বাস্তবধর্মী গল্প: "রিক্তা ও মুক্তার পরিবার"

in hive-129948 •  20 days ago 

নমস্কার

কেমন আছেন বন্ধুরা? আশা করি সবাই ভালো ও সুস্থ আছেন ঈশ্বরের কৃপায়।আমিও মোটামুটি ভালোই আছি।যাইহোক আজ চলে আসলাম আমি @green015 যথা নিয়মে আপনাদের মাঝে নতুন একটি বাস্তবধর্মী গল্প শেয়ার করতে।আমি চেষ্টা করি দুই ধরনের গল্প লেখার,তার মধ্যে আমার শৈশব জীবনের গল্প ও আমার চোখের সামনে দেখা কোনো বাস্তবধর্মী জীবনের গল্প তুলে ধরার চেষ্টা করি অন্ধকূপ থেকে।তো চলুন গল্পটি শুরু করা যাক---

বাস্তবধর্মী গল্প: "রিক্তা ও মুক্তার পরিবার"

IMG_20241208_235649.jpg
সোর্স

ছোট্ট একটি গ্রামের একপাশে বয়ে চলেছে নদী।নদীর একপাশে মানুষের জনবসতি আর নদীর পাশে মুক্তাদের বাড়ি।মুক্তারা দুইবোন, তার বড় বোন রিক্তা ও তার মায়ের সঙ্গে সে থাকে।কারন রিক্তার বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে দিনযাপন করছে নিজ গ্রামে।কোনো একটি কারনে দুই মেয়েকে নিয়ে রিক্তার মা আমাদের গ্রামে চলে আসে।সেই থেকে সে কখনো আমাদের বাড়িতে কাজ করে তো কখনো আবার নদীতে পোনা ধরে বিক্রি করে সংসার চালায়।

বেশ কয়েক বছর পার হয়ে গিয়েছে।মাঝে মাঝেই মুক্তার বাবা জিনিসপত্র নিয়ে মুক্তাদের বাড়িতে দেখা করতে আসে।মুক্তার দিদি রিক্তা ছোটবেলা থেকেই পান খাওয়াতে ওস্তাদ,গাল ভর্তি পানে ঠাসা থাকে সবসময় তার।খুবই কম লেখাপড়া করেছে সে,সেও তার মায়ের কাজে সাহায্য করে।রিক্তার মা কিভাবে যেন একজন ছেলের সন্ধান করে তাকে বিয়ে দিয়ে দেয় অনেক দূরে।ছেলেটা আমাদের গ্রামে আসলে তো সবাই অবাক তেমনি আবার কিছুটা ঠাট্টার যোগ্য।সবাই বলে---রিক্তার মা এটা কি করেছে!

আসলে রিক্তার বয়স 18 এর কম অথচ বিয়ে দিয়েছে 40 বছরের একটি ছেলের সঙ্গে।সম্ভবত সে কোনো স্কুলের ক্লার্ক হিসেবে কাজ করে।অনেকেই তো ঠাট্টা করে বলে---এটা রিক্তার স্বামী না হয়ে ওর মায়ের দ্বিতীয় স্বামী হলে ভালো হতো।কারণ রিক্তার স্বামীর বয়স তার বাবার বয়সেই হবে অনেকেই ধারণা করেন।রিক্তার বাল্যবিবাহ হয়,কয়েক বছরের মধ্যে রিক্তা তিন সন্তানের মা হয়।মাঝে মাঝেই আমাদের গ্রামে তার স্বামীর সঙ্গে সে বেড়াতে এসে বেশ কয়েকদিন করে কাটিয়ে যায়।

রিক্তার স্বামী যেহেতু স্কুলে কর্মরত তাই তার মা ঠিক করে মুক্তাকে তার দিদির বাড়ি রাখবে।সেইমতো মুক্তাকে তার দিদির বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হয়, যাতে সে তার দিদির বাচ্চাকে দেখাশোনা করতে পারে সঙ্গে লেখাপড়াও করতে পারে।মুক্তার লেখাপড়ার খরচ তার জামাইবাবু চালাবেন কারণ তার অবস্থা মোটামুটি ভালোই।মুক্তার জীবন ভালোই কাটছিলো, মাঝে মাঝেই সে তার মায়ের বাড়ি অর্থাৎ আমাদের গ্রামেও আসে।কিন্তু হঠাৎ করেই তার মা মুক্তাকে তার দিদির বাড়ি থেকে একেবারেই নিয়ে চলে আসে।
(চলবে....)


আশা করি আমার আজকের গল্পখানি আপনাদের সকলের কাছে ভালো লাগবে।পরের দিন আবার নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হবো আপনাদের মাঝে, ততক্ষণ সকলেই ভালো ও সুস্থ থাকবেন।

পোষ্ট বিবরণ:

6nSeSEzKEwjJN68tMqgZXvpyk1cf2ihqXgmWESDgXSh21PkpkXyXwzmWEkSA7U2PjRr7VoGxjyzQFnZHCkVBWn57JTVUvY7omc512mhJJX...vDZX3Fcaov38Zxjxq21rAE9wN1b8HnrBKZamZjaRXZMJVUcaVKGLWFRFVNG6MXCo9ptvvGTefY61oasZ4TrQFVwMiYWBFUH8ivxFm1LbtvBRqtkowye4ZCeEyk.png

শ্রেণীগল্প
ডিভাইসpoco m2
অভিবাদন্তে@green015
লোকেশনবর্ধমান

3DLAmCsuTe3bV13dhrdWmiiTzq9WMPZDTkYuSGyZVu3GHrVMeaaa5zs2PBqZqSpD3mqpsYSX3wFfZZ5QwCBBzTwH9RFzqAQeqnQ3KuAvy8Nj1ZK1uL8xwsKK6MgDT8xwdHqPK76Y63rPyW9N4QaubxdwM3GV2pD.gif

আমার পরিচয়
আমি রিপা রায়।আমার স্টিমিট ইউজার আইডি @green015.আমি একজন ভারতীয়।আমি বর্ধমান ইউনিভার্সিটি থেকে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করেছি,ইতিহাস বিষয় নিয়ে।বর্তমানে আমি ওখানেই অধ্যয়নরত আছি।এখানে বাংলা ভাষায় মন খুলে লেখালেখি করতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত।এছাড়া আমি একজন বাঙালি হিসেবে গর্ববোধ করি।

IMG_20240429_201646.jpg
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

টাস্ক প্রুফ:

GridArt_20241211_205007209.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

দিদি আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। রিক্তাকে অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে যেমন ভুল করেছে তেমনি অন্যদিকে চিন্তা করলে ঠিক ও করেছে। কারণ তারা খুবই নিম্নবিত্ত পরিবারে বসবাস করে। রিক্তার মায়ের পক্ষে হয়তো সংসার চালানো খুবই কষ্টকর ছিল। তাই ভালো ছেলে পেয়ে দিয়ে দিয়েছে। গ্ৰামে এখনও কিন্তু বাল্যবিবাহ হয় আর তাদের অনেকেই হয়তো বাধ্য হয় ছেলেমেয়েদের বাল্যবিবাহ দিতে। কিন্তু সেখানে আবার মুক্তাকে পাঠানো ঠিক হয়নি। এরপর আবার হঠাৎ করে মুক্তাকে সেই বাড়ি থেকে একেবারে নিয়েও আসা হয়। দেখা যাক কেন মুক্তা কে নিয়ে আসা হয়েছে। পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।

একেবারেই ঠিক বলেছেন আপু,অনেক সময় অভাবের তাড়নায় কম বয়সে বিয়ে দিতে হয় মেয়েদের।কিন্তু এখানে বয়সের পার্থক্য অনেকটাই ছিল যেটা এখনকার সময়ে মানুষ খুব একটা ভালো চোখে দেখেনি,ধন্যবাদ আপনার দারুণ মতামতের জন্য।