হ্যালো বন্ধুরা!
আসসালামু আলাইকুম।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি মহান সৃষ্টিকর্তার অশেষ মেহেরবানীতে আপনারা অনেক অনেক ভাল রয়েছেন। আমিও আলহামদুলিল্লাহ আপনাদের দোয়ায় বেশ ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে নজরুলের জীবন কাহিনী নামক গল্পের প্রথম পর্ব শেয়ার করতে চলেছি। এই গল্পের মূল কাহিনী লোকের মুখ থেকে শোনা। আমি আমার মতো করে একটু সুন্দর রূপ দিয়ে সাজিয়ে গুছিয়ে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব। গল্পের ব্যক্তিদের নামগুলো আমার নিজ থেকে দেওয়া। তাহলে চলুন গল্পের প্রথম পর্ব শুরু করি।
একটা সময় ছিল, ভারত উপমহাদেশ ঘিরে অনেক জমিদার প্রথা গড়ে উঠেছিল। জমিদাররা তাদের জমি জায়গা গরিবদের মাঝে আবাদ করতে দিতেন। নির্দিষ্ট একটা টাকার বিনিময়ে। বছর শেষে জমিদারদের জমি বাবদ টাকা দিতে হবে। ঠিক যেন জমিদারি আইনের মতই এই ঘটনা। যখন দেশ স্বাধীন হতে থাকলো। অনেক মানুষ তাদের জমিদারি হারিয়ে ফেলে। তবুও বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় জমিদার থেকে যান। যাদের ১০০ থেকে ৫০০ বিঘা জমি জায়গা থাকে। এই ঘটনার মূল কেন্দ্র ছিল একটি জমিদার বাড়ি। যে জমিদারের তিনটা ছেলে ছিল। জমিদারের নাম আশরাফুল, জমিদারের তিন ছেলে ইমারুল; খায়রুল ও নজরুল।গ্রামের নামটা আমি নিজেই দিয়েছি "সুখী-গ্রাম"। সুখী গ্রামের জমিদার ছিলেন অনেক ভালো মানুষ। তার শত শত বিঘা জমির জায়গা। গরিব মানুষেরা সে জায়গায় চাষাবাদ করতো। জমিদার কখনো গরীব-দুঃখীদের জুলুম করত না। অন্যান্য জমিদাররা শোনা যেত গরিব দুঃখী মানুষের বিভিন্নভাবে জুলুম করত। এমনকি গরিবের বাড়ির সুন্দর মেয়েদের নির্যাতন করতো। কিন্তু এই সুখী গ্রামের জমিদার ছিলেন অতি মহান। সে কখনো খারাপ মানুষকে পছন্দ করতেন না। সে বংশধারায় জমিদারি হয়েছেন। তবে তার মন মানসিকতা ছিল অনেক ভালো। নিজের গ্রামের অসহায় মানুষদের দেখাশুনা করতেন এবং সহযোগিতা করতেন। এভাবেই তিনি তার জমিদারি দীর্ঘদিন দেখাশুনা করে গ্রাম এলাকার মধ্যে বেশ সুনাম অর্জন করেছেন।
দিন দিন তিনি বৃদ্ধ হয়ে উঠেছেন। তার বড় দুই ছেলে বিয়ে করে ফেলেছেন। ইতোমধ্যে বড় ছেলে ইমারুল বাবার বাড়ি থেকে একটু পৃথক হয়েছে। তাই আশরাফুল জমিদারির বড় অংশ দেখাশোনা করে জমিদার নিজেই। বড় ছেলে ইমারুল বিভিন্ন ব্যবসার জন্য দেশের বাইরে যাওয়া-আসা করেন। তাই বাবার জমিদারি দেখার সুযোগ পান না। এদিকে মেজো ছেলে ভিন্ন এক গ্রামের জমিদারের মেয়ে রিনাকে বিয়ে করে শহরে থাকেন। পেশাগতভাবে তিনি পুলিশের বড় অফিসার হয়েছেন। এদিকে ছোট ছেলে নজরুল, লেখাপড়া শেষ করে বাড়ি এসে চাকরির জন্য পড়াশোনা করছেন। তারপর লেখার খরচ জমিদার বাবা নিজেই বহন করতেন। দুই ছেলে দুই দিকে তাকায় ছোট ছেলের উপর জমিদারের ভার দেওয়ার চিন্তা করেন। কিন্তু তিনি জানেন ছোট ছেলে সবকিছু সামলাতে পারবে না। ছোট ছেলে নিজের চায়না বাবার জমিদারি নিয়ে মাথা ঘামার। সে চাই সরকারি ভালো একটা চাকরি। কিন্তু ইতিমধ্যে তার পিতা-মাতা বৃদ্ধ হয়ে উঠেছে। পিতা মাতার শখ ভালো একটা মেয়ের সাথে ছোট ছেলেকে বিয়ে দেবে। ছোট বউটাকে নিজের কাছে নিজের মত করে রাখবে। তারা জমিদার মানুষ জমে জায়গার প্রয়োজন নেই। কোন গ্রামের গরিব ঘরের মানান মেয়ে হলেও চলবে। তাই মাঝে মধ্যে ছেলের কাছে বিয়ের বিষয় নিয়ে প্রস্তাব রাখে এবং বলতে থাকে কেমন মেয়ে তাদের প্রয়োজন। নজরুল লেখাপড়া শেষ করে বাসায় ফিরেছে। ইতোমধ্যে অনেক ছেলে-মেয়ের সাথে ওঠাবসা হয়েছে তার।
নজরুল ভালো স্টুডেন্ট, সরকারি ভালো একটি চাকরি পাওয়ার প্রত্যাশায় সে কখনো প্রেম ভালবাসার দিকে জড়িত হয়নি। কিন্তু মনের মধ্যে প্রেম ভালোবাসার অনুভূতি রয়েছে সব সময়। দীর্ঘদিন কলেজে যাওয়া নেই। তাই মনে মনে আফসোস রয়ে গেছে লেখাপড়া জীবনে প্রেম ভালোবাসা করে নাই কেন। এখন আর আগের মতো কলেজে যাওয়া হয় না বন্ধু-বান্ধবীদের সাথে ওঠাবসা হয় না। মানান মানান মেয়েদের সাথে কথা ও দেখা হয় না তার। যদিও লেখাপড়া জীবনে খারাপ দিকে সে ধাবিত হয়নি। কিন্তু এখন একাকীত্ব যেন তার মধ্যে বাসা বেঁধে নিয়েছে। তাই মনে মনে আফসোস থেকে গেছে কেন লেখাপড়া জীবনটা সে প্রেম ভালোবাসার কাজে লাগায়নি। বাড়িতে যখন বিয়ের কথা শুরু হয়েছে তখন সে আর না করতে পারে না। সে ভেবে দেখেছে বিয়ের পরেও চাকরি করা যাবে। কিন্তু মনের মধ্যে জেগে উঠেছে অন্যরকম অনুভূতি। এই মুহূর্তে তার একটা মেয়ে সঙ্গী প্রয়োজন। হোক সেটা বিয়ে করা বউ অথবা প্রেমিকা।
সুখিপুর গ্রামের পাশের গ্রাম লক্ষীপুর। লক্ষ্মীপুরের আলেয়া, অনেক ভালো একটি মেয়ে। ছোট থেকে গ্রামে হাসিখুশি ভাবে বেড়ে উঠেছিল। তার মধ্যে কোন রাগ অহংকার জিদ এগুলো ছিল না। সব সময় খেলার সাথীদের সাথে আনন্দে খেলাধুলা করতো। সে মনে করে জীবনটা মানেই হাসি আনন্দ। বাড়িতে খাওয়া দাওয়া মাঝেমধ্যে স্কুলে যাওয়া আর বন্ধু বান্ধবীদের সাথে খেলায় মিশে থাকা। লেখাপড়ার প্রতি বেশি একটা মনোযোগী নেই তার। পাড়াগাঁয়ে সবার প্রিয় একজন মেয়ে আলেয়া। অনেক স্নেহে হাসি আনন্দে বেড়ে উঠেছে মা চাচিদের মাঝে। তার এমন হাসিখুশি আর ভালো আচরণ দেখে মুগ্ধ হতো সবাই। একটা সময় তার বয়স ১৫ বছর পার হলো। কিন্তু মনে হয় না তার বয়স ১৫ বছর হয়েছে। সে তার বাড়ির পাশে ছোট বাচ্চাদের সাথে সবসময় হাসিখুশি ভাবে খেলাধুলায় ব্যস্ত থাকতো। তার দেখে অনেকেই বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে যায়। কিন্তু মেয়েটার বয়স ১৫ হলেও বিয়ে বিষয়ে তার কোন চিন্তা ভাবনা সৃষ্টি হয়নি। পাশের সখিপুর গ্রামের জমিদার বাড়ির ছেলে নজরুল, পথ চলতে তাকে দেখে মুগ্ধ হয়। কিন্তু ছেলেটার বয়স তার থেকে ১৩-১৪ বছর বেশি হবে।
বিষয় | গল্প পোস্ট |
---|---|
গল্পের বিষয় | নজরুল এর জীবন কাহিনী |
ফটোগ্রাফি ডিভাইস | Huawei mobile |
ফটো এডিটিং | মোবাইল গ্যালারি সফটওয়্যার। |
আমার ঠিকানা | গাংনী-মেহেরপুর |
ফটোগ্রাফার ও ব্লগার | @helal-uddin |
ধর্ম | ইসলাম |
দেশ | বাংলাদেশ |
আমার আজকের টাস্ক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Twitter-promotion
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit