ভ্রমণ পর্বঃ০১ | ঢাকা টু বান্দরবান

in hive-129948 •  5 months ago 
আসসালামুআলাইকুম সবাইকে ☘️

কেমন আছেন সবাই? আশা করছি সবাই অনেক ভালো ও সুস্থ্য
আছেন। তো সুস্থ্য থাকাটাই এখন মূলকথা। দিনকে দিন শীতের পরিমাণটা বাড়ছে। কাথা মুড়িয়ে এখন ঘুমানোতেই ভালো লাগে। সকাল সকাল তো উঠতেই ইচ্ছে করে না। তবুও ব্যক্তিগত কাজের জন্য উঠতে হয়। তবে এ সময়টাতে সাবধানে থাকাটাই জরুরি। কারণ ঠান্ডাজনিত সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে বেশি। বিশেষ করে বয়ঃবৃদ্ধ ও শিশুরা বেশি ভোক্তভোগী। তো আজকে চলে এলাম আপনাদের সাথে ভ্রমণ অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য।

IMG20241206094859.jpg

এডমিশনে আমি আর পি আর কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করেছি। আর পি আর কোচিং এর পরিচালক পবিত্র কুমার দাদা প্রতিবছরই একটা ট্যুরের আয়োজন করে থাকে। যে ট্যুরটা করা হয় মূলত ডুয়েটার নতুন সদস্যদের নিয়ে। আর পি আর কোচিং সেন্টার শেষে তিনটা মডেল টেস্ট হয়। সেগুলোতে আমি ভালো রেজাল্ট করেছিলাম। তো তারই ধারাবাহিকতায় কোচিং থেকে যারা চান্স পাবে তাদেরকে নিয়ে একটা ট্যুরের আয়োজন করা হবে। সেদিন থেকেই বলতে গেলে অনেক এক্সাইটেড ছিলাম আমি। গত ৫ই ডিসেম্বর আমাদের ট্যুরের আয়োজন করা হয়। ট্যুরের জন্য সবার কাছ থেকে ১৮০০ টাকা করে সংগ্রহ করা হয়। টোটাল খরচ ধরা হয় ৩৩০০ টাকা। যেহেতু আমরা বেশ কয়েকজন নতুন ডুয়েটিয়ান হলাম এবং অনেকের আর্থিক সমস্যার কারণে টাকার পরিমাণটা কমানো হয়। বাকি টাকা কোচিং বহন করবে।

ট্যুরের জন্য আমি ভেবেছিলাম হয়তো কক্সবাজার সিলেক্ট করবে। কারন সেখানে কখনো যাওয়ার সৌভাগ্য হয় নি আমার! তারপরে ট্যুরের জন্য স্থান নির্বাচন করা হয় বান্দরবান জেলাকে! সেখানে ৪-৫ টা স্পট আমাদের দেখাবে। তার মধ্যে নীলগিরি, ডাবলহ্যান্ড ভিউ, চিম্বুক পাহাড়, নীলাচল, মেঘালয় অন্যতম। যেহেতু একদিনের ট্যুর এতো জায়গা ঘুরা সম্ভব কি না তাই আমি চিন্তা করছিলাম। ৫ তারিখ রাতে ডুয়েট ক্যাম্পাসের সামনে থেকে রাত আটটায় বাসা ছেড়ে যাবে। টোটাল মেম্বার হয়েছিল ৯৩ জনের মতো! প্রায় একশোর কাছাকাছি। আমাদের সাথে ডুয়েটের সিনিয়র বেশ কয়েকজন বড় ভাইও ছিল। তাছাড়া কোচিং এর বেশ কয়েকজন স্টাফও ছিল সেখানে। কোচিং এর দাদা আমাদের আগে থেকেই বলে দিয়েছিল বাসা জাস্ট রাত আটটায় ছেড়ে যাবে। বাস হিসেবে শ্যামলীকে সিলেক্ট করা হয়েছিল। তো এক বাসে গেস্ট ও কয়েকজন মেম্বার থাকবে। আর অন্যবাসে গান বাজনা ও ডুয়েটের সিনিয়র বড় ভাইরা থাকবে। তো আমরা যেহেতু আনন্দ করেই যেতে চেয়েছিলাম তাই পরের বাসে উঠলাম।

IMG20241206081502.jpg

IMG20241206072509.jpg

বাসের ভিতর সিনিয়র ডুয়েটিয়ান ভাই ছিল বেশ কয়েকজন। বাসে উঠার পর রাইট টাইম জাস্ট আটটায় গাজীপুর থেকে ছেড়ে গেল । তারপর গাজীপুর পার হতেই জ্যামের ভিতরে আটকা পরে গেলাম। বলতে গেলে ঢাকা পার হতেই রাত বারোটার উপরে লেগে যায়! তাহলে বান্দরবান যেতে যেতে যে সকাল সাত বা আটটা বেজে যাবে সেটাই বুঝা যাচ্ছিল। তো বাসের ভিতরে যেহেতু গান বাজনার ব্যবস্থা ছিল, আমরা তো সিনিয়র বড় ভাইদের সাথে নাচানাচি করে বাসা কাপাঁয় দিয়েছিলাম। সেটা অবশ্য রাত একটা অবধি চলছিল। তারপর সিটে বসে আরামছে ঘুম দেয়ার চেষ্টা করলাম। এক ঘুম দিয়ে দেখি কুমিল্লা চলে আসি। কুমিল্লায় এসে একটা রিসোর্ট এর সামনে এসে কিছুটা সময় দাড়ায়ঁ বাস সেখানে। রিসোর্ট এ দেখলাম অনেক বাসা এসে দাড়াঁনো। ত্রিশ মিনিটের ব্রেক দিল আমাদের। তারপর আবার চলতে শুরু করলো বাস।

IMG20241206100643.jpg

IMG20241206100624.jpg

IMG20241206072515.jpg

IMG20241206100621.jpg

বাহিরে অনেক ঠান্ডা ছিল। আবার ঘুম দেয়ার চেষ্টা করলাম। কিন্তু জার্নিতে কি আর আরামছে ঘুমানো যায়। বাস তো একটু পর পর ঝাকি দেয়। কি আর করা কোনোরকমে ঘুমালাম দুই ঘন্টার মতো। ঘুম থেকে উঠে দেখি চট্রগ্রামে চলে এসেছি। ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে ছয়টা ! চট্রগ্রাম থেকে বান্দরবান কাছেই। বাহিরে পাহাড় দেখতে দেখতে বান্দরবানের প্রবেশমুখে চলে এলাম। সেখানে এসে দেখি সেনাবাহিনী ও পুলিশ দাঁড়িয়ে আছে। তারপর আমাদের বাস দাড়ঁ করিয়ে সবার ভোটার আইডি কার্ড আছে কি না সেটা চেক করলো! নিরাপত্তার জন্যই এ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। যেহেতু বান্দরবান বাংলাদেশের পার্বত্য একটি জেলা সেখানে নিরাপত্তার একটা বিষয় থাকেই। তারপর আমরা দেখতে দেখতে চলে এলাম বান্দরবানে। আমাদের বাস এসে দাঁড়ালো হিল ভিউ একটা রেস্টুরেন্ট এর সামনে। ঘড়িতে তখন সকাল সাড়ে সাতটা কি আটটা বাজে! সেখানে এসে দেখি অনেকগুলো চান্দের গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। যেহেতু পাহাড়ের দিকে বাস চলাচল করতে পারে না। তাই চান্দের গাড়ি করেই যেতে হয় ভিতরে।

হিল ভিউ এ আমরা সবাই এসে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। এখানে এসে দেখতে পেলাম অনেকেই ঢাকা থেকে এসেছে ঘুরতে। আমাদের মেম্বার ছিল ৯৩ জন। তার মানে বলতে গেলে অনেক বেশি। রেস্টুরেন্ট ও বেশ বড় ছিল। সবাই ফ্রেশ হয়ে সকালের নাস্তা করে নিলাম। নাস্তার পর আমাদের ফটোসেশন করার পালা। দুজন ক্যামেরাম্যান সাথে নিয়ে আসা হয়েছিল। সবার বেশ কিছু গ্রুপ পিকচার তোলা হয়। তারপর ৯৩ জন মেম্বারের জন্য আটটা চান্দের গাড়ি ভাড়া করা হয়। পুরোটাই কোচিং এর পরিচালক দাদা দেখে! একেকটা গাড়িতে ১১-১২ জন করে মেম্বার নেয়ার কথা বলে। যেহেতু আমাদের প্রথম স্পট ছিল নীলগিরি! তো বেশ খানিকটা ভিতরে যেতে হবে। সবাই গাড়িতে উঠা হয়ে গেলে তারপর নীলগিরির উদ্দেশ্য রওনা দিলাম আমরা

চলবে,,,,,

DeviceOppo A12
Photographer@haideremtiaz
LocationBandarban, Bangladesh

10% beneficary for @shyfox ❤️

1000158488.jpg

PUSS COIN:BUY/SELL

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNzq2MSXKSji21JRspt4nqpkXPR5ea7deLzvmJtuzVBwdLJUpBqtgAZ5gHtHPbayD2jR3CWqjkJ.png

ধন্যবাদ সবাইকে



WhatsApp Image 2021-12-23 at 19.46.54.jpeg

আমি কে?

IMG_4442.JPG

আমার নাম হায়দার ইমতিয়াজ উদ্দিন রাকিব। সবাই আমাকে ইমতিয়াজ নামেই চিনে। পেশায় আমি একজন ছাত্র। বর্তমানে ডুয়েটে অধ্যয়নরত আছি। পাশাপাশি লেখালেখি করে আসছি গত তিন বছর ধরে। ভালো লাগার জায়গা হলো নিজের অনুভূতি শেয়ার করা, আর সেটা আমার বাংলা ব্লগের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে। নিজেকে সবসময় সাধারণ মনে করি। অন্যের মতামতকে গুরুত্ব দেয় এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করি। বাংলা ভাষায় নিজের অভিমত প্রকাশ করতে ভালো লাগে। তাছাড়া ফটোগ্রাফি,কবিতা লেখা,গল্প লেখা ,রিভিউ,ডাই এবং আর্ট করতে ভালো লাগে। অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়াতে ভালো লাগে। বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করি। ভবিষ্যতে প্রিয় মাতৃভূমির জন্য কিছু করতে চাই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

You've got a free upvote from witness fuli.
Peace & Love!

প্রথমেই ডুয়েটে চান্স পাওয়ার জন্য তোমাকে শুভেচ্ছা জানাই। তুমি এভাবেই এগিয়ে যেতে থাকো এই কামনা করি। তোমার বান্দরবান ভ্রমনের ব্যাপারটা জেনে ভীষণ খুশি হলাম। কারন জীবনে ভ্রমণের অনেক গুরুত্ব রয়েছে। তোমার এই পর্বটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো, আশাকরি সামনের পর্বে আরো আনন্দময় জার্নির গল্প লিখবে।

জি ভাইয়া ভ্রমণ আসলে শিক্ষারই একটি অংশ। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

যেহেতু আপনি কখনো কক্সবাজার যাননি, এই ট্যুরে যদি কক্সবাজার যেতে পারতেন, তাহলে আরও বেশি আনন্দ করতে পারতেন। তবে বান্দরবানেও অনেক সুন্দর সুন্দর জায়গা রয়েছে। আর আপনারা যেহেতু ৯৩ জন গিয়েছেন,তাহলে তো মনে হচ্ছে সবাই মিলে বেশ মজা করেছেন। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।

হুমম ভাই, সবাই মিলে আসলে অনেক মজা হয়েছিল