একজন ডায়াবেটিস রুগী এবং একটা নষ্ট Glucometer এর গল্প | ১০,০০০ $PUSS কিনলাম!

in hive-129948 •  3 months ago 

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই। আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমার এই পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। চলুন আরেকটা সত্য গল্প শুনি যেটা কিছুটা বাস্তব শিক্ষা দিবে আমাদের, ইনশাআল্লাহ।

steem.jpg

ডায়াবেটিস লেকচারের সময় আমাদের শিক্ষকরা বলতেন যে Glucometer এর রিডিং (Glucometer কি জিনিস জানা না থাকলে নিচে ছবি দেয়া আছে দেখে নিবেন) দিয়ে কখনো ডায়াবেটিস রোগ ডায়াগনোসিস করা যাবে না। অবশ্যই ল্যাবরেটরিতে করা টেস্টের রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে ডায়াগনোসিস করতে হবে। তবে একজন ডায়াবেটিস রুগী বাসায় ফলোআপ এর জন্যে ছোট Glucometer মেশিন দিয়ে ডায়াবেটিস মাপতে পারবেন। বিশেষ করে যারা ইনসুলিন নেন তাদের জন্যে এটা বেশী উপকারী। নির্ভুলতার দিক দিয়ে চিন্তা করলে ল্যাবরেটরিতে করা রেজাল্ট Glucometer এর রেজাল্টের তুলনায় বেশী সঠিক। দুইটার মধ্যে কিছুটা পার্থক্য থাকে। তবে এই পার্থক্য কখনোই আকাশ পাতাল হবে না। যদি হয় (আকাশ পাতাল পার্থক্য), যেটা আজকের গল্পের রুগীর ক্ষেত্রে হয়েছে, তাহলে বুঝতে হবে যে Glucometer এ সমস্যা আছে।

৩৯ বছর বয়স্ক একজন ডায়াবেটিস রুগী। দুই রকমের ওষুধ খান, বাংলাদেশ থেকে আনা ওষুধ। দুইটার মধ্যে একটা ওষুধ শেষ হয়ে গিয়েছে ৪ দিন আগে। এখন চলছে শুধু একটা। উনার কাছে একটা Glucometerও আছে। আমার কাছে আসার দিন সকালে উনি বাসায় ডায়াবেটিস মেপেছেন। রিডিং এসেছে ১৬.৬ মিলিমোল/লিটার। অনেক বেশী। আর খালি পেট হিসাবে তো আরও অনেক বেশি। যেহেতু একটা ওষুধ কম খাচ্ছেন, তাই আসলেই ডায়াবেটিস অনেক বেড়ে গেছে এটা মনে করেই ঐ রিডিং এর একটা ছবি তুলে আমার চেম্বারে এসে হাজির।

কথা বললাম, হিস্ট্রি নিলাম, Glucometer রিডিং এর ছবি দেখলাম। উনার মেশিনে খালি পেটের রক্তের সুগার আসলেই দেখাচ্ছে ১৬.৬ মিলিমোল (মোবাইলে তোলা ছবি) ! আমিও ভাবলাম যে উনি যেহেতু একটা ওষুধ কম খাচ্ছেন, তাই হয়তো সুগার অনেক বেড়ে গেছে। তারপরও Glucometer এর রিডিং এর উপর ভিত্তি করে হাই ডোজের ওষুধে যাওয়ার আগে ল্যাবরেটরিতে একবার সুগার চেক করার কথা বললাম। উনি রাজি হলেন।

মোটামুটি ঘণ্টাখানেকের মধ্যে রিপোর্ট চলে আসলো। ল্যাব রিডিং আসল মাত্র ৬.২ মিলিমোল/লিটার!! এটা তো আকাশ পাতাল পার্থক্য! আধা ঘণ্টার মধ্যে তো এত পার্থক্য তো সম্ভব না (কেউ ইনসুলিন নিলে হতে পারে)। এখানকার ল্যাবের মান নিয়ে কোন অজুহাত নেই। নিয়মিত চেকিং করে মিনিস্ট্রির লোকেরা। সুতরাং, বোঝাই গেল যে উনার Glucometerই নষ্ট ছিল। রক্তের সুগার নরমালের কাছাকাছিই আছে। উনার ওষুধ বদলানোরই দরকার হলো না। যেটা উনি খাচ্ছিলেন, সেটাই চালাতে বললাম (বাংলাদেশের ওষুধের সেইম ওষুধ লিখে দিলাম)।

যেকোন মেশিনের কোয়ালিটি কন্ট্রোল জরুরি। অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় ব্যবহারের পর যেকোনো মেশিনের কার্যক্ষমতা হ্রাস পেতে পারে। আর যে সব মেশিনের রেজাল্টের উপর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নির্ভর করে যেগুলোর কোয়ালিটি ঠিক রাখা তো আরও জুরুরি।

আজকে এ পর্যন্তই। আশা করি এই লেখাটি আপনাদের ভাল লেগেছে। কোন ধরনের মন্তব্য থাকলে কমেন্ট সেকশানের মাধ্যমে জানানোর আর্জি থাকলো।

ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা নিরন্তর
ডা হাফিজ
ওমান



১০,০০০ $PUSS কিনলাম

puss.jpg

Nexo ওয়ালেটে থাকা ট্রন দিয়ে গতকাল পুশ টোকেন কিনলাম।



একটা Glucometer (Blood Glucose Meter) এর ছবি

glucometer.jpg
[ছবিটি নেয়া হয়েছে পেক্সেল থেকে]

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এ সকল মেশিনের স্ট্রিপে সমস্যা থাকে। খোলার পর বেশিদিন রাখা যায় না। প্যাকের গায়ে যদিও ৯০ দিনের মধ্যে ব্যবহারের কথা থাকে, কিন্তু বাস্তবিক অর্থে ৪৫ দিন পরই রেজাল্ট ইরোর করে।

জী, এটা হতে পারে। কোয়ালিটি সম্পুন্ন মেশিন কেনাটা জরুরী।

ধন্যবাদ আপনাকে!

এসব মেশিনের কোয়ালিটিতে বড় কোন পার্থক্য নেই আসলে। যাইহোক, স্বাগতম।