02-04-2024
১৯ চৈত্র , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼
মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে হওয়ায় বলতে গেলে অল্প বয়সেই পরিবারের দায়িত্ব যে নিজের উপর পরবে সেটা বুঝতে পেরেছিলাম। এস এস সি তে এ+ পায়নি। সেটা নিয়ে আবার আমার প্রচন্ড মন খারাপ ছিল। কারণ আত্মীয়বজনরা সবাই ভেবেছিল আমি এস এস সি তে এ+ পাবো। কিন্তু যেরকম এক্সপেক্ট করছিলাম সেরকম আসেনি। একের পর এক কথা শুনতে হচ্ছিল আমার পরিবারকে সাথে আমি তো আছিই। সবাই শুধু বলতো এতো পড়াশোনা করে লাভ কি হলো! পরীক্ষায় এ+ পায়নি। রিলেটিভসরা ভাবতো আমি আমার বড় আপুর মতো মেধাবী। আমার আপু সেই ক্লাস ফাইভ থেকে এস এস সি অবধি জিপিএ-৫ পেয়েছিল। আর আমি মেধার পরিচয় দিতে পেরেছি কিন্তু সেটার প্রকাশ ঘটাতে পারেনি রেজাল্টের মাধ্যমে। এস এস সি তে এমন রেজাল্ট আসলো যে ভালো কোনো কলেজেও ভর্তি হতে পারবো না। আর আমার ফ্যামিলি এতটাও স্বচ্ছল না যে পড়ালেখার খরচ চালিয়ে পড়াশোনা করাবে। এস এস সি যেহেতু শেষ করেছিলাম বিজ্ঞান শাখা থেকে। তো এইস সি তেও প্লেন ছিল বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করার।
কলেজে ভর্তি হতে হলে আগে অনলাইনে কলেজ চয়েস দিতে হয়। আমার বন্ধুরা সবাই ময়মনসিংহের বেশ কয়েকটি জায়গায় চয়েস দিয়েছিল। তাই আমারও ইচ্ছে ছিল ময়মনসিংহ চলে যাওয়ার। কিন্তু ঐ যে বললাম সাধ ছিল কিন্তু সাধ্য ছিল না তখন। তাই প্রথম চয়েস দিয়েছিলাম গুরুদয়াল মহাবিদ্যালয়। যেটি কিশোরগঞ্জ এ অবস্থিত। যেহেতু কিশোরগঞ্জ আমাদের বাড়ি থেকে কাছে তো সে ভাবনা থেকেই কিশোরগঞ্জ প্রথম চয়েস দিয়েছিলাম। তারপর বাকি চারটা কলেজ দিয়েছিলাম ময়মনসিংহ এ। এদিকে আমার মামা পরামর্শ দিল ডিপ্লোমাতে এপ্লাই করার জন্য। সেখানে পড়াশোনার পাশাপাশি ভালো সুযোগ সুবিধা পাওয়া যায়। তো আমি তিনদিনের জন্য নেসাবে চলে গিয়েছিলাম। আমার বাবা তখন মামার পরামর্শে বেশ কয়েকটি টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে ইলেকট্রিক্যল ও সিভিল ডিপার্টমেন্ট এ আবেদন করে। আমি তখন বুঝতে পারছিলাম না কোন রাস্তায় যাবো ! তারপর মামা বললো ইলেকট্রিক্যাল ডিপ্লোমা করে মামার এক আত্মীয় বিদ্যুৎ অফিসে ভালো অবস্থানে জব করছে। তাছাড়া এটার ফিউচারও ভালো।
আমি যে কয়টা কলেজে চয়েস দিয়েছিলাম তার মধ্যে আসলো রয়েল মিডিয়া কলেজ ময়ননসিংহ। আর এদিকে আমার বাবা যে টেকনিক্যাল স্কুলে আবেদন করেছিল তার মধ্যে আমার আসছিল নরসিংদী টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ। তো মাইগ্রেশন অন থাকার কারণে আমার কলেজ চলে আসলো কিশোসগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজ! তো আমি তখন অনেকটাই খুশি হয়েছিলাম। কারণ কিশোরগঞ্জ থাকলে বাড়ি থেকেই যাওয়া যাবে। এদিকে আমার বন্ধু কয়েকজন বলেছিল ওদের সাথে ময়মনসিংহ চলে আসতে। কিন্তু আমি সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে সেখানে আর ভর্তি হয়নি। এটা বলতে গেলে আমার জীবনের একটা টার্নিং পয়েন্টও বলা যায়। যাক, আমি ভর্তি হলাম কিশোরগঞ্জ টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজে। তারপর পড়াশোনাও ভালো চলছিল। আমার মামা কিশোরগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসে জব করতো। তো আমাকে একদিন বললো, বাংলাদেশ বিমান বাহিনীতে জবের সার্কুলার দিয়েছে। এস এস সি পাশ করা সবাই আবেদন করতে পারবে। তো আমিও মামার কথায় আবেদন করলাম। আবেদন ফি নিয়েছিল ২০০ টাকা। তো প্রশ্নের প্যাটার্ন আমি জানতাম না তখন। মামা বললো তিনধাপে পরীক্ষা হবে।
আগে ১০০ মার্কসের এমসকিউ। সেটা তে টিকতে পারলে তারপর হবে ৫০ নাম্বারের গণিত, ফিজিক্স। সেটাতে টিকতে পারলে শেষে হবে ইংরেজি ৫০ মার্কসের। তো মোটামোটি ইউটিউব ঘাটাঘাটি করে কিছু তথ্য জানতে পারলাম কি রকম পরীক্ষা হতে পারে। তবে ডিফেন্সের জবগুলাতে আগে শারীরিকভাবে ফিট থাকতে হবে আপনাকে। শারীরিকভাবে আনফিট থাকলে তাহলে আগেই বাদ। তো পরীক্ষা ছিল বাংলাদেশ বিমান বাহিনীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কেন্দ্রে। সেটা ঢাকার তেজগাঁও অবস্থিত। যেহেতু ঢাকায় এর আগেও আমি এসেছিলাম তো মোটামোটি চেনা পরিচিত আছে। পরীক্ষা ছিল আমার সকাল নয়টায়। আমি আবেদন করেছিলাম বিমান বাহিনীর টেকনিক্যাল ট্রেডে। ময়মনসিংহ বিভাগ থেকে নিবে মাত্র চারজন। আর আবেদন করেছিল ৬০০ এর মতো। তো আমি মোটামোটি প্রিপারেশন নিয়ে জীবনের প্রথম চাকরির পরীক্ষা দিতে আসলাম বিমান বাহিনীতে। পরীক্ষা ছিল সকাল নয়টায় তবে ১৫ মিনিট আগেই ভিতরে প্রবেশ করতে হবে প্রয়োজনীয় সব কাগজপত্র নিয়ে। বিমান বাহিনীর অফিসে যাওয়ার পর দেখলাম একের পর এক বিমান আকাশে উড়ে আসছে। খুব কাছ থেকে বিমান ও হেলিকপ্টার দেখছিলাম। বেশ ভালোই লাগছিল। তো ভিতরে প্রবেশ করলাম। সবাইকে সিরিয়ালে দাঁড়াতে বললো একজন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা। তো আমার খুব ভয় হচ্ছিল। হাইট নিয়ে একটা সংশয় ছিল আমার মাঝে!
চলবে,,,,,
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit