আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ মানসিক যন্ত্রণা ]

in hive-129948 •  7 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ্ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমি ভালো আছি তবে মানসিকভাবে ভালো নেই। মাঝে মাঝে মানসিক চাপগুলো এতো বেশী যন্ত্রনা দেয় যে, সহ্য করাটা বেশ কষ্টকর হয়ে যায়। আসলে বাস্তব জীবনে আমরা কম বেশী সবাই নানাভাবে নানা ধরনের মানসিক অস্থিরতায় ভোগি, শারীরিক কোন সমস্যা হলে কিংবা সেটা সহ্য করতে না পারলে আমরা হয়তো ডাক্তার এর কাছে যাই এবং ঔষধ গ্রহণের মাধ্যমে সেই অবস্থা হতে বের হয়ে আসার চেষ্টা করি কিন্তু মানসিক সমস্যা কিংবা অস্থিরতা? সেখান হতে আসলে খুব সহজে বের হয়ে আসা যায় না, কারন আপনি যেখানে যে অবস্থায় থাকুন না কেন, যন্ত্রনাগুলো আপনাকে ক্রমগতভাবে আঘাত করে যাবে। আপনার, খাওয়া-দাওয়া, কাজ-কর্ম, ঘুম সব নষ্ট করে দিবে।

ছোট বেলায় একটা কথা শুনেছিলাম, মানুষকে বনের বাঘে কখনো খায় না বরং মনের বাঘে খেয়ে ফেলে। এখানে মনস্তাত্তিক বিষয়টিকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে, তখন হয়তো সেই কথাটার সঠিক ভাবার্থ বুঝতে সক্ষম হইনি কিন্তু বাস্তব জীবনে প্রবেশ করে এখন সেটা বেশ ভালোই বুঝতে পারছি। এখানে আরো একটা বিষয় বলে রাখা ভালো, সেটা হলো যখন আপনার সুসময় যাবে তখন কিন্তু আপনাকে সঙ্গ দেয়ার হাজার মানুষের উপস্থিতি থাকবে আপনার চারপাশে কিন্তু যখনই আপনার সময় খারাপের দিকে যাওয়া শুরু করবে, তখন কিন্তু কাউকে খুঁজে পাবেন না আপনাকে শান্তনা দেয়ার কিংবা মানসিক অস্থিরতার মাঝে একটু সঙ্গ দিয়ে শান্তনার বাণী শুনানোর।

tree-4490071_1280.jpg

কথায় বলে না, আপনার পায়ের নিচে মাটি থাকলে সবাই আপনার কাঁধে হাত রাখবে। কয়দিন আগেও এই রকম একটা বাণী ফেসবুকে দেখেছিলাম, হয়তো তখন খুব একটা গুরুত্ব দেইনি, কারন এমন অনেক বাণীতো আজকাল শেয়ার করা হয় যেগুলোর সত্যি কোন ভিত্তি নেই। কিন্তু এখন সেটা বেশ বুঝতে পারছি, মানসিক যন্ত্রনার সময় সত্যি কেউ কাঁধে হাত রাখে না, শান্তনা কিংবা আশ্বস্ত করার জন্য কেউ এগিয়ে আসে না। আপনি কখন নিজেকে নিঃসঙ্গ কিংবা একা ভাবতে শুরু করবেন? যখন আপনি এমন একটা কঠিন পরিস্থিতির মাঝে পতিত হবেন, যখন আপনার পাশে থাকা মানুষগুলো ধীরে ধীরে অন্ধকারে লুকিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন, যখন কাছের মানুষগুলো আস্তে আস্তে অচেনা হয়ে যাবে, তখন আপনি প্রকৃত যন্ত্রনা কিংবা ভালোবাসা দুটোই বেশ কঠিনভাবে উপলব্ধি করতে পারবেন।

বাস্তবতা আমাদের অনেক কিছু শিক্ষা দেয় কিংবা অনেক ধরনের উপলব্ধি করার করার সুযোগ করে দেয় কিন্তু তবুও আমরা আবেগকে প্রশ্রয় দেই এবং অতীতটাকে ভুলে গিয়ে কিংবা আড়ালে রেখে সম্পর্কগুলোকে পুনরায় উজ্জীবিত রাখার চেষ্টা করি কিন্তু সেটা কখনোই সার্থক কিংবা সফল হয় না। কারন সেই স্বার্থবাদী মানুষগুলো কখনো ঠিক হয় না, বরং সুযোগ পেলেই কিংবা স্বার্থে আঘাত আসলেই আগের অবস্থানে খুব দ্রুত ফিরে যায় এবং নিজের প্রকৃত রূপটা পুনরায় সামনে নিয়ে আসে। আর আমরা নিজের অবস্থানে থেকে বার বার একই ধরনের ভুল করে যাই, মাঝে মাঝে ইচ্ছে করেই করি আবার মাঝে মাঝে পরিস্থিতির কারনে করি কারন তখন আমাদের কাছে বিকল্প কোন উপায় থাকে না। চিন্তা করি খারাপ হোক তবুও তো আপনজন এরা।

যাইহোক, সমস্যা আছে, সমস্যা থাকবে কিন্তু আফসোসটা কখনো চলে যেতে চায় না অন্তত আমার ক্ষেত্রে এমনটা ঘটছে। কারন প্রতিনিয়ত একটা মানসিক চাপ সহ্য করাটা সত্যি অনেক বেশী কষ্টকর, তবুও সেটা করছি কিংবা করতে বাধ্য হচ্ছি। সমস্যাগুলোকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছি, আবার মাঝে মাঝে কারো সাথে শেয়ার করার চেষ্টা করছি। তবে আমি মানসিক অস্থিরতাগুলো খুব বেশী কারো সাথে শেয়ার করতে পারি না, এটা আমার একটা খারাপ অভ্যেস হয়তো বলতে পারেন। কারন কিছু সমস্যা একান্তই নিচের, যা সত্যি কারো সাথে সেভাবে শেয়ার করা যায় না কিন্তু কেউ সেটা সঠিকভাবে বুঝতেও চায় না। আর এই কারনে হয়তো বার বার যন্ত্রণাগুলো ফিরে আসে এবং মানসিক অস্থিরতার মাঝে ভাসিয়ে দেয়। অনেক ধন্যবাদ সবাইকে, যারা উল্টা পাল্টা কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনলেন।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

জীবন চলার পথে আমাদের জীবনে হাজারও সমস্যার সৃষ্টি হয়। আর আমার মনে হয় প্রতিটি সমস্যা আমাদের কে নতুন করে মানুষ চিনতে শিখায়। কে আপন কে পর। হুম হয়তো বা আমরা আমাদের মানসিক সমস্যা গুলোর জন্য নিজেরাই দুমড়ে মরি, কিন্তু তাতে কি আমাদের জীবনে কিন্তু শিক্ষাও আসে প্রচুর। এমন সময় গুলো আমাদের কে মানুষ চিনতে শিখায়। দারুন ছিল আজকের আপনার প্রতিটি লেখা।

আপনার লেখাগুলো পড়লে অনেকটাই স্বস্তি পাই। বাস্তবিক বিষয়গুলো খুব সুন্দর ভাবে তুলে ধরেন। আসলে আমিও এটা মনে করি , মানসিক অশান্তি কমবেশি সবারই থাকে। যার যার জায়গা থেকে হয়তো বা আমরা উপলব্ধি করতে পারি না। তবে শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা থাকলেও মানসিকতা অসুস্থতা কাটানো খুবই কঠিন। কিন্তু তারপরেও আমি মনে করি সবকিছু মানিয়ে এগিয়ে যাওয়াটাই বেটার। আর ভালো সময়ের সঙ্গী থাকবে এটাই স্বাভাবিক। কারণ খারাপ সময় থাকলে তো তাদের লস হবে তাই আর কেউ থাকেনা ‌‌। আপনার এই কথাগুলো একদম বাস্তব। আর আপনার কোথা থেকে অনেক কিছুই শিখতে পারি।

মানসিক অশান্তি একটা বড় অশান্তি ভাই। তবে ভাই আপনি যে মানসিক অশান্তির ভিতরে আছেন এটা বুঝতে পারছি। আসলে আপনি যে কথাটা বললেন না যে, যখন ভালো সময় থাকে তখন সঙ্গ দেওয়ার জন্য হাজার মানুষ থাকে, আবার যখন খারাপ সময় আসে তখন একজন কেও খুঁজে পাওয়া যায় না, এই কথাটা একেবারেই বাস্তব। যাইহোক আপনার সমস্যার সমাধান খুব দ্রুত হয়ে যাক, এটাই কামনা করছি।

আসলে মানসিক যন্ত্রণা সবারই কমবেশি থাকে, এটা একটি স্থায়ী ও সর্বব্যাপী সমস্যা যা বিভিন্নভাবে মনকে ক্ষতিগ্রস্ত করে রাখে। তবে অবশ্যই প্রতিকার বিবেচনায় নিজেকে উৎফুল্ল রাখা, হতাশা দানা বাঁধতে না দেওয়া আর বিষন্নতা - উদ্বিগ্নতা কাটিয়ে উঠতে না দেয়ার দিকে দৃষ্টি দিতে হবে।

মানুষ ইচ্ছা করলে নিজের মনকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে, তার জন্য কিছু নিয়মকানুন মেনে চলে পরিকল্পনা সাজানো উচিত। তাতে করে একসময় এসব সমস্যার সমাধান হবে।
তারপরেও বলবো কিছু সমস্যা থাকে যা ব্যাক্তিগত, সাফেরিংও তাই।

দোয়া করি আপনি দ্রুত এই সমস্যা কাটিয়ে উঠে এগিয়ে যেতে পারেন।

শারীরিক সমস্যার চেয়ে মানসিক সমস্যা আরও বেশি খারাপ এবং যন্ত্রণাদায়ক। শারীরিক সমস্যা ঔষধ সেবন করার মাধ্যমে দূর হলেও,মানসিক সমস্যা কিন্তু সহজে দূর হয় না। তাই নিঃসন্দেহে বলা যায় মানসিক যন্ত্রণা খুবই খারাপ। যাইহোক বিপদে পরলে মানুষ চেনা যায়। আমাদের আশেপাশে স্বার্থপর মানুষের অভাব নেই। বিপদে পরলে তাদের কাছ থেকে সহযোগিতা পাওয়া তো দূরের কথা, সান্ত্বনা পর্যন্ত পাওয়া যায় না। যাইহোক দারুণ লিখেছেন ভাই। এতো চমৎকার একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

মানসিক প্রশান্তি আমাদের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আসলে মানসিকভাবে যদি ভালো না থাকা যায় তাহলে কোন কিছুই ভালো লাগেনা। প্রত্যেক মুহূর্তে যেন অস্থিরতা কাজ করে। যাই হোক ভাইয়া সমস্যা নিয়েই হয়তো আমাদেরকে বাঁচতে হয়। কিংবা সমস্যা মোকাবেলা করতে করতেই জীবনের শেষ দিন চলে আসে। তবুও আমরা আশা নিয়ে বাঁচি ভালো থাকার।