বর্ষাকালে শৈশবের স্মৃতিচারণ || জেনারেল রাইটিং

in hive-129948 •  5 months ago 

orchid-7993460_1280.jpg
সোর্স

"হ্যালো",

আমার বাংলা ব্লগ বাসি, সবাই কেমন আছেন? আশা করছি সবাই ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন। আমিও আপনাদের দোয়াই এবং আল্লাহর রহমতে ভালো আছি। সবার সময় ভালো কাটুক এই কামনাই করছি।

সবাইকে আমার নতুন একটি ব্লগে স্বাগতম। আশা করছি বর্ষাকালের মুহূর্ত গুলো অনেকেই উপভোগ করছেন। তবে যাদের মাথা গোঁজার ঠাঁই নাই তাদের জন্য বড্ড কষ্টের হয়ে গেছে। যতটুকু পারি তাদের সাহায্য করার চেষ্টা করব আমরা সবাই। তো যাইহোক এই বর্ষাকালে আমার ছোটবেলায় বা শৈশবে অনেক স্মৃতিচারণ আছে আর তারই সুন্দর একটি স্মৃতিচারণ আপনাদের সাথে শেয়ার করব আজ। শৈশবে বড্ড দুরন্ত ছিলাম। তবে এখন অনেকটা শান্ত হয়ে গিয়েছি। যারা ছোট থেকে গ্রামে বড় হয়েছেন তাদের এমন অহরহ ঘটনা থাকতে পারে। যাইহোক আশা করছি আমার শৈশবের স্মৃতিচারণটি আপনারা উপভোগ করবেন।

আমাদের গ্রামে একটি মুদি দোকান আছে যেখানে প্রত্যেকদিন বিকেলবেলা আমি নাস্তা কিনতে যেতাম।শুধু আমি একাই নয়, আমরা বেশ দলবল নিয়ে সবসময় ঘোরাফেরা করতাম, খেলাধুলা করতাম।সেই দোকানে যেতে হলে এক প্রতিবেশী দাদুর বাসার সামনে দিয়ে পেয়ারা গাছের নিচে দিয়ে যেতে হয়। তো এবার একদিন আমি দোকানে যাচ্ছি তখন সেই দাদু বাসার সামনে বের হয়ে আমাকে বলছেন কিরে তোরা আমার পেয়ারা গাছের নিচে দিয়ে যাতায়াত করিস পেয়ারা খাওয়ার লোভে।বলি তাইতো মাঝেমধ্যেই দেখি গাছে পেয়ারা নেই।

এটা শোনার তখন অনেকটাই রাগ হয়ে গিয়েছিল কারণ আমরা কখনো ওনার পেয়ারা গাছের দিকে তাকাইনি পর্যন্ত। বিষয়টা কেন জানিনা আমরা নিতেই পারছিলাম না।এর কিছুদিন পর বর্ষাকাল শুরু হয়। বাহিরে প্রতিদিন ঝুম বৃষ্টি হয়।একদিন আমরা সবাই মিলে বৃষ্টিতে ভিজছিলাম। আর তখন হঠাৎ করে দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় চাপলো। যে গাছের পেয়ারা না খেয়ে আমরা দোষী হলাম আজ সেই গাছের পেয়ারা খাব।আর পেয়ারা খাওয়ার মুক্ষম দিন হচ্ছে এই বৃষ্টির দিনে।কারণ বৃষ্টির মধ্যে সবাই যে যার বাড়ির মধ্যে থাকে বাহিরে বের হয় না। তাই আমাদের ধরা পড়ারও খুব একটা চান্স নেই।

যাইহোক যেই ভাবা সেই কাজ ৩-৪ জন মিলে গেলাম সেই পেয়ারা গাছের নিচে। এবং আমরা সবাই কিন্তু মেয়ে ছিলাম। আমাদের মধ্যে রাজিয়া নামের এক মেয়ে ছিল গাছে উঠতে পারতো। এবার খুব ভয় পাচ্ছিলাম এই বৃষ্টির মধ্যে ভেজা গাছে উঠতে গিয়ে পড়ে না যায়। ও খুবই পারদর্শী ছিল তাই গাছে উঠা।চোখের পলকে গাছে উঠে বেশ কিছু পেয়ারা পেরে আনে।পেয়ারাগুলো ঘরে রেখে আমরা ভেজা কাপড় ছেরে পেয়ারা মাখিয়ে খাই।

চুরি করা জিনিস খেতে কিন্তু খুব মজা লাগে। যদিও এখন বুঝি কাজগুলো করা আমাদের মোটে উচিত হয়নি।যাইহোক তারপর দিন আবারো আমি বিকেলবেলা দোকানে যাচ্ছিলাম তখন সেই দাদু আমাকে ডেকে খুব মিষ্টি করে বলে তোরা কি আমার গাছের পেয়ারা পেরেছিলি? আমি কি বোকা যে তার মিষ্টি কথাই ভুলে যাব। আমিও উত্তর দিলাম না দাদু বৃষ্টির মধ্যে তো আমরা বাসা থেকেই বের হতে পারিনি। তোমার গাছের পেয়ারা কখন পারলাম। তখন দাদু বললেন ঠিক আছে যা।আমি ভদ্র মেয়ের মতো সেখান থেকে চলে গেলাম। এরপর দূরে গিয়ে খুব হাসি পাচ্ছিল।

তো যাই হোক এই ছিল আমার শৈশবের স্মৃতিচারণ। এরকম আরও বেশ কিছু ঘটনা আছে। সেগুলো অন্য সময় কখনো শেয়ার করার চেষ্টা করব। আজ এখানেই বিদায় নিচ্ছি। দেখা হবে পরবর্তীতে নতুন কোনো বিষয় নিয়ে। সবাই ভালো থাকবেন এবং সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

24QmLBi2hi5sxeF4rfhXesN4Z3rEWTikWPFADtR6zyMx1EmYRYsQvFLAH72WL1voB5Qv1bAb8AZSXixgFjhiMWAnz2UA9cMfriUVJ7ctL7...nSLVWX5o43xBXmLDdwhihbXiBhaPqShV2SFRHcKYd8CXKMs5RdPFoVngFzUPZy735MKSBrn82U6bCmY9F8MzT3ucNgZ2hGFcSdZg7fSmWifdcnibPP7TB2AbsL.png

rd3GVFgaNqfa5weVZtxxbjKtDyTEHjfxPPPJvmPbgZ2G7pL6CvtSE5hy2br8XMSLKQjggTDT9dnZnYJupZM3bE9EMptuNvwQ2hwzoB25vf...UfGWJsmL5WHRq3WCUtTYe3KuZwiwVWXjmcT4nR7Sp38QJcEKsECc5HkaDsrUqeJnKLKD88mQATt9SKpEEaMFtxZgahKHjxRb3MydeP5LoDjkQnmc2YmxygubZF.gif

Xaey6XUsuMsULyX7cP1nbTWJzYmPAgo7FUiwufHRk6Jy2gyG1Db2Jf3F8zDR4enXrGJXJVY8zjUpsz8r7ybb4LRV5UxeCYiYK1QPL3cJGf...AYxpdPLKDUL7U8qu4Pikt2pYsm5FijpvHVGxLifJJPzqmZNKMNA2z45a46JW8rG61eode8Q5PXFhQEQKZCgnKP8ynSwFBAExhqvJUM7KDLc3AeqHmeUQyR5QSZ.gif

❤️আমার পরিচয়❤️

আমি হাবিবা সুলতানা হীরা । জাতীয়তাঃ বাংলাদেশী। পেশাঃ গৃহিণী। শখঃ নতুন নতুন রেসিপি বানাতে ভালো লাগে। তাছাড়া গান গাওয়া, আর্ট করা, ফটোগ্রাফি করা ও বাগান করতে আমি বেশ স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। আমি স্টিমিটে ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে যুক্ত হই।

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার সেই দাদু ভালো ছিল আর চেয়েছিল আপনারা দুই-চারটা খান।

কিন্তু বৃষ্টির দিনে গাছে ওঠার ব্যাপারটা দুর্দান্ত।

এমন দুরন্তপনার দিনগুলো এখন খুব মনে পড়ে। ওই দাদু মোটেই ভালো ছিল না ভাইয়া আমাদেরকে অযথা সন্দেহ করেছিল। তাই তো এমন পদক্ষেপ নিয়েছিলাম আমরা। যাইহোক এমনটা আমাদের করা মোটেই উচিত হয়নি।

😂😂 কিছু বুইড়া এমন থাকেই। আমাগো গ্রামেও একজন আছে এমন।

অনেক সুন্দর স্মৃতিচারণ করেছেন আজকে। আপনার পোস্ট পড়ে বেশ ভালো লেগেছে আমার। অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন অতীতের কিছু স্মৃতি আর কথা। এ জাতীয় পোস্টগুলো আমি খুবই পছন্দ করি। আপনার এই পোস্ট করার মধ্য দিয়ে অতীতের বেশ কিছু স্মৃতি যেন স্মরণ করতে পারলাম।

আমার স্মৃতিচারণ পড়তে গিয়ে আপনার শৈশবের স্মৃতি মনে পড়েছে জেনে খুবই ভালো লাগলো আপু। ধন্যবাদ সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

আপনার স্মৃতিচারণা শুনে বেশ ভালো লাগলো আপু। শুভকামনা রইলো আপনার জন্য।

ধন্যবাদ আপনাকে।

বাহ খুব সুন্দর একটি স্মৃতিচারণ করলেন আপনি। বিশেষ করে ছোটবেলার স্মৃতি গুলো খুব মধুর হয়। আর বর্ষাকালের এমন পরিবেশে পেয়ারা খেতে তো খুবই ভালো লাগে। আপনারা তো প্রথমে চুরি না করেও যেহেতু চুরির বদনামে জড়িয়ে গেলেন পরবর্তীতে চুরি করে নিলেন পেয়ারা। আপনি ঠিক বলছেন চুরি করা জিনিস খেতে খুবই মজার হা হা হা।

একদম আপু চুরি না করে যখন চোর হয়েছিলাম তাহলে চুরি করে খাওয়াই ভালো।যাইহোক আপু আমি মনে করি এমন মধুর স্মৃতি আমাদের সবারই আছে।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্যের জন্য।

যে কাজ আমি করিনি তার দোষ যখন নিজের উপর আসে সত্যি অনেক রাগ হয়ে যায়। আপনার জায়গাই আমি থাকলে তত উনার গাছে পেয়ারার অস্তিত্ব বিলীন করে দিতাম। ছোটবেলায় এইরকম টা অনেকেই করেছে। সত্যি এখন মনে পড়লে হাসি পায়।।

একদম ঠিক বলেছেন ভাইয়া ছোটবেলার এই ঘটনা গুলো এখন মনে পড়লে অনেক হাসি পায়। তবে খুব উপভোগ করি বিষয়গুলো। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর মন্তব্যের জন্য।

ভীষণ চমৎকার একটি পোস্ট আজকে ভাগ করে নিয়েছেন। শৈশবের স্মৃতিময় পোস্টটি দারুন লাগলো আমার। ঠিকই তো চুরি না করেও যদি নাম হয় তাহলে এরকমটাই করা উচিত বেশ ভালো করেছেন বৃষ্টির দিনে চুপিচুপি গিয়ে সবাই মিলে পেয়ারা পেড়ে মেখে খেয়েছে। চুরি করা জিনিসের কি স্বাদ এটি পড়ে একটু হাসি পেল আপু আর ওই দাদুর কথায় হাসি পাচ্ছে ডেকে বলেছে কিরে তোরা আমার গাছের পেয়ারা পেরেছিলি এটা বেশ ভালো ছিল
ধন্যবাদ আপনাকে চমৎকার পোস্টটি ভাগ করে নেয়ার জন্য।

তবে এটা কিন্তু সত্যিই আপু চুরি করা জিনিসের আসলেই স্বাদ অন্যরকম। ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।

বর্ষাকালে শৈশবের স্মৃতিচারণ পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু।চুরি না করেও যখন চোর শুনতে হয়।তখন চুরি করাই উচিত।আর বর্ষাকালে সবাই বাড়ির মধ্যে থাকে।বাইরে বৃষ্টিতে কেউ বের হয়না।পেয়ারা গাছ থেকে পারার এই মোক্ষম সময়।যাক আপনার অনুভূতি গুলো পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু। এটা ঠিক বলেছেন আপনিচুরি করা খাবার খেতে খুব মজা হয়,হিহিহি।

সত্যিই আপু চুরি করা খাবার খেতে খুব মজা। সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

আসলেই চুরি করা জিনিস খেতে দারুণ লাগে। আপনাদের সেই দাদু আপনাদেরকে দোষারোপ করার কারণে,পরবর্তীতে নিজেরই লস হলো। সবাই মিলে বৃষ্টিতে ভিজে পেয়ারা চুরি করার আইডিয়াটা দারুণ ছিলো। আপনি চমৎকার ভাবে বর্ষাকালের শৈশবের স্মৃতিচারণ করেছেন আপু। সেজন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

শৈশবের মজার গল্প গুলো পড়তে বেশ ভালই লাগে। পুরনো স্মৃতিগুলো মনে করলে অন্যরকম আনন্দ কাজ করে ।আর চুরি করে খাওয়া জিনিসের মধ্যে শৈশবে এক অন্যরকম ভালো লাগা কাজ করতো । যাই হোক আপনার আজকের পোস্ট পড়ে জানতে পারলাম এই দাদুটি আজ মারা গিয়েছে । জেনে বেশ খারাপ লাগলো ।ধন্যবাদ আপনাকে।