অভাব যখন ঘরের দরজায়, ভালোবাসা তখন জানালা দিয়ে পালায়💔 || দ্বিতীয় এবং শেষ পর্ব

in hive-129948 •  9 months ago 

abandoned-540830_1280.jpg

সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

একদিন রাতে সে সাগরের সাথে চলে যায় সাগরের বাড়িতে। তখন সাগরের বাবা কিছুতেই মিমকে রাখতে রাজি নয় কারণ সে অনেক বড় বাড়ির মেয়ে এই দুঃখ কষ্টের মধ্যে সে বেশি দিন থাকতে পারবে না। অনেক ভেবেচিন্তে সাগরের বাবা মিমকে তার বাবার কাছে ফেরত দিয়ে আসে।

এরপর আরো বছর দুয়েক কেটে যায়। এখন তারা দুজনেই অনার্সে পড়ছে। মিমের বাবাও মনে করেছে এতদিনে মিম হয়তো সাগরকে ভুলে গেছে। এরমধ্যে ভালো একটা ছেলে দেখে মিমের বিয়ে ঠিক করে ফেলে মিমের বাবা। সবকিছু ঠিকঠাক ছিল। আত্মীয়-স্বজন বাড়ি ভরে গিয়েছিল। রান্নাবান্না সব কিছুর ব্যবস্থা করা হচ্ছিল। এর মধ্যেই মেয়েকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। কারোর আর বুঝতে বাকি রইল না মিম কোথায় গিয়েছে। মিম এর বাবা সাগর বাড়িতে খোঁজ করে জানতে পারে মিম এবং সাগর বিয়ে করে ফেলেছে। এরপর মিমের বাবা অনেকটা রাগে অভিমানে মিমের সাথে কখনো যোগাযোগ করবে না বলে দেয়।

যাইহোক এদিকে মিম বিয়ের পর বেশ কিছুদিন ভালোই ছিল। সবার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিল। যে মেয়েটা কখনো এক গ্লাস জল গড়িয়ে খাইনি সে এখন সংসারের অনেকগুলো কাজই শিখে ফেলেছে।পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও তাকে বেশ ভালো রাখার চেষ্টাই করে যায় সব সময়। এরমধ্যে হঠাৎ একদিন সাগরের বাবা স্টক করে মারা যান। তখন থেকেই মিমের সংসারে যেন অভাব আরো বেশি করে দেখা দেয়। সাগর বেকার কোন কাজ কর্ম নেই। অনেক ভেবেচিন্তে ঢাকায় চলে যায় চাকরি করতে। কত টাকা বেতনের চাকরি আর করবে। তার মধ্যে পরিবারের সদস্য অনেক ভাই বোন মা সবার চাহিদা মেটাতে গিয়ে মিমের কোথাও একটা কমতি থেকেই যায়।

এদিকে কাজের চাপে মিমের সাথে সাগর খুব একটা কথাও বলতে পারেনা ফোনে। মিম মনে করে সাগর তাকে অবহেলা করছে। একদিকে অভাব একদিকে একাকীত্ব মিম কিছুতেই সহ্য করতে পারছিল না। এরপর একদিন মিম তার বাবার কাছে ফিরে যাই। এবং গিয়ে বলে তার ভুল হয়ে গেছে তার বাবা যেন তাকে মেনে নেয়। তখন তার বাবা বলেন সে যদি একা আসে তাহলে মেনে নেবে। সাগরকে তার বাবা কিছুতেই মানবে না। মিমের দেয়ালে পিট ঠেকে গিয়েছিল তাই বাধ্য হয়ে তার বাবার কথা মেনে নেয় সে।

এদিকে সাগরের কিছু করার নেই।অনেকটা দুঃখ কষ্টে সে তার জীবনটাকে আবারো নতুন করে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।তার ওপর অনেক দায়িত্ব মাকে দেখতে হবে বোনকে বিয়ে দিতে হবে ভাইকে দেখাশোনা করতে হবে। তাই সে কখনো ইচ্ছে করে আর পিছনে ফিরে তাকাইনি।

সাগর যদি ভালো একটা কিছু করত হয়তো তাহলে আজ তাদের সংসারটা ভাঙতো না। আবার মিমেরও বোঝার ভুল ছিল সাগর তো তাদের জন্যই চাকরি করতে গিয়েছিল তাই হয়তো সময় দিতে পারেনি। যাইহোক একটা কথাই বলবো শেষে ভালোবাসার মানুষ নির্বাচনে অবশ্যই আমাদেরকে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ভালোবাসার মানুষ এমনভাবে নির্বাচন করতে হবে যাতে পরিবারের লোক কখনো অমত না করে। আবার এটাও ঠিক নিজের অজান্তে কখন কে যে কাকে ভালোবেসে ফেলে এটাও বলা মুশকিল।

যাই হোক বন্ধুরা আজ আমার গল্পটি এখানেই শেষ করছি। আশা করছি আপনাদের কাছে ভালো লেগেছে।হবে পরবর্তী কোনো বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1EmYRYsQvFLAH72WL1voB5Qv1bAb8AZSXixgFjhiMWAnz2UA9cMfriUVJ7ctL7...nSLVWX5o43xBXmLDdwhihbXiBhaPqShV2SFRHcKYd8CXKMs5RdPFoVngFzUPZy735MKSBrn82U6bCmY9F8MzT3ucNgZ2hGFcSdZg7fSmWifdcnibPP7TB2AbsL.png

rd3GVFgaNqfa5weVZtxxbjKtDyTEHjfxPPPJvmPbgZ2G7pL6CvtSE5hy2br8XMSLKQjggTDT9dnZnYJupZM3bE9EMptuNvwQ2hwzoB25vf...UfGWJsmL5WHRq3WCUtTYe3KuZwiwVWXjmcT4nR7Sp38QJcEKsECc5HkaDsrUqeJnKLKD88mQATt9SKpEEaMFtxZgahKHjxRb3MydeP5LoDjkQnmc2YmxygubZF.gif

Xaey6XUsuMsULyX7cP1nbTWJzYmPAgo7FUiwufHRk6Jy2gyG1Db2Jf3F8zDR4enXrGJXJVY8zjUpsz8r7ybb4LRV5UxeCYiYK1QPL3cJGf...AYxpdPLKDUL7U8qu4Pikt2pYsm5FijpvHVGxLifJJPzqmZNKMNA2z45a46JW8rG61eode8Q5PXFhQEQKZCgnKP8ynSwFBAExhqvJUM7KDLc3AeqHmeUQyR5QSZ.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

image.png

আসলে গল্পটি পড়ে খুবই খারাপ লাগলো সাগর যদি ভালো কিছু করতো তাহলে তাদের এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হতো না। সেই ভালোবাসার মানুষটিকে পেত। আসলে ভালোবাসার সাথে সাথে কর্মেরও দরকার রয়েছে। তবে মিমেরও ভুল রয়েছে সাগরকে বুঝতে পারেনি তাকে ভালোবাসার এবং তাকে সুখে রাখতে এসে চাকরিতে গিয়েছিল। আসলে আমাদের ভালোবাসার মানুষটিকে নির্বাচন করতে হবে নিজের যোগ্যতা অনুসারে এবং পরিবারের সাথে মেনে নেয় এরকম ভালোবাসাই শেষ পর্যন্ত নিজের করে পাওয়া যায়।

Posted using SteemPro Mobile

বেশ গুছিয়ে সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া। ঠিক বলেছেন ভালোবাসার মানুষটিকে নির্বাচন করতে হবে যোগ্যতা অনুসারে যাতে শেষ পর্যন্ত নিজের করে পাওয়া যায়।

গল্পটির প্রথম পর্ব আমি পড়েছিলাম।আজ গল্পের দ্বিতীয় পর্ব পড়ে আমার কাছে সাগরের জন্য আমার কাছে খুব খারাপ লেগেছে। আসলে যদি সাগরের আর্থিক অবস্থা ভালো হতো বা ভালো কোন একটা চাকরি করতো তাহলে মিম কখনো এরকম করত না। তবে এখানে মিমের ও ভুল হয়েছে। সাগর তো তাদের জন্য চাকরি করছে ।বা মা- ভাই বোন সবাইকে তার দেখতে হবে। আসলে ভালোবাসার মানুষ নির্বাচন করতে গেলে সত্যি থেকে ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত। ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

আসলে আপু ভালোবাসার মানুষ নির্বাচন করা কঠিন। সত্যি কথায় আছে না ভাবিয়া করিও কাজ করিয়া ভাবিও না।তবে মিমের এভাবে সাগরকে ফেলে আসা মোটেও উচিত হয়নি। যাইহোক এখানে সাগরের ও কিছু করার নেই। সত্যি অভাবে অনেক সময় অনেক কিছু হারাতে হয়।ধন্যবাদ আপু সুন্দর লিখেছেন।

একদম ঠিক বলেছেন আপু ভেবেচিন্তে কাজ করা উচিত কাজ করার পর ভেবে কোনো কাজে লাগবে না।ধন্যবাদ আপু সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

আসলে সবাই চায় তার পাশের মানুষটি একটু কেয়ারিং হোক।আশেপাশে থাকুন কিন্তুু সাগর হয়তো কাজের চাপের কারণে মিমকে সময় দিতে পারছে না ওদিকে মিম ও পরিবার পরিজন ছেড়ে ভালোবাসার কাছে চলে এসেছে আর এখন সাগর যে কারণেই হোক হয়তো সময় দিতে পারছে না মিম ভাবছে ওকে অবহেলা করছে।সাগর ও মিমের এতো ভালোবাসা ভেঙ্গে যাওয়া টা সত্যি খারাপ লাগলো।

তাদের ভালবাসার সংসার ভেঙে যাওয়ার গল্পটা শুনার পর খারাপ লাগবেই আপু। ভালো লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে।

মানুষ আবেগের বসে ভালো তো বেসে ফেলে কিন্তু পরবর্তীতে কি হবে, এই কথাটা তো চিন্তা করেনা। যদিও আপনার কথার সাথে আমি একমত যে, সাগর যেহেতু কাজের জন্য শহরে গিয়েছে সুতরাং তার বউ মিম এর তার জন্য অপেক্ষা করার দরকার ছিল কিছুদিন। এভাবে তাকে ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত হয়নি। একটা সময় হয়তো তাদের অভাব থাকত না, তবে ভালোবাসার মানুষকে এভাবে ছেড়ে চলে যাওয়া অবশ্যই অন্যায়। যদিও প্রথমে সে এই ব্যাপারটা বুঝতে পেরেছিল এবং বাড়ি চলে গেছিল। পরবর্তীতে আবার সেই ভুল কেন এই মেয়ে করল, সেটাই বুঝতে পারলাম না।