বুধাইফুরি বিলে একদিন

in hive-129948 •  11 months ago 

27-12-2023

১৩ পৌষ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ


🌼আসসালামুআলাইকুম সবাইকে 🌼


দীর্ঘ একদশক পর আমাদের বাড়ির পাশেই বলা যায় বুধাইফুরি বিলে গেলাম! একটু অবাক হচ্ছেন তাই তো! বাড়ির পাশে বিল অথচ এতো বছর পর বিলে যাওয়া! আসলে জীবনের একটা সময় চলে যাচ্ছে বাহিরে থেকে! সেই ২০১৮ সালের পর থেকে বাড়ি থেকে বের হলাম এখন যেন বাহিরেই কাটানো হয়! ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় পড়ার সুবাধে যাওয়া হয়েছে। জীবন বড্ড পরিবর্তনশীল! আজ আপনি যেখানে আছে কাল সেখানে নাও থাকতে পারেন। ক্ষণে ক্ষণে যে জীবনের রূপ বদলায়! পড়াশোনার ব্যস্ততার জন্য গ্রামে আসলেও সেভাবে গ্রাম ঘুরা হয় না! বলতে গেলে আসলে বাড়িতে এসে ফোনের স্ক্রিনের দিকে তাকিয়েই সময়টা বেশি কাটে! আর বন্ধুবান্ধব তারা সবাই ব্যস্ত যে যার মতো! সে হিসেবে আড্ডাটাও দেয়া হয়না। একটা পর্যায়ে এসে সবাই ব্যস্ত হয়ে যায় নিজেকে নিয়ে! মাঝে মাঝে একাই উপভোগ করতে হয় গ্রামের সৌন্দর্য।

IMG20231223110006.jpg

IMG20231223110254.jpg

IMG20231223110353.jpg

IMG20231223110309.jpg

IMG20231223110306.jpg

IMG20231223110424.jpg

২০১৩ সালে শেষবারের মতো এই বুধাইফুরি বিলে এসেছিলাম। সেটাও আবার মাছ ধরার জন্য! সদ্য কৈশরে পদার্পন করার পর চঞ্চলতা তখন আরও বেড়ে গিয়েছিল! সারাদিন খেলাধুলা আর ঘুরাঘুরির মধ্যেই কেটে যেত। যারা গ্রামে বড় হয়েছেন তাদের ব্যাপারটা হয়তো আমার মতোই হবে। বুধাইফুরি বিলে আগে অনেক পানি থাকতো সবসময়। আমরা সমবয়সী কয়েকজন মিলে বিল থেকে পদ্মসংগ্রহ করতে যেতাম। ছোট ছোট নৌকাও ছিল! ধানের জমিগুলো তখন অনেকটা পানির নিচে তলিয়ে যেত! আর তখনই মাছ ধরার ধুম পরে যেত! বিলের ঠিক মাঝে আবার আমাদের একটা আাবাদি জমি ছিল! জমিতে যারা কাজ করতো তাদের জন্য আম্মা গরম ভাত আর ছ্যাপা ভর্তা করে দিত আর সেটা নিয়ে আমাদের জমিতে চলে যেতাম।

আমাদের জমির ঠিক পাশে একটা ভূট্রা ক্ষেত ছিল! তখন দেখেছিলাম অনেক ভূট্রা হয়েছিল! আমি আর আমার দাদা মিলে ভূট্রা চুরি করেছিলাম। সেগুলো আবার বাড়িতে এনে পুড়ায় দিয়ে মজা করে খেয়েছিলাম, হাহা! আজ দাদা নেই, আমাদের আবাদি জমিটাও বিক্রি করে দেয়া হয়েছে! সে হিসেবে বুধাইফুরি বিলে যাওয়ার প্রয়োজনও পরে না। তবে শৈশবের কিছু স্মৃতি যে এখনও রয়ে গেছে। আসলে প্রয়োজন ফুরিয়ে গেলেই আমরা ভুলে যায় সব! অনেকটা স্বার্থপরের মতো। গতকাল হঠাৎ করেই শৈশবের সে বুধাইফুরি বিলে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল। আসলে গিয়ে অনেকটাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম। বিলের শুরুতে একটা বট গাছ ছিল যেটা এখনও আছে! যেটা ছোট বেলায় আমাদের ভয়ের কারণ ছিল। বটগাছের পাশ দিয়ে একলা যেতেও ভয় লাগতে তখন।

শীতের এ সময়টাতে বিলে পানি থাকে না! এ সময়ে বিলের আসল সৌন্দর্য টা উপভোগ করা যায় না। কারণ পানি না থাকলে ভালো লাগে না। এখন যেহেতু পানি শুকিয়ে গেছে, তাই ধান চাষ করার উপযুক্ত সময় এখন। গতকাল যখন গিয়েছিলাম যখন তখন দেখি অনেকেই জমিতে কোদাল নিয়ে আইল কাটছে! কিছু জমিতে ধানের চারাও লাগানো হয়েছে যেগুলোকে আমাদের দিকে রোয়া বা ঝালা বলে মানুষজন। এগুলো দিয়েই পরে ধানের জমিতে রোপণ করা হয় আর সেখান থেকেই জন্ম নেয় ধান। তবে বিলের মাঝে ছনের একটা জমি ছিল সেটা এখন আর নেই!

ছনের জমিতে দেখলাম ট্রাক্টর দিয়ে মাটি কুড়ে সেখানে মাছের ফিসারি করা হচ্ছে! পাশাপাশি বেশ কয়েকট ফিসারির কাজ হচ্ছে দেখতে পেলাম। তবে আগের সেই বিলের চিত্রটা একেবারে নেই বললেই চলে। তবে কচুরিপানা দেখলাম বেশ কয়েকটি জমিতে স্তূপ আকারে সংগ্রহ করা হয়েছে। পানির সময় সারাবিল কচুরিপানায় ভরে যায়। দেখতেও ভালো লাগে। অনেকদিন পরে বিলে গিয়ে শৈশবের কিছু স্মৃতি চোখের সামনে জলজল করছিল! সময়ের সাথে প্রকৃতিরও ব্যাপক পরিবর্তন হয়ে যায়।


DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationw3w



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG-20211205-WA0092.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। সম্প্রতি আমি ইলেকট্রিক্যাল থেকে ডিপ্লোমা ইন-ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছি। এখন বিএসসি এর জন্য প্রিপারেশন নিচ্ছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত দু বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। যাক,
নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

ভাইয়া ধীর্ঘদিন পরে বুধাইফুরি বিলে গিয়ে দারুন সময় কাটিয়েছেন। আমিও ছোট সময় আমাদের বিলে গিয়ে প্রচুর মাছ ধরেছিলাম। আপনার পোষ্ট পড়ে সেই স্মৃতি ভেসে উঠলো। পানি ছাড়া বা ফসল ছাড়া বিলের সুন্দর্য ফিকে হয়ে যায়। ধন্যবাদ।

একদম ভাইয়া ঠিক বলেছেন! পানি ছাড়া আগের রূপটা বুঝা যায় না

নামটি খুব অদ্ভুত বুধাইফুরি।এই বিলে খুব সুন্দর সময় কাটিয়েছেন।আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে ভীষণ ভালো লেগেছে।এখানে গিয়ে আপনি আপনার ছেলেবেলার স্মৃতি মনে করলেন।আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

আসলেই আপু নামটি কিন্তু বেশ অদ্ভূত! তবে অনেকদিন পর গিয়ে ভালো লাগছিল