শেষ পর্বঃ সর্বনাশা টিকটক

in hive-129948 •  11 months ago 

26-12-2023

১২ পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


book-6709160_1280.jpg

From pixabay

২য় পর্বের পর

একদিন দেখতে পায় রোজিনা কার সাথে কথা বলে যেন যাচ্ছে। তাদের সম্পর্ক এতোটাই ঘনিষ্ঠ ছিল যে দেখে মনে হচ্ছে হাসবেন্ড-ওয়াইফ। সোহেল সাহেব মোটেও এটা পছন্দ করেনি। সোহাল তাদের এভাবে চলাফেরা দেখে মোটেও ভালোভাবে নিতে পারেনি। চোখের এক কোণে অভিমানের জল জমেছে। যে মেয়ে যে ছেলের সাথে হাতে হাত রেখে, স্বামীকে না বলে ঘুরে বেড়ায় সে আর যায়হোক তার সাথে সংসার করা যাবে না। সোহেল সাহেব বাসায় এসেও রোজিনাকে কিছু বলে না। কিন্তু ছেলেটার জন্য খারাপ লাগছে সোহেল সাহেবের! তার তো কোনো দোষ ছিল না! রোজিনাকে যে হারিে ফেলেছে সোহেল সাহেব সেটা বুঝতে পারছে। যে থাকার সে কুড়েঘরেও থাকতে পারবে।

কিছুদিন পর রোজিনা রবির সাথে পালিয়ে যায়! তার ছোট্র শিশু অলিকে ফেলে। সোহেব সাহেব যেমনটা ভেবেছিল তেমনটাই হয়েছে। তারপর অলিকে নিয়ে শুরু হয় সোহেল সাহেবের জীবনের আরও একটি নতুন অধ্যায়। ছেলেকে নিয়েই অফিসে চলে যায়। আবার সাথে করে বাসায়ও নিয়ে আসে। ধীরে ধীরে অলিও বড় হতে থাকে। বাবার কাজে সে সাহায্য করে। তার বাবা যে টাকা পায় সে টাকা দিয়েই সংসার চলে যায়। ঠিক দুইবছর পর! একটা আননোন নাম্বার থেকে ফোন আসে। " কেমন আছো? " ভয়সেটা শুনেই সোহেল সাহেব কেটে দেয়! এতো বছর পর রোজিনা আবার কি মনে করে!

জীবনের কঠিন সময়ে একা করে চলে গিয়েছিল সে। আজ সে কি না আবার খোজঁ নিতে আসে! অন্যের হাত ধরে যে পালিয়ে যায় সে কাউকে ভালোবাসতে পারে না! বিয়ের পরের জীবনটা যে রোজিনার ভালো যাচ্ছে না সেটা ঠিকই বুঝতে পারে সোহেল সাহেব। রবি ছেলেটা নাকি আবার আরেকটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে। রোজিনাকে বিয়ের শুরুতে ভালোবাসলেও সেটা আসলে ভালোবাসা ছিল না। রবির নারীর প্রতি ছিল লোভ। টিকটকে রোজিনার মতো অনেক মেয়েকেই সে ভালোবাসার ফাদে ফালানোর চেষ্টা করে। রোজিনার সবচেয়ে বড় ভুল ছিল রবির সাথে পালিয়ে যাওয়ার। রবিকে বুঝতে রোজিনার অনেকটা সময় চলে যায়। রোজিনা এখন তিলে তিলে নিজেকে শেষ করছে।

রোজিনা সোহেল সাহেবের জীবনে আবারো ফিরে আসতে চাই! কিন্তু সেটা কখনোই সম্ভব হবে না। সোহেল নতুন জীবন শুরু করছে। এবার পারিবারিকভাবেই বিয়েটা হচ্ছে! তাদেরই গ্রামের মেয়ে আশালতার সাথে। সোহেল যে এর আগেও একটা বিয়ে করেছিল সেটা আশালতা ভালো করেই জানে। সবকিছু জেনেই বিয়ে করছে সোহেলকে। সোহেলও আশালতার মতোই মেয়ে পছন্দ। যে কি না সহজ সরল! যেমনটা ছিল রোজিনাও। কিন্তু তার মনে ভয় সেও যদি রোজিনার মতো একই কাজ করে! তাকে ছেড়ে যদি চলে যায়। সোহেল আশালতাকে বিয়ে করে সুখে শান্তিতেই বসবাস করতে থাকে। অলিকে কখনো পরের ছেলে মনে করেনি, নিজের ছেলের মতোই আদর করে আশালতা!

এদিকে রবি আরেকটা মেয়ের সাথে রিলেশনে জড়ায় যায়। রোজিনাকে মারধর করে! তারপর রবি বাধ্য হয়ে রোজিনাকে তালাক দিয়ে দেয়! রোজিনা নিজের জীবনের সর্বনাশ নিজেই ডেকে এনেছিল! তারপর থেকে রোজিনা পাগলপ্রায়! মায়েদের সাথেও সম্পর্ক ছিন্ন হয়েছিল সোহেলের কাছ থেকে চলে যাওয়ার পর। এখন শেষ ঠিকানা খোলা আকাশ! নিয়তি কোথায় আমাদের নিয়ে যায় সেটা কেউই জানে না, কেউ না।

সমাপ্ত



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG-20211205-WA0092.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ভাইয়া আপনার প্রথম পর্বগুলো পড়া হয়নি কিন্তু শেষ পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। আমাদের গ্ৰামে একদম এমনি একটি ঘটনা রয়েছে কিন্তু সেই মেয়েটি নিজেকে শেষ করে দিয়েছে। রোজিনার মতো মেয়েদের কপালে এমনি সর্বনাশ থাকে। তারা সব জেনে বুঝে নিজের ক্ষতি করে। সোহেল সাহেব তাকে আর মেনে না নিয়ে খুব ভালো করেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর গল্প শেয়ার করার জন্য।

আসলেই আপু এসব ঘটনা আসলে দেখা যায়। এ গল্পটা বাস্তবিক ঘটনা থেকেই লিখেছিলাম 🫣

রোজিনার মতো মেয়ে এখনকার সময়ে অহরহ দেখা যাচ্ছে। টিকটক এবং ফেসবুক সব শেষ করে দিচ্ছে। রোজিনা মস্ত বড় ভুল করেছে যার কোন ক্ষমা হয় না। তার উচিত শিক্ষা হয়েছে। যাইহোক সোহেল সাহেব এখন নতুন পরিবার আর সন্তান নিয়ে সুখে রয়েছে জেনে খুশি হলাম। যাইহোক গল্পটা দারুন ছিল এবং শিক্ষনীয় ব্যাপার ছিল।

Posted using SteemPro Mobile

এটা ঠিক বলেছেন ভাইয়া, রোজিনার মতো মেয়ে সমাজে অনেক রয়েছে। এটা বলতে গেলে উচিত শিক্ষাও 🌼

রোজিনার মতো মেয়ে এখনকার সময়ে অহরহ দেখা যাচ্ছে। টিকটক এবং ফেসবুক সব শেষ করে দিচ্ছে। রোজিনা মস্ত বড় ভুল করেছে যার কোন ক্ষমা হয় না। তার উচিত শিক্ষা হয়েছে। যাইহোক সোহেল সাহেব এখন নতুন পরিবার আর সন্তান নিয়ে সুখে রয়েছে জেনে খুশি হলাম। যাইহোক গল্পটা দারুন ছিল এবং শিক্ষনীয় ব্যাপার ছিল।

Posted using SteemPro Mobile

এই গল্পের আগের পর্বগুলো আমি পড়েছিলাম তবে শেষ পর্বটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো রোজিনার জন্য। আজ সে পাগল হয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছে। আসলে এটাই মনে হয় নিয়তি এবং কর্মের ফল। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

Posted using SteemPro Mobile

আসলেই আপু এটাই হয়তো রোজিনার কপালে ছিল। গল্পটা বাস্তবিক ধারণা থেকেই লিখছিলাম 🌼

রোজিনার মতো মেয়েদের অবস্থা এমন হওয়াটা একেবারে স্বাভাবিক। এসব মেয়ে কারো ভালোবাসার যোগ্য নয়। সোহেল আশালতা কে বিয়ে করে খুব ভালো একটা কাজ করেছে। কারণ অলির দেখাশোনা করার জন্য অবশ্যই কাউকে দরকার। সোহেল এবং আশালতা সুখে শান্তিতে বসবাস করছে, এটা জেনে খুব ভালো লাগলো। আসলে কাউকে ঠকিয়ে কেউ কখনো জিততে পারে না। যাইহোক সম্পূর্ণ পোস্টটি পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

আসলেই ভাইয়া, রোজিনার মতো মেয়েদের অবস্থা এমনই হওয়া উচিত! গল্পটা বাস্তবিক প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করেই লিখা