20-03-2024
০৬ চৈত্র , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
গ্রামের ছেলে রাসেল। সবেমাত্র এইস এস সি পাশ করে ভার্সিটি প্রিপারেশন নিচ্ছে। গ্রামে থেকেও রাসেল খুবই মেধাবী একজন ছেলে। স্কুলের সবকটি পরীক্ষায় সে প্রথম স্থান অর্জন করেছে। পরিবারের বড় ছেলে হওয়ায় বাবা মা তাকে আদরও করেছে ভীষণ। ভার্সিটির পরীক্ষায় রাসেল বেশ কয়টি জায়গায় চান্স পেয়েছে। তার মধ্যে তার বাবা মায়ের স্বপ্ন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুক তাদের বড় ছেলে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পাওয়ায় এলাকায় ভালোই সুনাম ছড়িয়ে পরে রাসেল সম্পর্কে। সবাই রাসেলের প্রশংসায় যেন পঞ্চমুখ! ঠিক তার পাশের গ্রামের আরেকটি মেয়ে নিশি। সেও এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে। তারপর থেকে দুজনের শুরু হলো ভার্সিটির জীবন। মজার ব্যাপার হলে রাসেল নিশিকে চিনতো না। পাশের গ্রামের মেয়ে হলেও কখনো দেখেনি নিশিকে। আর তারা দুজনই একই ডিপার্টমেন্ট এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েছে।
ভার্সিটির তিনটি বছর ভালোভাবেই কেটে যায়। হঠাৎ করেই রাসলের শরীর অনেক খারাপ হয়ে যায়। কোনো চিকিৎসক অবশ্য রাসেলের চিকিৎসা দিতে পারছে না। আর দিবেই বা কি করে! যার বাচারঁই ইচ্ছে নেই তাকে চিকিৎসা দিয়ে কি হবে। ডাক্তাররাও ব্যর্থ রাসলেকে চিকিৎসা দিতে। রাসেলের পরিবার খুবই চিন্তায় পরে যায়। কারণ তাদের একমাত্র ছেলে হঠাৎ করেই কি এমন অসুখে পরে গেল! তারপর রাসেলের বাবা ঢাকায় আসে গ্রাম থেকে। ঢাকায় এসে রাসেলের কয়েকজন বন্ধুর সাথে কথা বলে! তারা সবাই কিছু বলে না। তবে রাসেলের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ইফতির কাছ থেকে যা শুনে রাসেলের বাবা! তা শুনেই যে থ মেরে বসে যায়!
রাসেল ড্রাগ সেবন করে! আর কেন করে সেটা ইফতির মুখ থেকেই জানতে পারে রাসেলের বাবা! নিশির সাথে সম্পর্ক তৈরি হয় সেই ভার্সিটির শুরু থেকেই। রাসেল যখন নিশিকে প্রপোজ করে তখনই নিশি রাজি হয়ে যায়। শুরুর দিকে রাসেলের সাথে নিশির সম্পর্ক ভালোই চলতে থাকে। তাদের মাঝে কখনো ঝগড়াও হতো না। তবে যেদিন রাসেলের কাছে নিশি বলে তার জন্য তার বাবা মা পাত্র দেখছে তখনই যেন রাসেলের সাথে ঝগড়া লেগে যায় নিশির। রাসেল মোটেও রাজি না অন্যকারো সাথে নিশিকে বিয়ে দেয়ার। তারপর থেকে যেন নিশি আর রাসেলের মাঝে দূরত্ব বাড়তে থাকে। রাসেল খুবই টেনশন অনুভব করে নিশিকে নিয়ে। কারণ সে নিশিকে অনেক ভালোবাসতো। তাই রাসেল মাদকে জড়িয়ে পরে।
রাসেল এতোটাই আসক্ত হয়ে যায় মাদকে সেখান থেকে ফিরে আসাটা কঠিন হয়ে যায়। রাসলের কঠিন অবস্থা দেখে নিশি আবার ফিরে আসে রাসেলের কাছে। এভাবে তাদের সম্পর্ক আরও এক বছর অতিবাহিত হয়ে যায়। তারপর নিশির মা জানতে পেরে যায় যে, রাসেলের সাথে তার সম্পর্ক রয়েছে। নিশির মা চাই না রাসেলের মতো এমন একটা মাদকাসক্ত ছেলের হাতে তার মেয়েকে তুলে দেয়। নিশির মা আবারো নিশির জন্য ছেলে দেখা শুরু করে। কিন্তু নিশি তার মাকে বুঝায় যে সে এখনি বিয়ে করতে পারবে না।
তার মা নিশিকে বলে, " তুই যদি বিয়ে না করিস তবে আমার মরা মুখ দেখবি! "
একদিকে নিশির পরিবার চাপ অন্যদিকে রাসেলের মাদকাসক্ত জীবন। সবমিলিয়ে নিশি চাপে পরে যায়। তারপর কি করবে উপায় না পেয়ে রাসেলকে বলে যে, সে যেন তাকে ভুলে যায়। কারণ তার পরিবার কখনোই রাসেলকো মেনে নিতে পারবে না। কিন্তু রাসেল তা শুনে কান্নায় ভেঙে পরে। রাসেল নিশিকে অনেক ভালোবাসে সে কখনোই নিশিকে ছাড়া একমুহূর্ত থাকতে পারবে না। তারপর থেকে রাসেল আজ হসপিটালের বিছানায়। রাসেলের বাবা ঢাকায় গিয়ে রাসেলকে গ্রামে নিয়ে আসে। গ্রামে থাকলে হয়তো রাসেল সবকিছু ভুলে থাকতে পারবে।
কিন্তু গ্রামে আসার কয়েকদিন পর রাসেল জানতে পারে নিশির বিয়ে ঠিক হয়েছে অন্য একটা ছেলের সাথে। আর সেটা শোনার পর রাসেল ফ্যানের সাথে ঝুলে নিজের জীবন নিজেই বিসর্জন দিয়ে দেয়! আর মারা যাওয়ার আগে ছোট্র একটা খামে লিখে যায়!
" আমি তোমাকে অনেক ভালোবেসেছিলাম। তুমি আমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারবে তো! যদি তুমি ভালো থাকো তবে আমি মরেও শান্তি পাবো। তুমি ভালো থেকো নিশি! "
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রাসেল এবং নিশি দুজনের ভাগ্যের চাকা আলাদা হওয়ার কারণেই তারা একসাথে হতে পারেনি। ভার্সিটিতে গিয়ে প্রথম প্রেম এবং ভালোবাসার সম্পর্ক শুরু হয়। তবে শেষমেষ নিশিকে না পেয়ে রাসেল আত্মহত্যা করল। এটা আসলে কখনোই কাম্য নয়। ভালোবাসার মানুষকে পায়নি কিন্তু যে পরিবারে বড় হয়েছে সেই পরিবারের কথা ও সে চিন্তা করেনি। একপাক্ষিক ভাবে কোন কিছুই আসলে ভালো হয় না। যাই হোক ছোট গল্প হিসেবে ভালো লাগলো।খুব সুন্দর লিখেছেন ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই ভাইয়া, ভালোবাসার মানুষকে পায়নি তবে পরিবারের কথা চিন্তা করতে পারতো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক ভাই ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রাসেল ও নিশির প্রেমের গল্পটি পড়ে প্রথমে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম কি এমন হয়েছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যে যার জন্য বেঁচে থাকার ইচ্ছাটাও ছেড়ে দিয়েছে রাসেল। পরে দেখলাম সে নিশি নামের একটি মেয়েরকে ভালোবাসতো এবং এতটাই পরিমাণে ভালোবাসতো যে তাকে ছাড়া সে বাঁচবে না। আবার পরবর্তীতে দেখলাম তাকে ছেড়ে চলে গেছে আবার সে মাদকে আসক্ত হয়েছে। আমি এখানে বলব রাসেল একটু সময় নিলে হয়তো এভাবে তার জীবনটা হারাতে হতো না। কারণ সব বাবা মা চায় তাদের মেয়ে একটি ভালো ছেলের হাতে তুলে দিতে কেউ চায় না একজন মাদক আসক্ত ছেলের হাতে তুলে দিতে। তার বাবা যখন শহর থেকে গ্রামে নিয়ে এলো তখন ভেবেছিলাম সে হয়তো ঠিক হয়ে যাবে কিন্তু সে এতটাই পরিমাণে ভালোবাসতো নিশিকে। যার কারণে সে চায় নি যে তার চোখের সামনে অন্য কারোর হাত ধরে চলে যাক। তাইতো সে নিজেকে সামলাতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছে। গল্পটি খুব ভালো ছিল আমার খুব ভালো লেগেছে।আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমাদের সবার সাথে এত সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার কাছে খুব ভালো লেগেছে এটাই আমার স্বার্থকতা। অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া গল্পটি পড়ার জন্য। 🌼
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার গল্পটা পড়ে অনেক ভালো লাগলো। আসলে ভাইয়া রাসেলের মতো এমন অনেক ছেলেই নিশির মতো মেয়ের প্রেমে পড়ে অকালে জীবন শেষ করেছে।আর রাসেলের মতো ছেলেদের বাবা মা পাঠাই তাদের স্বপ্ন পূরণ করার জন্য কিন্তু তারা অবশেষে ভুল মানুষের প্রেমে পড়ে জীবন শেষ করে দেয়।এমন ঘটনা আমাদের সমাজে অনেক ঘটে থাকে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর লিখেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গল্প হলেও এরকম হাজারো রাসেল এভাবেই জীবন দিয়ে দেয় ভালোবাসায় ব্যার্থ হয়ে । তবে এটা কখনোই কাম্য নয়। ভালবাসা না পেলেই যে আত্নহননের পথ বেছে নিবে সেটা বোকামি । যদিও বাস্তবে এমনটাই হয়ে থাকে প্রেম বিচ্ছেদের এই যন্ত্রনা সহ্য করা কঠিন। রাসলরা এভাবেই চলে যায় আর দিব্যি সুন্দর ভাবে নতুন জীবন নিয়ে বেচে থাকে নিশিরা ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit