23-08-2022
৮ ভাদ্র ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালো আছেন সবাই। আমি ভালো আছি। আজকে আপনাদের সাথে দ্বিতীয় পর্বটি শেয়ার করার জন্য চলে এলাম।
১ম পর্বের পর
আমরা সবাই বাহিরে বসেই ফটোগ্রাফি করতেছিলাম। বাহিরের তাপমাত্রা বেশি থাকলেও বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে ভালোই লাগতেছিল। হয়তো আর কখনো এভাবে আর আড্ডা দেয়া হবে না। এদিকে সিভিল ডিপার্টমেন্ট এর অনুষ্ঠান শেষের দিকে। এর পরই শুরু হবে আমাদের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর অনুষ্ঠান। আমরা অলরেডি মাল্টিল্যাব বেলুন দিয়ে সুন্দর করে সাজিয়েছিলাম। দুপুরের খাওয়া দাওয়া আর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে মাল্টিল্যাবে। বাহিরে অনেক গরম লাগতেছিল এজন্য আস সেখানে থাকতেও কষ্ট হচ্ছিল। আমরা চলে যায় অডিটোরিয়াম এর ভিতরে। ভিতরে গিয়ে দেখি এলোমেলো। তবে সাউন্ড বক্সে বাজানো হচ্ছে। কিন্তু শোনার মতো কেউ নেই। আমরা যাওয়াতে সেখানে ডিজে প্লে করে দিলাম। সব বন্ধুরা নাচানাচি শুরু করে দিলো। আমি অবশ্য নাচতে পারিনা। তবে ডিজে গান দিলে না নেচে কি থাকা যায়। আমিও বন্ধুদের সাথে নাচে জয়েন দিলাম।
২০১৮ সালে শেষবারের মতো নেচেছিলাম বন্ধুদের সাথে। ঐ বার খুব ভালো লেগেছিল আসলে। আজকে সেবারের নাচের কথা মনে পড়ে গেল। আসলে স্কুল লাইফে বন্ধুদের সাথে কাটানো সময় কখনো ভুলা যায় না। পড়ালেখার সুবাধে হয়তো একেকজন একেক জায়গায় তবে স্মৃতি আমলিন থাকবে আজীবন। অনেকদিন পর আবার বন্ধুদের নাচতে পেরে ভালোই লাগতেছিল। ডিজে গান দেয়াতে সবই উরাধুরা নাচ শুরু করে দিলো। এদিকে মেয়েরা দেখি টি-শার্ট এ সিগনেচার করানো শুরু করে দিছে। আসলে আমাদের ক্লাসে মেয়ে সংখ্যা খুব কম। মাত্র ১১ জন। এদের সাথে তেমন কথাও বলা হয়নি আসার পর। মেয়েরা দেখছি সবার কাছ থেকে সিগনেচার নিতেছিল। আমার কাছ থেকেও অবশ্য নিয়েছে। একদিনেই মেয়েদের সাথে ফ্রি হয়ে গিয়েছিলাম। এতোদিন আসলে ঐভাবে কথাও বলা হয়নি। আমাদের অবশ্য আগেই বলে দিয়েছিল টি-শার্ট এ যেন অরুচিকর কোনো কিছু না লেখা হয়। আমরা জাস্ট নাম আর তারিখ লিখে সিগনেচার করতে থাকলাম। এদিকে ডিজে গানে বন্ধুদের নাচ দেখে আমি আাবার গিয়ে জয়েন দিলাম। ক্যামেরাম্যান বন্ধু অবশ্য আমাদের নাচের ভিডিও ধারণ করেছিল। অবশ্য এই ভিডিওগুলো আমার কাছে নেই থাকলে অবশ্য আপনাদের সাথে শেয়ার করে নিতাম।
আমার টি-শার্ট এ সিগনেচার করানো বাকি। আমার টি-শার্ট বন্ধু সোহাগের কাছে দিয়েছিলাম। আসলে সোহাগকে আমরা হুজুর বলে ডাকি। সবসময় নামাজ পড়ে তা সাথে আমরাও নামাজ পড়ি। হুজুরের কাছ থেকে টি-শার্ট নিয়ে অবশ্য বন্ধুদেরকে বললাম সিগনেচার করানোর জন্য। সব বন্ধুদের বললাম টি-শার্ট এ সিগনেচার করতে। সবাই মোটামুটি সিগনেচার করেছিল। তারপর অবশ্য মেয়েদের সবার কাছ থেকেও সিগনেচার নিয়েছিলাম। আসলে এই সিগনেচারটা স্মৃতি হয়ে থাকবে। হয়তো দিনটা চলে যাবে কিন্তু কখনো ভুলা যাবে না। এরই মাঝে শুনতে পায় স্যারের অনুষ্ঠান শুরু করতে চায়। তখন ঘড়িতে ১টা বেজে গেছে। স্যারেরা ক্লাস শেষ করে আমাদের প্রোগ্রাম এ জয়েন দিবে। আমরা তাড়াহুড়ো করে সবকিছু ঠিকঠাক করে নিলাম। ব্যানার ছিল সিভিল ডিপার্টমেন্ট এর সেটা সরিয়ে আমরা ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর ব্যানার লাগিয়ে দিলাম। চেয়ার সব সিরিয়াল করে সাজিয়ে নিলাম। সব ঘুছানো হয়ে গেলে আমরা সবাই একই টি-শার্ট পরে চেয়ারে অবস্থান করলাম। এরই মাঝে আমাদের অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ফেনী পলিটেকনিক এর ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়া স্যার আমাদের মাঝে উপস্থিত হন।
এছাড়াও আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর সহাকারী ইন্সট্রাক্টর রাকিব স্যার। আরও উপস্থিত ছিলেন আজাদ স্যার, আতাউর স্যার, শাখাওয়াত স্যার সহ আরও কয়েকজন। সবাই আমাদের ডিপার্টমেন্ট রিলেটেড ক্লাস নিয়ে থাকে। অনুষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্বে ছিল আমাদের ক্লাসমেট অনামিকা। অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্যারদের ফুলের তোড়া দিয়ে বরণ করে নেয় রনিম, রাজু, নিঝুম, সোহান। তারপর সভাপতির অনুমতি নিয়ে অনামিকা অনুষ্ঠান শুরু করে। শুরুতেই পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করা হয়। তারপর গীতা পাঠ করা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে উপস্থিত বক্তৃতা দেন রনিম। ডিপ্লোমা লাইফের স্মরণীয় কিছু মুহুর্তের কথা আমাদের সাথে শেয়ার করে নেয়। তারপর অনুষ্ঠানের শুরুতেই বক্তৃতা দেন আমাদের ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর স্যার আজাদ স্যার। আমাদের উদ্দেশ্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেন। ডিপ্লোমা শেষে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের পরামর্শ দেন আজাদ স্যার। এছাড়াও তিনি বলেন ডিপ্লোমা লাইফ আসলে তোমাদের অনেক কিছু বলেছি সেটা তোমাদের ভালোর জন্যই বলেছি। তোমাদের সাফল্য করছি এই বলে স্যারের বক্তব্য শেষ হয়।
তারপর আমাদের মাঝে বক্তব্য নিয়ে আসেন আতাউর স্যার। আতাউর স্যার আমাদের উদ্দেশ্য কিছু মোটিভেশনাল কথা বলেন। পরিশ্রম ছাড়া আসলে সাফল্য লাভ করা যায় না। যেখানেই তোমরা যাওনা কেন সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করবে। স্যার বলেন শিক্ষকতা একটি সম্মানীয় পেশা। আর আমাদের কাজ হলো তোমাদেরকে শিক্ষায় শিক্ষিত করা। আসলে ডিপ্লোমা লাইফে প্র্যাকটিক্যাল বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আমরা তোমাদের তেমন প্র্যাকটিক্যাল সাপোর্ট দিতে পারিনি। তবে তোমরা উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে মানুষের মতো মানুষ হও। এই বলে স্যারের বক্তব্য শেষ হয়। তারপর আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর সহকারী সিআই স্যার গুরুত্বপূর্ণ কিছু কথা বলেন। আমরা যেখানেই যায়না কেন ফেনী পলিটেকনিককে যেন মনে রাখি সেই কথা বলেন। পলিটেকনিক এর সুনাম যেন অক্ষুণ্ণ রাখতে পারি সেটাও বলেন। তারপর আমাদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্যার কিছু কথা বলেন। স্যার শুরুতেই আমাদের টি-শার্ট এর প্রশংসা করেন। ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট বরাবরই ভালো কাজ দিয়ে আসছে প্রতিষ্ঠানে। এবারো তারই ধারাবাহিকতা বজায় রাখায় স্যার আমাদের ধন্যবাদ দেন। ডিপ্লোমা লাইফ শেষ করে অনেকেই উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করবে আবার অনেকেই জব সেক্টরে চলে যাবে। যেখানেই যায় না কেন ফেনী পলিটেকনিক এর একজন ছাত্র হিসেবে যেন গর্ব কর বলতে পারি সেটাই বলেন স্যার আমাদের।
বক্তৃতা শেষ হয়ে গেলে এবার কেক কাটার পালা। অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে প্রতিবছর কেক কেটে উদযাপন করা হয়। আমরা অবশ্য আগে থেকেই প্লেন করে রেখেছিলাম কেক কাটবো স্যারদের নিয়ে। এজন্য অবশ্য দশ পাউন্ডের একটি কেকে অর্ডার করে আনা হয়েছিল। কেকে আমাদের ডিপার্টমেন্ট এর নাম উল্লেখ করা ছিল। শুরুতেই অধ্যক্ষ স্যার কেক কাটেন । তারপর একে একে সব স্যারদের মুখে কেক তুলে দেয়। তারপর স্যারদের সাথে আমাদের ফটোসেশন পর্ব শুরু হয়। সবাই একসাথে স্যারদের সাথে ফটোসেশনে অংশ নেয়।
Device | Oppo A12 & Samsung Galaxy A12 |
---|---|
Photographer | @haideremtiaz & my friend |
Location | Feni polytechnic Institute |
Date | 17 August, 2022 |
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অনেক সুন্দর কিছু মূহূর্ত ছবি আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন ভাইয়া। আপনার মতো আমিও ২০১৫ সালে ডিপ্লোমা শেষ করি। আসলে পলিটেকনিক পড়া অবস্থায় অনেক স্মৃতি মিস্ করি এখনো। বিশেষ করে কিছু কিছু স্যারদের অনুপ্রেরণা মূলক কথা গুলো এখনো কানে বাজে। আপনাদের মতো আমরাও টি শার্ট সিগনেচার করে নিয়েছিলাম প্রতিটি বন্ধুদের কাছ থেকে। সেই টি শার্ট এখনো অক্ষত অবস্থায় রেখে দিয়েছি। মাঝে মধ্যে মনে হলে বের করে দেখি। আপনার পোস্ট দেখে সেই দিন গুলো কথা মনে পড়ে গেল। আপনার পরবর্তী সময়ের জন্য দোয়া রইলো। দোয়া করি যেন ডুয়েট এ ভর্তি হয়ে সফলতা অর্জন করতে পারেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাইয়া দিনটি স্মরণীয় থাকবে আজীবন। আপনার মনের কথাগুলো জানতে পেরে আমার ভালো লাগলো। কিভাবে সময়টা চলে গেল টেরও পায়নি ভাইয়া। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ চমৎকার একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা সারাজীবন স্মরণে থাকবে। আমার জীবনের সবচাইতে আনন্দদায়ক ছিল এই কলেজ লাইফটা। এইতো আমিও আর একবছর আছি। টিশার্টে সকল বন্ধুদের স্বাক্ষর করা এখন একটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে। বেশ স্মৃতি থেকে যায়। ধন্যবাদ আমাদের সঙ্গে শেয়ার করে নেওয়ার জন্য।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এক বছর পরেই কলেজ লাইফটাও শেষ হয়ে যাবে। আমাদের ইতোমধ্যে শেষ হয়ে গেল। বড্ড মিস করবো সময়টাকে। আপনার জন্য শুভকামনা থাকলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ ভাইয়া খুব সুন্দর মুহূর্ত আমাদের মাঝে সেয়ার করে সৃতির পাতায় রেখে দিলেন। এই দিনটা সবার জীবনেই অনেক আনন্দের হয়ে থাকে। আপনি ও আপনার সব বন্ধুদের জন্য শুভ কামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit