৮ম পর্ব || জীবনের ব্যর্থতার গল্প

in hive-129948 •  7 months ago 

30-04-2024

১৭ বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


🌼 আসসালামুআলাইকুম সবাইকে 🌼


sad-2635043_1280.jpg

copyright free image from pixabay

৭ম পর্বের পর

আমার হাটুঁ ভাজ হয়নি। তারপর আমার হাতের তালু দেখলো গামে কি না! অফিসার আসার আগেই কয়েকবার মুছেছি। আসলে টেনশন করলে হাত ঘেমে যায়। আমাকে বললো মুখ হা করতে। ছোট্র একটা লাইট জ্বালিয়ে মুখের ভিতরে দেখলো। সব ঠিক ঠাক আছে! এতো কিছু করার পর আমাকে সিলেক্ট করলো এবং বুকে একটা সিল মেরে দিল। সকাল সাড়ে দশটার ভিতর বলতে গেলে প্রাথমিক বাছাই শেষ হয়ে গিয়েছিল। যারা সিলেক্ট হয়েছিলাম তাদেরকে বললো সিরিয়ালি বসেই থাকতে। রোদের ভিতরে বসে থাকাটাও কঠিন একটা কাজ ছিল। তারউপর খালি গায়ে বসে থাকা। বলতে গেলে নতুন এক অভিজ্ঞতা। এই সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য এতো কষ্ট! পানিরও ব্যবস্থা নেই। তারপর একজন অফিসার মাইকে এনাউন্স করলো ফাইল থেকে কলম বের করার জন্য! আমরা যারা প্রাথমিক বাছাইয়ে সিলেক্ট হয়েছিলাম সবাই দেখছিলাম কলম বের করে বসে আছে।

তারপর একজন অফিসার মাইকে বললো তোমাদের এমসিকিউ পরীক্ষা হবে। ওএমআর শিট দেয়া হবে। সেখানে বৃত্ত ভরাট করতে হবে। এছাড়াও আরও কিছু ইন্সট্রাকশন দিলো। এই যেমন চাকরিতে এপ্লাইয়ের পরে যে কাগজটা হাতে পেয়েছিলাম সেখানে একটা রোল ছিল সেটা ভালোভাবে পূরণ করতে হবে। রোল নাম্বার ভুল হলেই সব শেষ। কথা হচ্ছে রোদের মাঝে বসে পরীক্ষা দিতে হবে। একে তো পরীক্ষার টেনশনে মাথা গরম তার উপর প্রখর রোদের তাপ। তার কিছুক্ষণ পর আমাদের একটা এমসকিউ প্রশ্ন দিলো এবং সাথে ওএমআর শিট দিয়ে দিলো। বসে বসে ফাইলের উপরে দাগাতে হবে। তারপর সময় শুরু হতেই বৃত্ত ভরাট করতে শুরু করলাম। মজার ব্যাপার হলো বিমান বাহিনীতে এমসিকিউ প্রশ্নে যেগুলা এসেছিল সেগুলো নৌবাহিনীতেও পরীক্ষা দেয়ার সময় পেয়েছিলাম। সময় যেহেতু কম তাই বুঝে বুঝে বৃত্ত ভরাট করতে হয়েছিল।

৫০ টা এমসিকিউ প্রশ্নের জন্য সময় ছিল ত্রিশ মিনিট। আমার পরীক্ষা ভালো হয়েছিল। পরীক্ষা শেষ হতেই একজন অফিসার বললো স্টপ রাইটিং! আমি সাথে সাথে বৃত্ত ভরাট বন্ধ করে দিলাম। তবে আমার সাথে কয়েকজনকে দেখছিলাম বৃত্ত ভরাট করতেইছিল এবং তারা সেখানেই ধরাটা খায়। অফিসার সবার খাতা নিলেও কয়েকজনের খাতা নিয়ে সোজা কলম দিয়ে দাগ দিয়ে দেয়! পরীক্ষায় সে আগেই ফেল। তো যেহেতু ওএমআর শিটে পরীক্ষা দিয়েছি তাই বেশিক্ষণ লাগবেও না প্রশ্নের উত্তর দিতে। ১৫ মিনিট পর রেজাল্ট পাবলিশ করা হয়! আমরা পরীক্ষা দিয়েছিলাম ৩০০ জনের মতো! মজার ব্যাপার হলো সেখান থেকে সিলেক্ট হয়েছিল মাত্র ৮ জন! আর সেই আট জনের সিরিয়ালে আমিও ছিলাম। সিরিয়ালের তিন নাম্বারে ছিল আমার রোল! আমি মোটামোটি সিউর ছিলাম আমার হয়ে যাবে।

সিলেক্ট হওয়ার পর আমাদের বারোজনকে ভিতরে প্রবেশ করালো। এবং বলা হয়েছিল আজকেই মেডিকে্ল হয়ে যাবে। মেডিকেল বাছাইপর্ব হতে হতে বিকাল চারটা কি পাচঁটা বেজে যাবে। একজন অফিসার বললো তোমরা সবাই বাহির থেকে খাওয়াদাওয়া করে আসো। এবং চারটার মধ্যে মাঠের ভিতরে থাকতে হবে। আসলে একটা টেনশন কাজ করলে দেখবেন খেতেও মন চাই না! আমি বাহিরে গিয়ে কিছু খেয়ে নিলাম। রফিক উদ্দিন ভূঁইয়া স্টেডিয়ামের পাশে অনেকগুলো ছোট ছোট দোকান। যেহেতু সকালে খাওয়া-দাওয়া করে এসেছিলাম না তাই ভাত খেয়ে নিয়েছিলাম। তারপর আশেপাশে কিছুক্ষণ হাটাঁহাটিঁ করছিলাম।

স্টেডিয়ামের মেইন গেট তখন তালা মারা। বিকাল চারটা আগে খুলবে না। বিকাল চারটা বাজতেই মাঠের ভিতরে চলে গেলাম। তারপর মাইকে এনাউন্স করলো ভিতরে গিয়ে বসার জন্য। তারপর একে একে কয়েকজনের মেডিকেল হয়ে গেল! আমার আগে যে দুইজন গেল, দুইজনই মেডিকেলে আনফিট! তারপর আমি গেলাম ভিতরে! একজন অফিসার আমার হাইট মেজার করতেছিল। আর সেখানেই আমি মেডিকেলি আনফিট! হাইট কম থাকার কারণে আমাকে বলা হয় মেডিকেলে আনফিট। কিন্তু আমি কনফিউজড হয়ে গিয়েছিলাম আমি পাচঁ সাড়ে পাচঁ হওয়ার পরেও কিভাবে কম হলাম!

চলবে,,,,,,


10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG-20211205-WA0092.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আপনার আগের পোস্টগুলো আমি পড়িনি তাই অতটা বুঝতে পারিনি তবে যতটুকু বুঝলাম আপনি কোনো সরকারি চাকরির জন্য পরীক্ষা দিতে গিয়েছিলেন। প্রথমদিকে সবকিছু ঠিক ছিল কিন্তু শেষ দিকে আপনি সাড়ে পাঁচ ফিট হওয়ার সত্বেও আপনাকে হাইটে কম বললো জেনে খারাপ লাগলো। যাইহোক পরবর্তী পর্বে নিশ্চয়ই বাকিটুকু জানতে পারব কি হয়েছিল আপনার সাথে।

এতো কষ্ট করে পরীক্ষা গুলো দেওয়ার পরেও, শেষ পর্যন্ত আপনাকে উচ্চতার জন্য বাদ দিয়েছিল,এটা জেনে আসলেই খুব খারাপ লাগলো ভাই। আমার মনে হয় আপনার উচ্চতা ঠিকই ছিলো। যেহেতু অনেক গুলো ধাপ পার করে ফেলেছেন,তো মেডিকেলে আনফিট না করলে তো আপনাকে বাদ দিতে পারবে না,আর সেজন্যই এই কাহিনী করেছিল। আসলে টাকার মাধ্যমে সরকারি চাকরি গুলো আগেই বিক্রি করা হয়ে যায়। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।