৬ষ্ঠ পর্বঃ মুঠোফোনে প্রেম

in hive-129948 •  2 years ago 

09-12-2022

২৫ অগ্রহায়ণ ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ


আসসালামুআলাইকুম সবাইকে


কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই ভালো আছেন 🌼। আমি বরাবরের মতো ভালো থাকার চেষ্টা করছি। ভালো থাকার চেষ্টা করতে করতে আমি বিশ্বাস করি ভালো থাকতে পারাটা শিখে যাবো! আজ যেহেতু সাপ্তাহিক ছুটির দিন। আশা করি আজকের দিনটি অন্ততপক্ষে পরিবারের সাথে কাটাতে পারবেন। আমি সেই আশুগঞ্জ থেকে চলে আসি বাড়িতে। অথচ বাড়িতে কোনো কাজ নেই! মায়ের হাতের ডাল খেলেও ভালো লাগে। গ্রামে শীতও পড়েছে অনেক। সকাল সকাল দেখি চারিপাশে অনেক কুয়াশা পড়েছে। গ্রামের আসলেই শীতের সৌন্দর্য বুঝা যায়।

যায়হোক, আপনাদের সাথে ইতিমধ্যে একটি গল্প শেয়ার করেছিলাম। যাক, আজকে গল্পের ৬ষ্ঠ পর্বটি লিখলাম। আগের পর্বটি না পড়ে থাকলে লিংকে প্রবেশ করে পড়ে আসতে পারেন।

love-1100255_1280.jpg

copyright free image from pixabay

৫ম পর্বের পর

নীলা সকাল সকাল দাড়িঁয়ে আছে। কালো বোরখা আর মাথায় নীল হিজাব! নীলাকে খুব সুন্দর লাগে দেখতে! দূর থেকেই আবির দেখতে পায় নীলা দাড়িঁয়ে আছে। আবিরের কথা তাহলে রাখলো নীলা! নীলার কাছে যায় আবির। সামনে একটু দূরেই কাওসার মামার দোকান। শহরের গলির ভিতর দিয়ে হেটেঁ যেতে হয়। আবির নীলার পাশে থাকে হাটঁছে। কোনো কথা বলছে না আবির। কি ব্যাপার! কথা বলছো না যে! হুমম, বলো! আমি শুনছি। আবিরের আজ খুব ভালো লাগছে। তার পছন্দের মানুষটির সাথে হাটঁছে। আবিরের প্রথম অভিজ্ঞতা! কোনো মেয়েকে নিয়ে সকাল সকাল শহরের গলির ভিতর দিয়ে হাটাঁ হয়নি। নীলার পাশাপাশি হাটঁছে। আবিরের হাত নীলার হাতের স্পর্শ লাগে! আবিরের বুকে ধুকঁ করে উঠে! এমন শিহরণ সে কখনো পায়নি। এ যেন এক নতুন ভালোলাগা! নীলা জোর করেই আবিরের হাতটি ধরে! আবির কোনো কথা বলছে না। শুধু নীলার কথা শুনছে । আবিরের এতো ভালো লাগছে! এর আগে কখনো এরকম ফিলিংস হয়নি। আবিরের প্লেন করা ছিল নীলাকে আজ একটা ফুল দিবে। আগেই কিনে রেখেছিল আবির।

কাঠগোলাপ খুব পছন্দের ফুল নীলার। আবির সেটা ভালো করেই জানতো। কাঠ গোলাপের গন্ধ অসম্ভব সুন্দর। নীলা কাঠগোলাপকে অনেক ভালো বাসে। পিছনের পকেটে কিছু কাঠগোলাপ আবির রেখে দিয়েছে। নীলাকে কাঠগোলাপগুলো দিয়ে দিবে। তবে সেটা ভিন্নভাবে! গলিতে সকাল সকাল মানুষজনও কম! আবির পকেট থেকে কাঠগোলাপ বের করে। নীলার সামনে হাটুঁ গেড়ে বসে পড়ে! " নীলা, আমি তোমাকে ভালোবাসি! কলেজের সেই প্রথমদিন থেকেই আমার তোমাকে ভালো লেগে যায়। কিন্তু কখনো সাহস হয়নি কথাগুলো বলার!
নীলা মুচকি হাসছে! তবে কিছু বলছে না। আবির বুঝতে পারে নীলাও তাকে ভালোবাসে। আবির লজ্জা পাচ্ছে খুব। নীলা সেটা ভালো করেই বুঝতে পারছে। "এতো লজ্জা পেতে হবে না! বলেই তো দিয়েছো! "

আবির নীলার হাতটি ধরে হাটঁতে হাটঁতে কাওসার মামার দোকান সামনে চলে আসে। সকাল সকাল কাওসার মামার দোকানের ফুচকা খেতও মজা! আর আজকে ফুচকা একটু বেশি মজা লাগবে। নীলার সাথে বসে খেতে পারবে। দুজন চেয়ারে বসে পড়ে। ৪০ টাকার দু প্লেট ফুচকা অর্ডার দেয় আবির। নীলা ঝাল খেতে পছন্দ করে। কাওসার মামাকে বলেই দেয় যেন একটায় ঝাল বেশি, আরেকটায় ঝাল কম দেয়! আবির নীলার দিকে চেয়ে আছে। নীলাকে আজ অনেক সুন্দর লাগছে। মেয়েটা দুদিন আগেও মন মরা ছিল। আজ মেয়েটা খুশি! তবে আবির ভাবছে, এতো সহজে কি কাউকে ভুলে যাওয়া যায়। আবির নীলাকে রায়হান ভাইয়ের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করতে চেয়েছিল! কিন্তু এই সুন্দর মুহূর্তটার মাঝে শুধু শুধু রায়হান ভাইয়ের কথা তুললে মন খারাপ হবে নীলা! আবির আর রায়হান ভাইয়ের কথা মনে করালো না। নীলার সাথে মুহূর্তটা উপভোগ করতে চাই আবির।

আবির নীলাকে ভালোবাসে, নীলা সেটা বুঝতে পেরেছিল আগেই কিন্তু মুখ ফুটে বলা হয়নি। কাওসার মামার ফুচকা খেতে খেতে আরও কিছুক্ষণ কথা হয় নীলার সাথে। সেদিনের পর থেকে নীলা আর আবিরের মাঝে সম্পর্ক গভীর হতে থাকে। একসাথে দুজনে কলেজে যাওয়া আসা করে। আবির নীলার খুব কেয়ার করে। কখনো বুঝতেই দেয়নি আবিরের অনুপস্থিতি। নীলার পড়ালেখায়ও আবির যথেষ্ট হেল্প করেছে। তবে সম্পর্কের গভীরতা বাড়তে থাকলে, নীলার পরিবারও ব্যাপারটা জানতে থাকে। তখন থেকেই হয় বিপত্তিটা। নীলা একমাত্র মেয়ে হওয়ায়, নীলার মা-বাবার স্বপ্ন তাকে নিয়ে। এখন যদি সে স্বপ্নটাই ধুলিসাৎ হয়ে যায় তাহলে? দীর্ঘ একটি বছর কেটে যায় নীলা আর আবিরের সম্পর্কের! তাদের দুজনের চাওয়া-পাওয়াটাও ছিল এক। নীলার মা জানতো, নীলা যে আবিরের সাথে কথা বলে। আবির ভালো ছেলে সেটাও জানে। কিন্তু এই বয়সে এসবে কান দেয়া যাবে না। আগের ক্যারিয়ার করতে হবে তারপর না হয় দুজনের চাওয়া পাওয়া পূরণ! সেদিনের পর থেকে আবির নীলার মাঝে শুরু হয় তাদের স্বপ্ন পূরণের যুদ্ধ! ঠিক চার বছর পর......



10% beneficary for @shyfox ❤️

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png

আমি কে?

IMG20210908180509.jpg

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.