বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প:"রজতের কান্ডকারখানা"

in hive-129948 •  7 months ago 

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।এইজন্য আজ চলে আসলাম আমি @green015 যথা নিয়মে আপনাদের মাঝে নতুন একটি শৈশবের বাস্তব গল্প শেয়ার করতে।

বাস্তবধর্মী শৈশবগল্প:"রজতের কান্ডকারখানা"

IMG_20240728_235338.jpg
সোর্স

আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটির সম্মুখীন আমরা দ্বিতীয়বার হতে চাই না।তেমনি একটি শৈশবের বাস্তবধর্মী গল্প বলবো আজ আপনাদের সঙ্গে।তবে শৈশবের ঘটনাটি আমার নয় আমাদের গ্রামে একটি ছেলের।যদিও সেই স্মৃতি মনে পড়লে আজো আমার খারাপ লাগার ধারণা সৃষ্টি হয়।তাই সেই ছেলেটির শৈশবে ঘটা ঘটনাটি শেয়ার করবো আজ আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের ছোট গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক এই গল্পের মূল কাহিনীতে--

আমাদের গ্রামটি ছোট্ট।নির্ভেজাল এই গ্রামে প্রাইমারী ও হাইস্কুল একসঙ্গেই রয়েছে।আর গ্রামের একপাশ দিয়ে বয়ে চলে গেছে বড় নদী।তাই শীতল হাওয়া ছুঁয়ে যায় এই গ্রামকে এবং এই গ্রামের মানুষকে।

আজকের গল্পের মূল চরিত্র রজত।এই রজত ছিল আমাদের পাঠশালার মাস্টারমশাইয়ের একমাত্র ছেলে।আসলে গ্রামে তখন পাঠশালা ছিল।আর এই পাঠশালা পড়ানো হতো আমাদের বাড়িতে।অর্থাৎ আমার মেজো জেঠুদের যে বিচার-আচার করার ঘর ছিল সেখানে।আমরা এই ঘরকে দোলসিঘর বলতাম।যেহেতু আমার মেজো জেঠু চেয়ারম্যান ছিল তাই এই ঘরে মজলিস বসতো।যদিও ঘরটি তখন অকেজো ছিল তাই এই পাঠশালার ব্যবস্থা করা।তাই রজতের বাবার কাছে আমিও পাঠশালায় পড়তাম।

সকাল বিকেল নিয়ম করে পড়তে যেতে হতো,প্রার্থনা করে পড়া শুরু হতো প্রার্থনা করে পড়া শেষ হতো।খুবই ভালো ছিল সময়টি,একেবারে বাচ্চা থেকে শুরু করে ফোর ফাইভে পড়া ছেলেমেয়েরাও পড়তো সেখানে।এইজন্য আমি সকালে পাঠশালার পড়া শেষ করে তারপর চলে যেতাম প্রাইমারি স্কুলে ক্লাস করতে।আর এই জন্য মা আমাকে ক্লাস অন এ না ভর্তি করে ক্লাস টু তে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন একবারে।এই রজত পড়তো আমার এক ক্লাস নীচে, একবছর পাঠশালায় পড়েছিলাম আমি।যাইহোক এভাবে আমি ক্লাস ফাইভে যখন পড়ি তখন রজত ক্লাস ফোরে পড়ে।যদিও আমরা একই বয়সে কিংবা আমি ছোট তারপরও।রজতের বাবা পাঠশালার মাস্টারমশাই হলেও তার ছেলের পড়ার প্রতি বিন্দুমাত্র আগ্রহ ছিল না।অর্থাৎ সে অনেক দুস্টু ছিল না কিন্তু পড়াশুনাও ভালো ছিল না।আর তাদের পরিবারের অবস্থাও খুব একটা ভালো ছিল না।বছর শেষে মানুষ যা বেতন দিতো কিংবা কিছু ধান দিতো বাচ্চাদের পড়ানোর বিনিময়ে তাতে তাদের সংসার কোনরকমে চলে যেত।মাঝে মাঝেই মজুরি কাজ করে নিতো রজতের বাবা।

একদিন বিকেলে শুনি রজত হাসপাতালে ভর্তি।তার হাত পা ভেঙে গিয়েছে আর মাথা ফেঁটে গিয়ে রক্ত পরছে।কিভাবে বলতেই জানতে পারলাম--অন্যের গাছের নোল চুরি করতে গিয়ে।যদিও নোল গাছটি খুব একটা বড় নয় তার উপরে তার ডাল একটু নরম জাতীয়।আসলে রজত সুপারি গাছ বেয়ে নোল গাছের সরু ডাল ধরে নোল খেতে গিয়েই হাত ফসকে পড়ে গিয়েছে মাটিতে।যদিও ডালটি খুব একটা উপরে ছিল না মাটি থেকে।তারপর একদিন দেখলাম অনেকগুলো ব্যান্ডেজে মুড়ানো রজতের হাত,পা ও মাথা।তারপর একদিন দেখলাম ব্যান্ডেজ খোলা অবস্থায়।সারামুখে, মাথায় সেলাই করার দাগে খুবই খারাপ অবস্থা।কেউ কেউ আবার বলেন--নোল গাছের ভূত রজতকে ফেলে দিয়েছে ডাল থেকে।।


আশা করি আমার আজকের গল্পটি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীজেনারেল রাইটিং: শৈশবের গল্প
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।আমি অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী।বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

Thanks.

নোল গাছের ভূত না বোন, রজতের অসাবধানতার কারণেই গাছ থেকে পড়ে গেছিল। হা হা হা... আসলে ঐ বয়সে বাচ্চাদের একটা অন্যরকম কৌতূহল থাকে। যদিও গাছ থেকে পড়ে হাত পা ভেঙে গেছিল, তবে বেঁচে ছিল এটাই অনেক। আমার ছোট বেলার কিছু বন্ধুদের সাথেও এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে।

ঠিক বলেছো দাদা,অসাবধানতা।মারাত্মক ভাবে ভেঙেছিল বাঁচার সম্ভাবনা কম ছিল নোল খেতে গিয়ে।