ট্রেন ভ্রমণের গল্প-শেষ পর্ব

---

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে

কেমন আছেন সবাই?? আশা করছি সবাই অনেক অনেক ভালো আছেন। আমি ভালো থাকার চেষ্টা করছি বরাবরের মতো। আসলে ওভারথিংকার মানুষগুলো অল্পতেই হাইপার হয়ে যায়! এই যেমন ধরেন আমি! অল্পতেই যেন বেশি চিন্তা করে বসে থাকি। এটা আমার খারাপ অভ্যাস বললেও ভুল হবে না! যাক, আজ এ বছরের দীর্ঘতম রাত। যখন পোস্টটি লিখছি, ঘড়িতে তখন তিনটা বেজে বিশ মিনিট! এর আগে অবশ্য কিছুক্ষণ ঘুমিয়েছি। এখন আর ঘুম ধরছে না। এই দীর্ঘ রাত কিভাবে কাটবে ভাবছি! রাত তো আর বসে থাকবে না, চলেই যাবে। আবার ঘুমিয়ে নেয়ায় ভালো। যায়হোক, আপনাদের সাথে ট্রেন ভ্রমণের গল্প শেয়াী করেছিলাম। আজকে শেষ পর্ব লিখে ফেললাম!

১ম পর্বের পর

কিছুক্ষণ ফেইসবুকে স্টরি পড়লাম। ফোনে ডাটা যেহেতু নেই! কি আর করার! কিছুক্ষণ পর দেখতে দেখতে নরসিংদী চলে আসলাম। ভৈরব থেকে নরসিংদী আসতে বেশিক্ষণ লাগে না। নরসিংদীর কলা বিখ্যাত! আপনাদেরকে এর আগেও কয়েকবার বলেছিলাম! ট্রেনে জার্নি করলে আমি সবসময় কলার খোঁজ নিয়ে থাকি, হাহাহা! বাহিরে কলার দামও বেশি থাকে। শাওনকে বলছিলাম তখন, কলা বিক্রেতা পেলে আমাকে বলে যেন। শাওনের অবশ্য কলা কেনার অভিজ্ঞতা খারাপ! ফর্মালিন যুক্ত কলা! ভিতরে সব নরম হয়ে যায়। কম দামে কলা কিনে এমন অভিজ্ঞতা হয়েছে শাওনের! তবে আমি বলবো আমার কলা কেনার অভিজ্ঞতা ভালো। যাক, কলা আর পেলাম না। নরসিংদী স্টেশনেও বেশিক্ষণ দাড়াঁয়নি ট্রেন।

আমাদের পাশেই এক ভদ্র মহিলা দাঁড়ানো ছিল! মায়ের বয়সী একজন মহিলা। চুপচাপ বসে আছে। কিছুক্ষণ পরেই দেখি মহিলা মাথা ঘুরিয়ে বমী করছে! জানালায় রোলিং করা ছিল। মাথা বাহির করার ব্যবস্থাও নেই! তারপর তাড়াতাড়ি করে মহিলাকে একটা পলিথিন দেয়! এবার কিছুটা রক্ষা পাওয়া গেল। তারপর মহিলাকে পানি দিলাম! ভাগ্যিস ব্যাগে পানির বোতল ছিল একটা! জানতে পারলাম, ঐ মহিলা ঢাকা যাবে। মেয়ের বাসায়! কয়দিন হলো মেয়ে খুব অসুস্থ। উপায়ন্তর না পেয়ে আসনবিহীন টিকেট নিয়েছিলাম। কিন্তু বিপত্তিটা হলো সেখানেই! দাড়িঁয়ে কতক্ষণ যাওয়া যায়! বয়সও বেড়েছে। তারপর আমি আর শাওন মহিলাকে আশ্বস্ত করলাম, আপনি নিশ্চিন্তে একটু রেস্ট নেন। তাহলে জার্নিটা ভালো হবে।

কিছুক্ষণ পর টিটি চলে আসে! টিকেট চেক করার জন্য! ফার্স্ট ক্লাস বগীতে সাধারণ পাবলিকের জন্য রেস্ট্রিক্টেড আছে! যদিও এটা আমার ও শাওনের জানা ছিল না। এখানেই ফাকাঁ পেয়ে উঠে গেলাম। দুজনের টিকেট একসাথে কিনেছিলাম। টিকেট শাওনের কাছে ছিল। তারপর শাওন টিকেট দেখালো। টিটি টিকেটে দাগ দিয়ে দিল। কারণ পরবর্তীতে যেন এটা আর ব্যবহার করতে না পারি। তারপর অবশ্য খুব পাচ্ছিল! কিন্তু দাড়িঁয়ে আর কতক্ষণ ঘুমানো যায়! কিছুক্ষণ ঘুমিয়েই আর ঘুম হয় না।

এদিকে ঢাকার কাছাকাছি চলে এসেছি। সামনে টঙ্গী জাংশন রেলওয়ে স্টেশন। স্টেশনটি নতুন করছে। পুরোপুরি কাজ শেষ হয়নি। শাওন টঙ্গী স্টেশনে মাঝে মাঝে নেমে থাকে। এখান থেকে শাওনের বাসা কাছেই! কিন্তু ট্রেন সেখানে আর থামেনি। এয়ারপোর্ট এ গিয়ে থামবে! কিন্তু সমস্যাটা হলো একটি টিকেটে দুইটা সিট! শাওন এয়ারপোর্ট নেমে গেলে ওখানে টিকেট চেক করবে! কিন্তু আমি নামব কমলাপুর! ঐখানে আমার টিকেটও চেক করবে। আমি টিকেটের ছবি তুলে নিলাম। দেখানো তো যাবে। তারপর হঠাৎ মনে পড়লো শাওনকে গেইট পর্যন্ত পার করে দিতে পারলে টিকেট নিয়ে যাওয়া যাবে! ট্রেন এয়ারপোর্ট আসতে শাওন নেমে গেল! কিন্তু গেইটে ঐদিন আর টিকেট চেক করেনি! আমি টিকেট নিয়ে চলে এলাম। ট্রেনের সিট এখন পুরো ফাকাঁ! আরামছে বসে কিছুক্ষণ যাওয়া যাবে। এয়ারপোর্ট এ বেশিক্ষণ দাড়াঁয়নি। তারপরের স্টেশন কমলাপুর! এর আগে কোথাও দাঁড়াবে না। বিশ মিনিটের মতো লেগেছিল আসতে কমলাপুর স্টেশনে। স্টেশনের গেইটে টিকেট দেখিয়ে বেরিয়ে পড়ি।

Device	Oppo A12
Photographer	@haideremtiaz
Location	w3w
Date	15 December, 2022

আশা করি ট্রেন ভ্রমণের গল্পটি আপনারা কিছুটা হলেও উপভোগ করতে পেরেছেন। সবার সু্স্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি! আল্লাহ হাফেজ 🌼

---

---

10% beneficary for @shyfox ❤️

ধন্যবাদ সবাইকে

---

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

আমি কে?

^{আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।}