নমস্কার
শৈশবের গল্প: "এক আদু বড়দার জীবন"
আমরা সবাই ফিরে পেতে চাই আমাদের শৈশবের কিছু সুন্দর মুহূর্তগুলিকে।কিন্তু কিছু মুহূর্ত এমন স্মৃতি হয়ে যায় যেটি খুবই মজার আবার একটু খারাপ লাগার।সুতরাং সেই মুহূর্তগুলি জীবনের মজার খন্ডচিত্রে লিখিত হয়।গল্পটি আমার না হলেও আমাদের জীবনের সঙ্গে মিশে আছে।তাই শৈশবে আমাদের জীবনের সঙ্গে যুক্ত সেই মজার খন্ডচিত্র শেয়ার করবো আপনাদের সঙ্গে। আশা করি ভালো লাগবে আপনাদের সকলের কাছে আমার আজকের লেখা শৈশবের গল্পখানি।তো চলুন শুরু করা যাক এই গল্পের মূল কাহিনীতে--
কি বন্ধুরা!
অনেক তো শুনেছেন আদু ভাইয়ের গল্প ,এইবার না হয় আদু বড়দা ও বড়দির গল্প শুনুন।মূলত আদু বলতে আমরা তাদেরকেই বুঝি যারা একই ক্লাসে বারবার ফেল করে থেকে যায়।তেমনি আমাদের গ্রামের প্রণব নামে একটি ছেলে বারবার একই ক্লাসে ফেল করলে সে থেকে যায় ক্লাস ফোরে।
আমার মা আমাকে একবারে ক্লাস টু তে ভর্তি করেছিলেন।ফলে আমি আমার বয়স অনুযায়ী একক্লাস উপরে এগিয়ে থাকলাম অন্যান্যদের তুলনায়।এভাবে আমিও ক্লাস ফোরে উঠলাম প্রণব দাদার ক্লাসে,ক্লাসে তারা পুরাতন।অর্থাৎ একই ক্লাসে বারবার থাকার ফলে ইতিমধ্যে হেড স্যার প্রনবকে আদু বড়দা নামে ঘোষণা করেছেন।তখন আমাদের হেড স্যার ইংরেজি ক্লাস নিতেন আমাদের,তাই তিনি শিখিয়ে দিলেন সবাই যেন আমরা এই আদু ভাইকে সম্মান করে বড়দা বলে ডাকি।কিন্তু ভাগ্যক্রমে প্রণব কোনো মতে সেইবার পাশ করে আমাদের সঙ্গে ক্লাস ফাইভে উত্তীর্ণ হলো।
মূলত ইচ্ছে করেই স্যার তাকে ফাইভে উঠিয়ে দিয়েছিলেন, সেখানে স্যার একজন আদু বড়দির সঙ্গে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিলেন।এখন আর ঠেকায় কে!শুরু হলো আমাদের দুস্টুমি।ক্লাসে তখন ঐ দুইজনকে নিয়ে ঠাট্টা তুমূলে।অর্থাৎ বড়দা ও বড়দি বলে ডেকে ক্ষেপিয়ে যেত সবাই তাদেরকে সঙ্গে আমিও ছিলাম।কিন্তু তারা তেমন কিছুই মনে করতো না বরং মেয়েটি খুবই ভালো মিষ্টি স্বভাবের ছিল।তারপর আমরা ক্লাস উত্তীর্ণ হয়ে গেলেও তারা ক্লাস 5 থেকে পাশ করে উত্তীর্ন হতে পারলো না।যদিও আমার একটু খারাপ লেগেছিল সেই সময়।যাইহোক মেয়েটা যেহেতু আমাদের থেকে বেশ বড় ছিল বয়সে তাই তার মা বাবা তাকে কিছুদিন পরেই বিয়ে দিয়ে দিলেন।
অন্যদিকে আমাদের আদু বড়দাকেও স্কুল জীবন ছাড়তে হলো।তার বাবা একজন কাঠমিস্ত্রির সঙ্গে কাজে পাঠিয়ে দিলেন প্রনবকে।কিন্তু প্রণব দুঃখের বিষয়, সেখানেও আদু ভাইয়ের পরিচয় দিলো।অর্থাৎ তাকে বারবার কাঠমিস্ত্রির ছোট ছোট যন্ত্রপাতির নাম শিখিয়ে দিয়ে আনতে বললে সে কিছুতেই মনে রাখতে পারে না।যেমন---করাত, নীন, হাতুড়ি,সরকালি ইত্যাদি কাঠমিস্ত্রির প্রধান যন্ত্রপাতি।কিন্তু সে ঠিকঠাকভাবে এগুলো মনে রেখে তার মালিক চাইলে দিতে না পারায় তাকে কাজ থেকে বের করে দিলেন কয়েক দিনের মধ্যেই।সবশেষে প্রণবের বাবা তাকে একটি মেশিন ভ্যান কিনে দিলেন।প্রণব এখন দিব্যি মেশিন ভ্যানের ইনকাম দিয়ে সংসার চালাচ্ছে।এমনকি তার বাবা তাকে বিয়েও দিয়েছেন।তো এটাই ছিল আমাদের গ্রামের আবার ক্লাসের এক আদু বড়দার গল্প।
পোষ্ট বিবরণ:
শ্রেণী | জেনারেল রাইটিং: "শৈশবের গল্প" |
---|---|
ডিভাইস | poco m2 |
অভিবাদন্তে | @green015 |
লোকেশন | বর্ধমান |
আমার পরিচয় |
---|
আমি সবসময় ভিন্নধর্মী কিছু করার চেষ্টা করি নিজের মতো করে।কবিতা লেখা ও ফুলের বাগান করা আমার শখ।এছাড়া ব্লগিং, রান্না করতে, ছবি আঁকতে,গল্পের বই পড়তে এবং প্রকৃতির নানা ফটোগ্রাফি করতে আমি খুবই ভালোবাসি।
টুইটার লিংক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thanks..
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আদু ভাইয়ের গল্প অনেক শুনেছি, তবে আদু বড়দা এবং বড়দির গল্প কখনো শুনিনি। যাইহোক এই পোস্টের মাধ্যমে আদু বড়দা এবং বড়দির গল্পও শোনা হয়ে গেলো। আপনার মতো আমাকেও সরাসরি ক্লাস টু তে ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল আমার মা। যাইহোক আদু বড়দা তাহলে বিয়ে করে এখন বেশ ভালোই আছে। আর আদু বড়দিরও তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আদু বড়দা যদি কাঠমিস্ত্রির ছোট ছোট যন্ত্রপাতির নাম মনে রাখতে পারতো,তাহলে কি আর বারবার ফেল করে নাকি😂। যাইহোক গল্পটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনিও একবারে ক্লাস টু তে ভর্তি হয়েছিলেন জেনে ভীষণ ভালো লাগলো, ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক বলেছেন দিদি শৈশবের কিছু কিছু মুহূর্ত এমন ভাবে স্মৃতি হয়ে যায় যেটি খুবই মজার আবার একটু খারাপ লাগার থাকে। যাই হোক আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প লিখেছেন। আদু ভাই এর পরিবর্তে এবার আদু বড়দার গল্প শুনতে পেয়ে খুব ভালো লাগলো। প্রবণ ছেলেটার মাথায় গোবর ছাড়া কিছু নেই তা পড়ালেখা ছেড়ে দিয়ে আরও ভালো করে বুঝিয়ে দিলো। তাকে স্কুলের স্যার আদু বড়দা নাম দিয়ে ভালোই করেছেন। এমন মানুষ যদি স্কুলে একটা থাকে তাহলে হাসাহাসি ভালোই হয়। অবশেষে প্রণবের বাবা মেশিন ভ্যান কিনে দিয়ে ভালোই করেছেন যা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে এখন সে মেশিন ভ্যান চালিয়ে পরিবারের সবাই কে নিয়ে ভালো আছে জেনে ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই আপু,যার দ্বারা মনে রাখার কিছু হয় না তাকে তো অন্য ব্যবস্থা করে দিতেই হতো।ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গল্পের সাথে বাস্তবে অনেক মানুষের জীবনের মিল খুঁজে পাওয়া যাবে। স্কুলে গিয়েছে ঠিক মতো লেখাপড়া করতে পারেনি তারপরে অন্য একটি কাজে পাঠিয়েছে সেটাও করতে পারেনি তখন পরিবার থেকে আবার ভিন্ন কাজের ব্যবস্থা করে দিয়েছে। মূলত দরিদ্র ফ্যামিলিতে এরকম ঘটনা অনেক লক্ষ্য করা যায়।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একেবারেই ঠিক ভাইয়া, এটা গল্প হলেও বাস্তবে ঘটা ঘটনা।ধন্যবাদ আপনাকে ও।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আগে শুধু আদু ভাইয়ের গল্প শোনতাম তবে আদু বড়দার গল্প কখনো শুনিনি।যাইহোক আদু বড়দা কাঠমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে ও জিনিসের নাম মনে রাখতে পারেনি। সত্যি আপু আদুবড়া নামেই পরিচিত হয়ে গেল। ধন্যবাদ আপু গল্পটি আপনাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা আসলেই অনেক লজ্জা এবং খারাপ লাগার বিষয় ছিল আপু,ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাইহোক আদু ভাইয়ের মতো এরা লেগে থাকেনি। আর এটা সম্ভবও না। একজনের তো বিয়ে হয়ে গেল আর আরেকজন কাঠমিস্ত্রির থেকে প্রত্যাখ্যাত হয়ে মেশিন ভ্যান এর পেশায় নামল। গল্পটা বেশ ভালো লাগল। আর এটা যেহেতু আপনার জীবনের একটা অংশ অর্থাৎ বাস্তবতা সেজন্য আলাদা একটা মাএা যুক্ত হয়েছে। ধন্যবাদ আমাদের সাথে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া, এটা গল্প হলেও বাস্তবে ঘটা ঘটনা।ধন্যবাদ আপনাকে ও।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বোন, বাস্তব জীবনে আদু ভাইয়ের গল্প কখনো শুনিনি, তোমার আজকের পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম। তবে আমার মনে হয়, এই গল্পের প্রণবের পড়া মনে না রাখা কিংবা যেখানে কাজ করে সেখানকার যন্ত্রপাতির নাম মনে না রাখা, এগুলো কিছুটা অস্বাভাবিক। তার ব্রেনের সমস্যা থাকতে পারে, এজন্য হয়তো কোন কিছু মনে রাখতে পারত না। তবে তাই বলে আমি কোন মানুষকে ছোট করে কথা বলার পক্ষপাতী নই। সে যদি পড়াশোনা করতে পারত, আমি মনে করি সে অবশ্যই করত। হয়তো তার এরকম কোন সমস্যা ছিল যার কারণে সে কোন কিছু মনে রাখতে পারেনি কখনোই।
শেষে এসে এই ব্যাপারটা জেনে অনেক ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দাদা,প্রণব দাদার কোনো ব্রেনের সমস্যা ছিল না।আসলে সকলের ব্রেন তো এক নয়,হয়তো ও কোনো কিছু মনে রাখারই চেষ্টা করতো না বারবার শিখিয়ে দেওয়ার পরও।যদি ও গাফিলতি না করে চেষ্টা থাকতো অবশ্যই ও ক্লাসে উত্তীর্ণ হতে পারতো।যাইহোক অনেক ধন্যবাদ তোমায় দাদা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তাহলে হয়তো অন্য কোন ব্যাপার হবে বোন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হুম দাদা.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit