সন্ধ্যায় ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলায়

in hive-129948 •  4 days ago 

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো ও সুস্থ্য আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটাই হচ্ছে প্রথম কথা। আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে ক্ষুদ্র ও কোটির শিল্প মেলায় কাটানোর মুহূর্ত শেয়ার করার জন্য! একটা সময় ছিল, যখন মেলার নাম শুনলেই অন্যরকম একটা ভালো লাগা কাজ করতো। মেলার নাম শুনলেই প্রথমেই মনে আসতো নাগরদোলার কথা। ছোটবেলায় বুঝতাম মেলা মানেই নাগরদোলায় উঠতে হবে। আর গরম গরম জিলাপি না খেলে তো মেলা অপূর্ণই থেকে যেত মনে হতো! এখন মনে হয় অনেক বড় হয়ে গেছি! মেলা শুনলে আগের অনুভূতি কাজ করে না। তবে আমার কাছে এখন মেলা বলতে মনে হয় কনসার্টে গান শোনা। আর গান শোনার জন্যই মেলায় যাওয়া, হাহাহা। বয়স বাড়ার সাথে সাথে অনুভূতি পরিবর্তন হয়, সাথেভালো লাগাটাও।

IMG20241229183657.jpg

IMG20241229191012.jpg

IMG20241229214704.jpg

এখন যেহেতু শীতকাল, দেশের আনাচে-কানাচে নানান ধরনের মেলা হচ্ছে। শীতকালীন এই মেলাগুলোতে নানারকম জিনিসপত্র পাওয়া যায়। তাছাড়া বাচ্চাদের খেলার জন্য যা কিছু প্রয়োজন সবই পাওয়া যায়। গতকাল জানতে পারলাম গাজীপুরে আর্মি ফার্মা ফ্যাক্টরি মাঠে ক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প মেলার আয়োজন করা হয়েছে। যেটা বেশ কয়েকদিন ধরে চলমান থাকবে। আমাদের মেস থেকে মেলার দূরত্ব কমই। বাস দিয়ে গেলে ৫-৭ মিনিটের মতো সময় লাগে। আর হেটেঁ গেলে একটু বেশি টাইম লাগবে। ছোট ভাইদের কোচিং বন্ধ দিয়েছে ভাইবার জন্য। তারা বাড়িতে যাওয়ার আগে সিদ্ধান্ত নেয় মেলা থেকে ঘুরে আসবে। আমি যেহেতু এখন ফ্রি সময় পার করছি তারাও আমাকে বলে মেলায় যেতে তাদের সাথে! সারাদিন আসলে রুমের ভিতরে বসে থাকতেও ভালো লাগে না। সন্ধ্যার দিকে ছোটভাইদের নিয়ে চলে গেলাম ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলায়!

বাস দিয়ে যেতে বেশিক্ষণ লাগেনি। বাস থেকে নেমে দেখি বিশাল আয়োজন! তবে গেইটের সামনে টিকেট কাউন্টার। ভিতরে প্রবেশ করতে হলে টিকেট কাটতে হবে। তবে সে টিকেটটা আবার গুরুত্বপূর্ণ! কারণ হচ্ছে টিকেটটা আবার ড্র হবে। কাউন্টারের বক্সে সেটা আসার সময় ফেলতে হবে। টিকেট নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করে দেখি দারুনভাবে সাজানো হয়েছে। তবে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলা হলেও ভিতরে সেটার ফিলিংস খুব কম পেলাম। কারণ ভিতরে দেখি বাচ্চাদের খেলার জন্য যা করার দরকার সব করা হয়েছে। তাছাড়া মেয়েদের দোকানই বেশি। মেয়েদের কসমেটিকস, কাপড়, কিছু কাঠের তৈজসপত্র দেখলাম। তবে আমার কাছে বেশি ভালো লেগেছে মেলার ভিতরের ডেকোরেশন টা। ভিতরের ডেকোরেশন টা সুন্দর করে সাজানো হয়েছে। আলোকসজ্জায় পুরো মাঠ আলোকিত!

IMG20241229184121.jpg

IMG20241229212440.jpg

IMG20241229190755.jpg

মেলায় তরুণীদের আগমনই ছিল চোখে পরার মতো! আমাদের কেনার জন্য তেমন কিছুই নেই। তবে একটা ব্লেজার কেনার দোকান দেখেছিলাম। কিন্তু কথা হলো টাকা নেই তেমন। মেলায় খেয়াল করলাম বাচ্চাদের জন্য কয়েক রকমের নাগরদোলার আয়োজন করা হয়েছে। বিশেষ করে রিং টাইপের নাগরদোলাটা ভালো ছিল! অনেকেই দেখলাম নাগরদোলায় উঠছে। আবার দেখতে পেলাম নৌকার নাগরদোলা! যেটা দেখলে সবাই ভয় পায়! ভয় পায় ঠিকি কিন্তু এ নাগরদোলায়ও উঠে! কিছু মেয়ে দেখি চিল্লাচিল্লি শুরু করে দিয়েছিল নাগরদোলায় উঠে, হাহা! তাদেরকে তারপরে তাড়াতাড়ি নামানো হয়েছিল। আশা করছি অদূর ভবিষ্যৎ এ এই নাগরদোলায় আর উঠবে না, হাহা। তারপর দেখলাম এক জায়গায় গরম গরম জিলাপী বানাচ্ছে। আমরূ টোটাল ছয়জন গিয়েছিলাম মেলায়। ছয়জনের জন্য ১২০ টাকা জিলাপী নিলাম। গরম গরম জিলাপী আসলে অনেকদিন পর খেয়েছিলাম, বেশ ভালো লেগেছিল।

IMG20241229190818.jpg

IMG20241229214217.jpg

IMG20241229185057.jpg

আমাদের মূলত মেলায় আশার উদ্দেশ্যই ছিল কনসার্টে গান উপভোগ করা। আমরা সবাই চলে গেলাম কনসার্টের সামনে! স্টেজে দেখতে পেলাম এলাকার এক বড় ভাই জয় ভাই গান পরিবেশন করছিল! শুরুটূ করেছিল জেমসের গান দিয়ে! উৎসুক জনতা সবাই উপভোগ করছিল আসলে উনার গান। জেমসের মতোই গেয়েছিল প্রায়। উনি একাধারে তিনটা গান পরিবেশন করে। তারপর আরেক ভাই আসে গান বলতে। তবে উনার গান শুনে তো সবাই অবাক! ছেলে হয়ে মেয়ের কন্ঠে গান, হাহা! বেশ উপভোগ করেছিলাম উনার গান। তুমি ছুয়ে দিলে হায়, আমার কি যে হয়ে যায়, মেহেন্দি লাগাকে রাখনা সহ আরও কয়েকটা গান ফিমেইল ভয়েসে গাওয়ার চেষ্টা করে। উনার গানগুলো শুনে আসলে বেশি উপভোগ করেছিলাম। কনসার্টের শো চলছিল রাত দশটা অবধি। দশটা অবধি কনসার্ট উপভোগ করে সোজা চলে এসেছিলাম মেসে!


DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
Locationআর্মি ফার্ম ফ্যাক্টরি মাঠ,গাজীপুর
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

মেলার নাম শুনলে আগে যেরকম অনুভূতি কাজ করতো বর্তমানে এই অনুভূতি একদমই নেই। কারণ বর্তমান বাজারগুলোতেই যেন মেলা থেকেও বেশি জিনিসপত্র পাওয়া যায়। মেলার আনন্দ এখন আর গায়ে লাগে না। যদিও কিছুদিন আগে একটা মেলায় গিয়েছিলাম কিন্তু কোন ফিলিংসই পেলাম না। যাই হোক আপনার মেলার অনুভূতি পড়ে বেশ ভালো লাগলো। তবে আমি ছোটবেলায় একবার নাগরদোলায় উঠেছিলাম তারপর আর জীবনেও উঠিনি আর উঠবোও না, হাহাহা।

হাহাহা! আরেকবার উইঠেন আপু রিকোয়েস্ট রইলো 😁

অবশেষে আপনিও গেলেন এখানে। মনে হচ্ছে গাজীপুরের সবাই গিয়েছে এখানে খালি আমি বাদে। মেলাটার কথা অনেক শুনেছি এবং বিভিন্ন ধরনের ছবি ভিডিও দেখেছিলাম। যাইহোক আজকে আপনার পোস্টে দেখে ভালো লাগলো। খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন এবং কনসার্টে গিয়ে গান উপভোগ করেছেন। অনেক ধরনের রাইডও রয়েছে দেখছি। আমি আবার এগুলো যতবার দেখি ততবারই ওঠার ট্রাই করি। এখন আর তেমন একটা ভয় লাগে না উঠলে ভালোই লাগে। ফটোগ্রাফি দেখে ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনি তো দেখছি তাহলে সাহসী মেয়ে 😁

মেলায় ঘোরার অনুভূতি আপনি দারুন সুন্দর করে শেয়ার করলেন আমাদের সঙ্গে। এই ধরনের মেলাগুলি ঘুরতে খুব ভালো লাগে। ছবিগুলি দেখে বুঝতে পারছি মেলাটি যথেষ্ট বড় এবং সেখানে অনেক দোকান বসেছে। নাগরদোলা বা অন্যান্য রাইডগুলিও দারুন সুন্দর করে প্রদর্শিত হচ্ছে। মেলার সাথে সাথে আবার কনসার্টে গান হচ্ছে। সব মিলিয়ে দারুণ একটি আয়োজন।

আসলেই দাদা মেলায় দারুণ একটি আয়োজন ছিল সবমিলিয়ে

এই মেলা গুলো সাধারণত মেয়েদের জন্যই হয়ে থাকে। কারন তাদের জিনিসপত্রই মেলাতে বেশি দেখা যায়। যায়হোক মেলার শেষের দিন গেলে অল্প টাকায় ব্লেজার নিতে পারবেন।

হাহাহা, আসলেই ভাই। আমরা গিয়েছিলাম জাস্ট কনসার্ট উপভোগ করতে।

শীতকালে চারিদিকে শুধু মেলা আর মেলা। আমিও সেদিন ময়মনসিংহে মেলায় ঘুরতে গিয়েছিলাম। তবে তুমি যেখানে মেলায় অংশগ্রহণ করলে জায়গাটা কিন্তু সত্যিই অনেক সুন্দর দেখাচ্ছে এবং নাগরদোলাটা দেখতেও কিন্তু সুন্দর দেখাচ্ছে।
অনেক ধন্যবাদ তোমাকে চমৎকার অনুভূতি মেশানো পোস্ট টি শেয়ার করার জন্য।

হুমম ভাইয়া, এখন সবদিকেই কমবেশি মেলা হচ্ছে। অনেকদিন পর মেলায় ভালো একটা সময় অতিবাহিত করেছি।

ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প মেলায় গিয়ে দেখছি আপনি খুব ভালো সময় কাটিয়েছিলেন। মেলায় গিয়ে ঘুরাঘুরি করতে আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। আপনি অনেক সুন্দর সময় কাটিয়েছিলেন। আর ঘুরাঘুরি করার সময় বেশ কিছু সুন্দর ফটোগ্রাফিও করলেন। এটা দেখে আমার কাছে অনেক ভালো লাগলো।

আসলেই ভাইয়া মেলায় দারুণ একটা কাটিয়েছিলাম।