শৈশব স্মৃতি - ইনডোর আউটডোর গেম

in hive-129948 •  6 days ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও ভালো আছি এবং সুস্থ আছি। তবে শীতের মাত্রা যেহেতু কমতে শুরু করেছে সেহেতু উষ্ণতার মাত্রা বাড়তে শুরু করেছে আর এর সাথে সাথে আমার হৃদয়ের চঞ্চলতা হারিয়ে অস্থিরতা বাড়তে শুরু করেছে। কারন উষ্ণতা ফিরে আসা মানেই সেই অন্ধকারে হারিয়ে যাওয়া এবং লোডশেডিং এর যন্ত্রণায় কাতর হওয়া। সত্যি বলতে আমাদের সমস্যাগুলো খুবই পুরনো, এগুলোর শুরু আছে কিন্তু শেষ নেই, অনাকাংখিত হলেও এটাই সত্য। যাইহোক, এবার হয়তো গত বছরের তুলনায় একটু বেশি ভুগতে হবে লোডশেডিং এর যান্ত্রণায় সেটা বেশ অনুমান করা যাচ্ছে।

আসলে বাস্তবতায় আমরা ভোগতে ভোগতে একটা সময় অনেক কিছু অনুমান করতে শিখে যাই, আবার বাস্তবতার সাথে তাল মিলাতে গিয়ে অতীতকে বেমালুম ভুলে যাই। শুধু ভুলে যাই না মাঝে মাঝে আমরা সেগুলোকে ভুলে যাওয়ার ব্যবস্থাও করে থাকি ভীষণ আনন্দ নিয়ে। কি বুঝলেন নাতো? আসলে বার্তমানে আমাদের চারপাশে যা ঘটছে বা আমরা যা দেখছি সেগুলো একটু ভালোভাবে পর্যালোচনা করলেই বিষয়টি পরিস্কার হয়ে যায়। যেমন আগে আমাদের সমাজে আউটডোর গেমগুলোর জনপ্রিয়তা বেশি ছিলো এবং নানা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আউটডোর গেমগুলোকে জনপ্রিয়তা দেয়ার একটা প্রচেষ্টাও ছিলো।

back-to-school-8754070_1280.jpg

তখন অবশ্য ইনডোর গেমগুলো অতো বেশি জনপ্রিয়তা ছিলো না এবং শারীরিক ও আর্থিক নানা বিষয়ের চিন্তা করে মানুষজনও সেদিকে যেতে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। যার কারনে আমরা যেমন আউটডোর গেমে আসক্ত ছিলাম ঠিক তেমনি শারীরিকভাবেও বেশ সুস্থ ও সবল ছিলাম। কিন্তু কালের বিবর্তনে সবকিছুই আজ অতীত হয়ে গেছে। মানুষজন এখন যেমন ইনডোর গেমে আসক্ত হচ্ছেন ঠিক তেমনি আউটডোর গেমের ক্ষেত্রে নিজেদের বিরক্তিভাব প্রকাশ করছেন। এর সাথে সাথে ঠিক আগের মতো পারিবারিকভাবে কিংবা সামাজিকভাবে এখন ইনডোর গেম সমূহের প্রতি সাবইকে উৎসাহ দেয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।

হ্যা, এর অবশ্য অনেকগুলো কারণ আছে সেটা আমি অস্বীকার করছি না। সবচেয়ে বড় কারণ কিংবা সমস্যাটি হলো মাঠের স্বল্পতা কিংবা উন্মুক্ত জায়গার অভাব। আমাদের সময় প্রতিটি স্কুলের জন্য নির্দিষ্ট মাঠ ছিলো এবং স্কুলের সামনে খেলাধুলা করার যথেষ্ট জায়গা ছিলো। আমার শৈশব সেখানে কেটেছে, সেই এলাকায় তিনটি মাঠ ছিলো। আমি যে স্কুলে পড়েছি সেটার সামনেও মাঠের মতো ফাঁকা জায়গা ছিলো এবং আশে পাশে তখন যতগুলো স্কুল ছিলো সবগুলোতেই মাঠের ব্যবস্থা ছিলো। যার কারনে তখন আউটডোর গেমগুলোতে তেমন কোন অসুবিধা হতো না এবং পরিবারের মাঝ হতেও খেলাধুলার ব্যাপারে বেশ উৎসাহ দেয়া হতো।

আমরা বাড়ির চারদেয়ালের মাঝে থাকতে খুবই অপছন্দ করতাম, বাড়ির তুলনায় বাহিরে বেশি সময় ব্যয় করতাম। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব কিছু নির্মমভাবে পাল্টে গেছে, আউটডোর গেম হতে সব এখন ইনডোর গেমে রূপান্তরিত হয়ে গেছে। এখন জোর করেও শিশুদের বাহিরে পাঠানো যায় না, আউটডোর গেম খেলার ব্যাপারে প্রবুদ্ধ করা যায় না। এবার ছেলে-মেয়ের স্কুলের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার আয়োজন দেখে খুবই হতাশ হয়েছি আমি, খেলাধুলার এমন বিবর্তন সত্যি বেশ নিরাশ করেছে আমায়। কি শিখাচ্ছি আমাদের শিশুদের আর কোন দিকে নিয়ে যাচ্ছি তাদের? এ বিষয়ে আরো কিছু লেখার আশা প্রকাশ করে আজ শেষ করছি।

Image Taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

কিন্তু সময়ের সাথে সাথে সব কিছু নির্মমভাবে পাল্টে গেছে, আউটডোর গেম হতে সব এখন ইনডোর গেমে রূপান্তরিত হয়ে গেছে।

একেবারে যথার্থ বলেছেন ভাই, এখন ইনডোর গেম বেশ ভালোই জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। খালি জায়গার তো বড্ড অভাব ভাই। তাই বাধ্য হয়ে সবাই ইনডোর গেম খেলার ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে যাচ্ছে। যাইহোক ছোটবেলায় আমার বাসার আশেপাশেই চারটি বড় বড় মাঠ ছিলো। আর আমরা তো মাঠে গিয়ে প্রায় সারাদিনই ক্রিকেট খেলতাম। তবে দুঃখের বিষয় হচ্ছে এখন একটা মাঠও নেই। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

একদম সত্য কথা বলেছেন ভাই।সময়ের পরিবর্তনে আমাদের জীবনযাত্রা বদলে যাচ্ছে, কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে আউটডোর গেমগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। মাঠের অভাব, প্রযুক্তির আকর্ষণ, এসব কারণে শিশুদের শৈশব সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ছে স্ক্রিনের মাঝে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ রাখতে আমাদের এ বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।বিশেষ করে আপনার শৈশবের কাহিনী পড়ে অনেক ভালো লাগলো ভাই।মাঝে মাঝে এরকম শৈশবের স্মৃতিচারণ পোস্ট চাই।