হ্যালো বন্ধুরা,
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি। যদিও গরম আবার ফিরতে শুরু করেছে, শীতল পরিবেশের অনুভূতি আড়ালে চয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। গতকাল রাতে বেশ গরম পড়েছিলো। এমনিতে কয়েক দিন বিচ্ছিন্নভাবে বৃষ্টিপাত হওয়ার কারনে গরমের উষ্ণতা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসছিলো। আসলে এই রকম টানা উষ্ণতা কিংবা গরমের তীব্রতা আমি কখনোই অনুভব করি নাই। অবশ্য ছোট বেলার কথা আলাদা, তখন খুব বেশী চঞ্চল ছিলাম, সারাদিন হৈ হুল্লোল করতাম, তাই গরম কিংবা শীত কোনটাই তেমন কাবু করতে পারতো না হি হি হি।
বৈশাখের গরমে যেমন পুকুর নদীর পানি ঘোলা করার দায়িত্ব ছিলো আমাদের, ঠিক তেমনি শীতের সন্ধ্যায় আশে পাশের বাড়ির লাড়কি পোড়ানোর দায়িত্বও ছিলো আমাদের হা হা হা। দুরন্ত সেই শৈশব এর স্মৃতিগুলো সত্যি কখনো ভুলার না। কিন্তু তবুও বাস্তব জীবনের নানা অস্থিরতার কারনে আমরা হয়তো সময় পাই না, স্মৃতিময় সেই সব স্মৃতিকে পুনরায় ফিরিয়ে আনার সুযোগ পাই না, কিন্তু তবুও হৃদয়ের সীমানায় সেই দৃশ্যগুলো ঝলমল করতে থাকে সর্বদা। গতকাল আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা কৈ মাছের দারুণ একটা স্মৃতি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। সত্যি কৈ মা্ছ নিয়ে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে আমার শৈশবের নানা ঘটনায়।
কারন আমার শৈশবটাও গ্রামীন অঞ্চলে কেটেছে এবং তার সাথে ছিলো নদীর দারুণ একটা সংযোগ। আমি পুকুরে যতটা না ঝাঁপ দিয়েছি তার চেয়ে বেশী ঝাঁপ দিয়েছি নদীর বুকে, আরে নদী মানে নদী যার বুকে স্রোতধারা থাকে, আপনারা আবার অন্য কিছু মনে করে মাইন্ড খাইয়েন না হি হি হি। কারন মেয়েদের নাম শুনলেই হৃদয়টা জানি কেমন করে উঠে থুক্কু আমার না আপনাদের কথা বলছি কেমন জানি সন্দেহের চোখে দেখেন, হা হা হা। শীতলক্ষ্যা নদী ঘিরে অজস্র স্মৃতি রয়েছে আমার। কারন আমি এবং আমার বড় ভাই, আমরা সুযোগ পেলেই ছুটে যেতাম নদীর পাড়ে। তবে শুধুমাত্র আমরা দুই ভাই নয় বরং আমাদের স্কুলের যত বন্ধু ছিলো তাদের সবাইকে নিয়ে দল বেঁধে যেতাম, ভিন্নভাবে আনন্দ উপভোগ করার জন্য।
তো, মাছ ধরার অভিজ্ঞতাটা বরাবরের মতোই আমার একটু বেশী ছিলো। সেই সকাল হতে নদীর পাড়ে গিয়ে বসে থাকতাম মাছ ধরার জন্য। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে বেশী মাছ ধরতাম, তখন নদীতে ঝাঁকে ঝাঁকে বাইলা্ মাছ পাওয়া যেতো। বাইলা মাছের একটা জাত ছিলো যেটাকে তখন সোনালী বাইলা মাছ বলতো। শীতলক্ষ্যা নদীতে তখন প্রচুর পাওয়া যেতো আর আমরা সেগুলোকে একটু ভিন্নভাবে ধরার চেষ্টা করতাম। বিশেষ করে এলাকার পুকুরগুলো হতে চিংড়ি মাছ ধরতাম, সেগুলো ধরতে কোন নিষেধ ছিলো না। পুকুরগুলোতে যারা মাছ চাষ করতো চিংড়ি মাছ ধরলে তারা কিছুই বলতো না তখন। এখন অবশ্য ভিন্ন কথা। তারপর সেগুলোকে বড়শিতে গেঁথে সেই সোনালী বাইলা মাছ ধরতাম। তবে এটাও খুব একটা সহজ ছিলো না।
এই সোনালী বাইলা মাছের মতো কঠিন ছিলো কই মাছ ধরাটা, কারন বড়শি ফেলে বসে থাকলে অন্যান্য মাছের মতো কখনোই কই মাছ ধরা যাবে না। কই মাছ একটু বেশী চালাক, টুপ করে এসে আধার খেয়ে আবার পালিয়ে যায়। আর কই মাছ ধরার সবচেয়ে কার্যকর আধার ছিলো চ্যাপা শুটকি। এই চ্যাপা শুটকি দিয়ে প্রচুর কই মাছ ধরেছি আমি। যখন চাকুরী জীবন শুরু করি, তখন হতে ভাড়া বাসায় থাকা শুরু করি। তো, আমরা যেখানে ভাড়া ছিলাম তার পাশেই একটা প্লট খালি ছিলো এবং সেটা কিছুটা নীচু জমি ছিলো, এমনিতে সারা বছর পানি থাকে সেখানে আর বর্ষায় সেটায় বেশ পানি জমে যায়। তো, একদিন আমাদের বাড়ির কেয়ারটেকার বললেন সেখানে নাকি বেশ কই মাছ আছে, আর আমি কই মাছ ধরতে পারি কিনা? এটা শুনার পর আমি বেশ হেসেছিলাম। তার পরের দিনই বড়শি কিনে আনলাম এবং তার সাথে শুটকি মাছ মানে চ্যাপা শুটকি।
এরপর বেশ পরিমানে টানা কয়েক দিন সেখান হতে দেশী কই মাছ ধরেছিলাম, যদিও সাইজে একটু ছোট ছোট ছিলো কিন্তু দারুণ স্বাদের ছিলো। সবগুলোই শুধু ফ্রাই করে খেয়েছিলাম, হি হি হি। আর আমাদের সেই কেয়ারটেকারও বেশ অবাক হয়েছিলেন আমার মাছ ধরার দক্ষতা দেখে। তিনি তো আর জানেন না আমি শৈশবে কতটা দুষ্টু এবং মাছ ধরার দক্ষ শিকারী ছিলাম, হি হি হি। দারুণ মজার স্মৃতিগুলো মাঝে মাঝে মনে করে একাই হেসে উঠি, কতটা সুন্দর ও আনন্দের ছিলো সেই দিনগুলো। তার সাথে অবশ্য পরিবেশটা দারুণ ছিলো তখন, মানুষের মন মানসিকতাও অনেক ভালো ছিলো।
Image taken from Pixabay 1 and 2
ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah
আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।
|| আমার বাংলা ব্লগ-শুরু করো বাংলা দিয়ে ||
>>>>>|| এখানে ক্লিক করো ডিসকর্ড চ্যানেলে জয়েন করার জন্য ||<<<<<
Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
Support @Bangla.Witness by Casting your witness vote
VOTE @bangla.witness as witness
OR
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আজকে আপনার গল্পটা পড়ে খুবই ভালো লাগলো। আসলে শৈশবে গ্রীষ্মকালে পুকুরের পানি ঘোলা করা দায়িত্ব আমাদের ছিল আর শীতকালে লাকড়ি পুড়িয়ে আগুন ধরানো মুহূর্ত অসাধারণ ছিল। তবে গতকাল আপনি দাদার কৈ মাছ ধরার গল্পটি পড়ে আপনার স্মৃতিময় গল্পটি মনে পড়ে গেল। আসলে অন্যান্য মাছের তুলনায় কই মাছ অনেকটাই চালাক। যার কারণে এই মাছ বড়শি দিয়ে ধরা খুবই কঠিন। আদার এসে খেয়ে চলে যায়। আসলে আপনি ঠিকই বলেছেন কৈ মাছ ধরা অত সোজা না। যাই হোক আজকে আপনার স্মৃতিময় এই মাছ ধরার মুহূর্তগুলো জানতে পেরে খুবই ভালো লাগলো। আপনার মত আমি আমার বড় ভাইয়ের সাথে নদীতে মাছ ধরতে যেতাম
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
নদীতে মাছ ধরার মজাটাই ছিলো আলাদা, আর এখন তো নদীতে মাছই নেই দূষণের কারনে। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গ্রামের অনাবিল সৌন্দর্য আর প্রকৃতির মাঝে যাদের শৈশব কেটেছে তারা নিশ্চয়ই অনেক ভাগ্যবান আর গর্ব করে বলার মতো একটা অতীত জুটিয়ে নিতে পেরেছে।
এখনকার শহুরে চার দেয়াল আর যান্ত্রিকতার মধ্যে বড় হওয়া শিশুদের দিকে তাকালে খুব আফসোস হয় !
যা হোক, প্লটের খালি জায়গায় কই মাছ ধরার অভিজ্ঞতা শুনে খুব ভালো লাগলো। পুকুরের কৈ আর খালের কৈ মাছ খুব চালাক, বড়শি দিয়ে ধরতে গেলে ভারী দক্ষতা লাগে।
খুব স্মৃতিপ্রবণ একটি শৈশব কৈশোরের বর্ণনা দিয়েছেন। পড়ে অনেক ভালো লাগলো আর ফেলে আসা গ্রামের প্রতি টান আরো বেড়ে গেল।
💐
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের মধুর স্মৃতি মনে পরলে আসলেই খুব ভালো লাগে। শীতলক্ষ্যা নদীকে কেন্দ্র করে তো দেখছি আপনার অনেক মজার মজার স্মৃতি রয়েছে। শীতলক্ষ্যা নদী থেকে আমিও হাতেগোনা কয়েকবার বঁড়শি দিয়ে বাইলা মাছ ধরেছিলাম। তবে আমি শুধুমাত্র বঁড়শি দিয়ে পুঁটি মাছ ধরতে পারতাম খুব ভালো করে। আপনি তো দেখছি বঁড়শি দিয়ে মাছ ধরাতে একেবারে দক্ষ ছিলেন। আগে কৈ মাছ খেতে কতো সুস্বাদু লাগতো। আর এখন কোনো স্বাদ ই পাওয়া যায় না। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শৈশব জীবনের মধুর স্মৃতি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার এবং দাদার শৈশবের স্মৃতিগুলো পড়ে ভাই আমার নিজেরও আসলে ছোটবেলার কথা লিখতে ইচ্ছা করছে। গতকাল আমিও দাদার ছোটবেলার সেই কৈ মাছ ধরার গল্প পড়েছিলাম। আজকে আবার আপনার চ্যাপা শুটকি দিয়ে কৈ মাছ ধরার গল্প পড়লাম। তবে আপনার পোস্ট পড়ে বুঝতে পারলাম আপনার ছোটবেলাও দাদার মতোই সুন্দর কেটেছে। অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার শৈশবের স্মৃতিময় কিছু কথা জানতে পেরে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
না না দাদা, আমরা অন্য কিছু মনে করিনি। হা হা হা... তবে আপনার শেয়ার করা মজার স্মৃতিগুলো পড়ে অনেকটাই ভালো লাগলো। বিশেষ করে চ্যাপা শুটকি দিয়ে কৈ মাছ ধরার ব্যাপারটা তো আমার একদমই জানা ছিল না, আজকেই জানলাম। তবে আপনাকে যে কেয়ারটেকার কৈ মাছের সন্ধান দিয়েছিল, তাকেও কয়েকটা কৈ মাছ দিতে পারতেন। তাহলে সেও খুশি হয়ে যেত। 🤭🤭
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit