হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি অতীত গল্প শেয়ার করব। গল্পটা থাকবে মাছ ধরা কেন্দ্রিক। আশা করি আমার এই গল্পটা আপনাদের অনেক আনন্দ দিবে।
মাছ ধরতে কার না ভালো লাগে। আমি মাছ ধরা খুবই পছন্দ করতাম। এখনো মাছ ধরতে অনেক ভালো লাগে আমার। তবে আগেকার দিনে বরশি দিয়ে পুকুরে মাছ ধরেছি অনেক। আর সে মাছ ধরার মধ্যে অনেক সুন্দর সুন্দর স্মৃতি রয়ে গেছে আমার জীবনে। একদিন আমি আমার ভাইয়া সহ চাচাতো ভাইয়েরা মিলে পুকুরে মাছ ধরতে গেলাম। তখন পুকুরে ছোট ছোট পুটি মাছ পাওয়া যেত। সেগুলো বড়শি দিয়ে ধরে আনতাম বাড়িতে। ঠিক তেমনি আমরা কয়জন মিলে বরশি নিয়ে পুকুর পাড়ে রেডি হলাম। বড়শিতে খুব হিসাবে ব্যবহার করছিলাম কেঁচো। হয়তো আপনারা এই জিনিসটা চিনে থাকবেন। এটা সাপের মতো তবে ছোট লম্বা প্রতি জিনিস। কাঁদার মধ্যে এর বসবাস বেশি। যারা গ্রামে থাকেন তারা চিনবেন। যারা মাছ ধরেছেন তারাও জানবেন।
আমরা পুকুরপাড়ে একটি ছায়াযুক্ত স্থানে অবস্থান করলাম। শুনেছি সেই জায়গাতে বেশ বেশি বেশি বড়শিতে মাছ উঠে। আমরা সবাই মিলে যে যার মত নিজের বরশি দিয়ে মাছ ধরা শুরু করলাম। কিন্তু একটা বিষয় আমরা লক্ষ্য করতে থাকলাম। সূর্য আস্তে আস্তে পূর্ব দিক থেকে দক্ষিণ দিকে অগ্রসর হয়ে পশ্চিম দিকে যাচ্ছে,তাই গাছের ছায়া পিছন থেকে যেন সরে গিয়ে গায় রোদ লাগতে থাকলো। আমরা গাছের ছায়া লক্ষ রেখে একটু একটু করে ছায়ার দিকে এগিয়ে যেতে থাকলাম। ততক্ষণে মাছ এসে শুধু বড়শীতে ঠোকাচ্ছে কিন্তু একটা বাদছে না। বেশ এভাবে আধাঘন্টা চলে গেল। চার পাঁচ জন বড়শি নিয়ে বসে রয়েছি কিন্তু মাছ ওঠার কোন নাম গন্ধ নেই। সবাই বিরক্ত হয়ে পড়ল। আমি স্থান ত্যাগ করে আরেকটি স্থানে বসলাম। সেখানে যাওয়া মাত্র কটা কট পুটি মাছ উঠতে থাকলো। আমার এমন মাছ উঠতে দেখে তারা সবাই হাসাহাসি করল আর এটা সেটা বলতে থাকলো। আমার বড়শিতে যখন মাছ উঠছে আমি তখন আনন্দ বোধ করছি। আর বাকি তারা সবাই বিরক্ত বোধ করছে। ঠিক এভাবে কিছুক্ষণের মধ্যে দশটা পুটি মাছ পার হয়ে যায়। এদিকে আমার ভাই আর চাচাতো ভাইরা তোর রেগে সেই অবস্থা। তারা বরশি নিয়ে বসেই রয়েছে মাছ উঠছে না। শুধু মাঝেমধ্যে বড়শিতে ঠক দিয়ে চলে যাচ্ছে। চাচাতো ভাইদের মধ্যে একজন রাগ করে আমি যেই জায়গায় বড়শি পেতে বসে রয়েছি সেখানে ঢিল মেরে পানি নড়িয়ে দিল। এতে আমি বেশি রেগে গেলাম।
তাদের বড়শিতে মাছ উঠছে না এতে আমার দোষ কোথায়। আমার এই স্থানে এসে না হয় তারা বড়শি ফেলে মাছ ধরুক। তাই বলে হিংসা করে ঢেলে মেরে মাছ হেঁটিয়ে দিবে। আমার বড় ভাইয়া তাদেরকে মানা করলো। সে বলল তার বরশিতে মাছ উঠছে উঠুক না তোরাও সেখানে যা চেষ্টা কর। কিন্তু তারা আমার স্থানে আসলো না। কারন আমার স্থানটা ছায়াযুক্ত জায়গা হলেও একটু বোন জঙ্গল আর পোকামাকড় ছিল। তবে মজার বিষয় ছিল ঢিল মারার পরে মাছ পালিয়ে না গিয়ে বরঞ্চ আরো বেশি বেশি আমার বরশিতে বাদতে থাকলো। একটা পর্যায়ে দেখা গেল আমার বড়শিতে বড় সাইজের একটি রুই মাছ উঠেছে। তারা তো আমার মাছ উঠতে দেখে অবাক। কিন্তু ততক্ষণে তাদের বড়শিতে এখনো একটা মাছ ওঠেনি।
আর এভাবে আমার বড়শিতে অনেকগুলো ছোট ছোট পুটি মাছ রুই মাছ তেলাপিয়া মাছ সহ আরো অনেক মাছ উঠে পড়েছে। এই নিয়ে বেশ হাসাহাসি হতে থাকলো। যারা পথ দিয়ে যাচ্ছিল তারা দেখছিল আর প্রশ্ন করছিল। কেউ এসে আমাদের মাছ রাখা পাত্রটা দেখছিল। আমরা অবশ্য সবাই একটা একটা করে বদনা নিয়ে এসেছিলাম মাছ রাখার জন্য। আমার বদনাই মাছ পুরে গেছে। আর তাদের চারজনার বদনা ফাঁকা। তারা আর বসে থাকতে পারলো না বিরক্ত হয়ে। উঠে চলে যাবে। কেউ আনমনা ভাব। আবার কেউ বরশির দিকে লক্ষ্য না রেখে গল্পে বসে গেছে। এই মুহূর্তে আমার চাচাতো ভাইদের একজনার বরশি টেনে নিয়ে চলে যাচ্ছে। তারা চারজনে ভাবল যে বড়শিতে হয়ত বড় মাছ বেধেছে তাই টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তারা গল্প গুজব বাদ দিয়ে দ্রুত বরশি টান দিল।
বরশিটা যখন টান দিয়ে তুলে ফেলে। তখন দেখতে পারলো তার বড়শিতে বেশ বড় ধরনের একটি কাকড়া বেধেছে। বড়শিতে কাকড়া বাধা দেখে তারা সহ মাছ ধরতে দেখা অন্যান্য মানুষেরা সেই আকারে হাসাহাসিতে ফেটে পরলো। খুব ইনজয় হয়েছিল সেই মুহূর্তটা। অনেকেই তাদের মাছ উঠে নাই এইকথা জেনে বলছিল, যেখানে বড় কাঁকড়া অবস্থান করে সেখানে পুটি মাছরা, পাল বেঁধে আসে না। আবার অনেকে বলাবলি করছিল এরা দুষ্টু তাই এদের বরশিতে মাছ উঠে নাই। আসলে ওই মুহূর্তে যে যার মতো পরিহাস করতে পারে ইচ্ছেমতো হাসাহাসি আর এটা সেটা বলাই মাতোয়ারা হয়ে ওঠে। আর এভাবে সুন্দর একটা ভালোলাগা কাজ করছিল আমার মনে। কারন আমি অনেকগুলো মাছ ধরতে পেরেছি। পাঁচজন ব্যক্তির মধ্যে আমি একজন ব্যক্তি যে একলাই অনেকগুলো মাছ ধরেছে।
বিষয় | গল্প পোস্ট |
---|---|
গল্পের বিষয় | মাছ ধরার স্মৃতি |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
পাশে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

Twitter-promotion
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার আজকের টাস্ক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি অনেক সুন্দর গল্প উপস্থাপন করেছেন ভাইয়া। আপনার গল্প পড়ে বেশ ভালো লাগলো। বরশি দিয়ে মাছ ধরতে গেলে যদি বরশিতে মাছ না বাধে তাহলে সত্যিই অনেক বিরক্তিকর মুহূর্ত সৃষ্টি হয়। সেই জায়গায় আরেকজন যদি বেশি বেশি মাছ পায় তাহলে তো সইটা অন্যরকম জমে ওঠে। যা হোক সবার মধ্যে আপনি যে বেশি মাছ পেয়েছিলেন আর কেউ মাছ পাইনি এটা কিন্তু বেশ আনন্দের কথা। তাছাড়াও কাঁকড়া বড়শিতে গাথা বিষয়টা আমার কাছে দারুন লেগেছে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ একদম মনের কথা বলেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই বড়শি দিয়ে মাছ ধরার মজাই আলাদা। আমি নিজেও পড়শি দিয়ে মাছ ধরতে খুব পছন্দ করি। তবে এটি ঠিক কেঁচো দিয়ে মাছ ধরতে গেলে ভালোই মাছ পাওয়া যায়। এবং মাছ ধরতে গিয়ে যখন মাছ না পাওয়া যায় তখন এমনিতে মাথা খারাপ হয়ে যায়। আপনার চাচাতো ভাই হয়তোবা এই কারণে পানিতে ঢিল মেরেছে। ভালো লাগলো আপনার পোস্টে পড়ে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এটা কিন্তু ঠিক বলেছেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit