবৃত্তি করার চেষ্টা করছে অর্থাৎ ম্যাম যাকে যাকে জিজ্ঞাসা করছেন।আমি তো তখন পড়া করেই যায়নি তারপরও 7-8 লাইন দ্রুত পড়ে মুখস্ত করে নিলাম।আমাদের অর্চনা ম্যাম ক্লাসে বেত ব্যবহার করতেন।তখন বেতের ব্যবহার ছিল যদিও বেশি আগের কথা নয় বেত ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হয়েছে স্কুলে।যাইহোক এভাবে পড়া জিজ্ঞাসা করতে করতে আমার পালা এলো।ম্যাম বললেন --20 লাইন কবিতা আবৃত্তি কর?

কিন্তু যেহেতু সেদিন আমি পড়া করে যায়নি তাই বেশ ভয় পেলুম।তারপরও 8-10 লাইন কোনোমতে আবৃত্তি করার চেষ্টা করলাম।কিন্তু ম্যাম তো খুবই জেদি,কিন্তু সেদিন তিনি বেত নিয়ে আসেন নি ক্লাসে।তাই কঠিন হাতের মার পড়লো আমার মুখে কানে।ম্যামের মারের ভারীতায় আমার একটি কান থেকে ছিটকে পড়ে গেল কানের পড়ে থাকা রিং দুলটি।
বাড়ির পাশেই স্কুল, তাই স্কুল ছুটি হলে বাড়ি যেতেই বাবা-মা দেখলো মুখে পাঁচ আঙুলের দাগ পড়ে আছে।তার উপরে আবার কানের দুল একটি গায়েব অন্য কানে একটি রয়েছে।আমাকে জিজ্ঞাসা করলে আমি তো কিছুই বলতে চাইছি না ভয়ে।কারন আমার বাবা -মা এমন,অন্যেরা দোষ করলেও তাদের কথা শুনতে চায় না।বরং আমরা দোষ করলাম আর না করলাম শাসনের আঘাত আমাদেরকেই পেতে হবে।যাইহোক তবে এইবার বাবা বললেন--- কি হয়েছে?

আমি বললাম,, পড়া পারিনি তাই শাস্তি।কিন্তু আমার বাবার ঠিক মনঃপূত হয়নি শাস্তিটি।তাই আমার হাত ধরে নিয়ে চললেন ওই ম্যামের কাছে আর ক্লাস রুমে।ক্লাস রুমে গিয়ে অনেক খোঁজাখুঁজি করে কানের দুলটি পেলাম।ম্যাম সামান্যতেই একটু বেশি বাড়াবাড়ি করে ফেলেছেন তাই একটু চিন্তিত হয়ে পড়লেন।

যেহেতু স্কুলের পাশেই আমাদের বাড়ি তাই মাঝে মাঝেই ফ্রি টাইমে ম্যাম আমাদের বাড়িতেও গিয়ে থাকেন।আমাদের বাড়িতে যেহেতু ফলের সমাহার থাকে সবসময় তাই ম্যামকে আম,কাঁঠাল,পেয়ারা,সফেদা,বিলাতি গাব ইত্যাদি ফল খেতেও দেওয়া হয়।তাছাড়া দুপুরের টাইমে গেলে খাওয়া-দাওয়ার আপ্যায়ন করাতেও কিন্তু ভোলেন না আমার বাবা-মা।

যাইহোক কানের দুল পাওয়ার পর বাবা বললেন--- চল ম্যামের কাছে।আমি তো তখন ভয়ে জড়সড় যদিও বাবা সঙ্গে রয়েছে তবুও।তারপর বাবা ম্যামকে বললেন---শুনুন, মেয়ে মানুষ।তাই মুখের অংশ বাদ দিয়ে অর্থাৎ চোখ,কান,গলা ও মুখ বাদ দিয়ে আপনি হাতে-পিঠে যত মেরে পারেন।আমি দেখতে কিংবা জিজ্ঞাসাও করতে আসবো না।তখন মনে মনে আমি ভাবছি---এইবার তো আরো বেশি করে শাস্তি পেতে হবে আমাকে। যদিও তারপর আর কখনো কোনো স্যার-ম্যামের হাতে আমাকে মার খেতে হয়নি।আমি পড়া করে যেতুম।।


আশা করি আমার আজকের শৈশবের গল্পটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং: "শৈশবের গল্প"
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি বর্ধমান ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি,ইতিহাস বিষয় নিয়ে।বর্তমানে আমি ওখানেই অধ্যয়নরত আছি।এখানে বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।এছাড়া আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order: