ট্রেন জার্নির তিক্ত এক অভিজ্ঞতা

in hive-129948 •  last year 

17-02-2024

০৫ ফাল্গুন , ১৪৩০ বঙ্গাব্দ


🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে🌼


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো ভালো থাকতে পারলেই হলো। তবে ভালো থাকাটা বরাবরই চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাচ্ছে। কেউ আসলে শারীরিকভাবে আর মানসিকভাবে ভালো নেই। গ্রাম ছেড়ে শহরে এসেছি দু সপ্তাহ হয়ে গেল। জীবন জীবিকার তাগিদে আবারো শহরে ফিরে আসে। শহরের মানুষগুলো আসলে খুবই ব্যস্ত! আমার কাছে এ শহর কোনোভাবেই ভালো লাগে না। বলতে গেলে না পেরে থাকতে হচ্ছে! এক প্রকার স্বপ্ন পূরণের জন্যই শহরে ছুটে আসা । তো আজক আমার একটা সরকারি চাকরির ইন্টার্ভিউ ছিল। পরীক্ষা ছিল ধানমন্ডিতে সকাল দশটায়। তো গাজীপুর থেকে এতো সকালে ইন্টার্ভিউ দেয়াও সম্ভব না। তো গতকাল জয়দেবপুর থেকে চলে আসতে হলো ঢাকায় আপুর বাসায়। জয়দেবপুর থেকে ট্রেনেই আসা হয় ঢাকায়। তো আজকে শেয়ার করবো গতকালের ট্রেন ভ্রমণের অভিজ্ঞতা।

IMG20240216165946.jpg

IMG20240216165759.jpg

গতকাল যেহেতু শুক্রবার ছিল তাই ভাবলাম বিকালের দিকেই বের হয়। জয়দেবপুর দিকে বলতে গেলে উত্তরবঙ্গের সব ট্রেন এদিক দিয়ে চলাচল করে। সারাদিন ট্রেনের শব্দ কানে আসে। জুম্মার নামাজ পরে ভাবলাম বের হয়ে যাবো। ১:৫৩ মিনিটে একটা ট্রেন ছিল। কিন্তু দূর্ভাগ্যবশত সে ট্রেনটি মিস হয়ে যায়। তাই আর বাসা থেকে বের হয়নি। তাই ভাবলাম বিকালের চিত্রা ট্রেন দিয়ে গেলেই ভালো হবে। একটু রেস্ট নিয়ে বিকালেই বের হলাম। ট্রেন ছিল বিকেল ৫:১১ মিনিটে। কিন্তু ট্রেন আসতে একটু লেইট করবেই। তবে আমার অভ্যাস হলো আমি সবসময় আগে চলে যায় । সাড়ে চারটার দিকেই বেরিয়ে পরি। জয়দেবপুর যেতে ডুয়েট্ সেকেন্ড ক্যাম্পাস থেকে যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। অটোরিকশা করে সোজা চলে আসলাম জয়দেবপুর রেলগেইট। সেখান থেকে স্টেশনে।

স্টেশনে গিয়ে দেখলাম অনেক মানুষেরই ভীড় সেখানে। ট্রেনে এখন টিকেট ছাড়া যাতায়াত করা রিস্কি। তাই ভাবলাম স্ট্যান্ডিং টিকেট কেটে নেই। টিকেট কাউন্টার থেকে টিকেট সংগ্রহ করে নেই। আগে স্ট্যান্ডিং টিকেট আগে জয়দেবপুর থেকে ২০ টাকা করে নিতো। গতকাল যখন টিকেট কিনলাম তখন টিকেটের দাম নিল ৪৫ টাকা করে। টিকেটটাও একটা টোকেনের মতো। কিছুটা গাফলা লাগলো আমার কাছে। আমি ওসবে পাত্তা না দিয়ে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম। কিন্তু অনেক্ষণ ট্রেনের অপেক্ষা করতে করতে অধৈর্য প্রায়। ট্রেন আসার কথা বিকেল ৫:১১ মিনিটে। অতঃপর ট্রেন আসলো সাড়ে পাচটার দিকে। কিন্তু ঝামেলা হলো ট্রেনে এতো মানুষ ছিল। কোথায় দিয়ে উঠবো সেটাই বুঝতে পারছিলাম না।

IMG20240216165609.jpg

IMG20240216165755.jpg

ট্রেনের উপরেও দেখলাম অনেক মানুষ। লাইফ রিস্ক নিয়ে যাতায়াত করা মোটেও ঠিক না। তবুও কিছু মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের উপরে বসে যাতায়াত করছে। তবে আমি একটু তাড়াহুড়ো করছিলাম ট্রেনে উঠার জন্য। কারণ ট্রেন বেশিক্ষণ দাড়ায়না স্টেশনে। বেশ কিছু মানুষ ঠেলে ভিতরে প্রবেশের চেষ্টা করছে। তবে ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করাও ঝুঁকি। কারণ যেকোন সময় আপনি পকেট মারের খপ্পরে পরতে পারেন। টাকা পয়সা হাতিয়ে নিবে কিভাবে সেটা মোটেও বুঝবেন না। তাই আমি দেখছিলাম কোন দরজা দিয়ে একটু ফাকাঁ আছে। একদিকে ফাকাঁ দেখে উঠে গেলাম। তারপর দাঁড়িয়ে থেকেই যেতে হলো। তবে ঝামেলা হলো যখন টিকেট চেক করতে আসলো যখন। পুরাই বোকা হয়ে গেলাম আমি। কারণ আমাকে যে টিকেট ধরাই দিছে সেটা জয়দেবপুর টু শ্রীপুর পর্যন্ত!! আর সেটা নিয়ে আমি যাচ্ছি ঢাকায়!

তো আমি বলবো আপনরা যখন ট্রেনে যাতায়াত করবেন অবশ্যই টিকেট ভালোভাবে চেক করে নিবেন। কারণ ট্রেন সেবার প্রচুর লেভেলের দুর্নীতি হয়। আপনি বুঝবেন ও না কিভাবে আপনার থেকে বেশি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আর পকেট অবশ্যই সাবধানে রাখার চেষ্টা করবেন। মোবাইল থাকলে সেটাও। কারণ ছদ্মবেশি কিছু পকেটমার থাকেই। তাদের ধান্দা থাকে ফোন নেয়া, টাকা নেয়া। তো আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়েই বলতে গেলে কমলাপুর আসলাম। কারণ মেইনগেইটে প্রবেশের সময় টিকেট চেক করে। যদি দেখে টিকেট ছাড়া তাহলে ফুল ভাড়া পে করতে হবে। তবে ভাগ্যিস চেক করেনি। তারপর স্টেশন থেকে বের হয়ে সোজা চলে আসলাম গেন্ডারিয়া।

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationw3w


10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG-20211205-WA0092.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

ট্রেনে জার্নি করতে আমার কাছে ভীষণ ভালো লাগে। তবে ট্রেনের উপরে উঠে জার্নি করা সত্যিই অনেক রিক্স। আপনি একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ট্রেনে যাতায়াত করার সময় টিকিট চেক করে নিতে হয় তা না হলে এখানে অনেক বেশি দুর্নীতি করে। যাই হোক ট্রেন জার্নি এক অভিজ্ঞতা পড়ে বেশ ভালো লাগলো ধন্যবাদ ভাইয়া।

আসলেই আপু ট্রেনে যাতায়াত করার আগে অবশ্যই টিকেট চেক করে নেয়া উচিত 🌼

ট্রেন ভ্রমণে এত বাজে অভিজ্ঞতা জেনে খারাপ লাগলো।তবে আমরা যতবার ভ্রমণ করেছি ততবারই অনলাইনে টিকেট কেটে নিয়েছি, এতে ঝামেলা হয়নি।তবে ঢাকার পথে যেতে যেতে লোকাল বাসের মত হয়ে যায়,মানুষের উপচে পড়া ভিড় থাকে,এটা আমার মোটেও ভালো লাগে না। যাইহোক অবশেষে যে টিকেট চেক করেনি এটাই ভাগ্যের বিষয়।

আসলেই আপু, না হয় তো ধরা খেতাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপু 🌼

আমি কখনো এইসব ট্রেনে উঠিনি,তবে শুনেছি যে এসব ট্রেনে যাতায়াতের সময় পকেটমারদের কবলে পরতে হয় অনেক সময়। আমার এক বন্ধু উকিল,সে নারায়ণগঞ্জ থেকে ট্রেনে চড়ার সময় পকেট থেকে মোবাইল নিয়ে যায় পকেট মেরে। পরে অবশ্য আমরা মোবাইল খুঁজে বের করতে সক্ষম হয়েছিলাম। এতো ভিড়ের মধ্যে যাতায়াত করা আসলেই খুব কষ্ট। যাইহোক অবশেষে ঠিকমতো গেন্ডারিয়া পৌঁছাতে পেরেছেন, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো ভাই। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতা আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।