হ্যালো! আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি ভাল আছেন। আমার পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। হাজির হলাম চেম্বার কথনের আরেকটা পোস্ট নিয়ে। আজকে আমরা শুনবো কিভাবে কিছু কিছু মানসিক অসুস্থতা কখন কখনও শারীরিক লক্ষণও নিয়ে আসে। ছোট ২ টা গল্প!
একজন ইয়াং লোক। বয়স ২৫-৩০ এর মধ্যে। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে এক ধরনের সমস্যায় ভুগছেন। হঠাত করে বুক ধরপর করে, মাথা ঘুরিয়ে ওঠে, অস্থির লাগে। এরকম ২৫-৩০ সেকেন্ড থাকে। তারপর আবার ঠিক হয়ে যায় এমনি এমনিতেই। প্রথম যখন এই সমস্যা শুরু হয় তখন অত্যধিক মানসিক চাপে ছিলেন। এর পর থেকেই দিনে এক দুই বার, সপ্তাহে বেশ কয়েক বার করে এই সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
শারীরিক পরীক্ষাতে কোন সমস্যা পাওয়া গেল না। দেখেও সেরকম অসুস্থ মনে হলো না উনাকে আমার কাছে। সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে আমার কাছে মনে হলো যে উনার সমস্যাটা মুলত মানসিক। এটা অনেকটা প্যানিক এটাকের (Panic attack) মত। হঠাত করে ভয় পেলে যেমন বুক ধরপর করে, বুক চেপে আসে, অস্থির লাগে, উনার লক্ষণগুলো অনেকটা সে রকমই ছিল। তাই আমার ডায়াগনোসিস ছিল প্যানিক এটাক। এটার জন্যে দুইটা ওষুধ দিয়ে বিদায় দিলাম উনাকে।
আরেকজন রুগী এসেছেন আমার কাছে জিহ্ববাতে ঘা নিয়ে। নতুন সমস্যা। জিহ্ববার সামনের দিকে নাকি ছিলে গিয়েছিল কয়েকদিন আগে। কিছু খেলেই ঝাল লাগতো। আমার কাছে যখন আসেন, তখন ঘা অনেকটাই সারার পথে। যখন ঘা বেশী ছিল তখন কেন আসেন নাই? “সময় পায় নাই!”
উনি একটা টুর্কি রেসটুরেন্ট এ কাজ করেন। প্রতিদিন দুপুর ১টা থেকে রাত ৩-৪টা পর্যন্ত কাজ করেন। সপ্তাহে কোন ছুটি নাই। যদিও উনার কাজ রেস্টুরেন্টে, নিজের খাবার নিজেই রান্না করে খান। মানে হচ্ছে, যদি রান্না করা না থাকে, তাহলে রাত ৩টার পর বাসায় ফিরে কিছু রান্না করে খেয়ে তার পর ঘুমাতে যান। সকালে ঘুম থেকে উঠার পর দুপুর ১ট পর্যন্ত যে সময় থাকে সে সময়ের মধ্যে রান্না গোসল বা অন্যান্য কাজ যা থাকে তা সেরে নেয়া লাগে। এভাবেই চলছে দিনের পর দিন, সপ্তাহের পর সপ্তাহ, মাসের পর মাস! আমার কাছে এসেছিলেন কোন এক সকালে, ঐ দিনের জন্যে একটু কম ঘুমিয়ে!
জিহ্ববাতে ঘা এর পাশাপাশি উনার আরও কিছু লম্বামেয়াদী সমস্যা ছিল। শরীর দুর্বল লাগে সব সময়। কাজ করতে ভাল লাগে না। খাওয়ার রুচি কম। ওজন বাড়ছে না! মানে উনার সমস্যাগুলো মোটা দাগে বলতে গেলে ডিপ্রেশানের ক্যাটাগরিতে পড়ে। নিজেও বুঝতে পারেন। ঐ রেস্টুরেন্টের কাজে উনার মন লাগে না। কাজে ফুর্তি নাই। সার্বক্ষনিক মানসিক ভাবে চাপে থাকেন উনি। যা্র ইফেক্ট এ শারীরিক সমস্যা গুলো আস্তে আস্তে প্রকাশ পাচ্ছে!
আজকে এ পর্যন্তই। কেমন লাগলো আজকে লেখাটি তা অবশ্যই জানাবেন কমেন্টের মাধ্যমে। ভাল থাকুন সবাই।
ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিরন্তর
ডা হাফিজ
ওমান
২১ ই অক্টোবর,, ২০২৪