07-10-2022
২২ আশ্বিন ,১৪২৯ বঙ্গাব্দ
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে
কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো আছেন। আমি ভালো থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি। যদিও কখনো সে চেষ্টা বৃথা যায়। তবুও যেন ভালো থাকতে হয়। যায়হোক, আপনাদের সাথে ট্রেন জার্নির দুটি পর্ব শেয়ার করেছিলাম। আজকে শেষ পর্বটি লিখেছি। আশা করি পর্বগুলো উপবেগ করতে পেরেছেন।
২য় পর্বের পর
ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া আসার পর ট্রেন কিছুক্ষণের জন্য দাঁড়াল। সূর্য তখন পূর্ব থেকে পশ্চিমে হেলে পড়েছে। সূর্যের যেন বাড়ি ফেরার সময় হয়ে গেছে। ট্রেনের সিটে বসে থাকতেও ভালো লাগতেছিল না। ভেবেছিলাম একটু বাহিরে বের হবো। তখনই ট্রেনের হর্ন বেজে উঠলো। আর বাহিরে যাওয়া হলো না। সামনে ভৈরব স্টেশন, সেখানে গিয়ে ট্রেন দাঁড়াবে। সেখানে গিয়ে বাহিরে বের হওয়া যাবে। আর ভৈরবে কলা পাওয়া যায়। কম দামে। খেতেও মজা হয়। ঘড়িতে তখন সন্ধ্যা ছয়টা বেজে গেছে। সূর্য পশ্চিম আকাশে অস্তমিত হয়ে গেছে। এখনও ঢাকা যেতে অনেকটা পথ বাকি। ভৈরব নেমে ভেবেছিলাম কলা কিনবো। কিন্তু ট্রেনে অনেক মানুষ ঠেলাঠেলি করে উঠতেছিল। তাই আর সাহস করে নামা হয়নাই। আবার ভেরব এ পকেটমারের সংখ্যাও অনেক বেশি। পকেট থেকে মানিব্যাগ, টাকা নিয়ে চলে যায় ছিনতাইকারীরা। অনেক মানুষের ফোন হারিয়েছে এখানে। যায়হোক, আমার সাথে বসা চাচা এ স্টেশনেই নেমে গেল।
পাশেই দাঁড়ানো ছিল এক ভদ্রলোক। আমি তখন জানালার পাশের সিটে বসলাম। ভদ্রলোককে আমার সিটে বসতে বললাম। যাক এবার একটু হাওয়া খাওয়া যাবে। ভৈরব থেকে ঢাকা যেতে বেশিক্ষণ লাগে না। ভৈরব স্টেশন পার হতেই ট্রেনের গতি যেন বাড়তে থাকে। এরই মাঝে আপুর ফোন। স্টেশন থেকে আসতে পারবো কিনা? আমি বললাম স্টেশনে গিয়ে তারপর রিকশা বা সিএনজি পেলে আসার দরকার নেই। আমি যেহেতু একা আসতেছিলাম আর কখনো কমলাপুর স্টেশন থেকে রাতের বেলায় বাসায় আসা হয়নি। এজন্য একটু ভয়ে ছিলাম। আবার আপু বলে যে, বাসার পাশের এলাকায় নাকি মারামারি হয়েছে। এটা শুনে রীতিমত আরও ভয় পেয়ে যায়। যাহোক, আপুর ফোনটা রেখে দেয়। তারপর দুলাভাইকে ফোন দেয়। দুলাভাই ঢাকাতেই জব করে। আমাকে বলে স্টেশনে নেমে যেন ফোন দেয় উনাকে। যখন সিএনজিতে উঠবো তখন ফোন দিতে বলে। যাক কিছুটা নিশ্চিন্ত হওয়া গেল। ট্রেনের জানালার পাশে বসে বাহিরের বাতাসের মাঝে নিজেকে কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলাম।
কিছুদূর আগাতেই নরসিংদী এসে পড়লো ট্রেন। সেখানে দু মিনিটের মতো দাঁড়াল । তারপর আবার ট্রেন তার আপন গতিতে চলতে শুরু করে। এরই মাঝে একজনের সাথে পরিচয়। আমাদের কলেজের এক ছোটভাইয়ের সাথে। ইলেকট্রিক্যাল ডিপার্টমেন্ট এর ২য় সেমিস্টারে পড়াশোনা করছে। ঢাকা যাচ্ছে এবার ছুটিতে। স্যরদের নিয়ে বেশ কিছুক্ষণ কথাবার্তা হলো। যাক ছোটভাই একটা পেয়ে গেলাম। তবে এয়ারপোর্ট এ নেমে পড়বে। দেখতে দেখতে টঙ্গী চলে এলাম। সামনেই এয়ারপোর্ট রেলস্টেশন। সেখানে অনেক যাত্রী নেমে যাবে। ট্রেন একদম ফাকাঁ হয়ে যাবে। এই প্রথমবার আমি কমলাপুর রেলস্টেশনে যাচ্ছি। আগেরবার গিয়েছিলাম দিনেরবেলায়। তখন ঢাকা থেকে ফেনীতে গিয়েছিলাম। এবার রাতে যাচ্ছি। যায়হোক, এয়ারপোর্ট এ এসে অনেক যাত্রীই নেমে গেল। ট্রেনের বগী যেন ফাকাঁ হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর আবার ট্রেন ছাড়তে শুরু করে। সামনে তেজগাঁও স্টেশন। এরপরে কমলাপুট রেলওয়ে স্টেশন। যেখানেই স্টেশনের সমাপ্তি। আবার সেখান থেকে বাংলাদেশের সব প্রান্তে ট্রেন চলাচল করে থাকে।
দেখতে দেখতে কমলাপুর স্টেশনে চলে এলাম। উপরের তাক থেকে ব্যাগ দুটি নামিয়ে নিলাম। কিন্তু একটি ব্যাগ অনেক বড় ছিল। একদম গেইটের কাছে ব্যাগ নিয়ে যাওয়াও সম্ভব না। ট্রেন থেকে নামতেই একজন লোক পেলাম। একজন কর্মী। আমি বললাম আমার ব্যাগগুলো একটু আগায় দিতে। লোকটি বলতেই আমার বড় ব্যাগ মাথায় তুলে নেয়। তারপর হাটাঁ শুরু করে। আমিও লোকটির পিছন পিছন যেতে থাকি। অনেক লোক দেখলাম হকারদের সাহায্য নিয়ে ব্যাগ নিয়ে বের হচ্ছে। মেইন গেইটের কাছে আসতেই ট্রেনের টিটি আমাকে বললো টিকেট দেখাতে। পকেটের মানিব্যাগ থেকে টিকেট বের করে টিটিকে দেখলাম। টিটি তখন যেতে বললো। তারপর হকার কর্মীকে বললাম রাইড শেয়ারের কাছে গিয়ে দাঁড়াতে। অনেকগুলো বাইক নিয়ে দাঁড়ানো ছিল। তারপর বললাম ব্যাগ নামিয়ে এখানে রাখার জন্য। হকারকে এ পর্যন্ত ব্যাগ আনার জন্য ২০ টাকা দিলাম। বাইক রাইডারকে বললাম গেন্ডারিয়া যাবে কি না? তখন বললো যাবে, তবে ভাড়া চেয়ে বসলো ২৫০ টাকা! এখান থেকে বেশি দূরের রাস্তাও না। এতো টাকা চেয়ে বসলো। যায়হোক, রাতের বেলা তাই আর বেশি কথা না বাড়িয়ে বললাম ২০০ টাকায় যাবে কি না! বাইকার অবশ্য রাজি হলো। তারপর আপুকে বললাম আসতেছি। বাইকে উঠে গেলাম ব্যাগ নিয়ে। বাসায় আসতে বেশিক্ষণ লাগেনি। ২৫ মিনিটের মতো লেগেছে গেন্ডারিয়া আসতে। তারপর বাইকারকে টাকা দিয়ে ব্যাগ নিয়ে বাসায় চলে গেলাম।
যায়হোক, আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ ট্রেন জার্নির পর্বগুলো পড়ার জন্য। আসলে ট্রেন জার্নি করতে আমার ভালো লাগে। আর সব থেকে ভালো লাগে আপনাদের সাথে অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতে পারলে। আপনাদের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে আজকের মতো এখানেই বিদায় নিচ্ছি। আল্লাহ হাফেজ 🌼
10% beneficary for @shyfox ❤️
ধন্যবাদ সবাইকে
আমি কে?
আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,ব্লগিং,কুকিং,রিভিউ,ডাই ইত্যাদি করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।
Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
please click it!
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Link
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার ট্রেন জার্নির গল্পটা পড়ে বেশ ভালো লাগলো । আসলে ট্রেনে করে যেতে বেশ ভালোই লাগে । আপনি আপনার বোনের বাসায় একা একা যাচ্ছেন প্রথমে একটু ভয় পেয়েছিলেন ,তারপর যদিও দুলাভাই নিতে আসবে জেনে বেশ নিশ্চিন্ত হলেন। রাতের বেলায় ভারা সবসময় একটু বেশি চায় । তারপরেও আপনি বাইকে করে অল্প সময়ের মধ্যে বোনের বাসায় পৌঁছে গেলেন পড়ে ভালো লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি আপু। প্রথমবার রাতে এসেছিলাম এজন্য একটু ভয় কাজ করছিল। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Nice post keep it up buddy.
Hope you got the 100 STEEM & 1000 TAKI Airdrop, if not get it quickly before the campaign ends.
go to this official taki announcement how to get the airdrop CLICK HERE
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit