14-07-2022
৩০ আষাঢ় ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন। তবে এই গরমের মধ্যে ভালো থাকাটায় কঠিন হয়ে গেছে। সকাল থেকেই যেন সূর্যের তাপ বাড়তে থাকে। দুপুর হলে তো একদম নাস্তানাবুদ অবস্থা। এরই মাঝে লোডশেডিং সমস্যা। প্রাকৃতিক হাওয়া নাই আশেপাশে। মানুষজন বাড়ি থেকে বের হয়ে গাছের নিচে বসে একটু বিশ্রামের চেষ্টা করছে। প্রকৃতির নিস্তব্ধতার জন্য গাছের নিচে বসেও যেন শান্তি খোজেঁ পাচ্ছে না মানুষজন। দুপুরের দিকে রাস্তাঘাটে কোনো মানুষই দেখা যায় না।
প্রকৃতির এই তাপদাহ প্রবাহ আরও বেশ কিছুদিন থাকবে যেমনটা আবহাওয়া দপ্তর থেকে বলা হয়েছে। একটা সময় এই রোদের মধ্যেই কতো খেলাধুলা করেছি। ঘামে শরীর একাকার হয়ে গেলেও এতো অসহ্য ফিলিংস হয়নাই এখন যেমনটা হয়। জলবায়ুর পরিবর্তনের জন্যই এমনটা হচ্ছে। দিনকে দিন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা বাড়ছে। দূর্বিষহ হয়ে পরছে মানুষের জনজীবন। যায়হোক, সারাদিন খুব গরমের মধ্যে দিয়েই গেল। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ পরে কারেন্ট চলে গেল। এরই মাঝে অসহনীয় গরম। মনে হচ্ছিল পানির মধ্যে ডুবে থাকি। এরই মাঝে হ্যাংআউট শুরু হয়ে গেল। গরমের কারণে ফোনটাও গরম হয়ে গেছিল। এজন্য একটু দেরিতেই জয়েন দিলাম হ্যাংআউট এ।
পুকুর পাড়ে বসে আছি। চাদেঁর আলোয় পুরো পুকুর যেন আলোকিত হয়ে গেছে। বাতাস নেই, তবে সময়টা বেশ রোমাঞ্চকর মনে হচ্ছিল। কবিরা তো তখনই মহাকাব্য রচনা করে থাকে। প্রেমিকাদের মনে রোমান্টিকতার ছোঁয়া লেগে যায় তখন। চাদেঁর আলো দেখে মনে হচ্ছিল এ যেন প্রেমিকার আশীর্বাদ হয়ে নেমে এসেছে। শুনেছি প্রেমিকার মুখটি মনে করে তাকালে নাকি চাদেঁর মধ্যে প্রিয় মানুষটির মুখ দেখা যায়। আমার কাছে যেন সত্যি মনে হলো। প্রিয় মানুষটার মুখ যেন এক পলকের জন্য চাদেঁর আলোতে চোখে ঝলমল করে উঠলো। চাদনী রাত আসলেই প্রেমিকার দেয়া আশীর্বাদ। গাছের একপাশ দিয়ে চাদেঁর আলো এসে আলোকিত করছে আমাকে। কিছুক্ষণ এর জন্য অন্যরকমের একটা ফিলিংস পেলাম। আমাদের নারিকেল গাছটার ঠিক মধ্যে দিয়ে আলো এসে পড়ছে। পানিতে চাদেঁর ঠিক প্রতিবিম্ব দেখতে পেলাম। বাতাস থাকলে ওয়েদারটা আরও এনজয় করা যেত। তবে মাঝে মাঝে এই চাদনী রাত আমাদের অনেক কিছু মনে করিয়ে দেয়। পুকুর পাড়ে বসেই স্মৃতিচারণ করতেছিলাম ছোটবেলার কিছু মুহূর্ত। একা একাই বসেই হাসছি আর ছোটবেলার কথা মন হচ্ছিল।
চাদনী রাত যখন হতো, তখন আমরা বাড়ির সবাই একসাথে পুকুরে গোসল করতাম। এটা ছিল আমাদের অভ্যাস। যখনই চাদনী রাতের দেখা পেতাম ঠিক এ সময়টাতে সবাই একসাথে গোসল কর নিতাম। আমরা ছিলাম পাচঁ ভাইবোন। আমার বড় আপু তখন আমার শরীরে সাবান লাগিয়ে দিতো। চাচাতো ভাইদের নিয়ে সাতাঁর প্রতিযোগিতা শুরু করে দিতাম। আমি সাতাঁর শিখেছি বড় আপুর কাছ থেকে। দ্বিতীয় শ্রেণীতে থাকাকালীন বড় আপু আমাকে পুকুরে নিয়ে গোসল করাতো, আর তখন সাতাঁর শিখাতো। আমি মাত্র পাচঁ দিনেই সাতাঁর শিখে গেছিলাম। এক সাতাঁরে পুকুরের এক পাড় থেকে আরেক পাড়ে চলে যেতাম। আর মজার বিষয় ছিল পানির নিচে ডুব দিয়ে কে কতক্ষণ বসে থাকতে পারে সেটা আমরা গণনা করতাম। যে বেশিক্ষণ পানির নিচে থাকতে পারবে সে বিজয়ী। ৪০ সেকেন্ড এর বেশি সময় পানির নিচে থাকতে পারতাম না। যায়হোক, আমরা চাচাতো ভাইয়েরা মিলে পুকুরে সাতাঁর প্রতিযোগিতার আয়োজন করতাম। এক, দুই, তিন বলাতেই আমরা সাতাঁর দেয়া শুরু করে দিতাম। চিত সাতাঁর দিয়ে একদম ওই পাড়ে চলে যেতাম। আবার পাড় থেকে ঘাটে যে আসতে পারবে সে বিজয়ী হবে। সাতাঁর এ আমি এক্সপার্ট ছিলাম ভালোই। প্রায়ই আমি প্রথম হতাম । তখনও সাতাঁর এর উপকারীতা সম্পর্কে জানতাম না। আপুদের নিয়ে গোসল করা শেষ হলে আমরা একসাথে পুকুর বসে গল্পের আড্ডায় বসে পড়তাম। গল্পের বিষয় থাকতো গান খেলা। একজনে গানের এক লাইন বলতো ঠিক তার পরের জন আবার গানের শেষের অক্ষর দিয়ে আরেকটা গান বানাতে হতো। যে বেশি গানাতে পারতো সেই হতো বিজয়ী। এভাবেই আমরা চাদনী রাত পার করে দিতাম। সময়টা আসলে খুব উপভোগ করতাম তখন।
আর এখন একসাথে আর আড্ডা দেয়া হয়না আর পুকুরেও গোসল করা হয়না পাচঁ বছর ধরে। সময়ের বিবর্তনে সব যেন পরিবর্তন হয়েছে। সবাই মিলে অনেকদিন হলো একসাথে আড্ডা দেয়া হয়না। তথ্য প্রযুক্তির এ যুগে সময় কাটানোর বিকল্প যেন মোবাইল ফোন। পুকুর পাড়ে একা বসে বসে শৈশবের সেই কথা মনে পড়তেছিল। আসলে শৈশবটাই তো ভালো ছিল। কতো মজা করেছি। ছিল না কোনো চিন্তা।
Device | Oppo A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz |
Location | w3w |
যায়হোক, আপনাদের সাথে কিছু কথা শেয়ার করে ভালো লাগলো। আশা করি আপনারা সবাই পড়বেন। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অসাধারণ বেশ কিছু ফটোগ্রাফি নিয়ে খুবই পুরনো দিনের বেশ কিছু স্মৃতি আবেগ অনুভূতি আপনার আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে তুলে ধরেছেন। তার পাশাপাশি বর্তমানকে নিয়েও অনেক চমৎকারভাবে তুলে ধরেছেন এজন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চাঁদনী রাত দেখতে অসাধারণ লাগছে। প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি এত সুন্দর হয়েছে যা বলার বাইরে। আমি গ্রামের বাড়িতে গেলে এরকম চাঁদনিরাত দেখলে অনেকক্ষণ আকাশের দিকে চেয়ে থাকি আমার অনেক ভালো লাগে। আপনি আবেগ অনুভূতি দিয়ে খুব সুন্দর পোস্ট টি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন এ জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চাঁদনী রাতে পুকুর পাড়ে বসে গল্প করতে আমার খুবই ভালো লাগে। তবে কোন মেয়ে মানুষের সাথে নয়। দীর্ঘদিন পুকুর পাড়ে বসে একসাথে গল্প করেছি আমি আর আমার প্রিয় বন্ধু মারুক। যে আমার বাংলা ব্লগের সদস্য। কারণ এই মুহূর্তটা মনের সুখ দুঃখের গল্প করা যায়। বেশ ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর চাঁদনী রাতের গল্পটা পড়ে। তবে আমি কবে কখন কিভাবে যে সাঁতার শিখেছি ঠিক স্মরণে নাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit