03-03-23
১৮ ফাল্গুন,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি ভালোই আছেন। যাক, ভালো থাকলেই ভালো! আপনারা হয়তো জানেন যে আমি গত পোস্টে বলেছিলাম ফেনী যাওয়ার কথা। কারণ আমাদের অষ্টম পর্বের ভাইবা আছে আর তার মধ্য দিয়েই ডিপ্লোমা লাইফের শেষ হবে। এজন্য ফেনীতে আসা হলো। কিন্তু ফেনীতে আসার পিছনের ট্রেন জার্নির গল্প আপনাদের সাথে শেয়ার করবো বলছিলাম। পরের পোস্টে বিস্তারিত জানতে পারবেন আশা করছি।
যাক, আজ সকালে আমাদের ভাইবা ছিল। স্যার আমাদের বলে দিয়েছিল সকাল নয়টায় বি গ্রুপের ভাইবা হবে। আমি যেহেতু বি গ্রুপের স্টুডেন্ট তাই সকাল সকাল তো যেতেই হবে। তারপর অবশ্য পর্যায়ক্রমে অন্য ডিপার্টমেন্ট এর শিফটেরও ভাইবা নিবে। ভাইবার জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না! কলেজের ড্রেস পর্যন্ত আনিনি। সো, আমি তো ভেবেই নিয়েছিলাম ভাইবাতে আমাকে নাম্বার দিবেই না! কারণ ভাইবার প্রধান শর্তই হো ফর্মাল ড্রেসে যেতে হবে। আমি জাস্ট সাদা শার্ট নিয়ে এসেছিলাম। তবে খুশির খবর জানতে পারলাম সকাল নয়টায়!
অনেকেই ড্রেস পরে আসেনি! নরমাল ড্রেসআপে চলে এসেছে! বিশেষ করে আমার মতো যারা বাড়িতে যাওয়ার সুযোগ হয়নি তারা ড্রেস পরে আসেনি! শাওন আমাকে ফোন দিয়ে ব্যাাপারটা নিশ্চিত করলো। ভাইবা নয়টায়! কিন্তু আমি গেলাম নয়টার পরে। গিয়ে দেখি ক্লাসে সবাই এখনও আসেনি! কেউ তো এডমিট কার্ডই সংগ্রহ করেনি! নতুন টিচার এসেছে! ইন্ডাস্ট্রিয়াল এর ভাইবা নেয়ার জন্য। স্যার এসে আমাদের অবশ্য এডমিট কার্ড দিচ্ছিল! অনেকে এডমিট কার্ড সংগ্রহ করেনি তখনও। এডমিট কার্ড নেয়ার পরে পরীক্ষা শুরু হবে। সাথে লগবই নিয়ে এসেছিলাম!
আমাদের গ্রুপের সিরিয়াল যেহেতু আগে ছিল তাই আমাদের আগে ভাইবা। রোল নাম্বার অনুযায়ী সবাইকে ডাকছে স্যার। ক্লাসের ক্যাপ্টেন অবশ্য স্যারকে সাহায্য করেছে এ ব্যাপারে। স্যার বলেদিয়েছিল পাচঁজন করে আসতে। এতে তাড়াতাড়ি করে নেয়া যাবে। পাচঁজন করে করে সবাই ভাইবা দিচ্ছিল। কিন্তু সময় যেন আরও বেশি লাগছিল। আমরা অনেকদিন পর সবাইকে পেলাম! সবাই এই ফাকেঁ কিছুক্ষন আড্ডায় মেতেছিলাম। অনেকেই এদিকে লগ বই লিখছে। যেহেতু ডিপ্লোমা বলতে গেলে শেষ তাই সবাই এখন বাড়িতেই অবস্থান করছে। কারো জীবন এভাবেই চলে যাচ্ছে। কেউ আবার চাকরি খুঁজছে । কারো আবার বাহির দেশে চলে যাওয়ার প্লেন। তবে তাদের কথা বলে যেটা বুঝলাম ডিপ্লোমার পরের লইফটা ভালো যাচ্ছে না।
এই যে আমি এখন এডমিশন সিকার! এখনকার সময়টা তো এমনি যাচ্ছে। যায়হোক, সময় তো চলে যাবে। জীবন তো থেমে থাকবেও না। এদিকে ভাইবার শেষ দিকে আমরা চলে এসেছিলাম! আমার রোল শেষে। সাথে আমাদের টিমমেট যারা রয়েছে তাদেরও রোল শেষের দিকে পরেছে। শেষে বাকি ছয়জন! আমরা তিন ছেলে তিন মেয়ে! সব ঠিক ঠাক মতোই হচ্ছিল। স্যারের সব প্রশ্নের উত্তর আমরা দিতে পেরেছিলাম! যখনি সিগনেচারের খাতায় সিগনেচার করতে যাবো ঠিক তখনই ঘটে গেল এক অপ্রিতিকর ঘটনা! একজন স্টুডেন্ট দৌড় আমাদের স্যারের রুমে প্রবেশ করলো। প্রবেশ করেই দরজা লাগিয়ে দিল। শরীর থেকে রক্ত ঝরছে। মেয়ে তিনটি হাউমাউ করে চেচাঁমেচি শুরু করে দিয়েছে। দরজার অপর পাশে কতিপয় আরও কিছু ছাত্র লাঠি দিয়ে দরজায় জোরে আঘাত করছে।
আমরা যারা ছিলাম সবাই ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম! আমি দেখতে পেয়েছিলাম এক ছেলের হাতে চাপাটি! দরজায় আঘাত করছে। দরজার পাশের ছেলেটি শরীরের সবটা দিয়ে ধরে রেখেছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর পেরে উঠেনি। লাথি দিয়ে দরজা খুলে পেলে। ভিতরে প্রবেশ করে লাঠি দিয়ে শরীরে আঘাত করতে থাকে। স্যার তাদেরকে ফেরানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়! ফাইনালি ছেলে আলমারির পিছনে গিয়ে পরে। আমি সহ যারা ছিলাম সবাই বেরিয়ে পরি রুম থেকে। ছেলেটির শরীর থেকে তখনও রক্ত ঝরছে। কিন্তু এ পাশে থাকা ছেলেগুলি বারবার চেষ্টা করছে আবার মারার জন্য! এরই মাঝে বেশ কয়েকজন স্যার এসে পরিস্তিতি সামাল দেয়ার চেষ্টা করে।
পরিস্তিতি তখনও ঠিক হয়নি। কিছুক্ষণ পর সেখানে পুলিশ চলে আসে। রক্তাক্ত একজনকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আরেকজনকেও মেরেছে। অজ্ঞান হয়ে পরে আছে। তাকেও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আমরা তখন বাহিরে দাড়িঁয়ে ছিলাম। পুলিশ আসার পর পরিস্তিতি স্বাভাবিক হয়েছিল। তারপর জানতে পারলাম আসল ঘটনা! রাজনীতি!! একদল সাধারণ সম্পাদক আরেকদল সভাপতির। দুদলেই আবার ফেনী পলিটেকনিক এর সময়! অথচ আমাদের সময় রাজনীতি ছিল না কলেজে! আমরা লাকি বলতে গেলে। এখনকার সময়ে নোংরা রাজনীতি ছাড়া আর কিছুই নয়! শুধু ক্ষমতার অপব্যবহার! একপক্ষ আরেক পক্ষের সাথে বিবাদ লেগেই আছে! এর সমাধান কি হবে আদৌ? হবে না। প্রতিশোধ বলে একটা আছে। কলেজে যতদিন রাজনীতি থাকবে ততদিন কলেজে দুইপক্ষে মাঝে কখনই মিলন হবে না!
ছাত্র রাজনীতি আগে ভালো ছিল। আগেকার সময়ে ছাত্ররাই কিন্তু সবসময় এগিয়ে এসেছিল। কিন্তু এখনকার চিত্র পুরো উল্টো। বাংলাদেশে সব জায়গায় রাজনীতি বা ছাত্র রাজনীতির অপব্যবহার হয়ে থাকে। আমার মনে হয় প্রতিষ্ঠানে রাজনিতি ঢুকিয়ে সবথেকে বড় সমস্যা হয়েছে। যাক, আমরা চাই শান্তি, আমরা চাই সম্প্রতি। আমরা স্বপ্ন দেখি আগামীর ভবিষ্যৎ এর। আমাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ 🇧🇩। সবাই ভালো থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ 🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
twitter share link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
@tipu curate
;) Holisss...
--
This is a manual curation from the @tipU Curation Project.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted 👌 (Mana: 2/8) Get profit votes with @tipU :)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালোই লেগেছে। তবে এই অপ্রীতিকর ঘটনার জন্য আসলে খারাপ লাগল। সত্যি আগে ছাত্র রাজনীতি ছিল অনেক ভালো কিন্তু এখন তার উল্টো। আর এমন রক্তান্ত অবস্থা দেখলে আসলে খারাপ লাগে। যাইহোক পুলিশ এলে ব্যাপারটা স্বাভাবিক হলো জেনে ভালো লাগল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি আপু! পুলিশ না আসলে তো আবার মারামারি শুরু হয়ে যেত
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রাজনীতি নাম শুনলেই ঘৃণা করে। বর্তমানে তো রাজনীতি হয় না বর্তমানে জীবন নিয়ে খেলা করা হয়। আমরা কিন্তু এমন বেশ কয়েকটি এমন বাস্তব ঘটনা দেখেছি।জাতি হিসেবে আসলে আমরা লজ্জিত 😔
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই! রাজনীতির অবস্থা খুবই ভয়াবহ বলতে গেলে। ছাত্ররাজনীতির নামে সবাই অপরাধমূলক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পরছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইভাতে ফরমাল ড্রেসে যাওয়াটাই উত্তম। যাই হোক আপনার সাথে আরো অনেকেই ইনফরমাল ড্রেসে এসেছে তাতে আপনার সাহস বেড়েছে তবে মার্কস কাটা যেতে পারে। তবে আপনার সামনে ঘটে যাওয়া অপ্রীতিকর ঘটনা পড়ে খুবই খারাপ লাগছে। কবে শেষ হবে এই রাজনীতি নামক সংঘর্ষ তা জানা নেই। আশা করছি এই সোনার বাংলাদেশ আবারও সুন্দর হয়ে উঠবে। ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কবে যে সেই সোনার বাংলাদেশ হবে সেটাই ভাবছি ভাইয়া,,,
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
রাজনীতি কেন্দ্রিক এই ঘটনাগুলো প্রায় দেখা যায় বিভিন্ন জায়গায়। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে স্টুডেন্ট লাইফ পুরো ধ্বংসের মুখে চলে যায়। দুই পক্ষের ভিন্ন মতাদর্শের কারণে এই মারামারি, রক্তপাত হয়ে থাকে রাজনীতির মধ্যে। সুস্থ রাজনীতি এখন আর দেখাই যায় না। অপ্রিতিকর এমন ঘটনা বন্ধ করা কিভাবে সম্ভব তার সঠিক ব্যাখ্যা আমার কাছে নেই ! শুধু এটাই বলতে পারি রাজনীতির আগে মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ ঘটানো দরকার। তাহলে একজন আরেকজনের রক্তপাত ঘটানোর আগে দশবার হলেও ভাববে ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই মনুষ্যত্বের বিকাশ কবে ঘটবে দাদা! এখন তো পাঠ্যপুস্তক পড়ে শুধু ব্রেইন ওয়াশ করার জন্য। সঠিক জ্ঞান অর্জনের উদ্দেশ্যে কয়জনই বা পড়ে!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা তো সঠিক কথা বলেছেন ভাই কিন্তু এখন কোন কিছু করার ওতো নাই। আমরা যে মানুষ , মনুষত্ব আমাদের থাকতে হবে সেই জিনিসটা আমাদের সবাইকে বোঝা উচিত।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit