ক্যাম্পাসে বন্ধুদের সাথে কিছুসময়

in hive-129948 •  2 years ago 

08-09-2022

২৪ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমি ভালোই আছি বলতে পারেন। বন্ধুদের সাথে সময় কাটাতে পারলে কার না ভালো লাগে বলেন! গত দশদিন ধরে পরীক্ষা চলছে। একটার পর একটা পরীক্ষা দিয়েই যাচ্ছি। যখন মন হয় পড়া এখনও অনেক বাকি তখন কোনো কিছুতেই মন বসে না। যতক্ষণ বা পরীক্ষাটা শেষ না হয় ততক্ষণ চাপের উপরে থাকতে হবে। এরই মাঝে আমাদের ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট নিয়ে আরেক ঝামেলা বেধেঁ গেছে।

IMG20220907173939.jpg

এই প্রথম কারিগরি বোর্ড থেকে নির্দেশ এসেছে তিন মাসের বাস্তব প্রশিক্ষণের জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট করতে হবে। সবসময় আমাদের বেলায় এতো কড়াকড়ি নিয়ম হয়! আমাদের সময় থেকেই সাতটা সৃজনশীল লেখা শুরু, ৩০ টি এম সিকিউ। এই প্রথম আবার এটাচমেন্ট নিয়ে কারিগরি বোর্ড সিরিয়াস। এটাচমেন্ট নিয়ে বোর্ড থেকে লোক এসে তদারকি করবে। কিন্তু ঝামেলা হলো আমাদের অনেকেই ডুয়েট বা জব প্রিপারেশন নেয়ার প্লেন করেছিল। কিন্তু তিন মাস ইন্ডাস্ট্রিয়াল বাস্তব প্রশিক্ষণ নিলে ঝামেলা হয়ে যাবে। আবার একটা খরচাপাতির ব্যাপার আছে। চট্রগ্রাম এ যে কোম্পানীতে ইন্ডাস্ট্রিয়াল দিলো সেখানের আশে পাশে বাসা পাওয়ায় কঠিন ব্যাপার। আর পেলেও সেটা জন প্রতি ২০০০ টাকার মতো করে। খাওয়া দাওয়া খরচ তো আছেই।

এজন্য গতকাল গিয়েছিলাম স্যারের কাছে এ ব্যাপারে আলাপ করতে। স্যারেরা কোনোভাবেই আমাদের অন্য কোথাও এটাচমেন্ট দিতে পারবে না। বোর্ড থেকে যেভাবে বলেছে ঐভাবেই এটাচমেন্ট করতে হবে। এটা নিয়ে এখন আরেক টেনশনে পরে গেলাম। সামনের মাসের ১০ তারিখ থেকে এটাচমেন্ট শুরু। তার মধ্যে থেকে আবার ইন্ডাস্ট্রি থেকে অনুমতি নিয়ে এসে স্যারকে জমা দেয়া। এতোসব কাজ কিভাবে করবে সেটাই বুঝতে পারতেছিলাম না। গতকাল ক্যাম্পাসে গিয়েছিলাম বিকালে। রনিম,রাজু, পারভেজ ও আমি গিয়েছিলাম। ফেনীতে এসে এই তিনজন ভালো বন্ধু পেয়েছি বলা যেতে পারে। আমাদের প্লেন ডুয়েট কোচিং করার। কিন্তু এদিকে তিনটা অনেক লম্বা সময়। এই মাসগুলো কাজে লাগাতে না পারলে অনেকটা পিছিয়ে পড়তে হবে। কিন্তু কথা হলো কারিগরি বোর্ড তো আর এসব দেখবে না। তার চাই অবশ্য আমরা যেন আত্ননির্ভরশীল হয়।

অনেকদিন পর বিকালে বেরিয়েছি। এই সময়টাই পোস্ট লিখে থাকি আমি নরমালি। রাতে পড়ার চাপে আর লেখার সুযোগ হয়ে উঠে না। সময়টাকে কাজে লাগিয়ে ফেলি। বাহিরের আকাশটাও মেঘলা ছিল। আমি রাজুদের মেসে চলে যায়। সেখানে গিয়েছিলাম মূলত শাহআলম স্যার কি বলেছিল তা জানার জন্য। স্যার নাকি বলেছিল বিকালে ক্যাম্পাসে আসার জন্য এ ব্যাপারে স্যার কথা বলবে। আমাকে আসলে অন্য গ্রুপে রাখা হয়েছে। তবে আমার প্লেন যেহেতু ডুয়েট কোচিং করার এজন্য তাদের সাথে স্যারের সাথে কথা বলতে আসা। আমি আর রাজু বেশি দেরি না করে চলে যায় ক্যাম্পাসে। সেখানে গিয়ে রনিমকে হোস্টেল থেকে নিয়ে আসি। ঠিক কিছুক্ষণ পর পারভেজও চলে আসে। আমরা চারজন চলে যায় অফিস কক্ষে। সেখানে গিয়ে দেখি স্যার এখনও আসেনি। পুকুরের পাড়ে বেঞ্চ রাখা ছিল আমরা সেখানে গিয়ে বসে আড্ডা দিতে থাকি। দেখলাম আরও কিছু ডিপার্টমেন্ট এর ছাত্র এটাচমেন্ট এর ব্যাপারে কথা বলার জন্য আসছে। তারাও চাচ্ছে আশে-পাশেই কোথাও করার। কিন্তু স্যারেরা রাজি হচ্ছে না।

IMG20220907174626.jpg

এদিকে আসরের আযানও দিয়ে দিলো। নামাজ আদায় করে নিলাম। আবার সেই পুকুর পাড়েই এসে বসলাম। স্যার দেখি এখনও আসেনি। তারপর রনিমের কাছে জানতে পারলাম ক্যাম্পাসের পাশে একটি বিলতি ফলের গাছ আছে। আসলে এই ফলটি মনে হয় ছোটবেলায় খেয়েছিলাম। খেতে টক হলেও মজা আছে।। লবণ দিয়ে খেলে তো কথাই নেই। রনিমসহ আমরা ক্যাম্পাসের পিছনে চলে যায়, সেখান থেকে ঢিল মেরে কিছু বিলাতি ফল সংগ্রহ করলাম। লবণ ছিল না, আমরা এভাবে খেতে লাগলাম। একটা খেতেই দাতঁ টক হয়ে গেছে। তারপর আর বেশি খাওয়া হয়নি। এদিকে বিকালে হাটঁতেছিল রনিমের হোস্টেলে থাকা ছোটবোনসহ আরও কয়েকজন বান্ধবী। আমরা তাদেরকে কিছু বিলাতি ফল দিয়ে দিলাম। খেয়ে অবশ্য ভালোই মজা পেয়েছে। আর মেয়েরা এসব টক ফল খেতেও পারে মাশাআল্লাহ । তারপর আর বেশিক্ষণ থাকা হয়নি ঐদিকে। আমরা আবার চলে আসি অফিসে। এসে আবার স্যারকে পায়নি। তবে অফিসের সামনে আমাদের ক্যাম্পাসের গার্ডেন আছে। সেখানে কিছুক্ষণ ফটোগ্রাফি করতে থাকলাম। বেশ কয়েকজাতের ফুল ফুটেছে। অন্যদিন আপনাদের সাথে তা শেয়ার করবো।

IMG20220907174258.jpgIMG20220907174520.jpg

এদিকে সন্ধ্যাও হয়ে যাচ্ছে। তাই আর বেশিক্ষণ সেখানে থাকলাম না। যাক,যাওয়ার পথে স্যারকে পেয়ে গেলাম। স্যার ক্যম্পাসের দিকেই আসছে। আমরা স্যারকে তারপর ইন্ডাস্ট্রিয়াল ব্যাপারটা বললাম। কিন্তু স্যার কোনোভাবেই রাজি হলো না। যেখানে বোর্ড থেকে বলা হয়েছে সেখানেই করতে হবে। আমরা অবশ্য বললাম স্যার অন্যান্য পলিটেকনিক ঠিকই ইন্ডাস্ট্রিয়াল এটাচমেন্ট এ ছাড় পেয়েছে। কিন্তু স্যারের কথা হলো ডকুমেন্ট দেখাও, আমরাও বোর্ডের কাছে বলবো আমাদের স্টুডেন্টদেরকে ছাড় দেয়ার জন্য। এর উপরে আর কোনো কথা হতে পারে না। যাক, অনেকটা হতাশ হয়েই ক্যাম্পাস থেকে বেরিয়ে আসলাম। বের হয়ে ক্যাম্পাসের কোণার টঙের চায়ের দোকানে বসে আমরা চারজন চা খেতে থাকলাম। এছাড়াও আনুষঙ্গিক কিছু বিষয় নিয়ে কথা বললাম। এদিকে চা খাওয়াও শেষ। পারভেজ বন্ধু চায়ের বিলটা দিয়ে দিলো। বন্ধুদের বিদায় জানিয়ে বাসার দিকে হাটঁতে হাটঁতে চলে আসলাম।

DeviceOppo A12
PhotographerMy friend
LocationFeni polytechnic institute
Date07 July, 2022

এইতো বিকালের সময়টা এভাবেই চলে গেল। কিছু অর্জন করতে পেরেছি আবার পারেনি। যে উদ্দেশ্য আসা ক্যাম্পাসে আসা সেটাই সফল হলো না। তবে বন্ধুদের সাথে কাটানো সময়টা ভালো ছিল। এরকম বিকেল কি আর পাবো? যায়হোক, আপনাদের সাথে শেয়ার করতে পেরে ভালো লাগছে। সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ।



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg



আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

ভালো কিছু মুহূর্ত কাটিয়েছেন। খুব ভালো লাগলো আপনার বর্ণনা পড়ে। ভালো থাকুন। এভাবেই থাক বন্ধু রা পাশে।

জি ভাইয়া অনেকদিন পরে বিকালে সময় কাটালাম বন্ধুদের সাথে

ভাইয়া আপনি ফেনীতে গিয়ে তিনজন ভালো বন্ধু পেয়েছেন এটা জানতে পেরে আমার খুবই ভালো লেগেছে। আর বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসে বসে স্যারের জন্য অপেক্ষা করার মুহূর্তটুকু নিশ্চয়ই দারুন ভাবে কাটিয়েছেন। তবে বন্ধুদের সাথে বিলাতি ফল লবণ দিয়ে খাওয়ার মজাই আলাদা। আর অফিসের সামনের বাগান দিয়ে নিশ্চয়ই অনেক ফুলের সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ। আর কোন কিছুতে হতাশ না হয়ে ধৈর্য ধরায় উচিত।

হুমম ভাই আপনি একদম যথার্থ বলেছেন। বন্ধুদের সাথে অনেকদিন পর আড্ডা দিতে ভালোই লেগেছিল। ধন্যবাদ আপনাকে 🌼