১০ম পর্ব || জীবনের ব্যর্থতার গল্প

in hive-129948 •  9 months ago  (edited)

14-05-2024

৩১ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


🌼 আসসালামুআলাইকুম সবাইকে 🌼


sad-2635043_1280.jpg

copyright free image from pixabay

৯ম পর্বের পর

ঠিক দশমিনিট পরেই রেজাল্ট দেয়া শুরু হলো। আমার হাত পা রীতিমতো কাপাঁকাপি শুরু করে দিয়েছিল। টেনশন হচ্ছিল অনেক। একে একে কয়েকজনের রোল ঘোষণার পর আমার রোলটা ঘোষণা করা হলো। আমি সঙ্গে সঙ্গে হ্যান্ডস আপ করে অফিসারের কাছে চলে গেলাম। তারপর রোলটা মিলিয়ে নিয়ে আমাকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিলো।! আমার খুবই ভালো লেগেছিল আসলে। গণিতে আমরা তখন ২৮ জনের মতো সিলেক্ট হয়েছিলাম। গণিতের পরে এবার ইংরেজী পরীক্ষা হওয়ার পালা! পঞ্চাশটা এমসিকিউ ইংরেজীর সময় পঁচিশ মিনিট! আমাদের পাঠানো হয়েছিল দুতালায়। তবে দুতলায় অন্য একটা রুমে! রুমে বসে বাহিরে বিমান দেখা যাচ্ছিল। একটু পর পর হেলিকাপ্টার, বিমান সেখানে ল্যান্ড করছিল। আমার দেখে অবশ্য অনেক ভালো লাগছিল আসলে। আমাদের সে রুমে কিছুক্ষণ বসিয়ে রাখলো। তারপর একজন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ওএমআর শিট ও প্রশ্নপত্র নিয়ে এলো।

তো বিমান বাহিনীর পরীক্ষার সিস্টেম হলো কি পরীক্ষা শেষে প্রশ্নপত্র নিয়ে নেয়া হয়। আগের দুইটা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলাম সেটার প্রশ্নপত্র ও নিয়ে নিয়েছিল। তো এবার আমাদের একজন অফিসার ইন্সট্রাকশন দিলো। আগে যেহেতু পরীক্ষা দিয়েছিল নতুন করে কিভাবে বৃত্ত ভরাট করতে হবে সেটার প্রয়োজন নেই। তার কিছুক্ষণ পর ইংরেজী প্রশ্নপত্র দেয়া হলো! ইংরেজি প্রশ্নপত্র পেয়ে আমার কাছে মনে হয়েছিল সব পারি! কিন্তু কনফিউজিং ছিল। চারটা এমসিকিউ এমনভাবে দেয়া, সবগুলোই সঠিক মনে হচ্ছিল! মূলত পার্টস অব স্পিচ, প্রিপজিশন, ট্রান্সলেশন, ট্যাগ কোয়েশ্চন এগুলো থেকে আসছিল। মোটামোটি সবগুলোই বুঝে বুঝে দাগানোর চেষ্টা করেছিলাম। তো ত্রিশ মিনিটের পরীক্ষা বেশিক্ষণ লাগেনি। পরীক্ষা শেষ হতেই আমাদের খাতা নিয়ে নেয়া হলো। এবং আগের মতোই বললো মাথা ডাউন করে বসে থাকতে।

এবার যেহেতু ক্যান্ডিডেট কম ছিল তাই রেজাল্ট পাবলিশ হতে বেশি সময় লাগবে না তাই রেজাল্ট পাবলিশ হতে সময় লাগবে না! মাথা ডাউন করে বসেছিলাম। আর টেনশন হচ্ছিল আসলে। তারপর কিছুক্ষণ পরেই একজন অফিসার এসে বললো হেড আপ করার জন্য! রেজাল্ট দেয়া হবে। মাইকে একে একে রোল বলা শুরু করলো। আমার হার্টবিট প্রচ্ন্ডভাবে উঠানামা করছিল। সিরিয়াল প্রায় দশ ক্রস করলো কিন্তু আমার রোলটা আর বললো না! আমি খুবই টেনশনে পরে গেলাম আসলে! টোটাল বারোজন সিলেক্ট করা হয়েছিল! আমার রোলটা আর বলা হয়নি। তারপর অফিসার বললো যাদের হয়নি তারা চলে যেতে পারো এবং পরীবর্তী পরীক্ষার জন্য ভালো করে প্রিপারেশন নাও! আমি সোজা চলে আসলাম! আসলে দ্বিতীয় বারের মতো ব্যর্থ হওয়ার পর নিজের কাছেই খুব খারাপ লাগছিল! বিমান বাহিনীর প্রতি আর মন সায় দিচ্ছিল না!

মন থেকেই প্রায় উঠে গিয়েছিল। এদিকে সরকারি চাকরিতে বিশেষ করে ডিফেন্সের জবে বয়সের একটা লিমিটেশন থাকে। নরমালি ১৭-২১ বছর! এর বেশি হলে আপনি চাকরিতে আবেদন করতে পারবেন। আমার বয়সের লিমিটেশন অনুযায়ী বিমান বাহিনীতে আরেকবার পরীক্ষা দিতে পারবো এবং সেটাই আমার জন্য শেষ! এরপরে আর দেয়া যাবে না। আমার পরিবারকে আমি আগেই বলে রেখেছিলাম আমি আর কখনো বিমান বাহিনীতে এপ্লাই করবো না! এদিকে আমি ভার্সিটি প্রস্তুতির জন্য প্রিপারেশন নেয়া শুরু করলাম। বিমান বাহিনীর জন্য পড়ালেখা বাদ দিলাম। এটার আশা মন থেকেই বাদ দিয়ে দিলাম! তবে এটার জন্য একটা ভালো লাগা যেন থেকেই গিয়েছিল! আবারো কাউকে না জানিয়ে আবেদন করলাম! ২০২২ সালের ঘটনা! আমি তখন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ট্রেনিং করছি ইউনাইটেড আশুগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টে। নিউজ পেলাম বিমান বাহিনীতে আবেদনের সার্কুলার দিয়েছে!

চলবে,,,,,,



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG-20211205-WA0092.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আপনার মত এরকম সিচুয়েশনে আমি নিজেও পড়েছিলাম ভাইয়া নৌ বাহিনীতে এরকম একটি অবস্থায় ছিলাম আমিও। তবে শেষ ফিনিশিং এ আমাদের ক্যান্ডিডেট ছিল মাত্র 17 জন। তাদের মধ্যে আমিও ছিলাম। নেওয়া হবে মাত্র আটজনকে। এরকম ভাবেই একে একে সবার নাম ঘোষণা করল কিন্তু আমার নামটি আর ঘোষণা হয়নি। মনটা সে সময় এতটাই খারাপ হয়ে গিয়েছিল বলে বোঝাতে পারবো না। যাই হোক ডিফেন্সে চাকরির বয়স আমার শেষ হয়ে গেছে। আশা করি আপনার মনের আশা সৃষ্টিকর্তা বুঝবেন এবং শুনবেন। আপনার জন্য শুভকামনা রইল ভাইয়া। তবে দেখা যাক পরবর্তীতে আপনার এপ্লাই করার ফলাফল কি হয়েছিল।

আপনার জীবনের অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্যে ধন্যবাদ। এর মাধ্যমে আমরা জানতে পারছি আপনার জীবনের কঠিন কিছু মুহুর্তের কথা! পরীক্ষার রেজাল্টের জন্যে ওয়েট করার পেইন কি রকম তা আমরা সবাই কম বেশী জানি। সফল হলে পেইন গুলো হারিয়ে যায়। আর বিফল হলে বুকে চেপে বসে শক্ত করে!

আমাদের সবারই চেস্টা থাকে শখের জিনিসটা পেতে কিন্তু সবাই পায় না! কিছু বিষয় মেনে নিতে হয়। মেনে নিলেই সামনে এগোনো যায়।

শুভকামনা রইল আপনার জন্যে।

বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর আবারও নতুনভাবে চেষ্টা করার ইচ্ছেটা সবার মধ্যে থাকে না। আসলে আমরা তো দিনশেষে মানুষ। আমরা মুখে যতই বলি না কেনো একবার না পারিলে দেখো শতবার,কিন্তু বাস্তবটা আসলেই অনেক কঠিন। যাইহোক নৌবাহিনীতে উচ্চতার জন্য বাদ পড়ার পর,বিমান বাহিনীতে ইংরেজী পরীক্ষায় বাদ পরলেন। ২০২২ সালে তাহলে আবারও বিমান বাহিনীতে চাকরির জন্য আবেদন করেছিলেন। পরবর্তী পর্বে মনে হচ্ছে এই ব্যাপারে বিস্তারিত জানতে পারবো। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।