05-09-2023
২১ ভাদ্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তবে এখনকার সময়ে সুস্থ্য থাকাটা কঠিন। কাউকে কখনোই শুনবেন না বলতে ১০০% ভালো আছি। হয়তো হাসি মুখে বললেও ভালো আছি। কিন্তু মোটেও কিন্তু ভালো নেই। কারণ সময়টাই যে এমন হয়েছে। কেউ মানসিকভাবে অসুস্থ অথবা কেউ শারীরিকভাবে অসুস্থ। মানুষের জীবনটা এমন হয়ে গেছে যে, অসুস্থতা যেন এখন নিত্যদিনের সঙ্গী হয়ে গেছে। অথচ দাদা-দাদুদের কখনো বলতে শুনি নাই ভালো নেই, মানসিক ডিপ্রেসড ও না। তারা দিব্যি খেয়ে পরে জীবন কাটিয়ে দিয়েছে।
তাদেরকে দেখলে মনে হতো তারা এতো শক্ত কিভাবে। দাদা তো মাঝে মাঝে বলেই উঠতো। " তোদের বয়সে একাই এক কাঁঠাল খেয়ে নিতাম! " সেটা আদৌ কি সম্ভব এ জেনারেশনের বেলায়। অল্প খেয়েই পেট ভরে যায়। তবে আগেকার দিনের মানুষজন খুব কম ঔষধ খেতো। ঔষধ খেলেও সেটা আবার উদ্ভিদ থেকে বানানো ঔষধ। একদম শরীর থেকে রোগ যেন নিমিষেই চলে যেত। আর এখনকার সময়ে কতো ঔষধ বের হলো। নরমাল সর্দি লাগলেই আমরা নাপা বা প্যারাসিটামল খেয়ে ফেলি। কিন্তু এটা খাওয়া কি খুব জরুরি! যেহেতু টেবলেটগুলা রাসায়নিক উপাদান তৈরি তো সেগুলো খেলে আমাদের রোগ ভালো হবে ঠিকই কিন্তু শরীরের কোনো না কোনো ক্ষতি করে ফেলবে।
এখনকার সময়ে আমরা এতোটাই দূর্বল হয়ে গেছি যে সামান্য অসুখেই কুপোকাত হয়ে যায়। আসলে আমাদের জন্যই তো এই অবস্থা! সময়মতো তো কিছুই করা হয় না। বর্তমান জেনরেশনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো ফোন আসক্তি। খুব অল্প বয়সেই তাদের মা-বাবা তাদের হাতে ফোন তুলে দিচ্ছে। এতে খুব অল্প বয়সেই বিভিন্ন ধরনের গেইম আসক্তি হয়ে পরছে। আবার অনেকেই টিকটকের মতো আনসোস্যাল একটা জায়গায় ভিডিও দেখে অথবা ভিডিও করে ভাইরাল হওয়ার চেষ্টা করছে। তাদের মস্তিষ্কটা এমন হয়েছে যে, অল্প বয়সেই তাদের ব্রেন নেগেটিভ কিছু আয়ত্ত করে ফেলছে।
এতে করে তারা অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে পরছে। প্রতিনিয়ত অসামাজিক কার্যকলাপ করেই যাচ্ছে। বড়দেরকে শ্রদ্ধার সাথে দেখতে হবে এ জেনারেশন যেন সেটা ভুলে যাচ্ছে। একটা ঘটনাবলা যাক, যেটা একজন ছাত্রের কাছ থেকে শুনেছি। আমি চন্ডীপাশা সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে পড়াশোনা করে বের হয়েছি সেই ২০১৮ সালে। স্কুলের সবকিছুই আমার যেন পরিচিত। শুনেছি স্কুলে নতুন বিল্ডিং করেছে, নতুন স্যার-ম্যামরাও এসেছে। তো এক ছাত্রের কাছ থেকে জানতে পারলাম যে, চন্ডীপাশা স্কুল এখন আগের মতো নেই! নবম-দশম শ্রেণীতে যারা পড়াশোনা করে তারা স্যার-ম্যামদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে।
রিসেন্টলি স্কুলে অর্ধ বার্ষিক পরীক্ষার সময় একজন ম্যাম এক ছেলের খাতা নিয়ে নেয়। ছেলেটি নকল করে লিখছিল। হাতনাতে ম্যাম ছেলেটিকে ধরে। কিন্তু সবচেয়ে অবাক হওয়ার বিষয় হলো যে ছেলেটির খাতা নিয়েছিল ম্যাম সেই ছেলেটি ম্যামকে হুমকি দেয় যে, স্কুল থেকে বের হতে পারবে না খাতা না দিলে!! তারপর ম্যাম নাকি খাতা দিতে বাধ্য হয়। এই ঘটনাটি শুনে আমি তো রীতিমতো অবাক হয়ে পড়ি! একজন টিচারকে সে হুমকি দিচ্ছে পরীক্ষার হলে বসে! তাদের মানসিকতার কতটুকু অবক্ষয় হয়েছে একবার ভাবুন তো! মা-বাবার পরেই যেখানে শিক্ষকের স্থান সেখানে তারা শিক্ষককেই হুমকি দিচ্ছে। আপনার কি মনে হয়, তারা কি আদৌ কিছু অর্জন করতে পেরেছে জীবনে!
বই পড়া গল্পে কাজী মোতাহের হোসেন চৌধুরী একটা কথা বলেছিলেন। আমার এখনও মনে আছে। বলেছিলেন, " স্বশিক্ষিত লোক মাত্রই শিক্ষিত! " এখন কথা হচ্ছে আমরা কি সেটা করতে পেরেছি! আমরা এখনো হয়নি, সামনে হবে কি না জানিও না। কারণ এখনকার জেনারেশন ফোন আসক্তির কারণে তাদের মস্তিষ্ক বিকৃত পায়। সঠিক বিবেকবোধ যেন হারিয়ে ফেলেছে। তবে এ দোষ কাকে দিবেন আপনি? আসলে একটা শিশুর প্রাথমিক শিক্ষাটা কিন্তু পরিবার থেকেই পেয়ে থাকে বলতে গেলে। পরিবার তাকে যেভাবে বড় করবে সে কিন্তু সেভাবেই বেড়ে উঠবে। আবার সমাজের একটা বিষয় চলে আসে সেখানে। সমাজের রীতিনীতি কিন্তু একটা ইফেক্ট পরে।
আমাদের সমাজব্যবস্থার পরিবর্তন হবে কি না জানি না! কারণ দিনকে দিন উন্নত টেকনোলজি পেয়ে শিশুরা আগেই সব জেনে যাচ্ছে। মা বাবারা হয়তো ভাবছে তার শিশু সবকিছুই জেনে যাচ্ছে কিন্তু সে যে সঠিক সংস্কৃতি চর্চা করছে না মা-বাবার সে খেয়াল নেই। যাক, এ জেনারশনের বিবেকবোধ জাগ্রত হোক এমনটাই প্রত্যাশা জানিয়ে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼🦋
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
![witness_vote.png](https://steemitimages.com/640x0/https://cdn.steemitimages.com/DQmRXkkCEbXLYwhPEYqkaUbwhy4FaqarQVhnzkh1Awp3GRw/witness_proxy_vote.png)
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে ভাই আমি মাঝে মাঝে বর্তমান নিয়ে একটু চিন্তা করি আর তখন মনে হয় আমরা তো বড়দের ভালোই শ্রদ্ধা করতাম কিন্তু বর্তমানে যে জেনারেশন আসছে তারা সম্মান তো দূরের কথা ভালোভাবে একটু কথা বলতে চায় না। মনে হচ্ছে আধুনিকতার সাথে যেন মানবিকতা হারিয়ে যাচ্ছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদম ঠিক বলেছেন ভাই। শ্রদ্ধাবোধটা উঠে গিয়েছে এখন
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আগের দিন গুলো অনেক ভালো ছিলো। যত দিন যাচ্ছে পরিবেশ পরিস্থিতি যেন আরো খারাপ হয়ে যাচ্ছে। আগে এতো হসপিটালও ছিলো না, এতো ঔষধও ছিলো না। তবুও গড় আয়ু কতো বেশি ছিলো। আগে তো খাবার থেকে শুরু করে সবকিছু নির্ভেজাল ছিলো। আর এখন তো সবকিছুতেই ভেজাল। আমাদের এখানে উচ্চ বিদ্যালয়ে একই কাহিনী ঘটে। টিচার লাঠি দিয়ে মারতে গেলে ছাত্ররা লাঠি ধরে ফেলে। আবার হুমকি দেয় ছোটখাটো ঘটনাকে কেন্দ্র করে। সামনে যে আরো কতকিছু হবে সেটাই ভাবছি। যাইহোক এতো সুন্দর একটি পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি ঠিক বলেছেন ভাই। আগে এতো উন্নত চিকিৎসা ছিল না তবুও মানুষের গড় আয়ু ভালো ছিল
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit