১ম পর্বঃ স্ট্যান্ডিং টিকেট

---

আসসালামুআলাইকুম সবাইকে

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। ভালো থাকতে পারাটাই হলো সব থেকে বড় কথা! আমি সবসময় যে কথাটা আপনাদের সাথে বলে থাকি। কিন্তু হঠাৎ করে জানতে পারেন আপনার ভাইবা বা কোথাও যেতে হবে, দূরত্বটাও যেখানে অনেক বেশি! তাহলে কেমন লাগবে বলেন!! এমনটাই হয়েছে। হঠাৎ করেই নোটিশ আসে এক তারিখে আমাদের ভাইবা হবে। যেতে হবে কলেজে! দূরত্বটা যেখানে অনেক বেশি। এদিকে এডমিশনের প্রেসার তো আছেই! আর এমনিতেও গাজীপুর থেকে যাওয়া হয়নি কখনো ফেনী! যেহেতু দূরত্বটা অনেক বেশি আর সেখানে বাস দিয়ে যাতায়াত করারা টাফ! বাসে জার্নি করলে আমার মাথা অনেক ব্যথা করে!

ট্রেনের টিকেটও কাটতে হয় চারদিন বা পাচঁদিন আগে! না হয় টিকেট পাওয়া টাফ! আর ট্রেনে এতোদূর টিকেট ছাড়া যাওয়া রিস্কের বিষয়! যেখানে টাকা লাগবে অর্ধেক সেখানে টিকেট ছাড়া গেলে তার দ্বিগুণ পরিমাণ টাকা লাগবে। দুইদিন আগে জানতে পেরেছিলাম ১ তারিখে ভাইবা! মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়লো! গাজীপুর থেকে সেই ফেনী যাবো কি করে! গোগলে সার্চ দিলাম ইটিকেট ওয়েবসাইটে! যথাযথ লোকেশন দিয়ে দিলাম। কিন্তু হতাশ হলাম! একটা টিকেটও পেলাম না। তবে নিচে খেয়াল করলাম একটা টিকেট এখনও অনলাইনে শো করছে! তবে সেখানেও হতাশ হতে হলো! কারণ ট্রেন ছাড়ার সিডিউল ছিল রাত ৯:২০ মিনিটে। আর ফেনী থামবে ৪ টার দিকে। রাতের জার্নি যেহেতু তাই এটা রিস্ক হয়ে যায়! এটাও ক্যানসেল করতে হলো! তবে রিস্ক তো নিতেই হবে। কিন্তু খেয়াল করলাম সকালের একটি ট্রেন আছে।

মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস! সকাল ৭:৪৫ মিনিটে ঢাকা কমলাপুর থেকে ছেড় আসবে। সমস্যা হলো আমি এই সকালে গিয়ে ট্রেন ধরবো কিভাবে। আমার রুমমেট জিহাদ অবশ্য আমাকে পরামর্শ দিলো জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে সকালে ট্রেনে করে যাওয়া যাবে। সকালে উত্তরবঙ্গ থেকে বেশ কয়েকটি ট্রেন ছেড়ে আসে। আমি অবশ্য দ্বিধায় ভুগছিলাম যে যেতে পারবো কি না! এদিকে আবার দেখলাম বাস দিয়ে গেলে এক ঘন্টার মতো লাগতে পারে বিমান বন্দরে গেলে! আর যদি বাস জ্যামে পরে যায় তাহলে ট্রেন মিস হবে। এই রিস্ক মোটেও নেয়া যাবে না। জিহাদ আমাকে আশ্বাস দিলো যে সকালে ট্রেন পাওয়া যাবে। আর থেকে বড় কথা হলো জিহাদ সেদিন বাড়িতে যাবে। রাজশাহী যাবে ট্রেনে করে! আর তাদের ট্রেন ঢাকা কমলাপুর থেকে জয়দেবপুর হয়ে রাজশাহী যায়! আর ট্রেনের সিডিউলও ছিল সকাল সাতটায়!

সকালে উত্তরবঙ্গ থেকে যমুনা এক্সপ্রেস, ধূমকেতু ট্রেন ছেড়ে আসে সম্ভবত! তবে অনলাইনে দেখেছিলাম যমুনা এক্সপ্রেস ট্রেন জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে ৬:২২ মিনিটে থাকবে। কিন্তু বাংলাদেশের ট্রেন ব্যবস্থা এখনও এতোটা আধুনিক হয়নি! সাড়ে ছয়টার কথা বললে ছয়টা পঁয়তাল্লিশ লাগায় দিবে। তো সকালে যেহেতু ট্রেন এসে পরবে। তাই আগে ভাগেই চলে যেতে হবে স্টেশনে! টিকেট যেহেতু সংগ্রহ করা হয়নি স্ট্যান্ডিং টিকেটই কাটতে হবে। সকালে যেহেতু ট্রেন ধরতে হবে তাই আগেভাগেই শুয়ে পরেছিলাম। কিন্তু পোস্ট করা হয়নি! পোস্ট করে দেখি দুইটা বেজে গেছে। পোস্ট শেষ করে ফোনে এলার্ম দিয়ে শুয়ে পড়লাম! পাচঁটা পঁয়তাল্লিশ এ এলার্ম দিলাম! একদম রাইট টাইমে উঠে পরলাম বিছানা থেকে। উঠেই আমার রুমমেট জিহাদকেও ডাক দিয়ে তুলে নিলাম! ফ্রেশ হয়ে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে পড়লাম। ঘড়িতে তখন ৬:১৫ মিনিট বেজে গেছে!

তাড়াতাড়ি বের হয়ে পরি ব্যাগ নিয়ে! সকাল সকাল রাস্তা পুরো ফাকাঁ! সামনে আগাতেই অটো রিকশা পেয়ে গেলাম! বাসা থেকে জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনও এতোটা দূরে ছিল না! হেটেঁ গেলে ১০ মিনিট লাগবে। কিন্তু মস্তিষ্ক বারবার সিগন্যাল দিচ্ছিল যদি ট্রেন মিস হয়ে যায়! খালি অটো রিকশা পেয়ে তাড়াতাড়ি উঠে গেলাম। জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশন বাজার পর্যন্ত ১০ টাকা করে ভাড়া! দুজনের ২০ টাকা! জয়দেবপুর রেলওয়ে স্টেশনে যেতে পাচঁ মিনিটও লাগেনি! স্টেশনে গিয়ে দেখি একটা ট্রেন দাড়িঁয়ে আছে। আমি ভাবছি সেটাই যমুনা এক্সপ্রেস! কিন্তু জিহাদ বললো এটা যমুনা এক্সপ্রেস না! এটা উত্তরবঙ্গের ট্রেন। ঢাকা যাবে এক নাম্বার প্লাটফর্মের রাস্তা দিয়ে! স্টেশনে দেখি সকাল সকাল অনেক মানুষ দাড়িঁয়ে আছে।

অনেকেই ট্রেনের টিকেট সংগ্রহ করছে। দুই পাশে লাইন করা। একপাশে দেখলাম কাউন্টারের সামনে থেকে টিকেট সংগ্রহ করছে। আমি ভাবছিলাম হয়তো সেখান থেকেই স্ট্যান্ডিং টিকেট দিবে কিন্তু না! ঠিক তার অপোজিট সাইটে যেখানে লম্বা সারি করে সবাই দাড়িঁয়ে আছে। সবার গন্তব্য ঢাকা! আমিও গিয়ে লাইনে দাঁড়ালাম! কিন্তু তখনও ঢাকার টিকেট ছাড়েনি। তার আগেই এতো বড় লম্বা লাইন করে দাড়িঁয়ে আছে। এরই মাঝে আমার আরেক ফ্রেন্ড নিশাদ ফোন দিয়ে বললো সে কমলাপুর থেকে আসছে। আমি যেন বিমান বন্দরে দাড়ায়ঁ। আমি অবশ্য তাকে বলেছিলাম সেখানে দাড়াবো।

যাক, ৬:৩০ এর দিকে টিকেটের জানালা খুলে দেয়া হলো। ট্রেনের কোনো খবর নেই! জানালা খুলতেই একে একে সবাই টিকেট সংগ্রহ করতে ব্যস্ত! খুব তাড়াতাড়ি টিকেট সংগ্রহ করা হয়ে গেছে। জয়দেবপুর থেকে ঢাকার স্ট্যান্ডিং টিকেট মাত্র ৪৫ টাকা! আমি অবশ্য জানতাম না! আমার রুমমেট জিহাদ বলে দিয়েছিল এতো টাকা ভাড়া নিতে পারে। টিকেট সংগ্রহ করা হলো। এখন শুধু ট্রেনের অপেক্ষা। কখন আসবে ট্রেন!?

চলবে....

Device	Oppo A12
Photographer	@haideremtiaz
Location	w3w
Date	28 February, 2023

---

---

10% beneficary for @shyfox ❤️

ধন্যবাদ সবাইকে

---

---

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

আমি কে?

^{আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।}