আবোল তাবোল জীবনের গল্প [ অভ্যস্ততা ]

in hive-129948 •  7 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো এবং সুস্থ আছেন। আমি আলহামদুলিল্লাহ যেমন আছি ভালো আছি। কারণ ঐ যে যায় সময় ভালো আসে সময় খারাপ, তাই আপাদত বর্তমান সময়ের হিসেবে ভালো আছি। তবে বিগত কয়েক দিন যাবত শহরের যানজট অবস্থা বেশ কাহিল করে দিচ্ছে, সত্যি বলতে আমরা শুরুতে অনেক কিছু করে ফেলি কিন্তু পরবর্তীতে সেই জিনিষটি আবার ব্যাপক আফসোস করতে শুরু করে দেই। ঐ যে একটা টাইটেল আছে না আমাদের, হুজুগে বাঙালী। আসলেই আমরা সকল ক্ষেত্রে হুজুগে বাঙালী কোন কিছু আবেগের ঠেলায় হুট করে সম্পন্ন করে ফেলি কিন্তু তার আগে পিছে কি ঘটতে পারে সেটা নিয়ে চিন্তা করি না।

ব্যক্তি জীবন হতে শুরু করে আমাদের রাষ্ট্রীয় জীবন এবং ব্যবস্থাপনা সকল ক্ষেত্রেই এর প্রকট উপস্থিতি দেখা যায়। এই যেমন এখন কোট বিরোধী আন্দোলন হচ্ছে, শুরুতে খুব হৈ চৈ করে এটা নিয়ে আনন্দ উল্লাস করলাম তারপর এখন আবার এটা বিপক্ষে কথা বলছি। হয়তো এটা সীমিত পর্যায়ে চলে আসবে কিন্তু তারপর আবার আরেক প্রজন্ম এসে ঠিক কোটার পক্ষে আন্দোলন শুরু করে দিবে, এটাই আমাদের বাস্তবতা। না এটা নিয়ে আমি আর বেশী কিছু বলতে চাই না, শুধু বাস্তবতাটা তুলে ধরলাম নিরপেক্ষভাবে। এখন তো নিরপেক্ষ থাকাটাও মুশকিল হয়ে যাচ্ছে, কালার পক্ষ না নিলে তারা ভাবে আমি সাদার পক্ষে চলে গেছি আবার সাদার পক্ষ না নিলে তারা ভাবে আমি কালার পক্ষ অবলম্বন করেছি, দারুণ মুশকিলে আছি আমরা সাধারণ জনগণ।

tree-4490071_1280.jpg

যে কথা বলতেছিলাম, ট্রাফিক ব্যবস্থা এমনিতে খুব খারাপ, যখন তখন ভিআইপি নামক প্রভাবশালী মানুষজনের চলাচলের জন্য নিমিত্তে সাধারণ জনগণের যানবাহন আটকে দেয়া হয় এবং ভদ্রলোক না যাওয়া অব্দি আমাদের সেখানে স্থির হয়ে বসে থাকতে হয়। ফলশ্রুতি যানজট নামক তিক্ত অভিজ্ঞতার সাথে আমাদের বন্ধুত্ব পাকাপোক্ত করে জীবনের গতি ধরে রাখার চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হয়। আর যদি সেটা করতে না পারেন তাহলে বিরোধী দলের মতো আপনার অবস্থা একদমই নির্জীব হয়ে যাবে বা করে দেয়া হবে, বাকিটা ইতিহাস হয়ে আপনার হৃদয়ে হারিয়ে যাবে হি হি হি। এরপর যদি আবার কোন ধরনের আন্দোলন কিংবা হট্টগোল শুরু হয়ে যায়, তাহলে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যারা থাকেন, তারা খুব সুন্দর ভাষায় একটা ঘোষণা দিয়ে দেন, বাহিরে বের হলে পর্যাপ্ত সময় নিয়ে হবেন।

কিন্তু এই পর্যাপ্ত বা অতিরিক্ত সময়টা কত লম্বা হতে পারে সেটা কিন্তু কখনোই তারা বলে দেয় না, বরং আমাদের ধৈর্য্যশক্তির অবস্থা বুঝে সেটাকে মানিয়ে নেয়ার চেষ্টা করতে হয়। এখন আমার অফিস যেহেতু বাড়ির অবস্থান হতে তুলনামূলকভাবে একটু বেশী দূরত্বে রয়েছে, আর তার কারণে আমার ভোগান্তিটাও তুলনামূলকভাবে একটু বেশী হয়ে যাচ্ছে। কি আর করার? পরিস্থিতি অনুযায়ী সবটা আমাদের মেনে হয়, মানিয়ে নিতে হয়, কারণ জীবনতো বাঁচাতে হবে আর সেটা করতে হলে সব কিছুতে অভ্যস্থ হতে হবে, না হলে অন্তত্য আমাদের দেশের পরিস্থিতির সাথে মানিয়ে নেয়া অসম্ভব হয়ে যাবে। যেমন মাঝে মাঝে বিদেশীরা আমাদের সকলের চমৎকার ব্যবস্থাপনা দেখে নিজেদের সুখের কথা জানান এবং তারপর আনন্দ চিত্তে ব্যবসা বানিজ্য গুটিয়ে নিজ দেশে ছুটে যান।

এটা শুধু কথার পৃষ্ঠে কথা নয় বরং বাস্তবতা, শুধু যে একটা কারণ এখানে মূল ভূমিকা পালন করছে তা কিন্তু নয় বরং এর সাথে আরো হাজারো কারণ রয়েছে কিন্তু সেগুলো নিয়ে কথা বলা যাবে না, তা হলে পরে দেখা যাবে আমাকে নিয়ে আবার রাজনীতি শুরু হয়ে গেছে, সুতরাং নিরাপদ অবস্থান বজায় রেখে যতটা সম্ভব সাধারণ পাবলিকের মতো কথা বলে যাওয়াটাই হয়তো বুদ্ধিমানের কাজ হবে। তবুও কথা থেকে যায়, এভাবে আর কত দিন? কত দিন আমাদের এভাবে ধৈর্যের পরীক্ষা দিতে হবে? মানিয়ে নেয়ার এই অভ্যেসটা কত দিন আমাদের ধরে রাখতে হবে? সময় হয়তো সবটা জানিয়ে দিবে বা জানার পথ তৈরী করে দিবে, চলুন নিঃশব্দে সেই মুহুর্তের অপেক্ষা করি।

Image taken from Pixabay

ধন্যবাদ সবাইকে।
@hafizullah

break .png
Leader Banner-Final.pngbreak .png

আমি মোঃ হাফিজ উল্লাহ, চাকুরীজীবী। বাংলাদেশী হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। বাঙালী সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য লালন করি। ব্যক্তি স্বাধীনতাকে সমর্থন করি, তবে সর্বদা নিজেকে ব্যতিক্রমধর্মী হিসেবে উপস্থাপন করতে পছন্দ করি। পড়তে, শুনতে এবং লিখতে ভালোবাসি। নিজের মত প্রকাশের এবং অন্যের মতামতকে মূল্যায়নের চেষ্টা করি। ব্যক্তি হিসেবে অলস এবং ভ্রমন প্রিয়।

break .png

Banner.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

সেই মুহূর্তটার অপেক্ষা তো করবো, কিন্তু সেই মুহূর্ত কখনো আসবে বলে তো মনে হয় না। আসলে আস্তে আস্তে এই সকল আইন কানুন আমাদের অভ্যাসে পরিণত হচ্ছে এবং হয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশের ট্রাফিক ব্যবস্থা টা আসলেই অত্যন্ত খারাপ। সবাই এটাই বলে ধৈর্যের ফল নাকি অনেক বেশি মিষ্টি হয়। এখন দেখা যাক আমাদের ধৈর্যের ফল মিষ্টি হয় কিনা ভবিষ্যতে। ধৈর্য্য ধরে তো সবাই আছে। কিন্তু আর কতদিন থাকবে। সময় নিজের সাথে সবকিছুই পরিবর্তন করে। এখন দেখা যাক এগুলো পরিবর্তন হয় কিনা। অবশ্যই নিঃশব্দে অপেক্ষা করবো সেই মুহূর্তের জন্য। যদি এটার ফলটা ভালো হয় তাহলে তো ভালো। আর যদি না হয় তাহলে আর কি বা বলবো। অনেক সুন্দর করে লিখেছেন দেখে ভালো লেগেছে।

আসলেই কখনো আসবে বলে মনে হয় না, হয়তো সামনে আরো কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে আমাদের জন্য।

আমাদের দেশে যে পরিমাণে যানজট এবং বিভিন্ন ধরনের সমস্যা রয়েছে, এসব সমস্যা মোকাবেলা করতে করতে তো আমরাই হাঁপিয়ে উঠি। আর বিদেশীরা আমাদের দেশে এসে কিভাবে থাকবে। তাইতো বিদেশীরা আমাদের দেশে এসে ব্যবসা বাণিজ্য সেভাবে করতে চায় না। কিন্তু ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামে বিভিন্ন দেশের বিদেশীরা ঢুকে খুব ভালোভাবে ব্যবসা বাণিজ্য করছে। এতে করে তাদের দেশগুলো আরো বেশি উন্নত হচ্ছে। যাইহোক রাস্তাঘাটে বের হলে আমাদেরকে যে পরিমাণে ধৈর্য ধারণ করতে হয়, সামনে মনে হয় ধৈর্য ধারণ ক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করতে হবে। কারণ দিন দিন যানজট প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পাচ্ছে। যাইহোক পোস্টটি আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

হ্যা, এটা সত্য কথা আর এর জন্যই ধীরে ধীরে ভিয়েতনামের মতো দেশও আমাদের ছাড়িয়ে যাচ্ছে অনেক ক্ষেত্রে।

রাস্তা দিয়ে জানজট করে এই ভি আই পি পাস করানোর বিষয়টা আমি খেয়াল করলাম এবার ঢাকায় গিয়ে৷ একজন সাধারণ মন্ত্রীও শ খানেক সিকিউরিটি গাড়ি নিয়ে যান। কলকাতায় এমন দেখি না। তাই একটু অবাক লেগেছিল৷ আসার পর এই বিষয়টা ফেসবুকেও লিখেছিলাম। এখানে মন্ত্রীদের কনভয়ে একটি পাইলট কার থাকে। আর ঢাকায় ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নতি না করলে কোনোদিন মানুষের হয়রানি কাটবে না।

শুধু মন্ত্রী! মাঝে মাঝেও এমপিরাও ট্রাফিক পুলিশের উপর তাদের ক্ষমতার দাপট দেখান, রাজপথ আটকে রেখে নিজের সক্ষমতা দেখান, আর আমরা শুধু নীরবে সয়ে যাই সবটা।

আমাদের দেশে এত বেশি যানজট হয় যে এটা একেবারে বলার বাহিরে। আমি তো মনে করি আমাদের দেশের উন্নতি হওয়ার থেকেও এই বিষয়গুলো বেশি বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে ট্রাফিকের ব্যাপারটা। আমরা যতই ধৈর্য ধরে অপেক্ষা করছি ততই যেন সবকিছু আরো বেড়ে যাচ্ছে। বড় বড় পদে থাকা মানুষদের জন্য আরো বেশি হচ্ছে ট্রাফিক। তাদের জন্য সাধারণ মানুষেরা এরকম অবস্থা সম্মুখীন হয়ে থাকে। আমি তো মনে করি দিন দিন এগুলো যাবে না বরং আরো বেশি হবে। এখনো পর্যন্ত তো ধৈর্য ধরেই রয়েছি, কি ফল পাই আমরা এটাই দেখি। মনে তো হয় না ভালো কোনো ফল পাবো বলে।

কথাটা ঠিক ভাই এখন নিরপেক্ষ থাকাটাও ঝামেলা। কোঠা সংস্কার আন্দোলনের জন্য সড়কে তীব্র যানজট চলছে সেটা দেখছি টিভিতে। পাবলিক ট্রান্সপোর্ট একেবারে বন্ধ। মানুষ তীব্র একটা ঝামেলার মধ্যে পড়ে গিয়েছে। অন‍্যদিকে আমাদের সরকার যেন এটা ক্রমেই বাড়তে দিচ্ছে কোন সমাধান করছে না।

আমার বাংলা ব্লগে যোগদান করে খুব ভাল লাগছে , আশা করি সবাই সবাইকে সহযোগিতা করতে পারবো।